খুলনা নাট্য নিকেতন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

খুলনা নাট্য নিকেতন[১] বাংলাদেশের খুলনা জেলার শহীদ হাদিস পার্ক সংলগ্ন একটি মঞ্চ নাট্যগোষ্ঠী । শত বছরেরও বেশি সময়  পার করা এই ‘খুলনা নাট্য নিকেতনে’ নাটকের শুরু ডি এল রায়ের হাত ধরে। এর জন্ম ১৯০০ সালে। প্রথমে নাম ছিল ‘খুলনা থিয়েটার’, পরে ‘খুলনা নাট্য মন্দির’, এখন ‘খুলনা নাট্য নিকেতন’[২][৩][৪]

গিরিশ ঘোষ, শিশির ভাদুড়ি, ছবি বিশ্বাসের মতো অভিনেতারা এই মঞ্চে মানুষকে হাসিয়েছেন, কাঁদিয়েছেন। আনোয়ার হোসেনের মতো উজ্জ্বল অভিনেতার পা পড়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

এই নাট্যশালার জন্ম মানুষের উৎসাহে। খুলনা শহর, আশপাশের জমিদার, ধনী ব্যবসায়ী, সংস্কৃতিসেবী, উৎসাহী নাট্যকর্মীরা একসঙ্গে শুরু করেছিলেন। সেই নাট্যকর্মীদের নাম এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে থিয়েটারটির ইতিহাসে। তারা কুঞ্জবিহারী মুখার্জি, বিমলানন্দ দাশগুপ্ত, জানকীনাথ গুহ, প্রিয়নাথ দাশ, ডা. হরিমোহন সেন, গিরিজানাথ ঘোষ, জগদীশ চন্দ্র মিত্র। খুলনা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক কুঞ্জবিহারী মুখার্জি, কোষাধ্যক্ষ বিমলানন্দ দাশগুপ্ত। তাদের ইচ্ছে ছিল, থিয়েটারের মাধ্যমে খুলনার মানুষের চিত্তবিনোদন। কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের   সংস্কৃতিচর্চার মতো থিয়েটারটির মাধ্যমে মানুষের চিত্ত বিকাশ করতে চেয়েছিলেন।

এটিই এ খুলনা শহরের প্রথম নাট্যমঞ্চ। প্রথম ঠিকানা ১১, কে ডি ঘোষ রোড। তবে সেখানে মঞ্চ ছিল না, অফিস ঘর ছিল। আহসান আহমেদ রোডের করোনেশন গার্লস স্কুলের (তখন এই স্কুলের এই নাম ছিল। এখন সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়) উল্টো দিকে খোলা মাঠে মঞ্চ তৈরি করে তারা নাটক করতেন। বছর কয়েক পর থিয়েটারকর্মীরা ডি কে ঘোষ রোডের পুরনো ঠিকানায় গোলপাতার ঘর করলেন। নাটক হতে লাগল।

১৯০৫ বা ’০৬ সালে খুলনা থিয়েটার পাকা দালান, ওপরে টিনের ছাউনি পেল। সেই টাকা নাট্যকর্মীরা দিলেন। গণ্যমান্যদের চাঁদা, নিজেদের জমানো টাকা, স্ত্রীদের স্বর্ণালংকার নিয়ে বন্ধক রেখে তারা মঞ্চের খরচ দিলেন। নাটক ভালোভাবে শুরু হলো। কিছুদিন পর অবিভক্ত বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর উড্বার্ন শহর পরিদর্শনে এলেন। থিয়েটারের নাট্যকর্মীরা নাটক দেখতে তাকে আমন্ত্রণ জানালেন। তিনি রাজকাজে ব্যস্ত বলে আসতে পারলেন না। সেক্রেটারি, পারিষদদের পাঠালেন। তারা অভিনেতাদের অভিনয় দেখে মুগ্ধ। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ব্যাড্লি বার্ট আইসিএসকে বললেনও। তিনি খুলনা থিয়েটারের পাশে দাঁড়ালেন। ফলে ১১ কে ডি ঘোষ রোডের পাশে খুলনা সিটি করপোরেশন তাদের বিনা খাজনায় কিছু জায়গা দিল। উৎসাহিত নাট্যকর্মীরা আরও নাটক করলেন। ১৯০৯ সালের প্রবল ঝড়ে থিয়েটারের মঞ্চ, পেছনের ঘর সবই নিশ্চিহ্ন হলো। দিশেহারা নাট্যকর্মীরা আবার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গেলেন। ব্যাড্লি বার্ট সভাপতি বিমলানন্দ দাশগুপ্তকে পাকা হলঘর করে দিতে রাজি হলেন। করোনেশেন স্কুলের পাশের সেই জায়গায় ঠিকানা হলো। নাট্যকর্মীদের পাকা ঘর, পাকা মঞ্চ হলো। মহারানী ভিক্টোরিয়া মারা গেলেন বলে হল উদ্বোধন হলো না। ১৯১১ সালে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলী আহমদ, আইসিএস রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডের ‘করোনেশন’ বা ‘অভিষেক’ উপলক্ষে হলের উদ্বোধন করলেন। নামও রাখলেন ‘করোনেশন হল’।[৪]

১৯১০ সালে বিখ্যাত নাট্যকার, কবি, গীতিকার ডিএল রায় (দ্বিজেন্দ্রলাল রায়) ডেপুটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে শহরে বদলি হলেন। তার লেখা বিখ্যাত নাটক নাটক ‘বিরহ (১৮৯৭ সালে লেখা)’ ‘রানা প্রতাপ সিংহ (১৯০৫ সালে লেখা)’, নিদের্শনা ও তার অভিনয়ের মাধ্যমে খুলনা থিয়েটারের স্থায়ী মঞ্চ ভবনের উদ্বোধন হলো। এরপর একে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। পরের ২৫টি বছর ললিত ব্যনার্জি, কিরণ রায়, বীরেন্দ্রনাথ ঘোষ, সতীশ চন্দ্র দে, বিমলানন্দ দাশগুপ্ত, মতিলাল সেন, সত্য মজুমদারের মতো নামকরা অভিনেতা এ মঞ্চে আলো ছড়িয়েছেন। অল্প দূরের কলকাতা থেকে স্মরণীয় মঞ্চাভিনেতা-অভিনেত্রীরা এসেছেন। গিরিশ চন্দ্র ঘোষ, তার ছেলে সুরেন্দ্রনাথ ঘোষ (দানী বাবু), ‘রসরাজ’ অমৃতলাল বসু, ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নির্মলেন্দু লাহিড়ী, ত্রিমাত্রিক সেটের জনক, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রথম বাংলা নাটক করা শিশিরকুমার ভাদুড়ী, অহীন্দ্র চৌধুরী (অহীন্দ্র নাট্যসূর্য), মঞ্চ ও চলচ্চিত্রের বিখ্যাত অভিনেতা ছবি বিশ্বাস, মিহির ভট্টাচার্য্য, চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল নক্ষত্র ধীরাজ ভট্টাচার্য্য, বিখ্যাত অভিনেত্রী বাণী বালা, গীতা দে’র মতো নির্দেশক, রচয়িতা, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এই মঞ্চে অভিনয় করেছেন। অমল মুখার্জির চেষ্টায় উইলিয়াম শেকসপিয়ারের ‘হ্যামলেট’ মঞ্চায়িত হয়ে শহরের মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। দুর্দিনেও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন এই থিয়েটারের কর্মীরা। বিশেষ নাট্য প্রদর্শনী করে খুলনা সদর হাসপাতাল, জেলার অনেক স্কুল-কলেজ নির্মাণের খরচ জুগিয়েছেন। ১৯২৪ সালে অবিভক্ত বাংলার পশ্চিম অংশের (এখন পশ্চিমবঙ্গ) যাদবপুর যক্ষ্মা হাসপাতাল তৈরিতে স্পেশাল শো করে টাকা তুলে দিয়েছেন। এখনো হাসপাতালে ‘খুলনা নাট্য মন্দির’ নামে একটি বেড আছে। ফলে সেই বছর খুলনার মান্যগণ্যরা থিয়েটারটির নাম বদলে রাখলেন ‘খুলনা নাট্য মন্দির’। এরপর নাট্য মন্দিরে নাটক দেখা ও নাটক করার জোয়ার এলো। খুলনার মানুষের মানসিক বিকাশের জন্য নাট্যকর্মীরা আরও অবদান রাখতে লাগলেন। ফলে ১৯৫০ সালে সরকারি সাহায্যও পেলেন। সেই বছর খুলনা করোনেশন হল কমিটি নাট্য মন্দিরকে আধুনিক সিনেমা ও থিয়েটার প্রদর্শনের উপযোগী করতে উদ্যোগী হলো। তবে যে ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল, তিনি টাকার লোভী। শিল্প-সাহিত্য, নাটক-সিনেমার প্রতি বিন্দুমাত্র মায়া তার নেই। তিনি নাট্য মন্দিরের মানুষদের সঙ্গে কোনো আলাপ না করেই হলের ছাদ ভেঙে ফেললেন। টানা বৃষ্টিতে ইলেট্রিক্যাল ফিটিংস, নাটকের সরঞ্জামগুলো নষ্ট হয়ে গেল। যে ৭০০ বই ৫০ বছর ধরে তিলে তিলে নাটক শিখবেন, চর্চা করবেন বলে কর্মীরা জমিয়েছিলেন, সবই নষ্ট হয়ে গেল।

১৯৫২ সালে নাট্য মন্দিরের আধুনিকায়ন শেষ হলো। আবার আশায় বুক বাঁধলেন নাট্যকর্মীরা। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৩ সালে যশোর মহকুমার নড়াইল জেলায় তারা নাটক নিয়ে গেলেন। বাইরের জেলায় তাদের প্রথম অভিনয় হলো। তারা ‘টিপু সুলতান’, ‘মিসর কুমারী’, ‘রেশমী রুমাল’, ‘দ্বীপান্তর’, ‘শাজাহান’ দেখালেন। পরে আরও কয়েকটি জেলায় তারা নাটক নিয়ে গেলেন। সারা দেশে খুলনা নাট্য মন্দিরের সুনাম হলো। ওপার বাংলায়ও খ্যাতি বাড়ল। ফলে পরের দুটি বছর ওপার বাংলা থেকে রানী বালা, ছবি বিশ্বাস, লীলাবতী, মহেন্দ্র গুপ্ত খুলনা নাট্য মন্দিরে ‘ডাকঘর’, ‘সিরাজউদ্দৌলা’, ‘পথের শেষে’, ‘মায়াবী গার্লস স্কুল’ মঞ্চায়ন করলেন।[২]

১৯৭১ এর আগে নাট্য নিকেতন[সম্পাদনা]

ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনের ঢেউ নাটকের এই ঘরে এসে পড়ল। ১৯৬৬ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি নাট্য মন্দিরে সভা হলো। তাতে নতুন নাম রাখা হলো ‘খুলনা নাট্য নিকেতন’। সভায় সিদ্ধান্ত হলো, ঘূর্ণায়মান মঞ্চ তৈরি করে চারপাশের দর্শকদের নাটক দেখার ব্যবস্থা করা হবে। সেটি তৈরি করা গেল না। তবে নাটকের এই কেন্দ্রটি গণ-আন্দোলনে আরও সম্পৃক্ত হলো। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে আনোয়ার হোসেন, আনোয়ারা, গোলাম মুস্তাফা, শাবানা, সুলতানা জামান, কবিতা, সুজাতা, রানী সরকার, সৈয়দ হাসান ইমাম, শওকত আকবররা এই মঞ্চে অভিনয় ও প্রেক্ষাগৃহে ছবি দেখেছেন। ফলে আরো টাকা হলো। খুলনা নাট্য নিকেতন নিজের ফান্ডে ১৯৭০ সালে দোতলা ভবন করল। মুক্তিযুদ্ধে হানাদার, রাজাকাররা নাট্য নিকেতনের বাদ্যযন্ত্র, আসবাবপত্র সব নষ্ট করল। নাট্যকর্মী, সংগঠকরা যুদ্ধে জড়ালেন।

১৯৭১ এর স্বাধীনতার পর[সম্পাদনা]

স্বাধীন দেশে ফিরে তারা নাটকের স্বপ্নে বিভোর হলেন। নতুন নাট্যকর্মীর প্রশিক্ষণ, মঞ্চ সংস্কার সবই হলো। নিয়মিত নাটক মঞ্চে উঠল। ১৯৭৭ সালে ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির প্রথম বার্ষিক নাট্য প্রদর্শনীতে খুলনা নাট্য নিকেতন অংশ নিল। সারা দেশের ৩০ জেলার নাটকের দলগুলো সেবার ছিল। রবীন্দ্রনাথের ‘শাস্তি’ গল্প অবলম্বনে রিরু মুখোপাধ্যায় নাটকের নাট্যরূপ দিলেন। অভিনয় ও নির্দেশনায় ছিলেন শেখ সিরাজুল ইসলাম। নিরপরাধ বৌ ভাসুরকে বাঁচাতে সব দোষ কীভাবে নিজের কাঁধে নেন এই হলো গল্প। নাটকটি প্রথম পুরস্কার পেল। জেলায় ফিরে নাট্যকর্মীরা নাট্য নিকেতনকে আরও আধুনিক করতে উদ্যোগী হলেন। ১৯৭৯ সালে ঘূর্ণায়মান মঞ্চ শুরু হলো, ১৯৮০ সালের মার্চে শেষ। ১৯৭৮ সালে ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে দ্বিতীয় বার্ষিক নাট্য প্রতিযোগিতা হলো। নাট্য নিকেতন ঢাকায় গঙ্গাপদ বসুর ‘সত্য মারা গেছে’ প্রদর্শন করল। ‘ক্যাবলা’ চরিত্রে দেলোয়ার হোসেন ও ‘দুরাল ডাটা’ হিসেবে সেখ সিরাজুল ইসলাম শ্রেষ্ঠ শিল্পীর দ্বৈত পুরস্কার পেলেন।

সত্যের অভাবে সমাজে কীভাবে সত্য মারা যাচ্ছে এই হলো গল্প। ১৯৭৯ সালে খুলনার শিল্পকলা একাডেমি নাটকের প্রতিযোগিতা করল। খুলনা নাট্য নিকেতন বিমল মজুমদারের নির্দেশনায় ‘অগ্নিগিরি’ নিয়ে এলো। ১৯৯৪ সালে তাদের শিল্পকলা একাডেমির নাট্য উৎসবে এই নাট্যকর্মীরা আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘এখনও ক্রীতদাস’ মঞ্চায়ন করলেন। এই নাটকটির তারা অনেকগুলো মঞ্চায়ন করেছেন। নাটকের মাধ্যমে সংস্কৃতির বিকাশে অসামান্য অবদান রাখায় ২০১৩ সালে খুলনা নাট্য নিকেতন ‘মেয়র’ পদক পেল। শতবর্ষী এই নাট্যমঞ্চে পুরনো বিখ্যাত অভিনেতাদের মধ্যে সেখ সিরাজুল ইসলাম আছেন। ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোকলেসুর রহমান বাবলু হাল ধরে রেখেছেন।  

বর্তমানে নিকেতন এর কিছু সদস্য :[সম্পাদনা]

নাট্য নিকেতন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র[সম্পাদনা]

এখানে এখন নতুন করে নাটকের স্কুল এ নাটক এর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়

এখানে সেখ সিরাজুল ইসলাম স্যার প্রশিক্ষণার্থী দের প্রশিক্ষণ দেন নামে মাত্র কিছু ফি নিয়ে।

নাটক[সম্পাদনা]

২০১৪ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি নাট্য নিকেতন এর শিক্ষার্থীরা " মরা " নাটক শহীদ হাদিস পার্কে প্রদর্শন করেন।

নাটক রচনা করেন শুভংকর চক্রবর্তী, পরিচালনায় সেখ সিরাজুল ইসলাম। এতে অভিনয় করেন রুহুল কুদ্দুস, জামান শিশির, নাজমুস সাকিব, মাহামুদ সুজন, জহির হোসেন, উত্তম কুমার সহ অনেকে। মরা নাটকে মূল চরিত্র পুরোহিত এর ভূমিকায় অভিনয় করেন কবি আলীমুশ্বান সাইমুন ।


নাট্য উৎসব ২০১৫[সম্পাদনা]

এ বছর সোসাইটি সিনেমা হলে মঞ্চ হয় লেখক হুমায়ন আহম্মদ রচিত, সেখ সিরাজুল ইসলাম পরিচালিত ( মির্জাপুর যুব সংঘ এর ব্যানারে "একাত্তর এর ভালবাসা"


মঞ্চস্থ করা হয়। এতে অভিনেতারা ছিলেন খান  রাফিদ কাজল, লেখক এবং কবি আলীমুশ্বান সাইমুন, জহির হোসেন, সাহারিয়ার শুভ, জামান শিশির, নাজমুস সাকিব,রুহুল কুদ্দুস, সহ আরো অনেক শিল্লিরা।

নাট্য উৎসব ২০১৬:[সম্পাদনা]

সাম্প্রদায়িকতার শৃঙ্খল আমরা ভাঙবোই..’ স্লোগানে খুলনায় ১২ দিনব্যাপী নাট্যোৎসব শুরু হয়। খুলনা নাট্য নিকেতনের আয়োজনে নাট্য নিকেতন মঞ্চে (সোসাইটি সিনেমা হল) এই উৎসবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট ও যশোরের ১২টি সংগঠন অংশ নিচ্ছে।

উৎসবের উদ্বোধন করেন সংগঠনের সভাপতি ও খুলনা-৪ আসনের সাংসদ এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাট্যোৎসবের সদস্যসচিব এম এন হাসান কচি, নাট্য নিকেতনের সাধারণ সম্পাদক মোকলেসুর রহমান প্রমুখ।[৫]

২০১৬ সালের নাট্য উৎসবে খুলনা নাট্য নিকেতন এর নাট্য শিল্পীরা বিশ্বকবি রবীদ্রনাথ ঠাকুরের রচিত নাটক" শাস্তি"


মঞ্চায়ন করেন ২৬ শে ডিসেম্বর ২০১৬। এতে নাট্য রুপ দেন বিরু মুখোপাধ্যায়, পরিচালনা করেন সেখ সিরাজুল ইসলাম।

অভিনেতারা ছিলেন মো: মাকসুদ আলম, মাহামুদ সুজন, সেখ সিরাজুল ইসলাম, উদ্যোক্তা ও লেখক আলীমুশ্বান সাইমুন, অনিরুদ্ধ কুমার বাহাদুর, সুলতানা রাজিয়া শিল্পি, বিলকিস আরা পাখি,সাব্বির আহম্মদ বাবু, ইউনুস আলি প্রমুখ। অসাধারন অভিনয় দিয়ে সেদিন সবাই কে দর্শকপ্রিয় নাটক উপহার দিয়েছেন


খুলনা নাট্য নিকেতনের অভিনেতারা।

২৬ মার্চ ২০১৬ সালে" মেরাজ ফকিরের মা" নাটক মঞ্চস্থ হয়।


নাটক টি রচনা করেন আব্দুল্লাহ আল মামুন, পরিচালনায় সেখ সিরাজুল ইসলাম। অভিনয়ে ছিলেন এন এন হাসান কচি, জামান শিশির, , ইসলামী সংগীতশিল্পী, এবং কবি আলীমুশ্বান সাইমুন, এ্যাড.চিশতী সোরাব হোসেন, বিলকিস আরা পাখি, শিল্পি, সেখ সিরাজুল ইসলাম সহ আরো অনেকে  

একই বছর উৎসবে ১৯ ডিসেম্বর ১৬ এ  নিকেতনের শিক্ষার্থী ও সদস্যরা মির্জাপুর সংঘ সদস্যরা মিলিত ভাবে

মঞ্চস্থ করেন আব্দুল্লাহ আল মামুনের " চারদিকে যুদ্ধ " নাটকটি, নাটকটি পরিচালনা করেন সেখ সিরাজুল ইসলাম এতে এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন মাহমুদ সুজন,

জামান শিশির,ইসলামী সংগীত শিল্পী ও কবি আলীমুশ্বান সাইমুন, জহির হোসেন, খান রাফিদ কাজল, সেখ সিরাজুল ইসলাম,সেজান,শিল্পি,মডেল রেখা সহ আরও অনেকে।[২]

নাট্য উৎসব ২০১৭[সম্পাদনা]

খুলনা পাবলিক লাইব্রেরি ( বই মেলায়) ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তে সেখ সিরাজুল ইসলাম পরিচালিত "ইদানীং তিনি ভদ্রলোক " নাটক মঞ্চস্থ হয়। এই নাটকের সার্বিক দায়িত্ব ছিলেন অভিনেতা, লেখক, ও কবি আলীমুশ্বান সাইমুন , এতে অভিনয় করেছিলেন মাহামুদ সুজন, জহির হোসেন, লেখক ও কবি আলীমুশ্বান সাইমুন, রুহুল কুদ্দুস, সংকর রায়,মডেল রেখা। সেদিন বই মেলার সকল দর্শক দের মন কেড়ে নিয়েছিল এই নাটক টি।


নাট্য উৎসব ২০১৮[সম্পাদনা]

২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সালে সোসাইটি সিনেমা হলের মঞ্চে মঞ্চস্থ  হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত "অগ্নিগিরি " নাটক কে নাট্য রুপ দেন বিমল মুজুমদার পরিচালনা করেন সেখ সিরাজুল ইসলাম। এতে অভিনেতা ছিলেন খান রাফিদ কাজল, শাহারিয়ার শুব, কবি আলীমুশ্বান সাইমুন, জামান শিশির, মডেল রেখা, শিল্পী, বিলকিস আরা পাখি, রুহুল কুদ্দুস সহ অনেকে

এর মেকাপের দায়িত্বে ছিলেন হিরা দাদা


সহ কারী পরিচালনায় ছিলেন লেখক,কবি,অভিনেতা আলীমুশ্বান সাইমুন।

নাট্য উৎসব ও সুজা পদক -২০১৯[সম্পাদনা]

খুলনা নাট্য নিকেতনের আয়োজনে ‘এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা পদক- ২০১৯’ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আবেদনপত্র খুলনা নাট্য নিকেতন কার্যালয় থেকে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সংগঠনের সহ-সভাপতি ১নং আইচগাতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রফেসর আশরাফুজ্জামান বাবুল বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।[৬]

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ভাষার মাস কে আঁকড়ে ধরে করে খুলনা নাট্য নিকেতনের অভিনেতারা মঞ্চস্থ করেন লেখক হুমায়ন আহম্মদ রচিত "আগুনের ফুল " নাটক।


নির্দেশনা দেন সেখ সিরাজুল ইসলাম

অবিনয় করেন রুহুল কুদ্দুস,কবি ও ইসলামিক সংগীত শিল্পী আলীমুশ্বান সাইমুন , মডেল রেখা, জামান শিশির, শাহারিয়ার শুব, নাজমুস সাকিব সহ আরও অভিনেতারা।

২০২০ নাট্য উৎসবঃ[সম্পাদনা]

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রবিবার সন্ধ্যায় খুলনা নাট্য নিকেতন মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নাট্যোৎসব ২০২০ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

খুলনার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি হুমায়ুন কবির ববি’র সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক মকবুল হোসেন মিন্টু, জেলা কালচারাল অফিসার সুজিত কুমার সাহা, খুলনা নাট্য নিকেতনের সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান বাবলু, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামরুল ইসলাম বাবলু, সেখ সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। [৭]

খুলনা নাট্য নিকেতন আয়োজিত সাংস্কৃতিক

প্রতিযোগিতা এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা পদক-২০২০ শেষ

হয়েছে। উপস্থিত বক্তৃতার মধ্যে দিয়ে ১৩দিনব্যাপী এই

সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা -২০২০এর সমাপ্তি হয়েছে।

আগামী ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬.৩০মিনিট এ খুলনা প্রেস ক্লাবের

আলহাজ্ব লিয়াকত আলী মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে

উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করতে সম্মতি

জ্ঞাপন করেছেন জননেতা শেখ হেলার উদ্দিন এমপির সুযোগ্য

পুত্র,বাগেরহাট-২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব শেখ

সারহান নাসের তন্ময়। তিনি রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকায়

আগামী ৪এপ্রিল ২০২১এর পরিবর্তে আগামী ৮এপ্রিল ২০২১

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬.৩০মিনিটে খুলনা প্রেস ক্লাবের

আলহাজ্ব লিয়াকত আলী মিলনায়তনে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার

তুলে দিতে সদয় সম্মতি প্রদান করেছেন। [২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "খুলনার শিল্পীদের প্রতিভা বিকাশে নেই কোনো মঞ্চ"banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৬ 
  2. "'বাংলাদেশের শতবর্ষী নাট্যমঞ্চ' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন | কালের কণ্ঠ"Kalerkantho। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৬ 
  3. "'বাংলাদেশের শতবর্ষী নাট্যমঞ্চ' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন"। m.newsg24.com 
  4. "খুলনা নাট্য নিকেতনের কার্যকরি কমিটির সভা"skhobor.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "খুলনায় ১২ দিনব্যাপী নাট্যোৎসব শুরু"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. টাইমস, খুলনা। "মোস্তফা রশিদী সুজা পদক'র জন্য আবেদনপত্র বিতরণ শুরু | Khulna Times"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৬ 
  7. Khulna, আজকের খুলনা :: Ajker। "'প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে'"Ajker Khulna (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৬