জেলা পরিষদ (ভারত)
ভারতের রাজনীতি |
---|
আইন ও কেন্দ্রীয় সরকার |
নির্বাচন ও রাজনৈতিক দল |
প্রশাসনিক বিভাগ ও যুক্তরাষ্ট্রবাদ |
ভারত প্রবেশদ্বার |
জিলা পরিষদ বা জেলা উন্নয়ন পরিষদ বা জেলা পরিষদ বা জেলা পঞ্চায়েত হল পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার তৃতীয় স্তর এবং এটি সমস্ত রাজ্যে জেলা স্তরে কাজ করে। একটি জেলা পরিষদ একটি নির্বাচিত সংস্থা যা একটি জেলার পুরো গ্রামীণ এলাকাকে প্রতিনিধিত্ব করে। একটি জেলা পঞ্চায়েতের প্রধান হলেন একজন সভাপতি, যিনি একজন নির্বাচিত সদস্য। পঞ্চায়েতের প্রধানও জেলা পরিষদে প্রতিনিধিত্ব করেন। বিধানসভার সদস্য এবং সংসদের সদস্যরাও জেলা পরিষদের সদস্য। জেলা পরিষদ রাজ্য সরকার এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে সংযোগকারী মাধ্যম বা সংস্থা হিসেবে কাজ করে।
জেলা পরিষদগুলি পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ বা জেলা স্তরের পঞ্চায়েত, এবং গ্রাম পঞ্চায়েত হল পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানের গ্রাম স্তরের মৌলিক ইউনিট।
৭৩ তম সংশোধনী সরকারের (যাদের পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠান নামেও পরিচিত) বিষয়ে আলোচনা করে।[১]
- জেলা (বা শীর্ষ) স্তরে পঞ্চায়েত
- মধ্যবর্তী স্তরে পঞ্চায়েত
- প্রাথমিক স্তরে পঞ্চায়েত
গঠন
[সম্পাদনা]জেলা পরিষদের নেতৃত্বে থাকেন একজন সভাধিপতি এবং সহ-সভাধিপতি। জেলা পরিষদে একজন সভাপতি, সহ-সভাপতি, নির্বাচিত সদস্য, পদাধিকারবলে সদস্য এবং বিভিন্ন স্থায়ী কমিটি অন্তর্ভুক্ত থাকে।
জেলা পরিষদ সেই জেলার অধীনে থাকা সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করে। এই জিলা পরিষদের এলাকা বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ভাগ করা হয়, এবং প্রতিটি বিভাগ থেকে একজন সদস্য নির্বাচিত হন, যিনি সেই এলাকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত।
জেলার অন্তর্ভুক্ত সমস্ত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদাধিকারবলে জেলা পরিষদের সদস্য হন।
জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কাঠামোর নেতৃত্ব দেন একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, যিনি একজন আইএএস অফিসার বা রাজ্য সিভিল সার্ভিস অফিসার হন। তিনি পরিষদের বিভিন্ন বিভাগ তদারকি করেন এবং তাকে জেলা ও ব্লক স্তরের সহ-নির্বাহী কর্মকর্তা এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা সহায়তা করেন। জেলা স্তরে সাধারণ প্রশাসন বিভাগের ডেপুটি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদাধিকারবলে জেলা পরিষদের সচিব হন।
নির্বাচন
[সম্পাদনা]প্রতি ৫ বছর অন্তর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জেলা পরিষদকে বিভিন্ন বিভাগ বা ওয়ার্ডে ভাগ করা হয় এবং প্রতিটি বিভাগের জনগণ তাদের প্রতিনিধির জন্য ভোট দেন। এই নির্বাচিত সদস্যরা, সভাধিপতি এবং সহ-সভাধিপতিকে নিয়ে জেলা পরিষদ গঠন করেন। একটি জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং সহ-সভাধিপতি নির্বাচিত সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন। জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের, সভাধিপতি এবং সহ-সভাধিপতিসহ, কার্যকাল সাধারণত পাঁচ বছরের হয়। ১৮ বছরের বেশি বয়সের যে কোনো ব্যক্তি, যিনি সেই জেলার জিলা পরিষদের অধিবাসী, তিনি ভোট দিতে পাহয়।[১] নির্বাচন সংশ্লিষ্ট রাজ্য নির্বাচন কমিশন দ্বারা পরিচালিত হয়।
প্রশাসনিক কাঠামো
[সম্পাদনা]প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), যিনি আইএএস বা রাজ্য প্রশাসনিক সেবা ক্যাডারের একজন জনপালনকৃত্যক, তিনি জেলা পরিষদের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাকে সরকার দ্বারা মনোনীত করা হয়। কিছু রাজ্যে, তিনি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটও হতে পারেন। ইনি পরিষদের বিভিন্ন বিভাগ তদারকি করেন এবং এর উন্নয়ন প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন করেন। কিছু রাজ্যে, যেমন কেরালায়, জেলা পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সচিব বলা হয়। এই বিধানটি ৭৩তম সংশোধনী আইন, ১৯৯২ অনুযায়ী প্রণীত।
কার্যপ্রণালী
[সম্পাদনা]- জেলা পরিষদ একটি সরকারি সংস্থা, যা পঞ্চায়েতগুলির সমস্ত উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সমন্বয় করে, যেমন ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প, বৃত্তিমূলক ও শিল্প স্কুল, গ্রামীণ শিল্প, পয়ঃনিষ্কাশন ও জনস্বাস্থ্যের মতো অন্যান্য কাজ।
- এটি রাজ্য সরকারকে তার তত্ত্বাবধানে থাকা গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি সম্পর্কিত সমস্ত বিষয়ে পরামর্শ দেয় এবং এর অধীনে বসবাসরত গ্রামীণ জনগণের চাহিদা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে।
- এটি পঞ্চায়েতগুলির কাজ তদারকি করে। আসাম, বিহার এবং পাঞ্জাবের মতো কিছু রাজ্যে এটি পঞ্চায়েত সমিতির বাজেট প্রস্তাব যাচাই করে।
- এটি প্রধানত বিভিন্ন স্থায়ী কমিটির মাধ্যমে কাজ করে, যা এর অধিক্ষেত্রের অন্তর্গত গ্রামগুলির সাধারণ কর্মসূচিগুলি তদারকি ও সমন্বয় করে।
আয়ের উৎস
[সম্পাদনা]জল, তীর্থস্থান, বাজার ইত্যাদির ওপর কর, ভূমি রাজস্বের অনুপাতে রাজ্য সরকারের থেকে নির্দিষ্ট অনুদান এবং পরিষদের জন্য নির্ধারিত কাজ ও প্রকল্পের জন্য অর্থ পাওয়া যায়। জেলা পরিষদ সরকারের অনুমোদন নিয়ে পঞ্চায়েতগুলি থেকে কিছু অর্থ সংগ্রহ করতে পারে।
এছাড়াও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- আমাদের নাগরিক জীবন (নাগরিক ও প্রশাসন) মহারাষ্ট্র রাজ্য ব্যুরো অফ টেক্সটবুক প্রোডাকশন অ্যান্ড কারিকুলাম রিসার্চ, পুনে