ছেঁচকি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ছেঁচকি
আহারে বাংলা ২০১৬-তে কুমড়োর ছেঁচকি
উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ,  ভারত
পরিবেশনস্বাভাবিক তাপমাত্রা
প্রধান উপকরণসব্জি

ছেঁচকি বা নিরামিষ সবজি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রন্ধনশৈলীর অন্তর্গত একপ্রকার ব্যাঞ্জন। বলা হয় যে গরম তেলে সব্জি ছাড়লে যে শব্দ হয় তার থেকেই পদটির নামকরণ হয় ছেঁচকি।[১] যে কোন সব্জি ও আলু ডুমো ডুমো করে কেটে অল্প তেলে কাঁচা মরিচ ও পাঁচফোড়ন দিয়ে নেড়ে নেওয়া হয়।[২] ভোজনের সময় এটি ভাজির পরে খাওয়া হয়। এটি সাধারণতঃ ডাল,ভাত, ঘি ভাত ও খিচুড়ির সাথে খেতে ভালো লাগে। কোনো ছেঁচকি লুচির সাথেও খেতে ভালো লাগে।[৩] ছেঁচকি জলখাবারে লুচি, রুটি বা পরোটার সাথেও খাওয়া হয়। এটি একটি উচ্চ শর্করাযুক্ত খাদ্য।[২]

উপাদান ও প্রণালি[সম্পাদনা]

ছেঁচকির প্রধান উপাদান সবজি। সাধারণত সবজি পাকা হয়ে গেলে বা বুড়িয়ে গেলে তা নষ্ট না করে ছেঁচকিতে ব্যবহার করা হয়।[৩] ছেঁচকিতে কচি টাটকা সবজিও ব্যবহার করা যায়। কিন্তু কচি সবজি সাধারণত অন্যান্য পদেই ব্যবহার হয় বেশি, ছেঁচকিতে সচরাচর ব্যবহার হয় না। ছেঁচকিতে মশলা হিসেবে ব্যবহার করা হয় সর্ষে ও কাঁচা লঙ্কা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গোলমরিচ, রসুন, আদা ও পেঁয়াজও ব্যবহার করা হয়।[৩] ছেঁচকির সবজি ও আলু প্রথমে কেটে সেদ্ধ করে নেওয়া হয়। তারপর কড়াইতে অল্প তেল গরম করে তাতে ফোড়ন দিয়ে সেদ্ধ সবজি ও আলু ভেজে নেওয়া হয়। ভাজা ভাজা হয়ে গেলে তাতে সর্ষে বাঁটা দিয়ে নামিয়ে নেওয়া হয়। মোচা প্রভৃতি কষযুক্ত সবজির ছেঁচকি কড়াইয়ের থেকে হাঁড়িতে ভালো রান্না হয়।[৩]

প্রকারভেদ ও তারতম্য[সম্পাদনা]

ভাজির সঙ্গে ছেঁচকির তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। ভাজিতে কয়েক ক্ষেত্রে লঙ্কা বা মেথি ইত্যাদি ফোড়ন দেওয়া হয়ে থাকে, কিন্তু ছেঁচকিতে সব সময়েই লঙ্কা, মেথি বা লঙ্কা, কালোজিরের ফোড়ন দেওয়া হয়ে থাকে। ভাজিতে কচি আনাজ ব্যবহার করা হয় কিন্তু ছেঁচকি রান্নাতে পাকা অর্থাৎ বুড়ো আনাজের ব্যবহার হয় । ভাজিতে সবজি গুলো বড় বড় আকারে কাটা হয় এবং রান্না করার পর এই আকারেই রাখা হয় [৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. প্যাটেল, তুষিতা (২০১০)। Flash in the Pan (ইংরেজি ভাষায়)। ওয়েস্টল্যান্ড। পৃষ্ঠা ৮৮। আইএসবিএন 9789380032641। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "BONG BOMBSHELLS"Men's Health (ইংরেজি ভাষায়)। ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপ। মে ২০০৮। ২৪ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৬ 
  3. দেবী, প্রজ্ঞাসুন্দরী (১৯০২)। আমিষ ও নিরামিষ আহার। পৃষ্ঠা ২৭১–২৭২। ১৪ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  4. রায়, কিরণ লেখা (১৩২৮)। বরেন্দ্র রন্ধন। কলকাতা: বিজয়কুমার মৈত্র। পৃষ্ঠা ৭৩।