টিকা (অনাক্রম্যতা)
টিকা (অনাক্রম্যতা) | |
---|---|
হস্তক্ষেপমূলক কর্মকাণ্ড | |
![]() গুটিবসন্তের টিকা এবং এটি পরিচালনার জন্য সরঞ্জাম। | |
এমইএসএইচ | D014612 |
টিকা বা প্রতিষেধক (Vaccine): যে জৈব রাসায়নিক যৌগ যা অ্যান্টিবডি তৈরী হওয়ার প্রক্রিয়াকে উত্তেজিত করে দেহে কোন একটি রোগের জন্য প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অনাক্রম্যতা জন্মাতে সাহায্য করে তাকে টিকা বা vaccine বলে [১] কোনো প্রাণীর দেহে রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস (Virus), ব্যাক্টেরিয়া (Bacteria) ইত্যাদির জীবিত (যার রোগসূচনাকারী ক্ষমতা শূন্য) বা মৃতদেহ বা কোনো অংশবিশেষ হতে প্রস্তুত ঔষধ যা ঐ প্রাণীর দেহে ঐ ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে আন্টিবডি সৃষ্টি করে।
কোন রোগের টিকা হল কেবলমাত্র সেই নির্দিষ্ট রোগটিরই বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা বর্ধনকারী ক্রিয়া সম্পন্ন জৈব উপাচার যা টিকাকরণ (ইনঅক্যুলেশন) অর্থাৎ ত্বকে সূচ ফুটিয়ে দেওয়া হতে পারে বা অন্য উপায়ে যেমন খাবার ড্রপ (যেমন মুখে সেব্য পোলিও টিকা বা ওরাল পোলিও ভ্যাক্সিন) হিসেবে দেওয়া হতে পারে। এতে সাধারণত মৃতপ্রায় বা মৃত জীবাণু অথবা তার বিষ থেকে তৈরী হওয়া রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু-সদৃশ উপাদান থাকে। এটি উক্ত উপাদানটিকে বহিরাগত হিসেবে শনাক্ত করতে, সেটিকে ধবংস করতে এবং স্মৃতিতে রাখতে অনাক্রম্যতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে, যাতে পরবর্তীতে অনাক্রম্যতন্ত্র ঐ সমস্ত জীবাণুকে খুব সহজে পরবর্তী অনুপ্রবেশে শনাক্ত ও ধবংস করতে পারে।
আবিষ্কার[সম্পাদনা]
এডোয়ার্ড জেনার ১৭৯৬ খ্রিষ্টাব্দে লক্ষ্য করেন গোয়ালিনীরা (cow-maid) গুটি বসন্তের (small pox) মড়ককালে আক্রান্ত হয় না। তিনি প্রমাণ করেন তার গোয়ালিনীরা রক্ত গরুর বসন্তে সংক্রমিত এবং তার টিকা (inoculation) জেমস ফিলিপ নামে ৮ বছরের একটি সুস্থ বালককে দেন। একটু মৃদু বসন্ত উপসর্গের পর সে আবার সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে এবং সে গুটি বসন্তের আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।
প্রকারভেদ[সম্পাদনা]
টিকা সাধারণত তিন প্রকার-
- লাইভ অ্যাটিনিউটেড-যেমন-
- ব্যাক্টেরিয়াজাত: বি সি জি, প্লেগ, টাইফয়েড ওরাল।
- ভাইরাসজাত ও মুখে সেব্য: পোলিও,হাম, পীতজ্বর।
- রিকেটসিয়াল-এপিডেমিক টাইফাস।
- নিহত/নিষ্ক্রিয়কৃত-
- ব্যাক্টেরিয়াল-টাইফয়েড,কলেরা,পারটুসিস,
- ভাইরাল-রেবিস,হেপাটাইটিস-বি।
- টক্সয়েড - টিটেনাস,ডিপথেরিয়া।
কার্যপ্রণালী[সম্পাদনা]
টিকা দেওয়া হলে দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থা সাধারণ জীবানু সংক্রমণের মতোই কাজ করে[২] অর্থাৎ --
- টিকার জীবানুকে বিদেশি বস্তু বা অ্যান্টিজেন হিসেবে চিহ্নিত করে।
- সত্যিকারের জীবানু প্রবেশ করলে যেমন অ্যান্টিবডি তৈরি করে টিকার ক্ষেত্রেও সেই একই ভাবে অ্যান্টিবডি তৈরি করে।
- জীবানুগুলিকে কিভাবে ধ্বংস করতে হয় তা মনে রাখে। ফলে ভবিষ্যতে যখন সত্যি সত্যি সংক্রমণ ঘটে তখন দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা খুব দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরি করে জীবানুগুলিকে ধ্বংস করে ফেলে ও শরীর সুস্থ থাকে। এই ভাবেই টিকার মাধ্যমে দেহের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি পায়।
উৎপাদন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ http://www.who.int/topics/vaccines/en/
- ↑ "রোগ প্রতিষেধক বা টিকা কাজ করে কিভাবে"। সববাংলায়। ২০২০-০৩-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-১৭।