ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়
জন্ম২৬ নভেম্বর , ১৯৪৮
জাতীয়তাবাঙালি
নাগরিকত্ব ভারত
শিক্ষাস্নাতক
মাতৃশিক্ষায়তনকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা
পেশাপ্রখ্যাত সাহিত্যিক
উল্লেখযোগ্য কর্ম
বঙ্কিম পুরস্কার (২০০৭)
সঙ্গীউদয়চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (পিতা)
রাণীবালা চট্টোপাধ্যায় (মাতা)

ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায় (২৬ নভেম্বর ১৯৪৮) পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত সাহিত্যিক। দক্ষিণ বাংলার নিম্নবর্গীয় মানুষের বয়ান, সমাজ জীবন উপজীব্য করে সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন তাঁদের অন্যতম।

জন্ম[সম্পাদনা]

ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২৬শে নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার ডায়মন্ড হারবারে। পিতা উদয় চন্দ্র চট্টোপাধ্য্যায়, মাতা রানীবালা চট্টোপাধ্যায়। তাদের পৈতৃক নিবাস ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার অধুনা রামনগর থানার কলাতলা হাটে।[১]

শিক্ষা ও কর্মজীবন[সম্পাদনা]

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ডায়মন্ড হারবার হাই স্কুল থেকে বিদ্যালয়ের পাঠ, তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ ডায়মন্ড হারবার ফকির চাঁদ কলেজ থেকে কলাবিভাগে স্নাতক হন। এরপর সরকারি চাকরি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা কালেক্টরেটেই কর্মজীবন শুরু তার।

সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

ছাত্রজীবনেই কলেজ পত্রিকায় লেখালেখি শুরু হলেও, সরকারি চাকরি পাওয়ার পর নিয়মিত লেখা শুরু করেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তা প্রকাশিত হতে থাকে। তেভাগা আন্দোলনের বিপ্লবী কংসারী হালদারের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বিশেষত সুন্দরবন বাদা অঞ্চল, দ্বীপ বা চরে বসবাসকারী মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। নিম্নবর্গীয় মানুষদের খুব কাছে থেকে জেনেছেন, বুঝেছেন নিজের মত করে অতি স্বাভাবিক ভাবেই। মোটামুটি সত্তরে দশক হতে যে লেখাগুলি শুরু করেন, সেগুলি পুস্তক আকারে প্রকাশিত হতে থাকে। প্রথম প্রকাশিত গল্প ‘ভগ্নচর’প্রকাশিত হয় 'স্টেটসম্যান' পত্রিকার সাব এডিটর সৌরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য সম্পাদিত 'শারদীয় প্রতিশ্রুতি'তে। এরপর একে একে ‘ব্যাঙ’, ‘হাড়’, ‘নোনা’-র মতো উল্লেখযোগ্য গল্প। প্রথম ছোট গল্প সংকলন যাত্রীনিবাস প্রকাশিত হয় ১৯৮৭ সালে। তার গল্পের মূল প্রেক্ষাপট আবর্তিত হয় দক্ষিণ বাংলার বাদা অঞ্চলকে কেন্দ্র করেই। সেখানকার নদীনালা, ফেরীঘাট, ছোট দ্বীপ বা চরভূমি, গাঙ, আবাদী, অনাবাদী জমি – এই ভৌগোলিক বৃত্তের মানুষ, তাদের প্রকৃতি ও পরিবেশ আয়ুধ হিসাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ[সম্পাদনা]

প্রকাশিত উপন্যাসগুলি হল:[সম্পাদনা]

  • বন্দর (১৯৯২),
  • রামপদর অশন-ব্যসন (১৯৯৩),
  • বিনোদনের বিপণন (১৯৯৩),
  • স্বজনভূমি (১৯৯৪),
  • চরপুর্ণিমা (১৯৯৫),
  • পুবের মেঘে দক্ষিণের আকাশ (১৯৯৫),
  • ফুলের মানুষ (২০০০),
  • সহিস (২০০৩),
  • জোড়কলম (২০০৭),
  • নভেলেট (২০০৯),
  • সমুদ্রদুয়ার (২০১০),

গল্প-সংকলন / গল্পগ্রন্থগুলি হল –[সম্পাদনা]

  • যাত্রীনিবাস - ১৯৮৭ ( সংবাদ প্রকাশনী )
  • ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের ছোটোগল্প-১৯৯৩ (প্রতিক্ষণ)
  • শ্রেষ্ঠ গল্প - ২০০৪
  • নতুন মেম - ২০০৫
  • জলের সীমানা - ২০০৫
  •  নভেলেট - ২০০৯ -বড়ো গল্পের সংকলন
  • রমনী ও পুরুষ - ২০০৯
  • সেরা ৫০টি গল্প - ২০১১
  • অহল্যা ও অন্যান্য গল্প - ২০১৪
  • টাওয়ারে ফাইবার ব্লেড - ২০১৭
  • কাঠকুটো - ২০১৮
  •  স্বজন প্রিয়জন -
  • সড়ক বাঁকে টিভি - ২০২০

– হিন্দি ভাষা ও ইংরাজী ছাড়াও তামিল ভাষা, মালয়ালম ভাষাতে তার উপন্যাস ও গল্প অনূদিত হয়েছে।

সম্মাননা[সম্পাদনা]

তারাশঙ্কর স্মৃতি পুরস্কার, সোপান, কথাপুরস্কার (দিল্লী), রামমোহন লাইব্রেরি পুরস্কার, পাঞ্চজন্য, শিলালিপি, সমতট, মহাদিগন্ত সাহিত্য পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে তিনি সম্মানিত হয়েছেন ।

  • ‘স্বজনভূমি’ উপন্যাসের জন্য তারাশঙ্কর স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯৬)।
  • ‘কথা’ পুরস্কার (দিল্লী, ২০০৩-০৪)- ওল্ডব্লক নিউব্লক গল্পটির জন্য।
  • ‘সহিস’ উপন্যাসের জন্য ২০০৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বঙ্কিম পুরস্কার পেয়েছেন।[২]
  • দক্ষিণের নিম্মবর্গীয় মানুষদের জীবনের চালচিত্র যথাযথভাবে তুলে ধরার স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন হায়াৎনগর সুভাষ সমিতির 'নেতাজী সুভাষ সম্মাননা – ২০১৯’।
  • ‘সমুদ্রদুয়ার’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন ‘শুধু সুন্দরবন চর্চা’ পুরস্কার (২০১৯)।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "প্রখ্যাত সাহিত্যিক ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের একটি সাক্ষাৎকার- অধ্যাপক অবশেষ দাস"। 
  2. Loka: sāhitya, samāja-saṃskr̥tira mananaśila ...। E. Pi. Nagara। 2007-10।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  • দে'জ পাবলিশিং, কলকাতা ৭০০ ০৭৩
  • # ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের ছোটগল্পে অর্ধ শতকের দেশ, কাল ও সমাজ ; বিশ শতকের বাংলা গল্প :পাঠের গভীরতায়