জন বেরি হোয়াইট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডাঃ জন বেরি হোয়াইট প্রেক্ষাগৃহ, অসম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় , ডিব্রুগড়

স্যার জন বেরি হোয়াইট (Sir John Berry White) ভারতের অসমে চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রবর্তক তথা অসমে শিল্পদ্যোগের অন্যতম ভিত্তি স্থাপক। তিনি বেঙ্গল মেডিক্যাল সাার্ভিস-এর (Bengal Medical Services) অসামরিক শল্য চিকিৎসক ছিলেন। অসম তথা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নতির জন্য তিনি অতুলনীয় অবদান রেখে গিয়েছেন।

কর্ম জীবন[সম্পাদনা]

১৮৫৮ সালে ডাঃ জন বেরি হোয়াইট মাত্র ২৪ বছর বয়সে অসমে উপস্থিত হয়েছিলেন। ১৮৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন সহকারী শল্য চিকিৎসক হিসাবে উজনি অসমে তিনি কর্ম জীবনের শুরু করেন। উজনি অসমের বিভিন্ন স্থানে সুদীর্ঘ ২৪ বছর নিষ্ঠাভরে পরিষেবা দিয়ে শেষে লক্ষিমপুর জেলার শল্য চিকিৎসক হন।

১৮৯৬ সালের ১৯ নভেম্বর জন বেরি হোয়াইট লন্ডনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।[১][২][৩]

অবদান[সম্পাদনা]

স্যার জন বেরি হোয়াইট ডিব্রুগড়-মার্ঘেরিটা রেল-পথ স্থাপনের স্রষ্টা। তিনি খনিজ তেল অনুসন্ধান এবং টিনের জন্য 'আসাম মিনারেল অয়েল কোম্পানি' প্রতিষ্ঠা করে সফলতা লাভ করেন।

স্যার জন বেরি হোয়াইট অসম তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের পিতৃপুরুষ স্বরূপ। উজনি অসমে একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। সেই উদ্দেশ্যে তিনি নিজের কষ্টোপার্জিত জীবনের সমস্ত সঞ্চয় ৫০,০০০ টকা দান করেছিলেন। কিন্তু তার অবসর গ্রহণ এবং মৃত্যুর পরেই ১৯০০ সালে ডিব্রুগড়ে একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি ডিব্রুগড়ে স্থাপন করতে তিনি নিজের ইচ্ছাপত্রে (Will) লিখে গিয়েছিলেন। উক্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানটি তার নামে অর্থাৎ "বেরি হোয়াইট মেডিক্যাল স্কুল" নামকরণ করা হয়েছিল । [৪] এই মেডিক্যাল স্কুলটি শিলংস্থিত অসম মেডিক্যাল কাউন্সিলও অর্থসাহায্য দেয়। নাম ভর্তির ন্যূনতম শিক্ষাগত ছিল মেট্রিক উত্তীর্ণ। পাঠ্যক্রম ছিল চার বছরের। এর থেকে উত্তীর্ণ হওয়া চিকিৎসকদের এল.এম.পি (Licentiate Medical practitioner) বলা হত। "বেরি হোয়াইট মেডিক্যাল স্কুল"এ শেষি ছাত্রদল ভর্ত্তি হয়েছিল ১৯৪৬ সালে এবং এই দলের পাঠ্যক্রম শেষ হয়েছিল ১৯৫০ সালে। [৫]

১৯৩৮ সালে সেই সময়ের অবিভক্ত অসমের অনুজ্ঞাপত্র প্রাপ্ত চিকিৎসকদের দ্বারা আয়োজিত এবং লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈর সভাপতিত্বে অনুস্থিত হওয়া একটি সভায় বেরি হোয়াইট মেডিক্যাল স্কুলকে এটি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।[৬] এমনভাবে ১৯৪৭ সালের ৩ নভেম্বর "বেরি হোয়াইট মেডিক্যাল স্কুল"কে উন্নীত করে "অসম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়" নামে উদ্বোধন করা হয়। এটিই উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম এবং অন্যতম পুরানো চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়।

স্যার জন বেরি হোয়াইটের অতুলনীয় অবদানের জন্য অসম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহটির নাম "ডাঃ জন বেরি হোয়াইট প্রেক্ষাগৃহ" রাখা হয়েছে। ডিব্রুগড় শহরের গ্রেহাম বাজারে তার নামে আবাসিক এলাকা আছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "An extraordinary pioneer"The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-০১ 
  2. "The Telegraph - Calcutta (Kolkata) | Northeast | Medical museum to rise from ruins"www.telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-০১ 
  3. "The Assam Tribune Online"www.assamtribune.com। ২০১৫-১২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-০১ 
  4. "The Assam Tribune Online"www.assamtribune.com। ২০১৫-১২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-০১ 
  5. ডাঃ বিজুলী গোস্বামী (২০১২)। "মহিলা চিকিত্সকর ইতিহাস"। সাদিন  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  6. "বেরি হোয়াইট স্কুল অফ মেডিসিন"। ৩১ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৮