চ্যাপা শুটকি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

চ্যাপা শুঁটকি বাংলাদেশের একটি স্থানীয় খাদ্য। এটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন- চ্যাপা, চ্যাপা শুঁটকি, সিধল বা সিদঈল, হিদল (আঞ্চলিক নাম ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা অঞ্চল), ব্যারমা (পার্বত্য অঞ্চলে)।[১] এটি ইংরেজি শব্দ Semi-fermented fish নামে বহির্বিশ্বে পরিচিত।

সাধারণত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রোদে শুকিয়ে শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। দেশী জাতের মাছের শুঁটকি সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় বাংলাদেশের হাওরাঞ্চল। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ সনাতন পদ্ধতিতে মাছ প্রক্রিয়াকরণ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। সাধারণত এসব শুঁটকি মাছ দিয়েই চ্যাপা শুঁটকি নামক বিশেষ একটি মৎস্যপণ্য উৎপাদন করা হয়। পুঁটি মাছের শুঁটকি এ পণ্য উৎপাদনের মূল কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি সনাতন পদ্ধতির গাঁজন প্রক্রিয়া দ্বারা প্রস্তুত করা হয় এবং এটি তৈরিতে তেমন কোন প্রযুক্তিগত জ্ঞানের প্রয়োজন পড়ে না। চ্যাপা শুঁটকি আমিষের একটি সহজলভ্য উৎস এবং আমাদের দেশের অনেকেই এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত স্বাদ এবং গন্ধের জন্য একে খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করে থাকে।

চ্যাপা শুঁটকির উপযোগী মৎস্য প্রজাতি[সম্পাদনা]

চ্যাপা শুঁটকির জন্য উত্তম প্রজাতি হচ্ছে পুঁটি বা জাঁত পুঁটি।

বাংলাদেশে বেশ কয়েক প্রজাতির পুঁটিমাছ রয়েছে যেগুলো চ্যাপা শুঁটকি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। যথা-

  • পুঁটি বা জাঁত পুঁটি (Puntius stigma)
  • তিত পুঁটি (Puntius ticto)
  • সরপুঁটি (Puntius sarana)

এছাড়াও অন্যান্য প্রজাতির মাছ দিয়েও এ পণ্য তৈরি করা যায়, যেমন-

  • জাল পুঁটি বা ভাদি পুঁটি, Spot-fin swamp barb, Puntuis sophora
  • ফাঁসা, Gangetic hairfin anchovy, Setipinna phasa
  • তেলি ফাঁসা, Scaly hairfin anchovy, Setipinna taty
  • চাপিলা বা খয়রা, Indian River shad, Gudusia chapra
  • কটি ইলিশ, Coromandel ilisha, Ilisha

চ্যাপা শুঁটকি তৈরির প্রচলিত পদ্ধতি[সম্পাদনা]

শীতকালে যখন জলাশয়ের পানি কমে এসে প্রচুর পুঁটি মাছ ধরা পড়ে তখন মাছ শুকিয়ে প্রথমে শুঁটকি করা হয় এবং পরে আংশিক গাঁজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চ্যাপা শুঁটকি তৈরি করা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]