জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলা বা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা হলো বাংলাদেশে চলমান আলোচিত একটি মামলা। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি।[১] এছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানও অভিযুক্তদের একজন। বিদেশ থেকে আসা এতিমখানার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন[২] মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ, তারেক রহমানসহ অন্যান্য আসামীদের ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়। তারেক রহমান সহ বাকি ৫ আসামীর ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা হয়।।[৩]

পটভূমি[সম্পাদনা]

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টসহ বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামে বিএনপি সরকারের সময়ে বেশ কিছু দাতব্য সংস্থা চালু করা হয়। বিএনপি সরকারের (১৯৯১-১৯৯৬) আমলে সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখায় “প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল” নামে একটি হিসাব চালু করা হয়। ১৯৯১ সালের ৯ই জুন একাউন্টটিতে এক সৌদি দাতার কাছ থেকে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে ৪,৪৪,৮১,২১৬ টাকা বিদেশী অনুদান আসে। পরবর্তী দুই বছরে এই অনুদানের অর্থ কোনো এতিমখানায় দান করা হয়নি। দুই বছর পর, ১৯৯৩ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমানের দুই ছেলে তারেক রহমান, আরাফাত রহমান এবং তাদের ফুপাতো ভাই মমিনুর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠন করেন। ট্রাস্ট গঠনের পর অনুদানটি দুই ভাগ করে ট্রাস্টের বগুড়া এবং বাগেরহাট শাখার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।[৪]

মামলার ক্রম ও অভিযোগ[সম্পাদনা]

ট্রাস্টের কাজে শরফুদ্দিন আহমেদের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা তুলে নেওয়া এবং এই টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সময়কালে এই মামলা দায়ের করে দুদক। তদন্ত শেষ হলে তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ ২০০৯ সালের ৫ই আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।[৫]

মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯শে মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ অভিযোগ গঠন করে খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির বিচার শুরু করেন।[৬]

রায়[সম্পাদনা]

অবশেষে ২০১৮ সালের ২৫শে জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ-৫ আদালতের বিচারক আকতারুজ্জামান ৮ই ফেব্রুয়ারি, বৃহস্প্তিবার মামলার দিন ধার্য করেন। সকাল দশটার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।[৭] রায়ের মোট ৬৩২ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্ত পড়েন বিচারক।[৮] মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ, তারেক রহমান সহ অন্যান্য আসামীদের ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়। তারেক রহমান সহ বাকি ৫ আসামীর ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা হয়।।[৩]

গুরুত্বপূর্ণ তারিখ সমূহ[সম্পাদনা]

ঘটনা তারিখ
দুদকের মামলা ২০০৮ সালের ৩ জুলাই
অভিযোগপত্র ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট
অভিযোগ গঠন ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ
রায় ঘোষণা ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি
জামিনের জন্য আপিল ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি
জামিন আদেশ ২০১৮ সালের ১২ মার্চ

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "খালেদা জিয়ার মামলায় কোন ধারায় কী সাজা?"দৈনিক প্রথম আলো। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  2. "এতিমখানা দুর্নীতি: কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  3. "খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড"দৈনিক প্রথম আলো। ৮ ফেব্রুয়ারি। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  4. "কীভাবে হলো জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা?"দেশ টিভি। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "এতিমখানা দুর্নীতি: খালেদার রায় ৮ ফেব্রুয়ারি"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২৫ জানুয়ারি ২০১৮। ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  6. "এতিমখানা দুর্নীতি: খালেদার বিচার শেষ পর্যায়ে"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৫ ডিসেম্বর ২০১৭। ৫ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  7. "রায় ঘোষণায় প্রস্তুত আদালত"দৈনিক প্রথম আলো। ৮ ফেব্রুয়ারি। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  8. "রায় পড়া শুরু, আদালতে খালেদা জিয়া"দৈনিক ইত্তেফাক। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮