টিং মং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কম্বোডিয়ায় কোভিদ-১৯ মহামারী চলাকালীন ২০২০ সালে একটি টিং মং

টিং মং (খ্‌মের: ទីងមោង) খেমার লোককাহিনীতে জনপ্রিয় একটি পুতুল। ঐতিহ্যগতভাবে এর মাথা এবং শরীর নেই, তবে সাম্প্রতিককালে এটি মানুষের আকারে এবং আকৃতিতে কাকতাড়ুয়ার মতো করে তৈরি করা হচ্ছে। তবে কাকতাড়ুয়া থেকে এর কাজ ভিন্ন; এর উদ্দেশ্য পাখিদের ভয় দেখানো নয় বরং মন্দ আত্মা এবং প্লেগ দূর করা।

উৎপত্তি: মন্দিরের অভিভাবক[সম্পাদনা]

খেমার নৃতাত্ত্বিক অ্যাং চৌলিয়ানের মতে, খেমার কাকতাড়ুয়া অ্যাঙ্কোরিয়ান মন্দিরে অভিভাবক দেবতাদের ধারণা থেকে উৎপন্ন হতে পারে। যাদের ভীতিকর মুখ এবং শরীর নেই তাদের রাহুর মূর্তি খুঁজে পাওয়া যায়, অন্য পুতুলগুলোইয় খেমার পৌরাণিক কাহিনীর দৈত্য এবং রাক্ষসদের সাথে মিল পাওয়া যায়। ns/khmer-renaissance/chapter-two/ting-moong.html|সংগ্রহের-তারিখ=January 26, 2022|ওয়েবসাইট=Khmer Renaissance - Yosothor Dictionnary}}</ref>

নকশা: যোদ্ধা দেবতা থেকে হিউম্যানয়েড[সম্পাদনা]

কম্বোডিয়ার বিভিন্ন প্রদেশে টিং মং এর বিভিন্ন নকশা প্রচলিত। তাদের প্রায়শই ভীতিকর চেহারা তৈরি করার জন্য কাঠকয়লা দিয়ে আঁকা ভাঙা মাটির পুরানো পাত্র দিয়ে তৈরি করা হয়। এগুলি ব্যক্তিগত বাসস্থানের বাইরের বেড়াতে ঝুলানো হয়, বিশেষ করে প্রবেশদ্বারের কাছে।

সিমরিপ প্রদেশে টিং মংকে প্রায়শই অস্ত্র বহনকারী কাকতাড়ুয়া হিসেবে দেখতে পাওয়া যায়।[১]

১৯৯০ এর দশক থেকে টিং মং এর নকশাটি বিকশিত হয় কারণ গ্রামবাসীরা গ্রামের প্রবেশদ্বার বা তাদের ঘরগুলির সামনে পুরনো কাপড় ব্যবহার করে হিউম্যানয়েড কাকতাড়ুয়া বানানো শুরু করে, যা অতীতের তুলনায় সস্তা এবং অনেক বেশি সহজলভ্য ছিল। যদিও মূল ধারণাটি ছিল ভূতদের ভয় দেখানো, ভূতের ভীতিপ্রদর্শনকারীরা এখন মানুষের মতো দেখতে অবয়ব ধারণ করেছে, যারা একটি নির্দিষ্ট ভাবনার প্রতিনিধিত্ব করে।[২]

বর্তমান সময়ের কুসংস্কারাচ্ছন্ন কৃষকরা টিমটংকে ফুল-শার্টের কাকতাড়ুয়ার মতো মাথার উপর প্লাস্টিকের পাত্র এবং লাঠি দিয়ে সজ্জিত করে থাকে।[৩]

কাজ: আত্মা, হাসি, এবং প্লেগ[সম্পাদনা]

টিং মং এর মূল কাজ ছিল অশুভ আত্মাদের তাড়ানো।

১৯৭৯ সালে নৃশংস খেমার রুজ শাসনের পতনের পর, বয়স্ক কম্বোডিয়ানদের স্মৃতিচারণ অনুসারে, লোকেরা খেমার রুজ সৈন্যদের মূর্তি তৈরি করে তাদের আত্মাকে কাকতাড়ুয়াগুলোর মধ্যে আটকে রাখবার জন্য, যেগুলিকে পরবর্তীতে গণহারে আগুনে পোড়ানো হয়েছিল। এই গল্পের বিকল্প বর্ণনায়, সেই বছর পুরো প্রদেশে একটি রোগ ছড়িয়ে পড়ে, যা মৃত আত্মাদের সাথে জড়িত এবং এটিকে তাড়ানোর জন্য কাকতাড়ুয়াগুলো তৈরি করা হয়েছিল। [৪]

১৯৯০ এর দশক থেকে এগুলোকে রোক্যাম্বোলেস্ক পোশাকের সাথে তৈরি করা হয়, যা হাস্যকর রূপ নেয়। ২০২০ সাল থেকে টিং মং বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করে কারণ তারা করোনাভাইরাস মহামারীর সাথে সংশ্লিষ্ট মানসিক ভীতিকে প্রশমিত করতে সহায়তা করেছিল। [৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bernak, Fred (২০১৮-০৯-২৮)। LIFE The World's Most Haunted Places: Creepy, Ghostly, and Notorious Spots (ইংরেজি ভাষায়)। Time Home Entertainment। আইএসবিএন 978-1-5478-4556-9 
  2. Peang-Meth, Abdulgaffar (১৯৯২)। "The United Nations Peace Plan, the Cambodian Conflict, and the Future of Cambodia": 33–46। আইএসএসএন 0129-797Xজেস্টোর 25798137ডিওআই:10.1355/CS14-1C 
  3. "Cambodian farmers deploy scarecrows to ward off virus - Khmer Times" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১০-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২৬ 
  4. Sacker, Jade। "In Cambodia, a Spiritual Army Battles an Earthly Pandemic"Foreign Policy (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২৬ 
  5. "Cambodian villagers trust magic scarecrows to ward off coronavirus"Reuters (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১১-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

  • Choulean, Ang (২০২২)। "ទីងមោង"Khmer Renaissance - Yosothor Dictionnary (খমের ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ২৬, ২০২২