জিরিবাম জেলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জিরিবাম জেলা
মণিপুরের জেলা
মণিপুর রাজ্যে জিরিবাম জেলার অবস্থান
মণিপুর রাজ্যে জিরিবাম জেলার অবস্থান
রাষ্ট্র ভারত
রাজ্যমণিপুর
প্রতিষ্ঠা২০১৬
জেলাসদরজিরিবাম
সরকার
 • লোকসভা কেন্দ্রবহিঃস্থ মণিপুর[১]
 • বিধানসভা কেন্দ্র৪০ জিরিবাম[২]
আয়তন
 • সর্বমোট২১২ বর্গকিমি (৮২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • সর্বমোট৪৩,৮১৮
 • জনঘনত্ব২১০/বর্গকিমি (৫৪০/বর্গমাইল)
জনতাত্ত্বিক
 • সাক্ষরতার হার৭৫.৪৩%
 • লিঙ্গানুপাত৯৪৫ [৩]
সময় অঞ্চলআইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০)
যানবাহন নিবন্ধনএমএন-০৬ [৪]
জাতীয় সড়ক৩৭ নং জাতীয় সড়ক[৫]
দাপ্তরিক ভাষামৈতৈ, ইংরাজী[৬]
স্থানীয় ও সর্বাধিক প্রচলিত ভাষাবাংলা (সিলেটি উপভাষা)[৭]

জিরিবাম জেলা উত্তরপূর্ব ভারতের মণিপুর রাজ্যের পশ্চিম সীমায় অবস্থিত একটি জেলা৷ ২৩শে অগ্রহায়ণ ১৪২৩ বঙ্গাব্দে (৯ই ডিসেম্বর ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ) ইম্ফল পূর্ব জেলার জিরিবাম মহকুমা নিয়ে এই নতুন জিরিবাম জেলা গঠন করা হয়৷[৮]

নামকরণের ইতিহাস[সম্পাদনা]

জিরিবাম নামটি জেলাসদর জিরিবাম তথা সমগ্র জেলাটির পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবাহিত জিরি নদীর নাম অনুসারে৷ জিরি নদীর জিরি নামটি এসেছে জি-জি থেকে৷ নদী পথের দু'ধার বরাবর অবস্থিত জঙ্গলে কীট পতঙ্গের জি-জি শব্দই স্থানীয় বাংলায় বিকৃৃৃত হয়ে জিরি হয়ে দাঁড়ায়৷ জিরি নদীর বামতীরে অবস্থিত হওয়ায় স্থানটি নাম হয় জিরির বাম বা জিরি-বাম৷ আবার অনেকে জিরি নামের উৎপত্তি বলেন চিরি নদী থেকে৷ বহিরাগতরা এই চিরি নদীকেই জিরি বলে উচ্চারণ করতো বলে অনুমান৷

ইতিহাস[সম্পাদনা]

জিরিবাম জেলাটি কুকি পাহাড় থেকে জিরি ও বরাক নদীর উপত্যকা বরাবর পর্বতের পাদ দেশের ঢালে অবস্থিত৷ মানব বসতি তৈরীর আগে এটি পর্বত পাদদেশীয় জঙ্গলসঙ্কুল ছিলো৷ উনবিংশ শতকের শুরুর দিকে জঙ্গল পরিষ্কার করে পার্শ্ববর্তী গ্রাম ও নগরগুলি থেকে ধীরে ধীরে লোকবসতি গড়ে ওঠার আগে পর্যন্ত এটি জনশূণ্য প্রান্তর ছিলো৷ পরে জিরি নদী অববাহিকা বরাবর নদীভিত্তিক জনসমাবেশ গড়ে ওঠে৷ স্থানীয়রা জিরি নদীর নামেই জিরিমুখ (জিরি ও বরাক নদীর মিলনস্থল) অবধি স্থানটির নাম রাখেন জিরিবাম৷

মণিপুরের মহারাজা ভাগ্যচন্দ্রের (১৭৫৯-১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দ) রাজত্বকালে জিরিবাম ছিলো মণিপুরের প্রবেশদ্বার৷ তাঁর কন্যা হরিশ্বরী তাখেলের (ত্রিপুরার) রাজাকে বিবাহ করেন৷ ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে তার অনুজ সিংহাসনচ্যুত রাজা মধুচন্দ্র কাছাড়ে এসে আশ্রয় নেন ও কাছাড়ের শেষ সম্রাট গোবিন্দচন্দ্রের পিতা কৃষ্ণচন্দ্রের সাথে আঁতাত করেন ও একত্রে মণিপুরে আক্রমণ করেন৷ তখন মণিপুরে রাজত্ব করছিলেন মধুচন্দ্রের অনুজ চৌরজিৎ (সৌরজিৎ)৷ কাছাড়ের সৈন্য দল পুরানো কাছাড় সড়ক বরাবর "সিল্ক রুট"-এর নকশা অনুসারে জিরিবাম হয়ে লামহংডং (বর্তমান বিষ্ণুপুর) অবধি অগ্রসর হয়৷ এসময়ে রাজা মধুচন্দ্রের কন্যা মণিপুরনৃপ দুহিতা ইন্দুপ্রভাকে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র বিবাহ করেন৷ এরপর থেকে জিরিবাম কাছাড়েরই অংশ হয়ে ওঠে এবং জিরি নদীর উভয় পাড়ের স্থানীয় শ্রীহট্টীয় বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগ নিবিড় হয়৷

মণিপুরে ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে রাজা গম্ভীর সিংহের সময়ে বর্মী আক্রমণ হয়৷ ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দ অবধি দীর্ঘ সাত বছর ধরে চলা যুদ্ধে মণিপুরের যে বিপুল সংখ্যক ক্ষতি হয় তা বহন করতে না পেরে বহু মণিপুরী আশ্রয় নেয় জিরিবাম, কাছাড়সিলেটে৷

১৮১৩ খ্রিস্টাব্দ থেকেই হেড়ম্ব রাজ্য (কাছাড়) ও জিরিবামের ওপর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের নজর পড়ে৷ ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই আগস্ট নাগাদ গভর্নর জেনারেলের এক ঘোষণার পর জিরিবাম সহ কাছাড় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়৷ প্রশাসনিক সুবিধার জন্য কাছাড়ের বিস্তৃত জিরিবাম অঞ্চল ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে মণিপুরকে দিয়ে দেওয়া হয়৷ পরবর্তীতে ১৮৯১ সালে বৃটিশ পাকাপাকিভাবে মণিপুর দখল করে নেয়। ১৯৪৯ সালে মনিপুরকে স্বাধীন ভারতে অর্ন্তভুক্ত হতে বাধ্য করা হয়৷ কিন্তু এরই মাঝে মহারাজা চূড়াচন্দ্র (১৮৯১-১৯৪১) ও বোধচন্দ্রের (১৯৪১-১৯৪৯) শাসনকালে জিরিবাম হয়ে ওঠে একটি মণিপুরী শাসনাধীন অঞ্চল৷

২০১৬ খ্রিস্টাব্দে নতুন জেলা স্থাপনের পর ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে জিরিবাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রথম বাঙালি সম্প্রদায়ের আছহাব উদ্দিন স্বতন্ত্র পদপ্রার্থী হয়ে জয় লাভ করেন৷[৯]

নতুন জেলার দাবীতে আন্দোলন[সম্পাদনা]

মণিপুরে পূর্ব ইম্ফল জেলার জিরিবাম মহকুমাকে জেলা ঘোষণার দাবিতে পক্ষকাল ধরে জোর আন্দোলনে নেমেছেন জিরিবামের আপামর মানুষ। জিরিবাম ডিস্ট্রিক্ট ডিমান্ড কমিটির ব্যানারে ৬ ও ৭ জুন ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ৬০ ঘণ্টার বন্ধ পালিত হয়। তার আগে ঐ বছর ৩ জুন অল মণিপুর স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, মণিপুর স্টুডেন্টস ফ্রন্ট এবং ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব মণিপুরের মহকুমা কমিটি যৌথ ভাবে মিছিল-সমাবেশের আয়োজন করে। ১১ই জুন সন্ধ্যা ৫টা থেকে ১৫ জুন সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত অর্থনৈতিক অবরোধের সিদ্ধান্ত হয়। জিরিবামের প্রায় সমস্ত সংস্থা ও সংগঠন এতে সমর্থন জানায়। বিক্ষোভে অংশ নেয়। মণিপুরের জিরিবামে অর্থনৈতিক অবরোধের দরুন চার দিন ধরে ৫৩ নম্বর (নতুন সঙ্খ্যায়ণে ৩৭) জাতীয় সড়কের মণিপুর অংশ পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। এর জেরে অসমের জিরিঘাটে যানজট শুরু হয়। অবরোধের চতুর্থ দিনেও এই সঙ্কট নিরসনে সরকারের তরফে তেমন কোনও উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ। অর্থনৈতিক অবরোধের ফলে স্থানীয় মানুষ উদ্বেগে রয়েছেন। জিরিবাম মণিপুরের পূর্ব ইম্ফল জেলার অন্তর্গত হওয়ায় এর সদর শহর ইম্ফল ২২০ কিলোমিটার দূরে। পাহাড়ি রাস্তা জঙ্গি উপদ্রুত বলে এ অঞ্চলের মানুষ নেহাৎ বাধ্য না হলে ওই পথে যান না। তাই জিরিবামকে জেলা ঘোষণার দাবিতে আন্দোলনে নামেন তাঁরা। ২০০৬ সাল থেকে দফায় দফায় আন্দোলন চলছে। যত শীঘ্র সম্ভব মণিপুরের এই মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করার দাবি মানা না-হলে বৃহত্তর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। কমিটির আহ্বায়ক এম পাইপাকসানা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ ৩০ মে পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন স্থগিত রাখতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু ওই সময়সীমা পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা না-হওয়ায় তাঁরা বাধ্য হয়ে ৩১শে ধর্নায় বসেন। অসমের সীমানা ঘেঁষা জিরিবাম মহকুমায় বহু দিন সামাজিক ভাবে বয়কট করে রাখা হয়েছিল স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক দেবেন্দ্র সিংহকেও৷ [১০][১১]

সামাজিক চাপানউতোর[সম্পাদনা]

২০১৮ খ্রিস্টাব্দে মণিপুরের রাজ্য বিধানসভায় নতুন করে একটি নাগরিকত্ব বিল পাশ করা হয়৷ ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে মণিপুর বিধানসভায় ২৩শে জুলাই ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে পাশ হওয়া অমণিপুরীভাষী বিরোধী এই বিলের নাম দেওয়া হয় "মণিপুরী পিপুলস্ বিল' ২০১৮"৷ ফলে স্বভাবতই অমণিপুরী প্রধান জিরিবাম জেলায় ছড়ায় উত্তেজনা, তৈরী হয় ক্ষোভ৷

ভিত্তিবর্ষের পূর্বে আসা লোকেরাই মণিপুরের বাসিন্দা হতে পারবে, এই বিলের বিরোধীতা করে স্থানীয় বাঙালিরা ১৯৭২ সালকে ভিত্তিবর্ষ করার জন্য আন্দোলন করলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর লাঠিচার্জ ও গুলি চালায়, ফলে মহিলাসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন৷ গুরুতরভাবে আহত ৬ জনকে (হোসেইন আহমেদ, সমজিদ আলী, মনোয়ারা বেগম, সমারজান বেগম, বাহার উদ্দীন, হাসনা বেগম) শিলচর মেডিকাল কলেজে ভর্তি করা হয়৷ আন্দোলনকারীদের যুক্তি অনুসারে যেই রাজ্য তৈরী হয় ১৯৭২ সালের ২১শে জানুয়ারী সেখানে ভিত্তিবর্ষ ১৯৫১ সাল ধরা অনৈতিক৷ ২৫শে জুলাই "অল জিরিবাম ইউনাইটেড মাইনরিটি পিপলস্"-এর ব্যানারে এক বিশাল মিছিল বের হয়৷ রাষ্ট্রপতি ও মণিপুরের রাজ্যপালের কাছে পত্র মারফৎ তীব্র প্রতিবাদ জানানো হলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে জিরিবাম জেলাজুড়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৪ নং ধারা জারি করা হয়৷ পরবর্তীকালে পুলিশ প্রশাসন এই আন্দোলন প্রতিহত করতে সচেষ্ট ও সফল হন৷[১২][১৩][১৪]

ভূপ্রকৃতি[সম্পাদনা]

জিরিবাম জেলাটি প্রাকৃৃতিকভারে ভারত-ব্রহ্মদেশীয় শৈলশিরার পশ্চিমপ্রান্তের পাদ দেশে অবস্থিত৷ জেলাটির পূর্বপ্রান্তে ইওসিন যুগের কর্কশ ত্রিস্তরীয় পর্বতঢাল রয়েছে৷ পশ্চিমপ্রান্তে অবস্থিত দক্ষিণ আসামের বরাক উপত্যকার সহিত এই জেলাটি ভৌগোলিকভাবে অধিক সহজগম্য৷ উভয়ের মাঝে রয়েছে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত ৭০৮ মিটার উচ্চ বঙ্গাই পর্বতমালা, যা জিরিবামকে পার্শ্ববর্তী চূড়াচাঁদপুরতামেংলং জেলা থেকে পৃৃৃথক করেছে৷ জেলার পশ্চিমদিকে ঢাল বরাবর রয়েছে জিরি ও বরাক নদীর উপত্যকা৷[১৫]

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

জিরিবাম একটি কৃষিনির্ভর জেলা। কৃষিকাজের মধ্যে অর্থনৈতিক ফসলগুলি হলো চা ও রবার৷ বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পে এই জেলা বিশেষ অনুন্নত হলেও এখানকার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। বেত ও বাঁশের তৈরী আসবাবপত্র, কাষ্ঠশিল্প, তেলের ঘানি, অটোমোবাইলের কাজ, রঙ তৈরী, নকশি ও বয়ন শিল্প এবং ধাতব শিল্পই এখানকারক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের অন্তর্গত৷[১৬]

অবস্থান[সম্পাদনা]

জিরিবাম জেলাটি ২৪ ডিগ্রী ৩৩' ৪৯" উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৪ ডিগ্রী ৫১' ২০" উত্তর অক্ষাংশ ও ৯৩ ডিগ্রী ০৩' ৪০" পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে ৯৩ ডিগ্রী ১৫' পূর্ব দ্রাঘিমার মধ্যে অবস্থিত৷ [১৭]

জেলাটির উত্তর পূর্বে রয়েছে মণিপুরের তামেংলং জেলা, পূর্বে নোনি জেলা, দক্ষিণ পূর্বে রয়েছে মণিপুরের ফেরজল জেলা (চূড়াচাঁদপুর জেলা বিভাজনের পরে) এবং পশ্চিম দিকে রয়েছে আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলা৷ [১৮]

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

জিরিবাম জেলার মোট জনসংখ্যা ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ৪৩৮৩৮ জন, যা ২০০১ খ্রিস্টাব্দে ছিলো ৩৭৮২৮ জন৷ মোট জনসংখ্যার ২২৫৩৯ জন পুরুষ ও ২১২৯৯ জন নারী, অর্থাৎ প্রতি হাজার পুরুষে ৯৪৫ জন নারী৷ মণিপুর রাজ্যের ১.৫৪% লোক এই জেলাতে বাস করেন৷ জেলার জনঘনত্ব ২০০১ সালে ১৭৮ ছিলো এবং ২০১১ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ২০৭ হয়েছে৷ ২০০১-২০১১ সালের মধ্যে জেলার জনসংখ্যা বৃৃদ্ধির হার ১৫.৮৯ শতাংশ৷ জেলাটিতে মোট ছয় বৎসর অনূর্ধ্ব শিশু সংখ্যা ৭১৫৮ জন, যা সমগ্র জনসংখ্যার ১৬.৩৩ শতাংশ৷ জেলাটিতে শহরবাসী ৭৩৪৩ জন, অর্থাৎ নগরায়নের হার ১৬.৭৫ শতাংশ৷ জেলাটিতে তফসিলী উপজাতিভুক্ত ৫৪৯০ জন বা ১২.৫২ শতাংশ ও তফসিলী জাতিভুক্ত ৭৪২৫ জন বা ১৬.৯৪ শতাংশ৷ জেলাটির মোট সাক্ষরতার হার ৭৫.৪৩ শতাংশ অর্থাৎ ২৭৬৬৪ জন সাক্ষর৷ [৩]

ভাষা[সম্পাদনা]

জিরিবাম জেলা মূলত অমণিপুরী প্রধান জেলা৷ এই জেলায় সর্বাধিক প্রচলিত ভাষাটি হলো বাংলা ভাষার সিলেটি উপভাষা, এ ছাড়াও রয়েছে কুকি ভাষা, মণিপুরী ভাষা, হ্মার ভাষা, বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষা ইত্যাদি৷ ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে বিভিন্ন ভাষাভাষীর জনসংখ্যার পাইচিত্র নিম্নরূপ,

জিরিবামে প্রচলিত ভাষা[১৯]

  বাংলা (৫০.৮০%)
  মণিপুরী (৩০.৫১%)
  হ্মার (৮.০৪%)
  হিন্দি (১.৯৪%)
  কাবুই (১.৪৬%)
  কুকি (১.১১%)
  পাইতে (০.৭৯%)
  খাসি (০.৫২%)
  অন্যান্য (২.১৬%)

ধর্ম[সম্পাদনা]

জিরিবাম জেলার বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ২০১১[২০]

  হিন্দুধর্ম (৪৮.৬৪%)
  ইসলাম (৩৭.০৭%)
  বৌদ্ধধর্ম (০.০৬%)
  শিখধর্ম (০.০৩%)
  জৈনধর্ম (০.০১%)
  অন্যান্য (০.৮৫%)

প্রশাসনিক বিভাগ[সম্পাদনা]

জিরিবাম জেলায় মোট দুটি ব্লক রয়েছে,[২১]

  • জিরিবাম
  • বড়বেকরা

সমগ্র জেলায় রয়েছে মোট ৫১টি গ্রাম ও একটি পৌরসভা তথা জিরিবাম পৌরসভা, যা জিরিবাম ব্লকের অন্তর্গত৷

নদনদী[সম্পাদনা]

জিরিবাম জেলার পশ্চিম প্রান্তের দক্ষিণ দিকে রয়েছে দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখী বরাক নদী এবং উত্তর দিকে রয়েছে উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী জিরি নদী৷ জিরি নদী জিরিমুখ অঞ্চলে বরাক নদীর সাথে যুক্ত হয়েছে৷

পরিবহন ও যোগাযোগ[সম্পাদনা]

জিরিবাম জেলাটি রাজধানী শহর ইম্ফলের থেকে ২০০ কিলোমিটার সড়কদূরত্বে অবস্থিত৷

রেলপথ[সম্পাদনা]

জেলাসদর জিরিবামেই রয়েছে জেলাটির একমাত্র রেলওয়ে স্টেশন জিরিবাম রেলওয়ে স্টেশন৷ এই রেলপথের মাধ্যমে জেলাটি পশ্চিমে শিলচরের সঙ্গে যুক্ত৷

২১ মার্চ ২০১৬ থেকে শিলচর-জিরিবাম অংশে মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ২৭ মে ২০১৬ তারিখে যাত্রী পরিষেবা শুরু হয় শিলচর-জিরিবাম প্যাসেঞ্জার চালু হবার মাধ্যমে। তৎকালীন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ৪ জানুয়ারী ২০২২-এ আগরতলা রেলওয়ে স্টেশন এবং জিরিবাম রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে জনশতাব্দী এক্সপ্রেস চালুর সবুজ সংকেত দিয়ে উত্তর-পূর্বের দুটি রাজ্য ত্রিপুরা এবং মণিপুরকে রেলপথে যুক্ত করেন।

সড়কপথ[সম্পাদনা]

৩৫৬ কিলোমিটার বিস্তৃত করিমগঞ্জ-ইম্ফল ৩৭ নং জাতীয় সড়কটি এই জেলার ওপর দীর্ঘায়িত৷

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. https://manipur.gov.in/?page_id=700
  2. "Assembly Constituencies - Corresponding Districts and Parliamentary Constituencies" (পিডিএফ)Manipur। Election Commission of India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-০৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. http://www.citypopulation.de/php/india-admin.php?adm2id=766
  4. https://www.drivespark.com/rto-vehicle-registration-details/manipur-mn-06/
  5. http://www.nhai.gov.in
  6. https://indiacode.nic.in/handle/123456789/7464?view_type=browse&sam_handle=123456789/2498
  7. https://www.academia.edu/1059019/The_Manipuris_in_the_Barak_Valley_A_Case_Study_of_Language_Maintenance
  8. "History of Imphal East"Imphal East district। ২ নভেম্বর ২০১৯। ৩ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৯ 
  9. "ASHAB UDDIN Won with 8189 votes - 2017 Jiribam - Manipur Assembly Election Winner, LIVE Results & Latest News: Election Dates, Polling Schedule, Election Results & Live Election Updates"India। ndia WebPortal Private Limited। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১৮ 
  10. http://archives.anandabazar.com/archive/1110615/15desh14.html
  11. http://archives.anandabazar.com/archive/1110602/2desh12.html
  12. https://www.barakbulletin.com/bn_BD/manipur-peoples-bill-2018-protest-against-anti-bengali-bill-violence-in-jiribam/
  13. https://www.news18.com/amp/news/india/manipur-peoples-protection-bill-2018-everything-you-need-to-know-about-the-controversial-legislation-1859661.html
  14. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  15. http://imphaleast.nic.in
  16. http://jiribammunicipalcouncil.yolasite.com/resources/Downloads/Economy.pdf&ved=2ahUKEwjV48GlruPnAhVuwTgGHaqmBzYQFjABegQIAhAB&usg=AOvVaw2eud1RImPar5cHBO8tMxID[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  17. https://www.researchgate.net/figure/Location-Map-of-Jiribam-Sub-Division_fig1_260057903/amp
  18. https://www.mapsofindia.com/maps/manipur/tehsil/Imphal-east.html
  19. http://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16.html
  20. https://www.censusindia.co.in/amp/subdistrict/jiribam-subdivision-imphal-east-manipur-1883
  21. https://www.indiatoday.in/amp/india/story/manipur-7-new-districts-united-naga-council-okram-ibobi-singh-sadar-hills-nagas-356658-2016-12-09