ছন্দঃপূর্ণ চক্র

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মানুষের ২৪ ঘন্টার জৈবিক ঘড়ির কিছু বৈশিষ্ট্য

ছন্দঃপূর্ণ চক্র প্রতি ২৪ ঘন্টার জন্য নিদ্রা-জাগ্রত চক্র এবং কার্য নিয়ন্ত্রণ করা এক প্রাকৃতিক এবং আভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া।[১] এটি ২৪ ঘন্টাজুড়ে চলা যেকোনো আভ্যন্তরীণ জৈবিক প্রক্রিয়াকে বোঝায়। জৈবিক ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ করা এমন কার্য উদ্ভিদ, প্রাণী, ভেঁকুর এবং সায়ানোব্যাক্টেরিয়াতে দেখতে পাওয়া যায়।[২]

circadian শব্দটি ল্যাটিন circa ("প্রায়") এবং diēm ("দিন") থেকে এসেছে। ২৪ ঘন্টার জন্য দোলন হওয়া প্রক্রিয়াগুলিকে সাধারণত আহ্নিক ছন্দ (diurnal rhythms) বলা হয়; আভ্যন্তরীণ প্রকৃতি নিরূপণ না হওয়া পর্যন্ত সেগুলিকে ছন্দঃপূর্ণ চক্র বলা হয় না।[৩]

ছন্দঃপূর্ণ চক্র আভ্যন্তরীণ বা স্বয়ংসম্পূর্ণ যদিও এইগুলি আলো, তাপ এবং জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়ার মতো বাহ্যিক সংকেতের (zeitgeber) সহায়তায় স্থানীয় পরিবেশের সাথে খাপ খেতে পারে।[৪]

দ্রোসোফিলিয়া গণের মাছিতে "ছন্দঃপূর্ণ চক্র নিয়ন্ত্রণের আণবিক কার্যপ্রণালী আবিষ্কারের জন্য" জেফ্রি সি. হল, মাইকেল রসওয়াস এবং মাইকেল ডব্লিউ. ইয়ং-কে ২০১৭ সালে শারীরতত্ত্ব বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল।[৫]

মাপকাঠী[সম্পাদনা]

ছন্দঃপূর্ণ বলার জন্য একটি জৈবিক ছন্দ‌কে তিনটি সাধারণ মাপকাঠী পূর্ণ করতে হয়:[৬]

  1. ছন্দটির প্রায় ২৪ ঘন্টার জন্য আভ্যন্তরীণ মুক্ত মেয়াদ থাকতে হয়। নিশ্চল পরিবেশে (যেমন নিশ্চল অন্ধকার) ছন্দটি প্রায় ২৪ ঘন্টার জন্য চলবে।
  2. ছন্দটি বিপরীত পরিবেশে খাপ খেতে পারে (entrainable)। বাহ্যিক সংকেত (যেমন আলো ও তাপ) ছন্দটি নতুন করে আরম্ভ করতে পারে। অন্য সময় অঞ্চলে যাত্রা করতে প্রথমে জেট লেগ হয়, কিন্তু পরে জৈবিক ঘড়ি স্থানীয় সময়ের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়।
  3. ছন্দটি তাপমাত্রার পরিবর্তনে প্রভাবিত হয় না। বহু জীব‌ই বিস্তৃত তাপমাত্রায় বাস করে। তাপের পরিবর্তন কোষের রাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলিতে প্রভাব ফেললেও আহ্নিক ছন্দটি ২৪ ঘন্টার সময় বহাল রাখতে পারে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "What makes us sleep?"NICHD - Eunice Kennedy Shriver National Institute of Child Health and Human Development। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৯ 
  2. Edgar RS, Green EW, Zhao Y, van Ooijen G, Olmedo M, Qin X, Xu Y, Pan M, Valekunja UK, Feeney KA, Maywood ES, Hastings MH, Baliga NS, Merrow M, Millar AJ, Johnson CH, Kyriacou CP, O'Neill JS, Reddy AB (মে ২০১২)। "Peroxiredoxins are conserved markers of circadian rhythms"Nature485 (7399): 459–64। ডিওআই:10.1038/nature11088পিএমআইডি 22622569পিএমসি 3398137অবাধে প্রবেশযোগ্যবিবকোড:2012Natur.485..459E 
  3. Vitaterna MH, Takahashi JS, Turek FW (২০০১)। "Overview of circadian rhythms"Alcohol Research & Health25 (2): 85–93। পিএমআইডি 11584554। ৩১ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০২০ 
  4. Bass J (নভেম্বর ২০১২)। "Circadian topology of metabolism"। Nature491 (7424): 348–56। ডিওআই:10.1038/nature11704পিএমআইডি 23151577বিবকোড:2012Natur.491..348B 
  5. "The Nobel Prize in Physiology or Medicine 2017"www.nobelprize.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১০-০৬ 
  6. Johnson, Carl (২০০৪)। Chronobiology: Biological Timekeeping। Sunderland, Massachusetts, USA: Sinauer Associates, Inc.। পৃষ্ঠা 67–105। 

অতিরিক্ত পাঠ[সম্পাদনা]