গুল আগা শিরজ়াই
গুল আগা শিরজ়াই ګل آغا شيرزی | |
---|---|
আফগানিস্তানের নানগারহর প্রদেশের রাজ্যপাল। | |
কাজের মেয়াদ ১২ জুলাই ২০০৫ – অক্টোবর ২০১৩ | |
উত্তরসূরী | মৌলবী আত্তাউল্লাহ লুদিন |
আফগানিস্তানের সীমান্ত ও উপজাতীয় বিষয়ক মন্ত্রী | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ২৫ জুলাই ২০১৭ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯৫৪ (বয়স ৬৯–৭০) কান্দাহার, আফগানিস্তান |
রাজনৈতিক দল | নির্দল |
ধর্ম | ইসলাম |
গুল আগা শিরজ়াই (পশতু: ګل آغا شيرزی) মুহাম্মদ শফিক নামেও পরিচিত, হলেন আফগানিস্তানের একজন রাজনীতিবিদ। তিনি পূর্ব আফগানিস্তানের নানগারহর প্রদেশের প্রাক্তন রাজ্যপাল।[১] পূর্বে ১৯৯০ সালে এবং ২০০১ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত তিনি কান্দাহার প্রদেশের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অক্টোবর ২০১৩ সালে, শিরজ়াই রাজ্যপালের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেকে আফগানিস্তান রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ২০১৪-তে একজন প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন। ২০১৮ সালে তিনি সীমান্ত ও উপজাতীয় বিষয়ক মন্ত্রী হন।[২]
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]শিরজাই ১৯৫৪ সালে কান্দাহার প্রদেশের বারাকজাই এলাকায় মোহাম্মদ শফিক নামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাজী আবদুল লতিফ, কান্দাহারের একটি ছোট চা দোকানের মালিক ছিলেন, যিনি মুজাহিদিনের একজন বিখ্যাত অধিনায়ক হয়ে উঠেছিলেন। শেরজাই, 'গুল আগা' নামটি, পিতার সাথে মুজাহিদিনে যোগদানকালে গ্রহণ করেন, যারা তখন সোভিয়েত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফগানিস্তানে যুদ্ধ করছিলেন।
পরে তার বাবাকে হত্যা করা হয় এবং তিনি তার শেষ নাম হিসেবে শিরজাই (পশতুতে "সিংহের পুত্র") যোগ করেন। তিনি বারাকজাই উপজাতির একজন অতি পরিচিত পশতুন। তার পিতা স্থানীয়ভাবে হাজী লতিফ সাগবান নামে পরিচিত ছিলেন, ("সাগবান" শব্দটি "সারমেয় যোদ্ধা"-এর জন্য ব্যবহৃত হয়), যিনি দক্ষিণ আফগানিস্তানে সুপরিচিত সারমেয় যোদ্ধা ছিলেন। ১৯৯২ সালে পিডিপিএ সরকারের পর, শিরজাই কান্দাহারের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তালিবানদের কান্দাহারে জয়লাভ শুরু হওয়ার আগে সেপ্টেম্বর ১৯৯৪ পর্যন্ত, তিনি আফগানিস্তানের বাইরে অন্যতম যুদ্ধবাজ প্রধান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। শিরজাই রাজ্যপাল হিসাবে তার পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং ২০০১ সালের শেষ পর্যন্ত আত্মগোপন করেছিলেন।
কারজাই প্রশাসন
[সম্পাদনা]২০০১ সালের শেষ দিকে মার্কিন বিশেষ বাহিনী এবং হামিদ কারজাইয়ের সহযোগিতায় শেরজাইয়ের কান্দাহার দখল, যেটি দক্ষিণ আফগানিস্তানে তালেবান বাহিনী থেকে প্রথমবার অধিকৃত অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত হয়।
মথিইউ আইকিনসের, হারপারের পত্রিকায় লিখিত মতানুসারে, কারজাই, কান্ধাহারের রাজ্যপাল পদে মোল্লা নাকিবকে নিয়োগ করেছিলেন। আইকিনসের রিপোর্ট অনুযায়ী মার্কিন কর্মকর্তারা কারজাইয়ের মনোনয়নের থেকে শিরজাইকে বেশি পচ্ছন্দ করেছিলেন এবং তাকে মোল্লা নাকিবকে বহিষ্কৃত করার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন।
২০০৩ সালের আগস্ট মাসে আফগান রাষ্ট্রপতি কারজাই আদেশ দেন যে কর্মকর্তারা আর সামরিক ও বেসামরিক উভয় পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না এবং এর ফলে ইউসুফ পশতুনের বদলে শিরজাইকে কান্দাহারের রাজ্যপাল হিসাবে নিযুক্ত করেন।
কান্দাহার পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মজীবন
[সম্পাদনা]২০০৪ সালে, হামিদ কারজাইর "বিশেষ উপদেষ্টা" হিসেবে অল্পকাল থাকার পর, শিরজাই নানগারহার প্রদেশের রাজ্যপাল নিযুক্ত হন। কারজাইয়ের একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সহযোগী ছিলেন শিরজাই এবং কিছু সময়ের জন্য আফগান রাজনীতিতে একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
জুলাই ২০০৬ সালে, শিরজাই জালালাবাদের বাইরে একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে হঠাৎ একটি হত্যার প্রচেষ্টা থেকে অব্যহতি পান। এই হামলায় পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং কয়েকজন শিশুসহ কয়েকজন আহত হন। তিনি তুর্কহামের সাথে জালালাবাদ শহরটিকে সংযুক্ত করে নতুন নির্মিত হাইওয়ে উদ্বোধন করেন, যেটি আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় সীমান্ত শহরগুলোর মধ্যে একটি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আফগান প্রেসিডেন্ট কারজাই ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ উপস্থিত ছিলেন।
২০০৯ সালের জানুয়ারিতে, আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউটের আহমাদ মজিদিয়ারের একটি প্রবন্ধে শিরজাই ২০০৯ সালের আফগান রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পনের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।[৩] ২০০৯ সালের মে মাসে তিনি ঘোষণা করেন যে তিনি প্রার্থী হবেন না।[৪] তা সত্ত্বেও, তার নাম আগস্ট ২০০৯ সালের মতদানপত্রে ছিল এবং প্রাথমিক ফলাফল তিনি ৩৮ জনের মধ্যে ১৭তম স্থানে ছিলেন।[৫]
শিরজাইয়ের ভাই আব্দুল রাজিক শিরজাই, একজন কমান্ডার যিনি ২০০১-০২ সালে কান্দাহার বিমানবন্দর দখল করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে তাকে আফগান বিমান বাহিনীর কান্দাহার উইং কমান্ডার করা হয়েছিল।[৬]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Matthieu Aikins (ডিসেম্বর ২০০৯)। "The master of Spin Boldak: Undercover with Afghanistan's drug-trafficking border police"। Harper's Magazine। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-২৭।
- ↑ "Sherzai claims he is in contact with Taliban's Quetta council"। khaama.com। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Ahmad Majidyar (জানুয়ারি ২০০৯)। "Afghanistan's Presidential Election"। American Enterprise Institute। ২০০৯-০৯-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Starkey, Jerome; Sengupta, Kim (২০০৯-০১-২৩)। "Obama ready to cut Karzai adrift"। London: The Independent। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-২৩।
- ↑ "Preliminary Result of Afghanistan Presidential Contest"। Sabawoon.com। ২০০৯-০৮-২০। ২০০৯-০৮-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-২৭।
- ↑ http://www.afghan-bios.info/index.php?option=com_afghanbios&id=1714&task=view&start=2097&Itemid=2
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]পূর্বসূরী নেই |
গভর্নর, কান্দাহার প্রদেশ, আফগানিস্তান ২০০১–২০০৩ |
উত্তরসূরী ইউসুফ পশতুন |
পূর্বসূরী হাজি দিন মোহাম্মদ |
গভর্নর, নানগারহর প্রদেশ, আফগানিস্তান ২০০৪–বর্তমান |
উত্তরসূরী আরোপিত |