ছোলা ভুনা

ছোলা ভুনা

ছোলা ভুনা বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ঝাল খাবার বিশেষ৷ খোসাসুদ্ধ ছোলা সিদ্ধ করে পিঁয়াজ, রসুন, হলুদ, মরিচ ইত্যাদি মশলা সহ তেলে ভুনা করে এই মজাদার খাবার তৈরি করা হয়৷ বাংলাদেশের ইফতারির অতি পরিচিত খাবার ছোলা৷

স্বাস্থ্যকর খাবার হিসাবে ছোলা বা বুটের বেশ সুনাম৷ এটা মুখরোচকও আবার শক্তি দেয়৷ পেটেও থাকে বেশিক্ষণ৷ সাধারণত দুই প্রকারের ছোলা পাওয়া যায়: দেশী ছোলা ও কাবুলী ছোলা৷ দেশী ছোলা আকারে ছোট, একটু কালচে রংয়ের এবং অপেক্ষাকৃত শক্ত৷ কাবুলী ছোলা একটু বড় আকারের, উজ্জ্বলতর রং এবং দেশী ছোলার চেয়ে নরম৷ দেশী ছোলা এই উপমহাদেশে পাওয়া যায়৷ কাবুলী ছোলা জন্মায় আফগানিস্তান, দক্ষিণ ইউরোপ- এসব স্থানে৷

ছোলার পুষ্টিগুণ

ছোলা অত্যন্ত পুষ্টিকর৷ এটি আমিষের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস৷ ছোলায় আমিষের পরিমাণ মাংস বা মাছের আমিষের পরিমাণের প্রায় সমান৷ ছোলার ডাল, তরকারিতে ছোলা, সেদ্ধ ছোলা ভাজি, ছোলার বেসন- নানান উপায়ে ছোলা খাওয়া যায়৷

প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় আছে:

• প্রায় ১৭ গ্রাম আমিষ বা প্রোটিন
• ৬৪ গ্রাম শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট
• ৫ গ্রাম ফ্যাট বা তেল
• প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম
• ১০ মিলিগ্রাম লৌহ
• ১৯০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ

ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম৷ খাওয়ার পর খুব তাড়াতাড়িই হজম হয়ে গ্লুকোজ হয়ে রক্তে চলে যায় না৷ বেশ সময় নেয়৷ তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভাল৷ ছোলার ফ্যাট বা তেলের বেশির ভাগই পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়৷ প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ছাড়া ছোলায় আরও আছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ লবণ৷ এ ছাড়াও আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম৷ এ সবই শরীরের জন্য কাজে লাগে৷ ছোলায় খাদ্য-আঁশও আছে বেশ৷ এ আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্যে উপকারী৷ খাবারের আঁশ হজম হয় না৷ এভাবেই খাদ্যনালী অতিক্রম করতে থাকে৷ তাই পায়খানার পরিমাণ বাড়ে এবং পায়খানা নরম থাকে৷ এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়৷ পায়খানা করা সহজ হয়৷ নিয়মিত পায়খানা হয়ে যায় বলে ক্ষতিকর জীবাণু খাদ্যনালীতে থাকতে পারে না৷ ফলে খাদ্যনালীর ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কমে৷ রক্তের চর্বি কমাতেও সহায়ক খাদ্যের আঁশ৷ আরও নানান শারীরিক উপকার আছে খাদ্য-আঁশে৷ দেরীতে হজম হয়, এরূপ একটি খাবার হচ্ছে ছোলা৷ শরীরে শক্তির যোগান দিতে থাকে দীর্ঘক্ষণ ধরে৷ প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলা থেকে পাওয়া যায় ৩৬০ ক্যালরিরও অধিক শক্তি৷