তড়িৎ পরিবাহী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তড়িৎ পরিবাহী তারের মাধ্যমে দূর দূরান্তে তড়িৎ বা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়

পদার্থবিজ্ঞানের এবং তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশলের দৃষ্টিকোন থেকে তড়িৎ পরিবাহী বা বিদ্যুৎ পরিবাহী বা তড়িৎ পরিবাহক হলো সেই বস্তু যার মধ্য দিয়ে খুব সহজেই অর্থাৎ খুব অল্প বাধায় বা রোধে তড়িৎ বা বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে।[১] প্রধানত ধাতব পদার্থগুলো যেমন তামা বা রূপা ইত্যাদির তড়িৎ পরিবাহিতা খুব ভালো হয় কারণ এদের পরমাণুর গঠন অনুযায়ী সর্ব বহিঃস্থ খোলকে একটি করে ইলেকট্রন থাকে যা খুব সহজেই বা অল্প প্রণোদনাতেই ঐ পরিবাহীর পরমাণু থেকে পরমাণুতে চলাচল করতে পারে[২]। যেহেতু তড়িৎ প্রবাহ হচ্ছে আসলে চার্জ যুক্ত আধানের প্রবাহ তাই এই সহজে চলাচলে সক্ষম ইলেকট্রন খুব সহজে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহে সহায়তা করে। ঋণাত্মক আধানযুক্ত ইলেকট্রনই শুধু নয়, স্ফটিক সজ্জার মধ্য দিয়ে ধনাত্মক আধানও পরমাণুর আকারে প্রবাহিত হতে পারে যেটা ইলেকট্রন হোল নামে পরিচিত। আবার তড়িৎ কোষের (battery) মধ্যে দিয়ে আয়নের আকারেও আধান প্রবাহিত হতে পারে। এই সকল ধরনের আধানের প্রবাহই তড়িৎ প্রবাহ, তাই যার মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে তাকে তড়িৎ পরিবাহী বলা যায়। কিন্তু সাধারণভাবে তড়িৎ পরিবাহী বলতে ইলেকট্রন প্রবাহ করতে সক্ষম পদার্থকেই বোঝায়। দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুৎ পরিবহনকারী তারকে বিদ্যুৎ পরিবাহীর প্রতিশব্দ হিসেবেও দেখা হয়।

প্রকারভেদ[সম্পাদনা]

তড়িৎ পরিবাহী পদার্থসমূহকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়: সুপরিবাহী, অর্ধপরিবাহী, কুপরিবাহী।

  • সুপরিবাহী: যে বস্তুর মধ্য দিয়ে বিদ্যুত সহজেই প্রবাহিত হতে পারে বা চলাচল করতে পারে, তাকে সুপরিবাহী বলে। যেমন: লোহা, তামা, রূপা, সোনা ইত্যাদি।
  • অর্ধপরিবাহী: যে বস্তুর মধ্য দিয়ে নির্ধারিত মাত্রার বিদ্যুত প্রবাহিত হতে পারে তাকে অর্ধপরিবাহী বলে। যেমন: সিলিকন, জার্মেনিয়াম ইত্যাদি। তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে এদের পরিবাহিতা একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত দ্রুত হারে বৃদ্ধি পায়।
  • অন্তরক: যে বস্তুর মধ্য দিয়ে বিদ্যুত প্রবাহিত হতে পারে না তাকে অন্তরক বা কুপরিবাহী বলে। যেমন: কাঠ, প্লাস্টিক, কাগজ ইত্যাদি।

এছাড়া অতিপরিবাহী একটি বিশেষ প্রকারের পরিবাহী যার রোধ শূণ্য।

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সায়েন্সওয়ার্ল্ড ওয়েবসাইট
  2. হাইপার ফিজিক্স ওয়েবসাইট