বিষয়বস্তুতে চলুন

টিপু মুনশি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
টিপু মুনশি
বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
৭ জানুয়ারি ২০১৯  ১১ জানুয়ারি ২০২৪
পূর্বসূরীতোফায়েল আহমেদ
উত্তরসূরীআহসানুল ইসলাম (প্রতিমন্ত্রী)
রংপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
২৫ জানুয়ারি ২০০৯  ৬ আগস্ট ২০২৪
পূর্বসূরীকরিম উদ্দিন ভরসা
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1950-08-25) আগস্ট ২৫, ১৯৫০ (বয়স ৭৫)
গোপালগঞ্জ জেলা
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীআইরীন মালবিকা মুনশি
সন্তান২ কন্যা
পিতামাতারমজান আলী
রত্নাময়ী মুনশি
বাসস্থানরংপুর, বাংলাদেশ
প্রাক্তন শিক্ষার্থীসরকারী তিতুমীর কলেজ
পেশারাজনীতিবিদ ও শিল্পপতি

টিপু মুনশি (জন্ম: ২৫ আগস্ট ১৯৫০) বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি ২০০৮ সাল থেকে তৃতীয়বারের মতো রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেন (২০১৯-২০২৩)।[][]

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

[সম্পাদনা]

টিপু মুনশির ২৫ আগস্ট ১৯৫০ সালে গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ১৯৬৪ সালে রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার গুয়াবাড়ি গ্রামে সপরিবার আবাস গড়েন। তিনি ঢাকার সরকারী তিতুমীর কলেজ (তৎকালীন সরকারি জিন্নাহ কলেজ) থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার বাবা রমজান আলী ব্রিটিশ সৈনিক ছিলেন। মায়ের নাম রত্নাময়ী মুনশি।[]

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

পেশায় শিল্পপতি টিপু মুনশি রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত আছেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৬৯ সালে ঢাকায় জোয়ারসাহারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখেন। তিনি তৎকালীন সরকারি জিন্নাহ কলেজ (বর্তমান তিতুমীর কলেজ) ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্ব দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করেন।[]

১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের তেজগাঁও উত্তরাঞ্চলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ১৯৯২ সাল থেকে ২৪ বছর তিনি বৃহত্তর গুলশান আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতিও ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক নির্বাচিত হন।[][]

১৯৯৮ সালে তিনি বিজিএমইএর সহসভাপতি, ২০০৫-২০০৬ মেয়াদে বিজিএমইএর সভাপতি ও বর্তমানে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের যৌথ কমিটির প্রেসিডেনশিয়াল সভাপতি। তিনি সিপাল গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকার হোল্ডিং সংস্থা এসটিএস গ্রুপের পরিচালক।[][]

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে তিনি রংপুর-৪ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে একই আসন থেকে পরাজিত হয়েছিলেন।

২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[][][] নবম জাতীয় সংসদে তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ৭ জানুয়ারি ২০১৯ সাল থেকে তিনি শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[]

২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।[][১০]

আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ২৯ আগস্ট টিপু মুনশিকে গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করে র‍‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন।[১১][১২] বাড্ডা থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।[১৩][১৪] রিমান্ড শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।[১৫][১৬]

ব্যক্তিগত জীবন ও পরিবার

[সম্পাদনা]

টিপু মুনশির স্ত্রীর নাম আইরীন মালবিকা মুনশি, তাদের ২ কন্যা সন্তান রয়েছে। এছাড়া এ দম্পতির অপু মুন্সী নামে একজন পুত্র সন্তান ছিল, যিনি ২০০৯ সালে আত্মহত্যা করেন। অপুর চিকিৎসকের দেওয়া বিভিন্ন ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী সে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিল। পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কানাডায় ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতক করা অপু তার বাবার লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে নিজেকে গুলি করে।[১৭][১৮]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. 1 2 3 4 5 "মাননীয় মন্ত্রী, জনাব টিপু মুনশি, এমপি মাননীয় মন্ত্রী,বাণিজ্য মন্ত্রণালয়"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ১৩ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০২০
  2. টিপু মুনশি, রংপুর-৪। "Constituency 22_10th_En"। ৮ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১৮{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: সাংখ্যিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক)
  3. "বাংলাদেশের রাজনীতিতে উজ্জ্বল নাম টিপু মুনশি | বাংলাদেশ প্রতিদিন"Bangladesh Pratidin। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০২০{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: ইউআরএল-অবস্থা (লিঙ্ক)
  4. "Account Suspended"www.stsholdingsbd.com। ১৮ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০২০
  5. "Curbing traffic jam: JS body formed to suggest ways"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ আগস্ট ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০২০
  6. "৯ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২৭ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০২০
  7. "১০ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০২৩
  8. "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে (পিডিএফ) আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯
  9. "সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৭ আগস্ট ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২৪
  10. "যা আছে সংসদ ভেঙে দেওয়ার সারসংক্ষেপে"বাংলা ট্রিবিউন। ৬ আগস্ট ২০২৪। ১৭ আগস্ট ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২৪
  11. "সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গ্রেপ্তার"দৈনিক প্রথম আলো। ২৯ আগস্ট ২০২৪।
  12. "সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ এ পর্যন্ত যারা গ্রেপ্তার হলেন"বিবিসি বাংলা। ২৯ অগাস্ট ২০২৪। {{সংবাদ উদ্ধৃতি}}: |তারিখ= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)
  13. "হত্যা মামলায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি রিমান্ডে"দৈনিক প্রথম আলো। ২৯ আগস্ট ২০২৪।
  14. "টিপু মুনশি ৪ দিনের রিমান্ডে"দৈনিক ইত্তেফাক। ২৯ আগস্ট ২০২৪।
  15. "রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি"বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা। ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
  16. "টিপু মুনশি কারাগারে, গোলাপ ফের রিমান্ডে"বাংলা ট্রিবিউন। ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
  17. "টিপু মুন্সীর ছেলে অপুর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১২ জুন ২০০৯। ২৮ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২২
  18. "MP's son found dead at home"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ জুন ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২২