ক্যালিকো জ্যাক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(জ্যাক রেকহাম থেকে পুনর্নির্দেশিত)
জন রেকহাম
— জলদস্যু —
১৮-শতকের কাঠে খোদাই করা রেকহামের ছবি
ডাকনামক্যালিকো জ্যাক
ধরনজলদস্যু
জন্ম২৭ ডিসেম্বর ১৬৮২
জন্মস্থানকিউবা
মৃত্যু১৮ নভেম্বর, ১৭২০ (৩৭ বছর)[১]
মৃত্যুর স্থানপোর্ট রয়াল, জ্যামাইকা
আনুগত্যনাই
কার্যকাল১৭১৮-১৭২০
স্থানক্যাপ্টেন
অপারেশনের বেজওয়েস্ট ইন্ডিজ
কমান্ডকয়েকটি ভেসেল, বিখ্যাত কিংস্টোন (সংক্ষেপে)
যুদ্ধসমূহ২০শে আক্টোবর ১৭২০ ও চার্লস ভ্যান কর্তৃক নাসাউয়ের নিয়ন্ত্রণ
ক্যালিকো জ্যাকের জলি রজার[২]

জন রেকহাম (২৭ ডিসেম্বর ১৬৮২ - ১৮ নভেম্বর ১৭২০) ছিলেন একজন কিউবান-ইংরেজ জলদস্যু ক্যাপ্টেন যিনি বাহামাকিউবায় ১৮-শতকের দিকে বিচরন করতেন। তিনি ক্যালিকো জ্যাক নামেই বেশি পরিচিত। এছাড়াও ঐতিহাসিক নথিপত্রে তাকে রেকাম বা রেকুম নামে উচ্চারন করা হত এবং তাকে প্রায়ই জ্যাক রেকহাম নামে ডাকা হত। তার ডাকনাম ক্যালিকো এসেছে একধরনের সাদা সুতি কাপড় থেকে; এ ধরনের কাপড় তিনি প্রায়ই পরিধান করতেন এবং তখনকার সময় জ্যাককে সংক্ষিপ্তকারে জন নামে সম্বোধন করা হত।

রেকহাম জলদস্যুতার স্বর্ণযুগে (১৬৯০-১৭৩০) ১৭১৮ সাল থেকে ১৭২০ সাল পর্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। তিনি দুটি কারণে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন; প্রথমত তিনি মাথার খুলির নিচে দুটি আড়াআড়ি হাড় সংবলিত জলি রজার পতাকা ব্যবহার করতেন এবং তার দলে দুজন নারী জলদস্যু ছিল (মেরি রিড ও রেকহামের প্রেমিকা অ্যান বনি)।

চার্লস ভ্যানকে তার ক্যাপ্টেন পদ থেকে বিচ্যুত করার পর রেকহাম ক্যাপ্টেনের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং লিওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জ, জ্যামাইকা চ্যানেল ও উইন্ডওয়ার্ড প্যাসেজের পথে তার যাত্রা অব্যহত রাখেন। ১৭১৯ সালের কোন একসময় তিনি রাজকীয় ক্ষমা পেয়েছিলেন এবং নিউ প্রোভিডেন্সে চলে আসেন। নিউ প্রোভিডেন্সে তার অ্যান বনির সাথে সাক্ষাত হয়; বনি, জেমস বনি নামে একজনকে বিয়ে করেছিল। ১৭২০ সালে রেকহাম যখন জলদস্যুতায় ফিরে আসেন তখন অ্যান বনি তার সাথে যোগদান করে। রেকহাম একটি ব্রিটিশ স্লোপ (ছোট জাহাজ) চুরি করে তার জলদস্যু জীবন পুনরায় শুরু করেন। এসময় তাদের দলে নতুন ক্রু হিসেবে মেরি রিড যোগদান করেন। এর প্রায় কিছুদিন পরই তিনি জলদস্যু শিকারি (প্রাইভেটিয়ার) জনাথন বার্নেটের হাতে গ্রেফতার হন এবং একই বছর নভেম্বরে জ্যামাইকার পোর্ট রয়ালে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।

আটক, বিচার ও মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৭২০ সালের সেপ্টেম্বরে বাহামার গভর্নর রজার, রেকহাম ও তার ক্রুদে জলদস্যু হিসেবে ঘোষণা করে একটি ওয়ারেন্ট / ইশতেহার জাড়ি করেন; কিন্তু ঘোষণাটি আক্টোবরের পূর্বে প্রকাশ করা হয়নি। ঠিক একই সময়ে জলদস্যু শিকারী জনাথন বার্নেট, রেকহামকে অনুসরন করে জ্যামাইকায় পৌঁচ্ছেছিল। বার্নেট আক্টোবর, ১৭২০ সালে রেকহাম ও তার ক্রুদের জ্যামাইকার ব্রে হার্বার উপসাগরে নোঙ্গর করা অবস্থায় (এবং মাতাল) বন্দি করেন। নভেম্বর ১৭২০ সালে তাদের জ্যামাইকার স্পেনিশ শহরে বিচারের মুখমুখি করা হয়। রেকহামকে পোর্ট রয়ালে নভেম্বর ১৮, ১৭২০ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুদন্ডের পর রেকহামের দেহ ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে পোর্ট রয়ালের প্রবেশপথে একটি ছোট দ্বীপে রেখে দেওয়া হয়। বর্তমানে স্থানটি রেকহামের দ্বীপ নামে পরিচিত।[৩][৪]

তার ক্রুদের ভাগ্য[সম্পাদনা]

রেকহামের মৃত্যুদন্ডের দশ দিন পর অ্যান বনিমেরি রিড তাদের বিচার চলাকালে উভয়েই গর্ভবতী বলে দাবি করে এবং দাবি প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আদালতের জিম্মায় রাখা হয়। ১৭২১ সালের এপ্রিলে রিড সন্তান প্রসবের সময়কার একটি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে এবং বনি মৃত্যুদন্ড থেকে নিষ্কৃতি পান এবং বৃদ্ধ বয়সে ১৭৮২ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[১]

রেকহামের বিচারের পরের দিন তার দুজন ক্রু জন ও টম বর্ন (ব্রাউন) ১৭২০-এর মাঝামাঝিতে সংঘঠিত একটি বিদ্রোহের অপরাধে আলাদা আলাদাভাবে দেষী সাবস্থ হন।[১]

মোট আট জন ব্যক্তি সেদিন রেকহামের ক্রুদের সাথে মদ পান করছিল এবং বন্দি হয়েছিল (জর্জ ফেদারস্টোন, রিচার্ড কর্নার, জন ডেভিস, জন হাউএল, নওয়া হারওড, জেমস ডবিনস, পেত্রিক কার্টে ও থমাস আর্ল); তাদের সকলকেই জানুয়ারি, ১৭২১ সালে দোষী সাবস্থ করা হয় এবং ফেব্রুয়ারি ১৭২১ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. The Tryals of Captain John Rackham and other Pirates (Jamaica, 1721)
  2. Botting, p. 48, Konstam, The History of Pirates, p. 98.
  3. Angus Konstam। Piracy: the complete history। Osprey Publishing। পৃষ্ঠা 336। আইএসবিএন 1-84603-240-7। ৩ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  4. Colin Woodard (২০০৭)। The Republic of Pirates। Harcourt, Inc। পৃষ্ঠা 306–307। আইএসবিএন 978-0-15-603462-3। ২৩ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
উদ্ধৃতি ত্রুটি: <references> গ্রুপ -এ সংজ্ঞায়িত "rackhamtryals" নামসহ <ref> ট্যাগে কোন বিষয়বস্তু নেই।

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Defoe, Daniel and Manuel Schonhorn (১৯৯৯)। The General History of Pirates। New York: Dover Publications। পৃষ্ঠা 148। আইএসবিএন 0-486-40488-9 
  • Fleming, Carrol B (১৯৭৮)। Ladies of the Skull and Crossbones। Historical Abstracts। পৃষ্ঠা 23–26।  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  • Williams, Jefferey (২০০৭)। Pirate Spirit: The Adventures of Anne Bonney। Harlem Writers Guild Press। আইএসবিএন 978-1-58348-467-8 
  • The entire trial transcript is available in the book The Pirate Trial of Anne Bonny and Mary Read by Tamara J. Eastman and Constance Bond
  • Johnson, Captain Charles, ed. Hayward Arthur L., A history of the robberies and murders of the most notorious pirates from their first rise and settlement in the island of Providence to the present year, London: George Routledge & Sons, Ltd. First published in 1724, with the second edition published 1728, both versions attributed to Daniel Defoe. The two editions are very different, with the second edition much less accurate than the first when compared to court records. In the second edition however, no such accuracy is even attempted. In particular,the lurid details of the capture of the merchant ship the Neptune by Charles Vane in September 1718, conflicts entirely with the court records of both Charles Vane and Robert Deal, his quartermaster.
  • 'The Tryals of Captain John Rackam and Other Pirates', 1721, by Robert Baldwin, in The Colonial Office Records in The Public Records Office at Kew, (ref: CO 137/14f.9). This details the trials of JackRackam, Mary Read, Anne Bonny, and Charles Vane.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]