বিষয়বস্তুতে চলুন

চরার-ই-শরীফ মাজার

চরার-ই-শরীফ মাজার
২০২৩ সালে চরার-ই-শরীফ
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিসুন্নি ইসলাম
ধর্মীয় অনুষ্ঠানসুফিবাদ
যাজকীয় বা
সাংগঠনিক অবস্থা
সুফি মাজার এবং মসজিদ
অবস্থাসক্রিয়
অবস্থান
অবস্থানচরারি শরীফ, বুদগাম, কাশ্মীর উপত্যকা, ইউসমার্গ, জম্মু ও কাশ্মীর
দেশভারত
চরার-ই-শরীফ মাজার জম্মু ও কাশ্মীর-এ অবস্থিত
চরার-ই-শরীফ মাজার
মাজার ও মসজিদের অবস্থান
জম্মু ও কাশ্মীরে
স্থানাঙ্ক৩৩°৫১′৫৯″ উত্তর ৭৪°৪৬′০০″ পূর্ব / ৩৩.৮৬৬৩৯° উত্তর ৭৪.৭৬৬৬৭° পূর্ব / 33.86639; 74.76667
স্থাপত্য
ধরনবর্গাকার মসজিদ স্থাপত্য
প্রতিষ্ঠাতাজয়নুল-আবিদিন
সম্পূর্ণ হয়১৪৬০ খ্রি
সম্মুখভাগের দিকপশ্চিম

চরার-ই-শরীফ মাজার (যা চরার-ই-শরীফ, চরারি শরিফ, চরারি-শরীফ ইত্যাদি নামেও পরিচিত) হল ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বুদগাম জেলার চরারি শরিফ শহরে অবস্থিত একটি সুফি মাজার এবং মসজিদ[][] এটি ভারতীয় মুসলমানদের প্রাচীনতম এবং পবিত্র মাজারগুলির মধ্যে একটি। যার মধ্যে কাশ্মীরি সুফি সাধক নুন্দ রিশির প্রতি উৎসর্গীকৃত কাশ্মীর উপত্যকাও রয়েছে।[]

এই মাজার ও মসজিদটি ১৪৬০ সালে নুন্দ রিশির প্রতি সম্মান জানাতে নির্মিত হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের অগ্নিকাণ্ডের পর এটি পুনর্নির্মাণ করা হয়।[] অগ্নিকাণ্ডের পর পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী মাস্ত গুল শহর থেকে পালিয়ে যায়।[]

এটি কাশ্মীরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে ধর্মীয় তাৎপর্য বহন করে এবং মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়।[]

বিশ্বাস করা হয় যে ১৪৩৮ খ্রিস্টাব্দে নুন্দ রিশির মৃত্যুর দুই দিনের মধ্যে নয় লক্ষ মানুষ চরারের মাজারে সমবেত হয়েছিল। বাদশাহ সুলতান জয়নুল আবেদিনও তার জানাজায় অংশ নিয়েছিলেন।[][] মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দুরাও এই মাজারটি পরিদর্শন করেন।[] অগ্নিকাণ্ডে মাজারটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ এটি পুনর্নির্মাণ করে। তবে স্থানীয় জনগণ স্থানীয় সরকারের বিরুদ্ধে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ তোলেন।[]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

নন্দ ঋষির মৃত্যুর পর, তাকে চরার-ই-শরীফ শহরে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে ১৪৪৬ সালে, উপত্যকার অষ্টম সুলতান জয়নুল আবেদীন সমাধিস্থলে চরার-ই-শরীফ মাজারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সময়ের সাথে সাথে মাজারটি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ইয়াকুব শাহ চাক এর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করেন। ১৯শ শতাব্দীতে আফগান গভর্নর আত্তা মোহাম্মদ খান মাজারটি পুনর্নির্মাণ করেন। বকশি গুলাম মোহাম্মদ রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন মাজার চত্বরটির নির্মাণ কাজ করা হয়। ১৯৭৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর একাডেমি অফ আর্ট, কালচার অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজেস নুন্দ রিশির মাজারে একটি শিলালিপি স্থাপন করে।[১০]

অপবিত্রতা

[সম্পাদনা]

১৯৯৫ সালের ১১ মে, হিজবুল মুজাহিদিন সন্ত্রাসীরা মাজারের ভেতরে আশ্রয় নেয়। সেখানে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং জঙ্গিদের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ হয়। যুদ্ধের ফলে ২৫,০০০ এরও বেশি লোককে সংঘর্ষস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তারা "যুদ্ধে আটকা পড়ার ভয়ে" পার্শ্ববর্তী গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল। প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ১,০০০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আরও ২০০টি দোকান ধ্বংস হয়েছে। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সাংবাদিকদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়নি। এই যুদ্ধে তীব্র গুলি বিনিময়ের সময় ত্রিশজন সন্ত্রাসী নিহত হয় এবং পনেরোজন নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়। গোলাগুলিতে ৬৫ বছর বয়সী একজন বেসামরিক নাগরিকও নিহত হন।[১১]

২০০১ সালে, অজ্ঞাত হামলাকারীরা শুক্রবারের নামাজের সময় মহিলা মুসল্লিদের উপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এ হামলায় চারজন নিহত এবং পঞ্চাশজন আহত হয়।[১২][১৩]

২০১৫ সালে অজ্ঞাত হামলাকারীরা মসজিদে একটি গ্রেনেড ছুঁড়ে। এ হামলায় ১০ জন ভক্ত আহত হয়।[১৪]

বিবিসি নিউজ ভুলভাবে প্রতিবেদন তৈরি করে বলে ভারতীয় সেনাবাহিনী মাজারে হামলা চালিয়েছে। তীব্র সমালোচনার পরই সেই দাবি প্রত্যাহার করে।[১৫]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. 1 2 Burns, John F. (১২ মে ১৯৯৫)। "Muslim Shrine In Kashmir Is Destroyed"The New York Times
  2. "Kashmir: Despite killing of key militants at Charar shrine, India loses a battle"India Today। ৩১ মে ১৯৯৫।
  3. "CHARAR-E-SHARIF IN KASHMIR"
  4. "Kashmir: Despite killing of key militants at Charar shrine, India loses a battle"India Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০২৩
  5. "Sufi shrine of Charar-e-Sharif on fire"India Today। ২ জুলাই ২০০৭।
  6. "Housing and Urban Development Department, Government of Jammu & Kashmir"www.jkhudd.gov.in
  7. "Department of Tourism, Jammu and Kashmir - Charari Sharief"www.jktourism.org
  8. "Why a trip to Yousmarg is must when in Kashmir?"Times of India Travel
  9. "After fire audit, Wakf shelves measures to ensure safety of shrines"Greater Kashmir। ৫ ডিসেম্বর ২০১৯।
  10. "The Tribune - Windows - Featured story"www.tribuneindia.com
  11. "ANCIENT SHRINE IN KASHMIR DESTROYED IN FIGHT BETWEEN INDIAN FORCES, REBELS"The Washington Post। ১২ মে ১৯৯৫।
  12. "Four killed in grenade blast at Kashmir shrine"CNN। ৮ জুন ২০০১।
  13. "4 die, 50 hurt in Kashmir bomb attack"Arab News। ১০ জুন ২০০১।
  14. "Rare blast in mosque in Kashmir hurts 10"Reuters। ১৩ আগস্ট ২০১৫।
  15. Rai, Ajai K. (জুন ২০০০)। "Conflict Situations and the Media: A Critical Look"। Routledge (Taylor and Francis Group): ৫৮৫–৬০১। ডিওআই:10.1080/09700160008455233 {{সাময়িকী উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি journal এর জন্য |journal= প্রয়োজন (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

উইকিমিডিয়া কমন্সে চরার-ই-শরীফ মাজার সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।