ডেরেক আন্ডারউড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডেরেক আন্ডারউড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামডেরেক লেসলি আন্ডারউড
জন্ম (1945-06-08) ৮ জুন ১৯৪৫ (বয়স ৭৮)
ব্রোমলি, কেন্ট, ইংল্যান্ড
ডাকনামডেডলি
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স
বামহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৩৩)
৩০ জুন ১৯৬৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ বনাম শ্রীলঙ্কা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ২০)
১৮ জুলাই ১৯৭৩ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ ওডিআই১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ বনাম শ্রীলঙ্কা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬৩-১৯৮৭কেন্ট
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৮৬ ২৬ ৬৭৬ ৪১১
রানের সংখ্যা ৯৩৭ ৫৩ ৫,১৬৫ ৮১৫
ব্যাটিং গড় ১১.৫৬ ৫.৮৮ ১০.১২ ৭.০২
১০০/৫০ –/– –/– ১/২ –/–
সর্বোচ্চ রান ৪৫* ১৭ ১১১ ২৮
বল করেছে ২১,৮৬২ ১,২৭৮ ১৩৯,৭৮৩ ১৯,৮২৫
উইকেট ২৯৭ ৩২ ২,৪৬৫ ৫৭২
বোলিং গড় ২৫.৮৩ ২২.৯৩ ২০.২৮ ১৯.৪০
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৭ ১৫৩
ম্যাচে ১০ উইকেট - ৪৭ -
সেরা বোলিং ৮/৫১ ৪/৪৪ ৯/২৮ ৮/৩১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪৪/– ৬/– ২৬১/– ১০৮/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ১ জানুয়ারি ২০১৭

ডেরেক লেসলি আন্ডারউড, এমবিই (ইংরেজি: Derek Underwood; জন্ম: ৮ জুন, ১৯৪৫) কেন্টের ব্রোমলি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংল্যান্ডের সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ বোলার ছিলেন। ধীরগতিতে বামহাতে অর্থোডক্স বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিংয়ে দক্ষ ছিলেন ‘ডেডলি’ ডাকনামে পরিচিত ডেরেক আন্ডারউড। এছাড়াও তিনি মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

বেকেহাম ও পেঞ্জ গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেন। কিশোর বয়সেই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়াস চালান তিনি। কেন্ট ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে কাউন্টি ক্রিকেটে অংশ নেন। ১৯৬৩ সালে ১৭ বছর বয়সে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। অভিষেক মৌসুমেই সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের উইকেট লাভ করেন। এছাড়াও আরও নয়বার এক মৌসুমে শততম উইকেট পেয়েছিলেন। কিন্তু তার ব্যাটিংয়ে দক্ষতা তেমন ছিল না। ৬৭৬ খেলায় অংশ নিয়ে প্রতি ইনিংসে প্রায় দশ রান তুলতে পেরেছিলেন। ১৯৭১ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সেই নিজস্ব সহস্রতম প্রথম-শ্রেণীর উইকেট তুলে নেন। কেবলমাত্র জর্জ লোহম্যানউইলফ্রেড রোডস তার চেয়ে কম বয়সে ১,০০০ উইকেটের সন্ধান পেয়েছেন।[১] এছাড়াও এ বয়সেই শততম টেস্ট উইকেট পেয়েছিলেন আন্ডারউড।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

১৯৬০-এর দশকের শেষদিকে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেন। এরপর দূর্দাণ্ড প্রতাপে এক দশকেরও অধিককাল বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিন বোলারের মর্যাদা লাভ করেছেন। ধ্রুপদী স্পিনার না হবার ফলে আন্ডারউড মিডিয়াম পেস বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন তিনি। প্রায়শঃই সিমিংয়ের অনুপযোগী ইংরেজ উইকেটে দক্ষতা দেখান। এরফলে তিনি ‘ডেডলি’ ডাকনামে পরিচিতি পান। পরিসংখ্যানগতভাবে তিনি ইংল্যান্ডের ছাতা হিসেবে কাজ করেছেন বিশেষভাবে বৃষ্টির দিনগুলোয়। তার ইনসুইং বলে ব্যাটসম্যানগণ লেগ বিফোরের ফাঁদে ধরা পড়তেন। এছাড়াও তিনি ধারাবাহিকভাবে নিখুঁতভাবে বোলিং করে দারুণ জনপ্রিয়তা পান।

২৫.৮৩ গড়ে ২৯৭টি টেস্ট উইকেট লাভ করেন আন্ডারউড। ১৯৬৮ সালে পঞ্চম টেস্ট শেষ হবার মাত্র আধা ঘণ্টা পূর্বে চার অস্ট্রেলীয় উইকেট লাভ করেন মাত্র ২৭ বলে। কিন্তু পঞ্চম দিনে প্রচণ্ড বজ্রঝড়ে খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়। এরফলে অস্ট্রেলিয়া দল ১-০ ব্যবধানে অ্যাশেজ সিরিজ জয়ে সক্ষম হয়।[১] ১৯৭০-৭১ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফর করেন। সিডনিতে অনুষ্ঠিত সপ্তম টেস্টে টেরি জেনারকে আউট করে দলকে অ্যাশেজ পুণরুদ্ধারে ভূমিকা রাখেন।

বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৭০-এর দশকের শেষার্ধ্বে ক্যারি প্যাকারের বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অ্যালান নট, ডেনিস অ্যামিস, বব উলমারটনি গ্রেগের সাথে তিনিও অংশ নেন। এছাড়াও ১৯৮১-৮২ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্রোহী দলের সফরে অংশ নেন।

৪২ বছর বয়সে ১৯৮৭ সালে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে আন্ডারউড অবসর গ্রহণ করেন। এসময় তিনি ২০-এর অল্প বেশি গড়ে ২,৪৬৫ উইকেট নিয়েছিলেন।[১]

মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

তিনি প্রায়শঃই বলতেন যে, বোলিং হচ্ছে নিম্ন মানসিকতাপূর্ণ পেশা যা থেকে দূরে অবস্থান করে ভুল না করা পর্যন্ত সঠিক রেখা বরাবর বল ফেলা।[২] এরফলে দ্রুত বা দীর্ঘ সময়ে হলেও প্রত্যেক ব্যাটসম্যান একবার হলেও ভুল করবেন।

কিথ ডানস্ট্যান এ প্রসঙ্গে লিখেছেন যে, কোন কারণে পিচে ছিদ্র খুঁজে নিয়ে একই জায়গায় ক্রমাগত বল ফেলতেন তিনি।[৩]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

১৯৮১ সালে এমবিই উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯৮৭ সালে প্রাইমারি ক্লাবের উপদেষ্টা মনোনীত হন। ২০০৪ সালে উইজডেনের এক নিবন্ধে তাকে বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ইংল্যান্ডের সেরা একাদশের সদস্যরূপে ঘোষণা করে।[৪] ২০০৮ সালে ঘোষণা করা হয় যে, পরের বছরের জন্য তিনি এমসিসি’র প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন।

৩০ জানুয়ারি, ২০০৯ তারিখে ক্যান্টারবারি ক্যাথেড্রালে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্যান্টারবারি ক্রাইস্ট চার্চ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানীয় ফেলোরূপে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়।[৫] ১৬ জুলাই, ২০০৯ তারিখে নীল হার্ভে, ডেভিড গাওয়ারঅ্যালান বর্ডারের সাথে তাকেও আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 173আইএসবিএন 1-869833-21-X। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১১ 
  2. p280, Chris Cowdrey and Jonathan Smith, Good Enough, Pelham Books, 1986
  3. p60, Richard Whitington, Captains Outrageous? Cricket in the seventies, Stanley Paul, 1972
  4. Cricinfo.com
  5. "Widdecombe, Holland and Underwood are appointed honorary fellows"Canterbury Christ Church University। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। ২০ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-১৯ 
  6. "Border, Harvey, Gower, Underwood inducted into Hall of Fame"। ২২ আগস্ট ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৫ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]