টস (ক্রিকেট)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ডন ব্র্যাডম্যান (বাম) এবং ইংল্যান্ডের অধিনায়ক গাবি অ্যালেন ১৯৩৬–৩৭ অ্যাশেজ সিরিজ শুরু করার আগে টস করেছেন।

ক্রিকেটটস কোনও দলীয় ম্যাচের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতে কোন্ দলের অধিনায়ক স্থির করবেন যে তাঁর দল প্রথমে ব্যাট করবে নাকি ফিল্ডিং - তা একটি মুদ্রার টসের সাহায্যে নির্ধারণ করার জন্য এই পদ্ধতি অনুসৃত হয়।

খেলা শুরু হওয়ার আগে প্রতিটি পক্ষের অধিনায়ক পিচ পরিদর্শন করেন। পিচ এবং আবহাওয়ার অবস্থার উপর ভিত্তি করে অধিনায়করা তাঁদের চূড়ান্ত এগার জন খেলোয়াড় নির্বাচন করেন। পিচটি যদি নরম বা ধূলিময় হয় তবে অধিনায়ক আরও স্পিন বোলার বাছাই করতে চান; যদি পিচটি শক্ত হয় তবে পছন্দটির পাল্লা ভারী হয় স্পিনারদের বিনময়ে ফাস্ট বোলারদের দিকে।

খেলা শুরুর আধঘণ্টা আগে দুই অধিনায়ক সমবেত হয়ে তাঁদের বাছাই করা দলের খেলোয়াড় তালিকা বিনিময় করেন। কোনও কনকাসন বিকল্প ক্ষেত্র বাদে ম্যাচের সময়কালে ঐ তালিকাবদ্ধ খেলোয়াড়দের পরিবর্তন করা যায় না। তারপরে আম্পায়ার এর তত্ত্বাবধানে কোন্ ক্যাপ্টেন ব্যাট করতে চান বা ফিল্ডিং - তা বেছে নেওয়ার অধিকার নির্ধারণ করার জন্য একটি মুদ্রা টস করা হয়। এই সিদ্ধান্তটি কৌশলগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে করতে হয়। অধিনায়ককে তাঁর সিদ্ধান্তে আসার আগে অনেকগুলি পরিবর্তনশীল বিষয় বিবেচনা করতে হয়। ওয়ানডে ক্রিকেট এ দ্বিতীয় ভাগে ব্যাট করা সাধারণভাবে পছন্দ করা হলেও খেলার বিবিধ স্বভাবের কারণে টেস্ট ক্রিকেট এ তা আদরণীয় হয় না। কারণ চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে।

আম্পায়ারের কল অফ প্লের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে খেলা শুরু চিহ্নিত হয়। টস করার পরে যদি ম্যাচটি যে কোনও সময় পরিত্যক্ত হয় তবুও ম্যাচটি চালু হয়েছে ধরে সরকারী পরিসংখ্যান সংক্রান্ত রেকর্ড লিপিবদ্ধ করা হয়। [স্পষ্টকরণ প্রয়োজন (see talk)] টসের আগে যদি কোনও ম্যাচ পরিত্যক্ত হয় তবে এটি মোটেও খেলা হয়নি বলে মনে করা হয় এবং রেকর্ডের জন্য পরিসংখ্যান করা শুরু হয় না।

টেস্ট ম্যাচ ক্রিকেটে মুদ্রা ছোঁড়ার (টস) ঐতিহ্যবাহী এই পদ্ধতিটি ১৮৭৭ সালের উদ্বোধনী টেস্ট ম্যাচ থেকে শুরু হওযায় টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি ১৪১ বছরের ইতিহাসিক অনুসরণ বলে পরিগণিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

মুদ্রা ছোঁড়া (টস)[সম্পাদনা]

২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচে প্রচলিত মুদ্রা টস বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। আয়োজক দেশগুলিকে সমালোচনা করে এবং কখনও কখনও দোষী সাব্যস্ত করা হয় যে তারা নিজের পছন্দ অনুসারে পিচের অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে খেলার এই দীর্ঘতম ফর্ম্যাটটি খেলছে। [১][২] আইসিসির পরিবর্ত প্রস্তাবে বলা হয়েছিল যে দূর (সফরকারী) দলকে প্রথমে ব্যাটিং করতে হবে বা ফিল্ডিংয়ের আগে নির্বাচন করার অধিকার দেওয়া উচিত হবে।[৩] আইসিসি ঘোষণা করেছিল যে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে তখন আসন্ন ২০১৮ অ্যাশেজ সিরিজ এ এর প্রয়োগ করা হবে। যার ফলে অস্ট্রেলিয়াকে (দূরের দল) প্রথমে ব্যাট করা বা মাঠে নামার তুলনামূলক সুবিধা দেওয়া হবে। [৪]

২০১৮ সালের মে মাসে আইসিসি কমিটির বৈঠকে আইসিসি ঘোষণা করে যে টেস্ট ক্রিকেটে মুদ্রা টস করার প্রচলিত পদ্ধতিটি বজায় থাকবে কারণ এটি খেলাধুলার একটি "অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ" যা "খেলার বর্ণনাময় আখ্যান অংশও তৈরি করে"। [৫][৬][৭]

২০১৬ সাল থেকে ইংলিশ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ এ কোনও বাধ্যতামূলক টস করা হয়নি। দূরের দল পছন্দ করলে আগে ফিল্ডিং করতে পারেন। [৮] যদি দূরের দল প্রথমে ফিল্ডিং প্রত্যাখ্যান করেন তখন টস অনুষ্ঠিত হয়। [৮]

অস্ট্রেলিয়ায় ২০১৮–১৯ বিগ ব্যাশ লিগ মরসুম এর জন্য ব্যাট ফ্লিপ দ্বারা টস প্রতিস্থাপণ করা হয়েছিল। তাতে মুদ্রার হেড বা টেলের পরিবর্তে "হিল এবং ফ্ল্যাট" ব্যবহার করা হয়েছিল। [৯][১০]

প্রথমে ব্যাটিং[সম্পাদনা]

দল যদি পিচ এর প্রকৃতি সম্পর্কে অনিশ্চিত থাকে বা কেবল নিরাপদে খেলতে চায় তবে তারা প্রায়ই প্রথমে ব্যাট করে। যদি বিরোধী বোলিং শক্তিশালী হয় তবে প্রথমে ব্যাটিং বেশ ভাল বিকল্প হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কখনও কখনও খেলার অগ্রগতির সাথে সাথে পিচের প্রকৃতির অবনতি ঘটায় ব্যাটিংকে আরও বেশি কঠিন করে তোলে - বিশেষ করে স্পিন বোলিংয়ের মুখোমুখি হলে। প্রথমে ব্যাটিংয়ের আরেকটি সুবিধা হ'ল রান তাড়া করার জন্য একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করা যায়। এটি দ্বিতীয় ব্যাটিং করা দলের ব্যাটসম্যানদের উপর চাপ তৈরি করতে পারে যা তাঁদের ব্যাটিংয়ে পক্ষে সমস্যা তৈরি করতে পারে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Martin, Ali (২০১৮-০৫-১৭)। "Toss could be axed for Ashes series to reduce home advantage"the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-১৯ 
  2. NDTVSports.com। "ICC Considering Scrapping Coin Toss In Test Cricket – NDTV Sports"NDTVSports.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-১৯ 
  3. "ICC to consider scrapping coin toss"cricket.com.au (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-১৯ 
  4. Hoult, Nick (২০১৮-০৫-১৭)। "Australia could have choice of batting or bowling first in Ashes next summer, with plans to ditch toss in Test cricket"The Telegraph (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0307-1235। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-১৯ 
  5. "Toss to stay, pitch preparation to be prerogative of host member boards - Times of India"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-৩০ 
  6. "ICC cricket committee saves the toss"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-৩০ 
  7. "ICC wants tougher ball-tampering sanctions and opts against scrapping toss"BBC Sport (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৫-২৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-৩০ 
  8. "No mandatory toss in the County Championship"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৫ 
  9. "Big Bash League: Bat flip to replace coin toss for 2018-19"BBC Sport। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  10. "No more coin toss in BBL shake-up"Cricket Australia। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৮