টম গারেট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
টম গারেট
১৯৩৭ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে টম গারেট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামটম গারেট
জন্ম২৬ জুলাই, ১৮৫৮
ওলনগং, নিউ সাউথ ওয়েলস
মৃত্যু৬ আগস্ট, ১৯৪৩ (৮৫ বছর)
সিডনি, নিউ সাউথ ওয়েলস
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কহুবার্ট গারেট (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ )
১৫ মার্চ ১৮৭৭ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৮৮ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৯ ১৬০
রানের সংখ্যা ৩৩৯ ৩৬৭৩
ব্যাটিং গড় ১২.৫৫ ১৬.১৮
১০০/৫০ -/১ ২/১০
সর্বোচ্চ রান ৫১* ১৬৩
বল করেছে ২৭২৮ ২৪৩১৬
উইকেট ৩৬ ৪৪৬
বোলিং গড় ২৬.৯৪ ১৮.৭২
ইনিংসে ৫ উইকেট ২৯
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/৭৮ ৭/৩৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৭/- ৮১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩ অক্টোবর ২০১৭

টম গারেট (ইংরেজি: Tom Garrett; জন্ম: ২৬ জুলাই, ১৮৫৮ - মৃত্যু: ৬ আগস্ট, ১৯৪৩) নিউ সাউথ ওয়েলসের ওলনগং এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটের শুরুর দিককার অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে সরকারী চাকুরে ছিলেন।

দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম বোলার ছিলেন। এছাড়াও ডানহাতে ব্যাটিংয়ে সবিশেষ ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

সংবাদপত্রের স্বত্ত্বাধিকার ও রাজনীতিবিদ বাবার একই নাম ধারণ করেন টম গারেট। পিতার প্রথম পক্ষীয় স্ত্রীর দ্বিতীয় সন্তান তিনি।

১৮৬৭ থেকে ১৮৭২ সময়কালে নিউইংটন কলেজে অধ্যয়ন করেন তিনি।[১] বিদ্যালয়ে অবস্থানকালে সহকারী শিক্ষক যোসেফ কোটসের উদ্দীপনায় তিনি ক্রিকেট ও স্প্রিন্টার হিসেবে প্রভূতঃ সুনাম কুড়ান।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন সম্পন্ন করেন। পরের বছর নিউ সাউথ ওয়েলসের ভূমি মন্ত্রণালয়ের কেরাণীর চাকরি বিষয়টি তার বাবা নিশ্চিত করেন। ১৮৭৬ সালে নিউ সাউথ ওয়েলস সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তরিত হন। ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮২ তারিখে আইনজীবী হিসেবে আইন চর্চার জন্য অন্তর্ভুক্ত হন।

১৯২৪ সলে অবসর গ্রহণকালীন তার অধীনে কর্মচারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৬৭-তে দাঁড়ায়। ৮১ বছর বয়সেও তিনি দৈনিক দাপ্তরিক কার্যাদি সম্পাদন করতেন।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

দীর্ঘদেহী গারেট অল-রাউন্ডার হিসেবে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং ও বোলিং করতেন তিনি। ফাস্ট-মিডিয়াম পেসার হিসেবে বোলিং করে খেলতেন।

১৯ টেস্টে অংশ নিয়ে ১২.৫৫ গড়ে ৩৩৯ রান তোলার পাশাপাশি ২৬.৯৪ গড়ে ৩৬ উইকেট তুলে নিয়েছেন টম গারেট। তন্মধ্যে, নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৬/৭৮। ১৬০টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়ে ১৬.১৮ গড়ে ৩,৬৭৩ রান তুলেন। এছাড়াও ১৮.২৭ গড়ে ৪৪৬ উইকেট পান। পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২৯বার।

নিউ সাউথ ওয়েলসের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন টম গারেট। অধিনায়ক হিসেবে সকলের সম্মানীয় ছিলেন। তরুণ বোলারদেরকে উৎসাহদাতা হিসেবে তার জুড়ি মেলা ভার ছিল।

ইতিহাসের প্রথম টেস্ট[সম্পাদনা]

ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে তার। মার্চ, ১৮৭৭ সালে মেলবোর্নে জেমস লিলিহোয়াইটের নেতৃত্বাধীন দলের বিপক্ষে অংশ নেন তিনি। ১৮ বছর ২৩২ দিন বয়সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়ের এ মর্যাদা অদ্যাবধি টিকে রয়েছে।

খেলার দ্বিতীয় দিন দলের প্রথম ইনিংসে তিনি অপরাজিত ১৮ রান করেন। চার্লস ব্যানারম্যানের সাথে গুরুত্বপূর্ণ ৪৩ রানের জুটি গড়েন। তবে, আঙ্গুলে চোঁট পেয়ে ১৬৫ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হলে তার সংগৃহীত রানটি দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মর্যাদা পায়।

গারেটের সংগৃহীত রানটি ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটসমস্যান হ্যারি জাপ ঐ দিনই অতিক্রম করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের অবস্থান পরিবর্তন করে চার নম্বরে নামেন ও শূন্য রানে বিদায় নেন। জন হজেসের সাথে বোলিং উদ্বোধনে নেমে দুই উইকেট পান। তন্মধ্যে, ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হ্যারি জাপের উইকেটটি তার কব্জায় আসে।

বিদেশ সফর[সম্পাদনা]

১৮৭৮ সালে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া দলের সাথে বিদেশ সফরের অংশ হিসেবে ইংল্যান্ড ও উত্তর আমেরিকা গমন করেন। ১৮৮২ সালেও ইংল্যান্ড সফরে যান। ওভালের ঐতিহাসিক অ্যাশেজ খেলায় অংশগ্রহণ করেন।

১৮৮৭ সালের সিডনি টেস্টে এক প্রতিবেদনে জানা যায় যে, ভাসমান বলকে রুদ্ধশ্বাসপূর্ণ অবস্থায় তালুবন্দী করেছেন। ১৮৮৮ সালে সিডনিতে সর্বশেষ খেলায় অংশ নেন।

অল-রাউন্ডার জর্জ গিফেনের মতে, বোলার হিসেবে তিনি চমৎকার নিশানায় অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বল করতেন ও কখনো বলকে আঘাত করার জন্য বোলিং করতেন না। কখনো বল কিছুটা পিচে কাজ করতো যা ব্যাটসম্যানের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতো। যতটুকু সম্ভব সর্বোচ্চ উচ্চতায় বল হাত থেকে ছাড়তেন। দীর্ঘ ছয় ফুট উচ্চতাকে কাজে লাগাতেন তিনি।

খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে বোলিংয়ের ধার কমে গেলে ব্যাটিংয়ের দিকে মনোনিবেশ ঘটান বিশেষতঃ স্কয়ার অঞ্চল দিয়ে। ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও তিনি গতিকে কাজে লাগাতেন।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

তার পুত্র হুবার্ট গারেট প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে গালিপলি রণাঙ্গনের সম্মুখ যুদ্ধে নিহত হন। হুবার্ট সমারসেটের পক্ষে কয়েকটি খেলায় অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯১৩ থেকে ১৯১৪ সময়কালে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন দলের শৌখিন খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নেন।

টম গারেটের নাতি পিটার গারেট মিডনাইট অয়েলের শীর্ষস্থানীয় গায়ক ও অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল রাজনীতিবিদ ও সরকারের মন্ত্রী।[২]

দেহাবসান[সম্পাদনা]

৮৫ বছর বয়সে ৬ আগস্ট, ১৯৪৩ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের সিডনিতে টম গারেটের দেহাবসান ঘটে। নর্দার্ন সাবার্বস ক্রিমেটোরিয়ামের সেন্ট জেমস গীর্জায় তাকে সমাহিত করা হয়।[৩] মৃত্যুকালীন তিনিই অস্ট্রেলিয়ার বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট খেলোয়াড় ছিলেন ও প্রথম টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণকারী সর্বশেষ জীবিত ক্রিকেটার ছিলেন।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Newington College Register of Past Students 1863–1998 (Syd, 1999) p. 70
  2. The ton that stopped a nation The Age 6 February 2004 Retrieved on 26 January 2008.
  3. "Family Notices"The Sydney Morning Herald (32,953)। New South Wales, Australia। ৭ আগস্ট ১৯৪৩। পৃষ্ঠা 12। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে। 
  4. "Immovable object, irresistible force"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৭ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]