বিষয়বস্তুতে চলুন

জয়ন্ত নাথ চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জয়ন্ত নাথ চৌধুরী
অর্ডার অব দ্যা ব্রিটিশ এম্পায়ার
সেনাবাহিনী প্রধান
কাজের মেয়াদ
২০ নভেম্বর ১৯৬২  ৭ জুন ১৯৬৬
পূর্বসূরীপ্রাণ নাথ থাপার
উত্তরসূরীপরমশিব প্রভাকর কুমারমঙ্গল
কানাডায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত
কাজের মেয়াদ
জুলাই ১৯৬৬  আগস্ট ১৯৬৯
পূর্বসূরীবি কে আচার্য
উত্তরসূরীএ বি ভাঁড়কামকার
হায়দ্রাবাদ রাজ্যের সামরিক প্রশাসক
কাজের মেয়াদ
১৯৪৮  ১৯৪৯
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১০ জুন ১৯০৮
মৃত্যু৬ এপ্রিল ১৯৮৩
পুরস্কার পদ্মবিভূষণ
অর্ডার অব দ্যা ব্রিটিশ এম্পায়ার
সামরিক পরিষেবা
ডাকনামমোচু
আনুগত্য ব্রিটিশ ভারত
 ভারত
শাখা ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী
 ভারতীয় সেনাবাহিনী
কাজের মেয়াদ১৯২৮-১৯৬৬
পদজেনারেল
ইউনিট৭ম লাইট ক্যাভালরি
১৬তম লাইট ক্যাভালরি
কমান্ড ভারতীয় সেনাবাহিনী সাউদার্ন কমান্ড
১ম সাঁজোয়া ডিভিশন
মিলিটারি অপারেশন্স এবং ইন্টেলিজেন্স এর পরিচালক
১৬তম লাইট ক্যাভালরি
যুদ্ধদ্বিতীয় মহাযুদ্ধ
  • ইস্ট আফ্রিকান ক্যাম্পেইন
  • ওয়েস্টার্ন ডেজার্ট ক্যাম্পেইন
  • বার্মা ক্যাম্পেইন ১৯৪৪-১৯৪৫
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৪৭
অপারেশন পোলো
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫

জেনারেল জয়ন্ত নাথ চৌধুরী, অর্ডার অব দ্যা ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই) ১৯০৮ সালের ১০ জুন (অবিভক্ত বাংলার) বর্তমান বাংলাদেশের পাবনা জেলার হরিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন (১০ জুন ১৯০৮- ৬ এপ্রিল ১৯৮৩) ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন যিনি ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ভারতীয় স্থলসেনার প্রধান অধিনায়ক ছিলেন। ১৯৪৮ সালে তিনি তৎকালীন হায়দ্রাবাদ রাজ্যের সামরিক গভর্নর ছিলেন। সেনা থেকে অবসরের পর জয়ন্ত ১৯৬৬ সালে কানাডায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান।[]

জয়ন্ত কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং লন্ডনের হাইগেট স্কুলে পড়তেন, রাজকীয় সেনা কলেজ স্যান্ডহার্স্টে প্রশিক্ষণে থাকাকালীন সবাই তাকে 'মোচু' বলে ডাকতো।

সামরিক বাহিনীতে জয়ন্ত

[সম্পাদনা]

১৯২৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জয়ন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর আনএ্যাটাচ্ড লিস্টে কমিশন পান; তিনি যুক্তরাজ্যের স্যান্ডহার্স্টের রয়্যাল মিলিটারি কলেজে প্রশিক্ষণরত ছিলেন।[] ভারতে ফিরে আসার পর জয়ন্ত নর্থ স্ট্যাফোর্ডশায়ার রেজিমেন্টের ১ম ব্যাটেলিয়নে নিয়োগ পান, তারিখটি ছিলো ১৯ মার্চ ১৯২৮। ১৯ মার্চ ১৯২৯ তারিখে জয়ন্ত ৭ম লাইট ক্যাভালরি রেজিমেন্টে নিয়োগ পান।[] ১৯৩০ সালের ২ইমে জয়ন্ত ২য় লেফটেন্যান্ট থেকে লেফটেন্যান্ট হন।[][] ১৯৩৪ সালে লেফটেন্যান্ট জয়ন্ত ইকুইটেশন কোর্স করেন। ১৯৩৭ সালের ২ই ফেব্রুয়ারি জয়ন্ত ক্যাপ্টেন র‍্যাঙ্ক পরিধান করেন,[] বর্তমান পাকিস্তানস্থিত কোয়েটার কমান্ড এ্যান্ড স্টাফ কলেজে জয়ন্ত স্টাফ কোর্স করেন ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৪০ সালের জুন পর্যন্ত।

স্টাফ কলেজের পর্ব শেষ হবার পরেই জয়ন্ত ভারপ্রাপ্ত মেজর পদে ৫ম পদাতিক ডিভিশনে নিয়োগ পান স্টাফ কর্মকর্তা হিসেবে, ডিভিশনটি সুদান, এরিত্রিয়া এবং আবিসিনিয়াতে সামরিক অভিযানের কাজে নিয়োজিত ছিলো। তাকে 'মেনশন্ড ইন ডেসপ্যাচেস' সামরিক পদক দেওয়া হয় তার কাজের জন্য। ১৯৪৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার পদক দেওয়া হয় তার মধ্যপ্রাচ্যে অবদানের জন্য, যেখানে তিনি ১৯৪২ সালের মে মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ছিলেন।[] ১৯৪৩ সালে জয়ন্ত বর্তমান পাকিস্তানের খ্যাতিমান কোয়েটা স্টাফ কলেজে প্রশিক্ষক (জিএসও ১) হিসেবে নিয়োগ পান।

১৯৪৪ সালের আগস্ট মাসে জয়ন্তকে ১৬তম লাইট ক্যাভালরি (সাঁজোয়া রেজিমেন্ট) এ বদলী করা হয়। তখন তিনি একজন ভারপ্রাপ্ত লেঃ কর্নেল ছিলেন, ১৯৪৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ১৯৪৫ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত জয়ন্ত এই রেজিমেন্টের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রেজিমেন্টটি বার্মাতে ছিলো এবং জয়ন্ত এখানে দুই বার পদকপ্রাপ্ত হন।

১৯৪৬ সালে তিনি অস্থায়ী ব্রিগেডিয়ার হন এবং যুদ্ধ-স্থায়ী লেঃ কর্নেল হিসেবে নথিতে তার নাম ওঠে।

ভারতীয় স্বাধীনতার পরে জয়ন্ত

[সম্পাদনা]

১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার বছরে জয়ন্ত ব্রিটেনে ইম্পেরিয়াল ডিফেন্স কলেজে অধ্যায়নরত ছিলেন। ১৯৪৭ সালেরই নভেম্বরে জয়ন্ত নবগঠিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদর-দপ্তরের মিলিটারি অপারেশন্স এন্ড ইন্টেলিজেন্স পরিদপ্তরে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। জয়ন্ত এবং সেনাসদরের আরেক কর্মকর্তা মেজর-জেনারেল মোহিত পাকিস্তান সেনাবাহিনী গঠনের জন্য ভারত থেকে সৈনিক, এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর দায়িত্বে ছিলেন, তারা এই দায়িত্ব ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল রব লকহার্টের নির্দেশে পালন করেছিলেন যিনি ছিলেন একজন ইংরেজ। ১৯৪৮ সালেই তার পদে তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার শ্যাম মানেক শ বসেন এবং ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮-এ জয়ন্ত ভারপ্রাপ্ত মেজর-জেনারেল পদে পদোন্নতি পান এবং তাকে সিজিএস (চীফ অব জেনারেল স্টাফ) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

১৯৪৮ সালের মে মাসে জয়ন্ত ১ম সাঁজোয়া ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) হন, ডিভিশনটি ১৯৪৮ সালের হায়দ্রাবাদ সেনা অভিযানে ভালো ভূমিকা রেখেছিলো। 'পোলো' নামের একটি সেনা অভিযানের পর জয়ন্ত তৎকালীন হায়দ্রাবাদ রাজ্যের সামরিক গভর্নর নিযুক্ত হন। ১৯৫২ সালে তাকে সেনা সদরে এ্যাডজুটেন্ট জেনারেল হন এবং '৫৩ সালে আবার সিজিএস হন, '৫৫ সালে লেঃ জেনারেল হিসেবে একটি কোরের কমান্ডার হন।

ভারত-চীন যুদ্ধের কারণে সেনাপ্রধানের পদ থেকে জেনারেল প্রাণ নাথ থাপার '৬২ সালের ১৯শে নভেম্বর পদত্যাগ করেন এবং তখন জয়ন্তকে ভারপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু[] ১৯৬৩ সালের ২০ ফেরুয়ারী জয়ন্ত ভারপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান থেকে প্রকৃত সেনাপ্রধান হন।[] ১৯৬৬ সালে জয়ন্ত সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন, তিনি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫ চলাকালীন সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন - এজন্য তিনি স্মরণীয়।[১০]

পদোন্নতি

[সম্পাদনা]
চিহ্নপদসেনাতারিখ
২য় লেঃব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী২ ফেব্রুয়ারি ১৯২৮[]
লেঃব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী২ মে ১৯৩০[][]
ক্যাপ্টেনব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী২ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭[]
মেজরব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী১৯৪০ (ভারপ্রাপ্ত)
২২ সেপ্টেম্বর ১৯৪১ (অস্থায়ী)[১১]
৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩ (যুদ্ধ প্রকৃত)[১২]
২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৫ (প্রকৃত)[১৩]
লেঃ কর্নেলব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী২২ সেপ্টেম্বর ১৯৪১ (ভারপ্রাপ্ত)[১১]
৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩ (অস্থায়ী)[১৪]
২১ জানুয়ারী ১৯৪৬ (যুদ্ধ প্রকৃত)[১৫]
কর্নেলব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী২১ জানুয়ারী ১৯৪৬ (ভারপ্রাপ্ত)[১৬]
মেজরভারতীয় সেনাবাহিনী১৫ আগস্ট ১৯৪৭[note ১][১৭]
মেজর জেনারেলভারতীয় সেনাবাহিনীফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ (ভারপ্রাপ্ত)[note ১]
ব্রিগেডিয়ারভারতীয় সেনাবাহিনী২১ জানুয়ারী ১৯৪৬ (ভারপ্রাপ্ত)[১৬]
১ জানুয়ারী ১৯৫০ (প্রকৃত)[১৫][note ১]
ব্রিগেডিয়ারভারপ্রাপ্ত২৬ জানুয়ারী ১৯৫০ (পদচিহ্ন বদল)[১৭][১৮]
মেজর-জেনারেলভারতীয় সেনাবাহিনীজানুয়ারী ১৯৫২ (প্রকৃত)
লেঃ জেনারেলভারতীয় সেনাবাহিনী১৬ ডিসেম্বর ১৯৫৫ (স্থানীয়)[১৯]
৮ মে ১৯৫৭ (প্রকৃত)[২০]
পূর্ণ জেনারেলভারতীয় সেনাবাহিনী২০ নভেম্বর ১৯৬২ (ভারপ্রাপ্ত)[]
২০ জুলাই ১৯৬৩ (প্রকৃত)[২১]
  1. 1 2 3 ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পরে, ভারত ব্রিটিশদের কমনওয়েলথ নেশনস এর মধ্যে একটি ডমিনিয়ন হয়ে ওঠে। ফলস্বরূপ, ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এবং টিউডার ক্রাউন এবং চার-পয়েন্টযুক্ত বাথ স্টার ("পিপ") অন্তর্ভুক্ত করে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী র‌্যাঙ্ক ইন্জিনিয়াকে ধরে রাখা হয়েছিল, জর্জ ষষ্ঠ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এর সর্বাধিনায়ক ছিলেন। ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারির পরে, যখন ভারত একটি প্রজাতন্ত্র হয়ে ওঠে, ভারতের রাষ্ট্রপতি সর্বাধিনায়ক হয়েছিলেন, এবং অশোক সিংহ মুকুটটি প্রতিস্থাপন করেছিলেন , পাঁচ-পয়েন্টযুক্ত তারার সাথে "পিপ" প্রতিস্থাপন করা হবে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  2. 1 2 "নং. 33353"দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯২৮।
  3. "নং. 33510"দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ জুন ১৯২৯।
  4. 1 2 "নং. 33613"দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ জুন ১৯৩০।
  5. 1 2 "নং. 33632"দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ আগস্ট ১৯৩০।
  6. 1 2 "নং. 34381"দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ মার্চ ১৯৩৭।
  7. "নং. 35908"দ্যা লন্ডন গেজেট (সম্পূরক) (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩।
  8. 1 2 "Part I-Section 4: Ministry of Defence (Army Branch)"। The Gazette of India। ৫ জানুয়ারি ১৯৬৩। পৃ. ২।
  9. "Part I-Section 4: Ministry of Defence (Army Branch)"। The Gazette of India। ৬ জুলাই ১৯৬৩। পৃ. ২২৭।
  10. "India's propaganda and 1965 war"ডন (পত্রিকা)। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০
  11. 1 2 Indian Army List for October 1945 (Part I)। Government of India Press। ১৯৪৫। পৃ. ১৫৩।
  12. January 1946 Half Yearly Army List
  13. "নং. 37085"দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ মে ১৯৪৫।
  14. The Quarterly Army List: December 1946 (Part I)। HM Stationery Office। ১৯৪৬। পৃ. ২৫১২a-c।
  15. 1 2 "Part I-Section 4: Ministry of Defence (Army Branch)"। The Gazette of India। ২৪ জুন ১৯৫০। পৃ. ৭০।
  16. 1 2 The Quarterly Army List: December 1946 (Part I)। HM Stationery Office। ১৯৪৬। পৃ. ২২০v-z।
  17. 1 2 "New Designs of Crests and Badges in the Services" (পিডিএফ)Press Information Bureau of India – Archive। ৮ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত (পিডিএফ)
  18. "Part I-Section 4: Ministry of Defence (Army Branch)"। The Gazette of India। ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০। পৃ. ২২৭।
  19. "Part I-Section 4: Ministry of Defence (Army Branch)"। The Gazette of India। ১৪ জানুয়ারি ১৯৫৬। পৃ. ৮।
  20. "Part I-Section 4: Ministry of Defence (Army Branch)"। The Gazette of India। ২৫ মে ১৯৫৭। পৃ. ১৩১।
  21. "Part I-Section 4: Ministry of Defence (Army Branch)"। The Gazette of India। ৩১ আগস্ট ১৯৬৩। পৃ. ২৯২।