জাফরান (গাছ)
জাফরান Saffron crocus | |
---|---|
![]() | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
বিভাগ: | Tracheophyta |
শ্রেণী: | Liliopsida |
বর্গ: | Asparagales |
পরিবার: | Iridaceae |
গণ: | Crocus |
প্রজাতি: | Crocus sativus |
দ্বিপদী নাম | |
Crocus sativus L. | |
প্রতিশব্দ[১] | |
Safran officinarum Medik. |
জাফরান (ইংরেজি: saffron crocus), (বৈজ্ঞানিক নাম: Crocus sativus)[২] হচ্ছে Crocus গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদের প্রজাতি।[৩] এটি ওজনের মধ্যে বিশ্বের সর্বাপেক্ষা মূল্যবান মসলার একটি। এদের বেশির ভাগ ইরানে জন্মায়। এটি গ্রিসে প্রথম চাষ করা হয়েছিল। এদের অন্যান্য স্থানীয় নামের মধ্যে আছে saffron Za'afaran, Zaafaran Kesar, Zafran.
এক অজানা কারণে জাফরান ফল তৈরি করতে পারে না। যার ফলে এটা বংশ বিস্তারের জন্য মানুষের সাহয্য প্রয়োজন হয়। ক্রোমগুলি মাত্র এক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে এবং এর মধ্যেই এই ক্রোমগুলিকে মাটিতে রোপন করতে হয়।
ফুল[সম্পাদনা]
জাফরান ফুলের পাপড়ি বেগুণী রঙের হয়। এর ভিতরে থাকে লম্বা পরাগ দন্ড। এ দন্ডের রঙ হলুদ এবং কমলা মিশ্রনে জাফরানি বর্ণের হয়। পরিণত ফুল শুকালেই এর দন্ড মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
উৎপাদন[সম্পাদনা]
অটাম ক্রকাস (autumn crocus) নামের আইরিশ গোত্রের একটি ফুলের গর্ভদন্ড (Stigmata) থেকে উৎপাদন করা হয় জাফরান। ১ পাউন্ড বা ৪৫০ গ্রাম শুকনো জাফরানের জন্য ৫০ থেকে ৭৫ হাজার ফুলের দরকার হয়, এক কিলোর জন্য একলক্ষ দশ থেকে একলক্ষ ৭০ হাজার ফুল, ৪০ ঘণ্টা সময় লাগে ১ লক্ষ ৫০ হাজার ফুল তুলতে। অতি সহজেই আমাদের দেশে এই গাছটির চাষাবাদ সম্ভব হলেও এর কোন পরিকল্পনা বা বাণিজ্যিক উৎপাদন নেই। অতি মূল্যবান এই গাছটি আমরা বাড়ির আঙিনায়, ক্ষেত্রের আইলে এবং অল্প জমিতে জন্মিয়ে নিজের জাফরান বা জরদার রঙের প্রয়োজন মেটাতে পারি খুব সহজেই।
বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক চাষ[সম্পাদনা]
২০০০ সালে বাংলাদেশের ৯ টি বিএডিসি উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে জাফরানের চাষ শুরু হয়। এর মধ্যে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, গাজীপুরের কাশিমপুর, পাবনা, রংপুর, বান্দরবন, জামালপুর, লামা এবং খুলনার দৌলনপুর বিএডিসি সার্ভিস সেন্টার। প্রতিটি বাগানে ১৫/২০ টি করে গাছ লাগানো হয় । তৎপরবর্তীতে প্রতিটি গাছের পুষ্পমন্জুরীতে প্রায় ২৫/৩০ টি করে ফুল ফোটে। বীজ তৈরী হতে সময় নেয় ৭০/৮০ দিন। মটরশুটির ন্যায় ছোট গোলাকার লাল রংঙের গাছ প্রতি ২০/৩০ টি করে বীজ হয়। প্রতিটি ফুটন্ত ফুলের পুংকেশর এবং স্ত্রী কেশর কাচাঁ অবস্থায় কেটে আলাদা করে শুকিয়ে নিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। ৬/৭ ঘন্টা ভিজিয়ে রং সংগ্রহ করা হয়। [৪]
উৎপত্তি[সম্পাদনা]
প্রাচীন যুগে পারস্য উপকূলীয় অঞ্চলে জাফরানের স্নিগ্ধ উজ্জল রঙের গুরুত্ব অনুধাবন করে আধ্যাতিক পরিবেশনায় এর ব্যাপক প্রচলন হয়। জাফরান উদ্ভিদতত্বের দিক থেকে ইরিডাসিয়া ফ্যামিলির অন্তর্গত। জাফরান কালক্রমে গৃহস্থালীর ব্যবহারে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় তা ধীরে ধীরে কান্দাহার, খোরাসান, কাশ্মীরের বনেদী মহল ব্যবহারের মাধ্যমে ভারত উপমহাদেশে এর আগমন ঘটে। [৪]
জাফরান' প্রতি কেজি’র মূল্য প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকা। প্রতিবেশী দেশ ভারতের কাশ্মীর থেকে এটি এনে বাজারে বিক্রি করা হয় খাবার সুস্বাদু করার জন্য। স্পেনের ‘লা মাঞ্চা’ অঞ্চলের জাফরানের সুবাস সবচেয়ে ভাল। এদের জাফরান দুইটি ক্যাটাগরীতে পাওয়া যায় ‘মাঞ্চা’ আর ‘ক্যুপে’।
বিস্তৃতি[সম্পাদনা]
ভারতে ছাড়াও তুরস্ক, পাকিস্তান, ইরান, ইতালি, স্পেনসহ ইউরোপ ও এশিয়ার প্রায় ২০ টি দেশে জাফরান চাষ হয়।
ব্যবহার[সম্পাদনা]
জাফরানী রঙ অনুষ্ঠানাদিতে বনেদী পোলাও, বিরিয়ানি, জর্দা, কালিয়াতে ব্যবহার করা হয়। আনেক পান বিলাসী এর পাপড়ি পানের সাথে চর্বণ করেন। জাফরানী রঙ বিভিন্ন হারবাল ওষুধ প্রস্তুত প্রক্রিয়ায় ব্যবহার হয়। এর রঙ নান্দনিক সাজসজ্জায় তথা বনেদী পার্লারগুলোতে মেহেদিও সাথে সংমিশ্রণে মোহনীয় উজ্জ্বল রং এর উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রকৃত জাফরানী রং দ্বারা আধ্যাতিক ইমামগণ চীনা প্লেটের মধ্যে পবিত্র কুরআনের আয়াত লিখা পানি দ্বারা ধৌত করে রোগীকে খাইয়ে থাকেন। জাফরানী সরবত যে কোন অনুষ্ঠানে পরিবেশন যোগ্য। [৪]
চিত্রশালা[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "The Plant List: A Working List of All Plant Species"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ L., 1753 In: Sp. Pl. : 36
- ↑ "Crocus sativus"। জার্মপ্লাজম রিসোর্স ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (জিআরআইএন)। কৃষি গবেষণা পরিসেবা (এআরএস), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ ক খ গ মনোনেশ দাস (২০১৪-১০-০৭)। "লাখ টাকা কেজি মসলার পরীক্ষামূলক ১৫ বছর চাষ"। BDNews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |