টনি কোজিয়ার
টনি কোজিয়ার | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | উইনস্টন অ্যান্থনি লয়েড কোজিয়ার ১০ জুলাই ১৯৪০ |
মৃত্যু | ১১ মে ২০১৬ | (বয়স ৭৫)
মৃত্যুর কারণ | ক্যান্সার |
জাতীয়তা | বার্বাডীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন |
|
পেশা | ক্রিকেট সাংবাদিক ও ধারাভাষ্যকার |
কর্মজীবন | ১৯৫৮-২০১৬ |
পরিচিতির কারণ |
উইনস্টন অ্যান্থনি লয়েড টনি কোজিয়ার (ইংরেজি: Tony Cozier; জন্ম: ১০ জুলাই, ১৯৪০ - মৃত্যু: ১১ মে, ২০১৬) বার্বাডোসের ব্রিজটাউনের জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট বার্বাডীয় ক্রিকেট সাংবাদিক, লেখক ও রেডিও ধারাভাষ্যকার ছিলেন।[১] পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়কাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটে ভূমিকা রাখেন।[২] ক্রিকেটে বিশ্বকোষীয় জ্ঞানের প্রভূতঃ অধিকারী ছিলেন টনি কোজিয়ার।[৩]
প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]
সেন্ট লুসিয়া ভয়েসের সম্পাদক, বার্বাডোস ডেইলি নিউজের প্রতিষ্ঠাতা[৪] ও বার্বাডীয় সাংবাদিক জিমি কোজিয়ারের সন্তান ছিলেন।[৫] অষ্টাদশ শতকে স্কটিশ শ্রমজীবী হিসেবে কোজিয়ারের পরিবার বার্বাডোসে অভিবাসিত হয়।[৬] অটোয়ার কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় অধ্যয়ন করেন।[৭] এরপর ১৯৫৮ সালে সংবাদজগতে প্রবেশ করেন।[১]
স্থানীয় ওয়ান্ডারার্স ও কার্লটন ক্রিকেট ক্লাবে ব্যাটসম্যান ও উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলেন।[৬][৭] এছাড়াও বার্বাডোসের পক্ষে হকি খেলায় গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন।
কর্মজীবন[সম্পাদনা]
১৯৬১ সালে বার্বাডোস ডেইলি নিউজের সম্পাদক হন। সেখানেই অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটার এভারটন উইকসের সাথে কাজ করতেন তিনি।[৮][৯] ১৯৬৩ সালে ইংল্যান্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফরের বিষয়াদি তুলে ধরতেন।[৬] এরপর ক্রিকেট সংবাদদাতা হিসেবে বার্বাডোস এডভোকেটে কাজ করেন। ১৯৭৩ সালে ডেইলি নেশন সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠায় প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। এছাড়াও ব্রিটিশ সংবাদপত্র দি ইন্ডিপেন্ডেন্টেও নিয়মিতভাবে লেখালেখি করতেন কোজিয়ার।
ধারাভাষ্য[সম্পাদনা]
১৯৬৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টেস্টের মাধ্যমে রেডিও ধারাভাষ্যকার হিসেবে অভিষেক ঘটে তার।[৫][৬] ১৯৬৬ সাল থেকে বিবিসি’র টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল ধারাভাষ্যকার দলের সদস্য হিসেবে কাজ করতে থাকেন।[৪][১০] এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেল নাইন[১১] ও স্কাই স্পোর্টস[১১] টেলিভিশনের ধারাভাষ্যকার ছিলেন।
ধারাভাষ্যকারের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় একটি ছাড়া প্রত্যেক উইজডেন ট্রফি সিরিজে তার সরব উপস্থিতি ছিল।[১২] শারীরিক অসুস্থতা থাকা স্বত্ত্বেও ২০১৪-১৫ মৌসুমের ইংল্যান্ড দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ধারাভাষ্য দেন।[১৩]
ক্যারি প্যাকারের ব্যক্তিগত অনুরোধে বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অন্যতম ধারাভাষ্যকার মনোনীত হন। কোজিয়ারের মতে, সাধারণ দর্শক ঐ সিরিজটিকে সাদরে গ্রহণ করেছিল। সিরিজের ধারাভাষ্য চলাকালে এক পর্যায়ে ব্লু মুন গান পরিবেশন করেছিলেন তিনি।[১৪][১৫][১৬]
সম্মাননা[সম্পাদনা]
ক্রিকেটে অসামান্য ভূমিকা রাখায় কেনসিংটন ওভালের প্রেস বক্সের নাম তার নামানুসারে রাখা হয়।[১৭] টেস্ট ম্যাচ স্পেশালের পরিকল্পনাকারী পিটার ব্যাক্সটার মজা করে বলেছিলেন যে, প্রকৃতপক্ষে প্রেস বক্সের নামকরণ আরেকজন কোজিয়ারের নামে হয়েছে। কেননা তারা পিতা-পুত্র উভয়েই সাংবাদিক ছিলেন।[১৮] ডিসেম্বর, ২০১১ সালে ক্রিকেট অবদানের প্রেক্ষিতে এমসিসির সম্মানসূচক আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হয়।[১১]
১৯৭৮ সালে গারফিল্ড সোবার্সের সাথে বিশ্লেষণধর্মী ‘দি ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ফিফটি ইয়ার্স অব টেস্ট ক্রিকেট’ শীর্ষক গ্রন্থে লেখেন।[১১] ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বার্ষিকীর ২২টি সংস্করণের প্রত্যেকটিরই সম্পাদক ছিলেন তিনি।[১১] তিনি বিশ্বকাপে উইজডেনের ইতিহাস সম্পাদনা করেন। ক্লাইভ লয়েড ও মাইকেল হোল্ডিংয়ের আত্মজীবনীতে ভূমিকা রাখেন।[১৯]
দেহাবসান[সম্পাদনা]
৭৫ বছর বয়সে ১১ মে, ২০১৬ তারিখে স্বল্পকালীন অসুস্থতাবোধের পর ক্যান্সারে তার দেহাবসান ঘটে।[১৪][২০] ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। মৃত্যুকালে পঞ্চাশ বছরের অধিক সময় ধরে অর্ধাঙ্গীনি জিলিয়ান এবং তিন পুত্র ও কন্যাকে রেখে যান।[৬][২১]
সহকর্মী ক্রিকেট সংবাদদাতা জোনাথন অ্যাগ্নিউ বলেন যে, টিভি ও রেডিওতে প্রত্যেক বলের ধারাভাষ্যে তার জুড়ি মেলা ভার। তিনি উভয়ক্ষেত্রেই দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন।[১] ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড মন্তব্য করে যে, যেখানেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলেছে সেখানেই তিনি প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আমাদের ক্রিকেট নিয়ে বিশ্বের সর্বত্র জনগণকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ও প্রতিধ্বনি ক্রিকেট বিশ্বের সর্বত্র প্রবাহিত হয়েছে।[২২]
মূল্যায়ন[সম্পাদনা]
স্কাইল্ড বেরি তার সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের ভূমিকায় বাক্যে ও সমালোচনায় সরব ছিলেন তিনি।[২১]
ভিক মার্কসের মতে, টনি ধীরস্থিরভাবে ও বিষয়বস্তু তুলে ধরতে পটিয়সী ছিলেন যা অনেক আধুনিককালের ধারাভাষ্যকারের মাঝে অনুপস্থিত।[১৪]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ "Tony Cozier: West Indian commentator dies aged 75" (ইংরেজি ভাষায়)। BBC Sport। ১১ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৬।
- ↑ "Tony Cozier, voice of West Indies cricket, dies at 75"। ESPNcricinfo (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৬।
- ↑ Nice Cozier chat Mail Online, 28 April 1999
- ↑ ক খ Tony Cozier: A Voice And Vision, Caribbean Beat, May 2003
- ↑ ক খ Tony Cozier ESPN Cricinfo
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Tony Cozier, cricket commentator – obituary"। Daily Telegraph (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৬।
- ↑ ক খ Tony Cozier BBC Sport, 30 December 2002
- ↑ Sandford, Keith (১৯৯৮)। Cricket Nurseries of Colonial Barbados: The Elite Schools, 1865–1966 (ইংরেজি ভাষায়)। Press University of the West Indies। পৃষ্ঠা 62। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৬।
- ↑ Moss, Stephen (অক্টোবর ২০০৬)। Wisden Anthology 1978–2006: Cricket's Age of Revolution (ইংরেজি ভাষায়)। A & C Black। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৬।
- ↑ "Tony Cozier dies"। Saint Lucia Times (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ মে ২০১৬। ১২ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৬।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Cozier granted MCC life membership ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ আগস্ট ২০১৩ তারিখে England and Wales Cricket Board, 15 December 2011
- ↑ The Shorter Wisden 2011 – 2015 (ইংরেজি ভাষায়)। Bloomsbury Publishing। আগস্ট ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৬।
- ↑ "Legendary cricket commentator Tony Cozier passes away"। Stabroek News (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ গ Marks, Vic (১২ মে ২০১৬)। "Tony Cozier obituary"। The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৬।
- ↑ Sundaresan, Bharat (১২ মে ২০১৬)। "Tony Cozier (1940–2016): West Indies cricket loses its voice and sanity"। The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৬।
- ↑ Haigh, Gideon (২০০৮)। The Cricket War (ইংরেজি ভাষায়)। Melbourne University Publishing। পৃষ্ঠা 88। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৬।
- ↑ "Bajan days and nights"। Cricinfo (ইংরেজি ভাষায়)। ESPN। ১৩ এপ্রিল ২০১২।
- ↑ Baxter, Peter (২০১২)। Can Anyone Hear Me? (ইংরেজি ভাষায়)। Icon Books। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৬।
- ↑ List of books by Tony Cozier Retrieved 12 May 2016.
- ↑ "Veteran West Indies cricket commentator Tony Cozier dies, aged 75"। The Sydney Morning Herald (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৬।
- ↑ ক খ Berry, Scyld (১১ মে ২০১৬)। "Tony Cozier"। Daily Telegraph (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৬।
- ↑ "Tony Cozier, voice of cricket in the West Indies, dies at 75"। The Australian (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৬।
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
- West Indies in India Nov 1974/Jan 1975 – Summary ESPNcricinfo – Excerpt from Cozier's book, The West Indies: Fifty years of Test Cricket (1978). আইএসবিএন ০২০৭৯৫৭৯৮৩
- Tony Cozier Unplugged CaribbeanCricket.com, 20 April 2004 – Two-part interview with Cozier
- ১ মে ২০১৬ সালে ইএসপিএন ক্রিকইনফোতে প্রকাশিত টনি কোজিয়ারের কলাম: West Indies cricket needs Legends' clout
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে টনি কোজিয়ার (ইংরেজি)