তাজিকিস্তানে ইসলাম
সুন্নি ইসলাম তাজিকিস্তানে সর্বাধিক প্রচলিত ধর্ম এবং ২০০৯ সাল থেকে সুন্নি ইসলামের হানাফি মাযহাব তাজিকিস্তানের স্বীকৃত ধর্মীয় ঐতিহ্য। [২] ২০০৯ সালের মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তি অনুসারে তাজিকিস্তানের জনসংখ্যার ৯৮% মুসলিম (প্রায় ৯৫% সুন্নি ও ৩% শিয়া)। [৩] এছাড়া তাজিকিস্তানে কয়েকটি সুফি তরিকাও অনুসরণ করা হয়।
জনসংখ্যা ও প্রাথমিক ইতিহাস
[সম্পাদনা]সমগ্র মধ্য এশিয়ার প্রধান ধর্ম ইসলাম সপ্তম শতকে আরবদের মাধ্যমে এই অঞ্চলে আসে এবং সেই সময় থেকে ইসলাম তাজিক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, সামানি রাষ্ট্র ইসলামি স্থাপত্যের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয়ে ওঠে এবং ইসলামি-ফার্সি সংস্কৃতি মধ্য এশিয়ার গভীরে ছড়িয়ে দেয়। জাতিক জাতির পিতা হিসেবে পরিচিত ইসমাইল সামানি এই অঞ্চলে ইসলাম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এর ফলে তখন মধ্য এশিয়ার জনগণ ব্যাপকভাবে ইসলাম গ্রহণ করতে শুরু করে, বিশেষ করে বর্তমান কাজাখস্তানের তারাজ অঞ্চলে। ১৮৭৩ সালে খিভা ভ্রমণের সময় পরিব্রাজক হুগো রুডলফ ফন স্টুম মন্তব্য করেন যে, তাজিকরা নবীর ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে শিথিল ছিল।[৪]
সোভিয়েত যুগে সমাজকে ধর্মনিরপেক্ষ করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং সোভিয়েত-পরবর্তী সময়ে ধর্মীয় চর্চা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। ২০০৪ সালের পবিত্র রমজান মাসে গ্রামীণ অঞ্চলে ৯৯% এবং শহরাঞ্চলে ৭০% মুসলিম রোজা পালন করে। শিয়া মুসলিমদের মধ্যে বিশেষ করে ইসমাইলিরা মূলত প্রত্যন্ত গর্নো-বাদাখশান অঞ্চল, দক্ষিণ খাতলন জেলার কিছু অংশ ও দুশানবে শহরে বসবাস করে। অন্যান্য ধর্মের মধ্যে রুশ অর্থোডক্স ধর্ম কেবলমাত্র সেখানে বসবাসকারী রুশদের মধ্যে প্রচলিত, যদিও ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে রুশ জনগোষ্ঠী উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছিল। কিছু ছোট খ্রিস্টান গোষ্ঠী বর্তমানে তুলনামূলকভাবে স্বাধীনভাবে উপাসনা করতে পারে। এছাড়াও সেখানে একটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র ইহুদি সম্প্রদায় রয়েছে। [২]
শিয়া মুসলিম
সুন্নি ইসলাম মধ্য এশিয়ার স্থায়ী মানুষের মধ্যে; বিশেষ করে তাজিকদের মধ্যে ১,২০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্য বহন করে আসছে। তবে সংখ্যালঘু পামিরি গোষ্ঠীর লোকেরা শিয়াদের ক্ষুদ্র উপদল নিজারি ইসমাইলি মতবাদের অনুসারী। নবম শতকের গোড়ার দিকে মধ্য এশিয়ায় ইসমাইলি মতবাদ প্রচার লাভ করে। এরপর বহু শতাব্দী ধরে নির্যাতন সত্ত্বেও এটি প্রত্যন্ত পামির পর্বতমালায় টিকে রয়েছে এবং এর অনুসারীরা আগা খানের নেতৃত্ব অনুসরণ করে। ২০০৯ সালের পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপ অনুযায়ী তাজিকিস্তানে ৪,০০,০০০-এর বেশি শিয়া মুসলিম রয়েছে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭%। [৫]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Central Asia :: TAJIKISTAN"। CIA The World Factbook। ১৫ নভেম্বর ২০২১। ২০ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ ক খ "Все новости"। ২৫ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Tajikistan"। U.S. Department of State। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
- ↑ von Stumm, Hugo Rudolf (১৮৭৬)। Henvey, F., সম্পাদক। The Russian Campaign Against Khiva in 1873। Part 1 (ইংরেজি ভাষায়)। Mosa, P. কর্তৃক অনূদিত। Calcutta: Foreign Department Press। পৃষ্ঠা 267–270। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০২৪ – Google Books-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Mapping the Global Muslim Population"। Pew Research Center's Religion & Public Life Project (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-১০-০৭। ২০১৩-০৭-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-২৯।