তাড়াশ উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২৪°২৫′৪৯″ উত্তর ৮৯°২২′২৪″ পূর্ব / ২৪.৪৩০২৮° উত্তর ৮৯.৩৭৩৩৩° পূর্ব / 24.43028; 89.37333
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(তাড়াস উপজেলা থেকে পুনর্নির্দেশিত)
তাড়াশ
উপজেলা
মানচিত্রে তাড়াশ উপজেলা
মানচিত্রে তাড়াশ উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৪°২৫′৪৯″ উত্তর ৮৯°২২′২৪″ পূর্ব / ২৪.৪৩০২৮° উত্তর ৮৯.৩৭৩৩৩° পূর্ব / 24.43028; 89.37333 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
জেলাচৌহালী উপজেলা
আয়তন
 • মোট২৯৭.২০ বর্গকিমি (১১৪.৭৫ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট১,৯৫,৯৬৪
 • জনঘনত্ব৬৬০/বর্গকিমি (১,৭০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ৮৮ ৮৯
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

তাড়াশ উপজেলা বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।[২] তাড়াশ উপজেলা বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য উপজেলা এই উপজেলা বাংলাদেশের স্বাধীনতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছিল। এই উপজেলার নামকরণ নিয়ে সবার জন্য গ্রাহ্য কোন তথ্য পাওয়া যায় না তবে মনেকরা হয় রায়বাহাদুর নামের একজন জমিদারের মেয়ে “তারা” নাম থেকে এর উৎপত্তি হয়েছে, তবে বিষয়টি বিতর্কিত । তাড়াশ উপজেলাতে জনসংখ্যার - ১.৩০% যেখানে জাতীয় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার- ১.৪৭%। তাড়াশ উপজেলার চলনবিল এই উপজেলাকে সকলের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে। এই উপজেলা দর্শনীয় স্থানের মধ্যে চলনবিল ছাড়া নবগ্রাম মসজিদ, বেহুলার কুপের মতো দর্শনীয় স্থান রয়েছে।

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

তাড়াশ উপজেলার এই উপজেলাটি প্রায় ২৪°২০' হতে ২৪°৩৪' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১৫' হতে ৮৯°২৭' পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। এটি জেলা সদর হতে ৫১ কি.মি. দূরুত্বে অবস্থিত ও এর আয়তন ২৯৭.২ কি.মি.। উত্তরে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলাচাটমোহর উপজেলা, পূর্বে রায়গঞ্জ উপজেলাউল্লাপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলাসিংড়া উপজেলা

পটভূমি[সম্পাদনা]

তাড়াশ উপজেলা সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা হতে প্রায় ৪০ কিমি পশ্চিমে চলনবিলের মধ্যে অবস্থিত। তাড়াশ উপজেলার নমাকরণের বিষয়ে এমন কোন ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায় নাই যা সর্বজনগ্রাহ্য। তবে এই উপজেলাটি একসময় গহিন জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল বলে প্রচলিত উপাখ্যান ও চিরায়ত বই-পুস্তুক থেকে পাওয়া যায়। তাড়াশ উপজেলার নামকরণের বিষয়টি হলো রায় বাহাদুরের মেয়ের নাম ছিল তারা দেবী। মনে করা হয়, জমিদারের মেয়ের নাম তারা থেকে তারাশ, পরে তাড়াশ নামের উৎপত্তি হয়েছে৷

নামকরণের আরেকটি বিষয় হলো: জঙ্গলে পরিপূর্ণ তাড়াশে এক সময় বাঘ, ভালুক এবং ডাকাতদের ত্রাসের রাজত্ব ছিল। সে কারণে ত্রাস থেকে তারাশ বা তাড়াশ নামের উৎপত্তি। [৩]

মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি[সম্পাদনা]

তাড়াশ উপজেলাতে ১১ নভেম্বর ১৯৭১, সালে মুক্তিযুদ্ধা ও পাকিস্তানি বাহিনীর লড়াই হয় এবং পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকার মিলে ১৩০ জন নিহত হয়। [৪]

যখন তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের (বাংলাদেশ) বঞ্চিত ও নির্যাতীত মানুষ মানুষ ফুসে উঠার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল সেই সময় ১১ দফার আন্দোলন গণঅভ্যত্থান যা ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান হিসাবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছিল। যখন আইয়ুব খানের পতন হয় তখন ইয়াহিয়া ক্ষমতায় আসে, সে ক্ষমতাগ্রহণ করলে আগড়তলা যড়যন্ত্র মামলা থেকে অব্যহিত পান শেখ মুজিবুর রহমান। এই উপজেলাতে সবর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পরিচালনায় সেই আন্দোলন এই উপজেলায় খুব ব্যাপকতা লাভ করেছিল ৷ হাজার হাজার ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্যে যারা নেতৃত্ব দেন- তাদের মধ্যে অন্যতম ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন, ডঃ হোসেন মুনসুর, অধ্যাপক ফজলার রহমান, এ্যাডভোকেট আতাউর রহমান, আমজাদ হোসেন সরকার, অধ্যাপক ফজলু মিঞা, অধ্যাপক মোসলেম উদ্দিন, এম. মোবারক হোসেন, মোঃ হাবিবুর রহমান তাড়াশী, মোঃ আফজাল হোসেন, এ্যাডভোকেট মহাসিন আলী , মীর সালাম সহ অনেকে। মুক্তিযুদ্ধকালীন তাড়াশ উপজেলার তৎকালীন ছাত্র নেতারা ১০৭টি সিভিল গান বা বাংলায় বলা যায় সিভিল বন্ধুক একত্রিত করে তাদের নেতৃত্বে থানার স্থানীয় ভাবে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। মুক্তিযুদ্ধাদের যারা অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন তারা হলেন গাজী আব্দুর রহমান মিঞা, গাজী এম. মোবারক হোসেন, গাজী আব্দুল বাছেদ , শহীদ ওসমান গণি এবং থানার ৩০৩ রাইফেলসহ থানার কয়েকজন পুলিশ প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ কাল রাত্রিতে নির্বিচারে গণ হত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনীরা বাঙালিদের উপর। ত্যাগ করে শহর দলে দলে শরনার্থী। তখন যেসকল মুক্তিযুদ্ধারা এই উপজেলাতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন সেই যুক্তিযুদ্ধারা জনগণের সাহায্য নিয়ে এই শরণার্থীদের অর্থাৎ তাড়াশ দিয়ে ভারতসহ অন্যান্য স্থানে যেসকল শরণার্থীগণ গিয়েছেন তাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন মুক্তিযুদ্ধা দল। পাশাপাশি এগিয়ে চলেছে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোর কদমে।

বগুড়ার এঁড়ের বাজার আক্রমণ ও বাঘাবাড়ী ও উল্লাপাড়া সুরক্ষার জন্য তাড়াশের প্রায় ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা অংশ নিয়েছে তাড়াশের পাক সেনাদের দখল করার পূর্ব পর্যন্ত । তাড়াশ পাক হানাদের মুক্ত ছিল মার্চ মাস থেকে ২৬ শে এপ্রিল মাস পর্যন্ত । তাড়াশের পতন ঘাট এবং পাকি সেনারা দখল করে নেয় এবং গণহত্যা চালায় ২৭ শে এপ্রিল ১৯৭১ সালে পাক সেনারা । এই সময় তাড়াশ পতন হলে ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন, মোঃ আফজাল হোসেন, আব্দুস সোবাহান, আমিরুজ্জামান খোকন, আরশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে তাড়াশ থানার শরনার্থীদের সঙ্গে নিয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে গমন করেন।

নওগাঁ এলাকায় গোপন প্রশিক্ষণ শুরু করা হয়েছিল। মোঃ আতাউর রহমান, আব্দুর রহমান মিঞা, এম. মোবারক হোসেন, অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়। তখনকার তুখর ছাত্রনেতা আব্দুল লতিফ মির্জার নেতৃতে সোহরাপ হোসেন সরকার, ছাত্রনেতা বিমল বাবু, আব্দুল আজিজ সরকার, আব্দুল আজিজ মির্জা, লুৎফর রহমানসহ মোট সাতজন তাড়াশের জেলা অর্থাৎ সিরাজগঞ্জ জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ অস্ত্র সংগ্রহ করত তারা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি ক্যাম্প স্থাপন করেন। তার নাম ছিল ’’পলাশডাঙ্গা যুব শিবির’’ ক্যাম্প এবং এর মধ্যে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়। [৫]

প্রশাসন[সম্পাদনা]

তাড়াশ উপজেলার পৌরসভার সংখ্যা ০১ টি (তাড়াশ পৌরসভা), ইউনিয়নের সংখ্যা, ০৮টি, মৌজার সংখ্যা ১৭৮ টি৷উপজেলাটিতে ভোটার এলাকার সংখ্যা ২৯১ টি, ভোট কেন্দ্র ৫৭ টি, মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১১৯ জন (ভাতা ভোগী- ১০৩ জন) উপজেলা ই-সেন্টার, ১ টি এবং ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র ০৮ টি আছে। উপজেলা ই-সেন্টার ০১ টি। বেসরকারী সংস্থা (এনজিও) ১৭ টি। [৬] এর ইউনিয়নগুলো হলো, সগুনা ইউনিয়ন, তালম ইউনিয়ন, বারুহাস ইউনিয়ন, মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়ন, নওগাঁ ইউনিয়ন, তাড়াশ সদর ইউনিয়ন, মাধাইনগর ইউনিয়ন, দেশীগ্রাম ইউনিয়ন

ব্রিটিশ আমলে তাড়াশ থানা প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জ মহকুমার একটি অংশ ছিল। এরপর পাকিস্তান আমলে তাড়াশ থানার কার্যক্রম আগের মতোই চলতে থাকে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৮৪ সালে সারা দেশকে ৬৪টি প্রশাসনিক জেলা এবং ৪২০টি উপজেলায় ভাগ করা হয়। আগের বেশিরভাগ থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৪ সালে তাড়াশ উপজেলা পরিষদ গঠিত হয়। [৭]

ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) যার উদ্দেশ্য হলো তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা নিশ্চিত করা।[৮][৯] এটি ২০০৭ সালে ‘কমিউনিটি ইনফরমেশন সেন্টার’ (সিইসি) নামে শুরু হয়। এবং একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রাম (এটুআই) এর আওতায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদে পাইলট আকারে সিইসি এর কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হয়।

এখানে আশ্রয়ন প্রকল্প ০৪ টি (আদর্শ গ্রাম- ০৩ টি, আবাসন- ০৩ টি, মোট সুবিধাভোগী- ৭৩০ পরিবার) সাব-রেজিষ্টার অফিস ০১ টি। [৬]

প্রধানত এই উপজেলার নির্বাচনী আসন সিরাজগঞ্জ-৩[১০] এই নির্বাচনী এলাকাতে ১৯৮৬ সালে ইসহাক হোসেন তালুকদার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। এবং তিনি ১৯৮৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে তিন দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১১][১২][১৩][১৪] এরপর তাড়াশ উপজেলাতে সংসদ সদস্য হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৮ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল থেকে গাজী আতাউর রহমান[১৫]

আব্দুল মান্নান তালুকদার ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে সিরাজগঞ্জ-৩ অর্থাৎ তাড়াশ উপজেলাতে সংসদ সদস্য হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯১, ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬, জুন ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (পরপর চার বার) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১৬][১৭][১৮][১৯][২০] এরপর ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন গাজী ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন[২১] ২০১৮ আব্দুল আজিজ তাড়াশ তথা সিরাজগঞ্জ-৩ থেকে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২২][২৩]

পৌরসভা[সম্পাদনা]

এই পৌরসভার নাম তাড়াশ পৌরসভা, সিরাজগঞ্জ। এই পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের ৩১ তারিখে।পৌরসভাটির আয়তন ২৭.৫৩ বর্গ কিলোমিটার। এটি শ্রেণী ‘গ’ এর পৌরসভা। এর ওয়ার্ড সংখ্যা ৯টি(ভিত্তিক কাজ চলমান  রয়েছে)। এর মহল্লার সংখ্যা ১৬টি। এর মোট জনসংখ্যা ২৫,০৬৭জন। এখানকার ভোটার সংখ্যা ১৬,৭১৬জন। এই পৌরসভাতে মহিলা ৮,৫৬০জন, পুরুষ ৮,১৫৬জন। মোট খানার সংখ্যা ৬,০৪৮টি। এর আবাসিক হোল্ডিং ৬,২৯৮টি। এর বাণিজ্যিক হোল্ডিং ১,২০৩টি। এর সরকারি হোল্ডিং ৪৭টি এবং মোট হোল্ডিং ৭,৫৪৮টি। ট্রেডলাইসেন্সের সংখ্যা ৯৮৫টি।।বার্ষিকসরকারি পৌর কর ৩৪,৪২,১৩২টাকা।ব্যক্তি পর্যায়ে পৌর কর ২১,২১,৯২০টাকা। হাট ০২টি। দৈনিক বাজার ০৫টি। সড়ক বাতির সংখ্যা ২৬৪টি। তাড়াপাম্পের সংখ্যা ১৭টি। কর্মজীবি ল্যাকটেটিং মাদার কার্ডেও সংখ্যা ৪০০টি। বিধাব কার্ডের সংখ্যা ২৫টি।বয়স্ক কার্ডের সংখ্যা ৭৪টি। প্রতিবন্ধি কার্ডের সংখ্যা ঃ ২৪টি।উন্নয়ন খাতে সরকারী বরাদ্দ ১,২১,২০,০০০টাকা। টেন্ডারকৃত প্রকল্প ১৪ টি। অর্থের পরিমান ৪৬,০০০০টাকা, রাজস্ব খাতে সরকারী বরাদ্দ ২,৭০,০০০টাকা। [২৪]

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ[সম্পাদনা]

▪️ ড. হোসেন মনসুর

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

এই উপজেলার জনগোষ্ঠীর আয়ের উৎস ৮৪.৭৫% কৃষি, ১.৬২% অকৃষি শ্রমিক, শিল্প ০.৬২%, ব্যবসা ৪.৯০%, ০.৯৯% যোগাযোগ ও পরিবহন , চাকরি ২.৭৪%, নির্মাণ ০.৪১% ধর্মীয় সেবায় ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৭% এবং অন্যান্য ৪.১২%। ধান, চাল, তরমুজ এখানকার প্রধান রপ্তানিদ্রব্য৷ [৪] এছাড়া এটি একটি কৃষিপ্রধান এলাকা যার তিন ভাগের এক ভাগ চলনবিলের মধ্যে অবস্থিত। খাদ্যশস্য এবং মাছ এখানকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। [২৫] যেহেতু তাড়াশ ও অন্যান্য উপজেলা চলন বিল মাছের জন্য বিখ্যাত। তাই প্রতি বছর তাড়াশ ও অন্যান্য উপজেলায় এই বিল থেকে টনকে টন মাছ ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। তাড়াশ ও অন্যান্য উপজেলায় এই বিল থেকে প্রতি মৌসুমে প্রায় ১০০ কোটি টাকার শুঁটকি মাছ দেশ বিদেশে রফতানি হয়েছে। তাড়াশ ও অন্যান্য উপজেলায় প্রতি বছর সব মিলে দেড় থেকে দুইশো কোটি টাকার মাছ আহরণ করা হয়েছে। তবে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে তাড়াশ ও অন্যান্য উপজেলায় অন্যান্য বছরের তুলনায় চলনবিলে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মাছের উৎপাদন কম হয় এবং এই পেশার সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫০,০০০ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[২৬]

এই উপজেলাতে সেচ দেওয়া হয় এমন জমির পরিমাণ ২৫৪৯০ হেক্টর। এখানকার প্রধান ফসল ধান, গম, সরিষা, ভূট্টা, শাক সবজী। কৃষি উন্নতির দিকে নজর প্রদান করলে,পুকুরের সংখ্যা ২০৫৫টি রয়েছে। পুকুর ছাড়াও খালের সংখ্যা ১২টি এবং যারা মাছ চাষ করেন (মৎস্য চাষী) ৪২০০ জন ও যারা মাছ আহরণ করে জীবিকা পায় (মৎস্যজীবি) ৩২৫০ জন। [৬] এখানে পাট ও তিল বিলুপ্ত প্রায়। প্রধান ফল হলো - আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, তরমুজ , পেঁপে, কলা[৪]

এই উপজেলাতে ১০০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ১টি খাদ্য গুদাম আছে৷ বাণিজ্যিক তথা অর্থনীতির দিকে দৃষ্টি দিলে, এখানে আছে ব্যাংক ০৮ টি। [৬]

সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও বেসরকারী ব্যাংক- পূবালী ব্যাংক লিঃ, ব্র্যাক ব্যাংকের এসএমই ইউনিট অর্থনৈতিক ভাবে তাড়াশ উপজেলায় সরকারী ব্যাংক৷

বিশেষায়িত ব্যাংক- রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ব্যাংকের শাখা রয়েছে। [২৭]

ভাষা সংস্কৃতি ও খেলাধুলা[সম্পাদনা]

তাড়াশ উপজেলার মানুষ প্রধানত বাংলা ভাষী৷ এলাকায় জারী, সারি, ভাটিয়ালী, কীর্তন, ধোয়া গান সহ নানা গ্রামীণ সংস্কৃতি পালন করা হয়। সবাই বিভিন্ন ধর্মীয় বা জাতীয় উৎসব, যেমন ঈদ , পূজা, বাংলা নববর্ষসহ বিভিন্ন জাতীয় উৎসবে মেতে উঠে। তারা ভুলে যায় ধর্ম, বর্ণ, গোত্র সব ভেদাভেদ তারা নিরপেক্ষভাবে সকলের অনুষ্ঠান বা উৎসবে যোগদান করে। [২৮] খেলাধুলাতে এই উপজেলাতে রয়েছে মাত্র একটি খেলার মাঠ। রয়েছে ২০ টি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব , একটি সিনেমা হল, একটি নাট্যমঞ্চ।[৬] পাতা এই উপজেলায় কোন খেলার মাঠ নেই এবং নেই কোন ষ্টেডিয়াম নেই। তাই ফুটবল ও ক্রিকেটের খুব একটা নেই। তবে প্রচলিত রয়েছে গ্রামীণ কিছু খেলাধুলা৷ বিনোদন বলতে গ্রামীণ যাত্রাপালা, মেলা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এখানে শিল্প-সংস্কৃতি প্রায় বদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। নেই কোন পার্ক কিংবা শিশু পার্ক৷ তাই রুদ্ধ হচ্ছে শিশুদের মানসিক বিকাশ। [২৯]

শিল্প[সম্পাদনা]

এখানকার শিল্প বলতে রয়েছে কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, নকশিকাঁথা শিল্প, চাটাই, বাঁশ ও বেতের কাজ৷ এগুলো ফুটে উঠেছে হাটবাজার ও মেলাতে৷ [৪] এছাড়া তাড়াশ উপজেলাতে চালু তাঁতের সংখ্যা আটটি, বন্ধ তাঁতের সংখ্যা একটি, মোট তাঁতের সংখ্যা নয়টি। [৩০]

বিদ্যুৎ শিল্প[সম্পাদনা]

এই উপজেলার সব কয়টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসুচির আওতাধীন হয়েছে। তবে রয়েছে ২০.৯৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ।[৪]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

এই উপজেলাতে মোট জনসংখ্যার মধ্যে শিক্ষার গড় হার মাত্র ৩৯%,যেখানে পুরুষের শিক্ষার হার ৪৩ এবং নারী শিক্ষার হার ৩৫%৷ [৩১] তাড়াশ উপজেলাতে সরকারী ও রেজিঃ মিলে মোট ১২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। যার মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫০ টি এবং রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৯ টি। এছাড়া কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ০৪ টি। কারিগরি বিদ্যালয় ০৪ টি, কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ ০৩ টি, টেকনিক্যাল কলেজ ০১ টি, মাদ্রাসা ২৩ টি (দাখিল-১৭টি, আলীম-০২টি, ফাজিল-০২টি) এবতেদায়ী মাদ্রাসা ১০ টি, ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ১৮ টি [৬]
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর কয়েকটি নাম হলো -ধামাইচ হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যা ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কুন্দইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৩৭ সালে। বিন্নাবাড়ী রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত ১৯৭৯ সালে, ধাপতেতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত, সান্দুরিয়া রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত, বিন্নাবাড়ী রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, কাটাবাড়ী রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, ভেটুয়া রেজি : প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিতপতিরামপুর রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত, পতিরামপুর রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত,দেওড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, বলদিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত, দেশীগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত,চরকুশাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত, ৫৩ নং বড় পৌওতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত,নওগাঁ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত৷ শরিফাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত ১৯৬৮ সালে , সাকুয়া দিঘী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত,ভাটরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৪ সালে। [৩২]। এছাড়া তাড়াশ উপজেলাতে মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে ৩০টি ও ৫টি। [৬] উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিলচলন বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় (কুন্দইল ০১-০১-১৯৭১),ধামাইচ বিলচলন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৮), লালুয়ামাঝিড়া উচ্চ বিদ্যালয় (০১/০১/১৯৯৪), তাড়াশ গার্লস হাই স্কুল (১৯৮৩) নাদোসৈয়দপুর জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৪), বস্তুল ইসাহাক উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৭), মাঝদক্ষিণা কে, আর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৮) , কুন্দাশন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭১), বসতুল ইছাহক উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৭)। [৩৩]

তাড়াশ উপজেলাতে রয়েছে অনার্স কলেজ ০২টি,মোট কলেজ ০৭টি, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ০৪ টি,বালিকা বিদ্যালয় ০১টি,সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ০১টি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২টি,কিন্ডারগার্টেন ০৮টি ও এখানে কোচিং সেন্টার ২০টি রয়েছে। এখানে শিক্ষারহার ৮৫শতাংশ।[৩৩]

স্বাস্থ্য[সম্পাদনা]

উপজেলার নলকূপের অবস্থা

এই উপজেলাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১টি, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭টি আছে। পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৪৮%, ট্যাপ ০.২১%, পুকুর ০.১৮% এবং অন্যান্য ৪.১৩%। স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলায় ১৮.৯৬% (গ্রামে ১৭.৩৭% ও শহরে ৬৪.০৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭১.৮৫% (গ্রামে ৭৩.২৯% ও শহরে ৩১.০৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.১৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। [৪]

তাড়াশের টয়লেটের ব্যবস্থা

এখানে হাসপাতাল ০১ টি (৩১ শয্যা বিশিষ্ট) এবং উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ০৮ টি আছে। এখানে পশু হাসপাতাল ০১ টি রয়েছে। উপজেলাটিতে সরকারি ৫০ শষ্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হয়েছে ০১টি।এখানে যক্ষ্মা রোগপ্রতিরোধক কেন্দ্র রয়েছে ০১টি। এখানে বে-সরকারি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার রয়েছে ০৪টি আছে। তাড়াশে বে-সরকারি চক্ষু সেন্টার রয়েছে ০১টি। পুরুষের গড় আয়ু ৫৭ বছর। মহিলাদের গড় আয়ু ৫৪ বছর। [৬]

যোগাযোগ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

এখানে পাকা রাস্তা ১২৮.৮০ কি.মি. ও কাঁচা রাস্তা ৪৩১.৬৯ কি.মি.। টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ০১ টি রয়েছে ৷ [৬]

সরাসরি বাসে করে তাড়াশ উপজেলা পরিষদের আসার জন্য সিরাজগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড থেকে বা সিএনজি করে সিরাজগঞ্জ সদর থেকে সিরাজগঞ্জ রোড এবং সিরাজগঞ্জ রোড থেকে সরাসরি সিএনজি করে তাড়াশ উপজেলায় আসা যায়। এছাড়া বাংলাদেশের যেকোন প্রান্ত থেকে সিরাজগঞ্জ সরক নামক স্থানে আসতে হয়।[৩৪]

উল্লেখযোগ্য স্থান[সম্পাদনা]

তাড়াশ উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলো হলো [৩৫] - প্রাচীন নির্দেশনাদি ও প্রত্নসম্পদ ভাগনের মসজিদ (নবগ্রাম , ১৪৫৪) শাহী মসজিদ (নবগ্রাম, ১৫২৬), বারুহাসের গদাই সরকার মসজিদ , তাড়াশের সান্দুরিয়া জামে মসজিদ, বারুহাস মসজিদ (১৩২০), তাড়াশের ইসলামপুর জামে মসজিদ (১৮০২) এবং তাড়াশ শিব মন্দির। [৪]

নওগাঁ শাহ শরীফ জিন্দানী মাজার[সম্পাদনা]

সুলতান নসরত শাহ এর রাজত্ব কালে তথা ৯৩২ হিজরীতে (১৫২৬ খ্রিঃ) এই শাহী মসজিদ নির্মিত হয়েছিলো। ৯ ফুট ৪ ইঞ্চি মসজিদের ভেতরের মাজারের দৈর্ঘ্য এবং ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি প্রস্থ । বছরান্তর এখানে চৈত্র মাসের প্রথম বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারে ৩ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত বাৎসরিক ওরশ পালন করা হয়। তাড়াশের নওগাঁ গ্রামে হযরত শাহ শরীফ জিন্দানী মাজার শরীফ অবস্থিত।[৩৬]

বেহুলার কূপ[সম্পাদনা]

বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী লোকগাঁথা কাহিনীর বেহুলার বাড়ী ও বেহুলার একটি কূপ সহ বেহুলার জীবনাবসানের নৌকা দেখতে পারা যায়। তাড়াশ বাজার থেকে গাড়ি করে গিয়ে বিনসাড়া নামক স্থানে বেহুলার কূপ দেখতে পারা যাবে।

ঐতিহাসিক চলনবিল[সম্পাদনা]

বর্ষাকালে বিশ্বরোড়ের মান্নান নগর হতে ৮ ও ৯ নং ব্রীজ এলাকা এবং সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল ও চরকুশাবাড়ী নামক স্থান হতে ঐতিহাসিক চলনবিলের এক অভাবনীয় ও মনোহর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অবলোকন করা যায়। তাড়াশ উপজেলা হলো চলনবিলের মূল সৈন্দর্য্য। সিরাজগঞ্জ রোড থেকে রাজশাহী রোডে যাওয়ার সময় রাস্তার দুই ধারে চলনবিলের সৈন্দর্য্য দেখতে পারা যায়।[৩৭]

নবগ্রাম মসজিদ[সম্পাদনা]

এই উপজেলায় ষড়োশ শতাব্দীতে একটি মসজিদ নির্মিত হয়েছে, মসজিদটির নাম হলো নবগ্রাম মসজিদ[৩৮] তাড়াশের ইতিহাসে গৌড় অধিপতি নাসির উদ্দিন নসরত শাহের শাসনামলে "শাহানশাহ্ হযরত শাহ শরীফ জিন্দানী-এর মাজার" সংলগ্ন এলাকায় এটি নির্মাণ করা হয়।[৩৯] এই মসজিদ তাড়াশ উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।[৪০]

১৯৩৭ সালের দিকে প্রাপ্ত শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহের পুত্র সুলতান নাসিরুদ্দীন আবুল মুজাফফর নুসরত শাহের রাজত্বকালে ৯৩২ হিজরির ৪ রজব (১৫২৬ সালের ২১ এপ্রিল) "মীর বহর মনোয়ার আনার পুত্র আজিয়াল মিয়া জংদার" (যোদ্ধা) মসজিদটি নির্মাণ করেন।[৩৮]

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

তাড়াশ উপজেলাতে জনসংখ্যার ৬৯৯৪১ জন পুরুষ এবং ৭১৪৯৭ জন মহিলা৷ সব মিলে মোট জনসংখ্যা ১৪১৪৩৮ জন৷ প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৬৫৭ জন। জাতীয় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার- ১.৪৭% তার মধ্যে তাড়াশ- ১.৩০%। [৬]

অন্য সূত্র অনুযায়ী,তাড়াশ উপজেলার জনসংখ্যা ১৬৭৬৪৭ জন৷ মহিলা ও পুরুষ যথাক্রমে মহিলা ৮২৭৫১ জন এবং ৮৪৮৯৬ জন । মুসলিম ১৫১৯০৩ জন,হিন্দু ১৫৫০৯ জন, বৌদ্ধ ২০৪ জন, এবং অন্যান্য ৩১ জন। [৪] এছাড়া এই অঞ্চলে তাঁতিদের পরিবারের সংখ্যা তিনটি,[৩০]

জীব বৈচিত্র[সম্পাদনা]

তাড়াশ উপজেলায় পাওয়া কচ্ছপ

তাড়াশ চলনবিলে অবস্থান করছে যার কারণে প্রজাতির কচ্ছপ এখানে পাওয়া গেছে। এটি ছিল একটি কড়ি ক্যাইট্রা প্রজাতির কচ্ছপ (দ্বিপদ নামকরণ: Pangshura Tecta) কচ্ছপটি উদ্ধার করা হয়েছিল হামকুড়িয়া এলাকায় চলনবিল থেকে। কচ্ছপটি উদ্ধার করেছিল পরিবেশবাদী সংগঠন ‘দি বার্ড সেফটি হাউজ’-এর উদ্ধারকারী দল। [৪১]

দূর্যোগের ঘটনা[সম্পাদনা]

এই উপজেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে ১৮৯৭, ১৯৪৩ ও ১৯৭৪ সালে৷ তাছাড়া ভূমিকম্পে এ উপজেলার ঘরবাড়ি ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৮৮৫ ও ১৮৯৭ সালে৷ [৪]

বাল্যবিবাহ[সম্পাদনা]

উপজেলাতে বাল্যবিবাহের বর্তমান হার ১৫ বছরের নিচে ১৮% ও ১৮ বছরের নিচে ৫২%৷ লক্ষ্যমাত্রা ও সময়সীমা অনুযায়ী বাল্যবিবাহের হার হলো - ২০১৬ সালে ১৫ বছরের নিচে বাল্যবিবাহের হার ১৫%, ২০১৭ সালে ১০%, ২০১৮ সালে ০৬%, ২০১৯ সালে ০৪%, ২০২০ সালে ০২%, ২০২১ সালে ০০%। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রা ও সময়সীমা অনুযায়ী বাল্যবিবাহের হার হলো ২০১৬ সালে ১৮ বছরের নিচে বাল্যবিবাহের হার ৪৫%, ২০১৭ সালে ৩৫%, ২০১৮ সালে ৩২%, ২০১৯ সালে ৩০%, ২০২০ সালে ২৫%, ২০২১ সালে ১৭%। [৪২]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে জয়পুরহাট সদর উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "সিটি করপোরেশন হওয়ার পথে ময়মনসিংহ (তাড়াশসহ)"। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  3. "তাড়াশ উপজেলার নামকরণ ও ইতিহাস"। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  4. "তাড়াস উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। ২০১৬-০৪-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০১ 
  5. "তাড়াশ উপজেলা"http। ২০১৯-১২-১৩ তারিখে ও মুক্তিযোদ্ধার তালিকা মূল |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৩ 
  6. "তাড়াশ উপজেলা"http (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১২-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৩ 
  7. "তাড়াশ জেলার ইতিহাস"। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  8. "Access to Information (A2I) Programme". Retrieved 31 March 2014. http://www.bangladesh.gov.bd/index.php?option=com_content&task=view&id=84&Itemid=158 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে
  9. "Access to Information: Helping Citizens in Bangladesh Exercise their Rights". The World Bank Institute. Retrieved 31 March 2014. https://wbi.worldbank.org/wbi/stories/access-information-helping-citizens-bangladesh-exercise-their-rights ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে
  10. "জাতীয় সংসদীয় আসনবিন্যাস (২০১৩) গেজেট" (পিডিএফ)। নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ। ১৬ জুন ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৫ 
  11. "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  12. "৯ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২০১৬-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১১ 
  13. "১০ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২০১৯-০৯-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১১ 
  14. "৩য় জাতীয় সংসদ সদস্যদের তালিকা" (পিডিএফ)বাংলাদেশ সংসদ। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৪ 
  15. "৪র্থ জাতীয় সংসদ সদস্যদের তালিকা" (পিডিএফ)বাংলাদেশ সংসদ। ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৪ 
  16. "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  17. "৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  18. "৭ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  19. "৮ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  20. "বিএনপিতে আবদুল মান্নান তালুকদার আওয়ামী লীগে মিলন নাকি নতুন মুখ"বাংলাদেশ প্রতিদিন (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১১-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০৪ 
  21. গাজী ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন, সিরাজগঞ্জ-৩। "Constituency 64_10th_bn"www.parliament.gov.bd। ২০১৮-০৬-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-২৭ 
  22. "আবদুল আজিজ"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  23. "সিরাজগঞ্জ-৩: বেসরকারি ফলে নৌকার প্রার্থী আব্দুল আজিজ জয়ী"দৈনিক ইত্তেফাক। ১২ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  24. "তাড়াশ পৌরসভা"। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  25. "তাড়াশ উপজেলা"http (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১২-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১২ 
  26. সিরাজগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা (জানুয়ারি ৩০, ২০১০ খ্রিস্টাব্দ)। "লোকালয়:চলনবিলে মাছের আকাল"দৈনিক সমকাল। ঢাকা। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (ওয়েব) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১০  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  27. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  28. "তাড়াশ উপজেলা"http (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১২-১৩ তারিখে ও সাংস্কৃতি মূল |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৩ 
  29. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  30. বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের লোকজন সংস্কৃতি গ্রন্থমালা:সিরাজগঞ্জ। পৃষ্ঠা ৩৯
  31. বাংলা একাডেমি বাংলাদেশ লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা:সিরাজগঞ্জ। পৃষ্ঠা ৩৬। 
  32. http://tarash.sirajganj.gov.bd/site/view/primary_school/প্রাথমিক ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে বিদ্যালয়
  33. "মাধ্যমিক বিদ্যালয়"। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  34. "তাড়াশ উপজেলা - যোগাযোগ"। ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  35. "তাড়াশ উপজেলার দর্শনীয় স্থান"। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  36. "তাড়াশ উপজেলা - সরকারি ওয়েবসাইট"। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  37. "তাড়াশের সরকারি ওয়েবসাইট"। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  38. নাজিমউদ্দিন আহমেদ (জানুয়ারি ২০০৩)। "নবগ্রাম মসজিদ"। সিরাজুল ইসলাম[[বাংলাপিডিয়া]]ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশআইএসবিএন 984-32-0576-6। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৮  ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
  39. "মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন তাড়াশের নওগাঁ শাহী মসজিদ"দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইন। ২৯ জানুয়ারি ২০১৭। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ 
  40. "তাড়াশের শাহী মসজিদ মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন"দৈনিক জনতা অনলাইন। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ 
  41. Sirajgonj, আলোকিত সিরাজগঞ্জ :: Alokito। "তাড়াশে মিলল বিরল প্রজাতির কচ্ছপ"Alokito Sirajgonj। ২০২০-০৯-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৪ 
  42. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]