চিত্রিত পি-উ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

চিত্রিত পিউ
অপ্রজননকালীন চিত্রিত পিউ
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণীজগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: পক্ষী
বর্গ: Charadriiformes
পরিবার: Scolopacidae
গণ: Tringa
প্রজাতি: T. erythropus
দ্বিপদী নাম
Tringa erythropus
(পালাস, ১৭৬৪)

চিত্রিত পিউ (বৈজ্ঞানিক নাম: Tringa erythropus), তিলা লালপা বা চিট্টো পি-উ Scolopacidae (স্কলোপ্যাসিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Tringa (ট্রিঙ্গা) গণের অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির পানিকাটা পাখি[২][৩][৪] পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও ইউরোপ, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকাএশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। চিত্রিত পিউর বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ লালপায়ের জলচর পাখি (গ্রিক: trungas = অ্যারিস্টটল বর্ণিত জলচর পাখি, eruthropous = লাল পায়ের)।[৪] সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ৩৭ লক্ষ ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস।[৫] বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে, আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[১] বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয় নি।[৪]

আকার[সম্পাদনা]

প্রজননকালীন চিত্রিত পিউ

পিউ পাখির মাপ ৩৩ সেন্টিমিটার। বুক ও পেট সাদা রঙের, কপাল,মাথা ও ঘাড় ছাই-বাদামি রঙের, পিঠ চকচকে ছাই-ধূসর, তার ওপর অসংখ্য সাদাটে ছিট-ছোপ থাকে। পা লম্বা, পায়ের রং কমলা-হলুদ, লম্বা নলাকার ঠোঁটের গোড়া লাল, বাকিটা কালচে ধূসর। চোখের ওপর দিয়ে চওড়া সাদা একটি টান আছে। লেজের গোড়ার উপরিভাগ সাদা। লেজের আগার দিকের ওপরে সুবিন্যস্তভাবে সাদা ও কালো রেখা আড়াআড়িভাবে টানা। পালকের উপরিভাগের পেছন দিকে সাদা সাদা ছোট ছোট চৌকো ছোপ আঁকা।[২]

খাদ্য[সম্পাদনা]

পিউ পাখির মূল খাদ্য এদের কুচোমাছ, ব্যাঙাচি, জলজ পোকা,পতঙ্গ,লার্ভা ও সুতোপোকা ইত্যাদি। ছোট গুগলি শামুকও খায়।[২]

স্বভাব[সম্পাদনা]

পিউ পাখি জোড়ায় চলে, ছোট দলে বা বড় দলে চলে এরা। ভালো সাঁতার জানে। লম্বা ঠোঁট জলের তলার কাদায় সেধিয়ে দিয়ে সামনে-পেছনে ও ডানে-বাঁয়ে চালাতে ওস্তাদ। প্রয়োজনে ডুবও দেয়। এক পায়ে ভর করে ঘুমায়। সতর্ক এই পাখি হাওর,বিল,মাঠ,ঝিলসহ উপকূলেও চরে।[২]

প্রজনন[সম্পাদনা]

প্রজনন ঋতুতে রং হয় কালো, পিঠ-ডানা ও লেজের উপরিভাগে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম সাদা ছিট থাকে অসংখ্য। পা হয় আলতা লাল রঙের।[২]

গ্যালারি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. BirdLife International (২০১২)। "Tringa erythropus"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2012.1প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১২ 
  2. পি-উ ডাকে পিউ পিউ, শরীফ খান, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: নভেম্বর ০৪, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।
  3. রেজা খান (২০০৮)। বাংলাদেশের পাখি। ঢাকা: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ৭৩। আইএসবিএন 9840746901 
  4. জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.) (২০০৯)। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: পাখি, খণ্ড: ২৬। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৭৩। 
  5. "Tringa erythropus"BirdLife International। ২০১৩-১০-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৯-১৮ 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • O'Brien, Michael; Crossley, Richard; Karlson, Kevin (২০০৬)। The Shorebird Guide। New York, NY: Houghton Mifflin। আইএসবিএন 0-618-43294-9 
  • Pereira, S. L., & Baker, A. J. (2005). Multiple Gene Evidence for Parallel Evolution and Retention of Ancestral Morphological States in the Shanks (Charadriiformes: Scolopacidae). Condor 107 (3): 514–526. DOI: 10.1650/0010-5422(2005)107[0514:MGEFPE]2.0.CO;2 HTML abstract

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Redshank"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস।