খুলনা নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
খুলনা নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসা
মাদ্রাসার লোগো
ধরনএমপিও ভুক্ত
স্থাপিত২ এপ্রিল ১৯৬২; ৬২ বছর আগে (1962-04-02)
প্রতিষ্ঠাতাআব্দুল হাকিম আজাদী
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ (২০০৬- ২০১৬)
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৬- বর্তমান)
অধ্যক্ষমাওলানা মোঃ আবদুর রহমান
মাধ্যমিক অন্তর্ভুক্তিবাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড
শিক্ষার্থীআনু. ১৩০০
ঠিকানা
মুজগুন্নি
, , ,
শিক্ষাঙ্গনশহুরে
EIIN সংখ্যা১১৭১০৫
ক্রীড়াক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, ব্যাটমিন্টন
এমপিও সংখ্যা৬০০৩০৮২৪০১
ওয়েবসাইটhttp://www.knkmbd.com/#featured-services
http://117105.ebmeb.gov.bd/

খুলনা নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসা বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলিয়া মাদ্রাসা[১] মাদ্রাসাটি খুলনা শহরের মুজগুন্নি নামক স্থানে অবস্থিত, এটি ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠা হবার পর, খুলনা বিভাগের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় মাদ্রাসায় পরিণত হয়েছে এবং দাখিল -আলিম ফলাফলের দিক থেকে শীর্ষে থাকে।[২] মাদ্রাসাটি বর্তমানে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত একটি মাদ্রাসা।[৩] মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষের নাম মাওলানা মোঃ আবদুর রহমান।[৪]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার চালিতাবুনিয়া গ্রামের হাফেজ আব্দুল হাকিম আজাদী নামে এক ব্যক্তি এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার জন্য খুলনা যশোর মহাসড়কের নিকটে ২৫ শতক জমি দান করেন। এই জমি খুলনা শহরের নিকটেই খুলনা-যশোর মহাসড়কের জোড়াগেট নূরনগর বয়রা নামক এলাকায় অবস্থিত ছিলো, এই জমির উপরই ১৯৬০ সালে হেফজখানা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়।[৫] মাদ্রাসার কার্যক্রম বৃদ্ধি পেলে ১৯৬২ সালে খুলনার শিল্প নগরী খালিশপুরের মুজগুন্নি নামক স্থানে আরো এক বিঘা জমি ক্রয় করা হয়। এই জমি কেনার ব্যয় বহন করে হাকিম আজাদী ও খুলনার পাওয়ায় কোল্ড স্টোরেজের মালিক।

আব্দুল হাকিম আজাদীর বড় ভাইয়ের নাম ছিলো একেএম আব্দুল মজিদ, তিনি ছারছিনা মাদ্রাসার তৎকালীন উপাধ্যক্ষ ছিলেন। ১৯৬২ সালে মাদ্রাসা নতুন জমিতে পুনঃস্থাপনের সময় দুই ভাই পরামর্শ করে ছারছিনা দরবার শরীফের পীর ও ছারছিনা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা নেছার উদ্দীনের সাথে মিল করে মাদ্রাসার নাম রাখেন খুলনা নেছারিয়া হেফজখানা ও এতিমখানা। এবং মাদ্রাসাটি ধীরে ধীরে একটি কামিল মাদ্রাসায় পরিণত হয়। ২০০৬ সালে মাদ্রাসাটি ডিগ্রি মানের জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার অধিভুক্তি লাভ করে, এবং ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে মাদ্রাসাটি সেখানে স্থানান্তরিত হয়।

শিক্ষা কার্যক্রম[সম্পাদনা]

এই মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষাস্তর ইবতেদায়ী থেকে শুরু করে আলিয়া মাদ্রাসার সর্বোচ্চ পর্যায় কামিল শ্রেণী পর্যন্ত রয়েছে। এছাড়ারাও এই মাদ্রাসার দাখিল ও আলিম উভয় স্তরে বিজ্ঞান ও মানবিক শাখা বিদ্যমান রয়েছে। এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করে থাকে। এছাড়াও এই মাদ্রাসার ফাজিল ও কামিল পর্যায়ে আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, দাওয়াহ প্রভৃতি বিভাগ চালু আছে। ফাজিল ও কামিল পর্যায়ের ছাত্রদের বিষয়ভিত্তিক গবেষণার সুযোগ রয়েছে। মাদ্রাসার প্রাতিষ্ঠানিক রেজাল্ট সবসময় খুলনা বিভাগের শীর্ষস্থানে থাকে।

মাদ্রাসা ছাত্রদের আত্মনির্ভরশীল ও বাস্তবসম্মত কর্মসংস্থানের উপযোগী করে তোলার জন্য ১৯৬৪ ও ১৯৯৬ সালে মাদ্রাসায় কারিগরি বিভাগ চালু করা হয়।

সুযোগ-সুবিধা[সম্পাদনা]

খুলনা বিভাগীয় শহরে অবস্থিত এই মাদ্রাসা আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন একটি মাদ্রাসা। শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে এই মাদ্রাসায়। বিশাল আকারের খেলার মাঠ, পড়াশোনার জন্য লাইব্রেরী, গবেষণাগার, বিতর্ক আয়োজনের জন্য ডিবেটিং সোসাইটি রয়েছে। এছাড়া মেয়েদের জন্য কমন রুম ও অভ্যন্তরীণ সময় কাটানোর জন্য খেলাধুলার সুযোগ রয়েছে।

খেলার মাঠ[সম্পাদনা]

এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার ক্ষেত্রে সাক্ষরতার প্রমান রেখেছে। মাদ্রাসার বিশাল মাথে বেশিরভাগ সময় ছাত্ররা ক্রিকেট, ফুটবল ও ভলিবল খেলে থাকে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে থাকে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ থেকে মাঠের উন্নয়ন ও খেলাধুলার সামগ্রী বহন করা থাকে।

এতিমখানা[সম্পাদনা]

এই মাদ্রাসার গরীব ছাত্রদের জন্য এতিমখানা চালু রয়েছে, এবং এই মাদ্রাসা মূলত এতিমখানার জন্যই খুলনাতে বিখ্যাত। এই এতিমখানায় ছাত্ররা বিনামূল্যে বা অতি স্বল্পে মূল্যে খাবার খেতে পারে। এতিমখানার ছাত্রদের প্রতিষ্ঠানের বেতন মওকুফ থাকে।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Khulna Nesaria Kamil Madrasha - Sohopathi | সহপাঠী" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৭-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২২ 
  2. পোর্টাল, channelkhulna tv দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রথম মাল্টিমিডিয়া নিউজ (২০১৯-১২-৩১)। "ইবতেদায়িতে দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া ও জেডিসিতে খুলনা কামিল মাদ্রাসা এগিয়ে"চ্যানেল খুলনা (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "গভর্নিং বডি – খুলনা – Islamic Arabic University"iau.edu.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২২ 
  4. "খুলনা নেছারিয়া কামিল মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদে মো. আব্দুর রহমানের যোগদান"The Daily Sangram। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২২ 
  5. "খুলনা নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসা মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন"নীলাকাশ টুডে (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৩-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]