খাজা ওয়াসিউদ্দিন
খাজা ওয়াসিউদ্দিন | |
|---|---|
| জন্ম | ২০ মার্চ ১৯২০ আহসান মঞ্জিল, ঢাকা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত |
| মৃত্যু | ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৯২ (বয়স ৭২) ঢাকা, বাংলাদেশ |
| আনুগত্য | |
| সেবা/ | |
| কার্যকাল | ১৯৪০-১৯৭৭ |
| পদমর্যাদা | |
| ইউনিট | অষ্টম পাঞ্জাব রেজিমেন্ট |
| নেতৃত্বসমূহ | ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায় অবস্থিত ১৪ তম ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ১৯৬৩ সালে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থিত দশম ডিভিশনের কমান্ডার ১৯৬২ সালে প্রাদেশিক সামরিক আইন প্রশাসক |
| যুদ্ধ/সংগ্রাম | |
খাজা ওয়াসিউদ্দিন (জন্ম: ২০ মার্চ ১৯২০–২২ সেপ্টেম্বর ১৯৯২) ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন জেনারেল এবং কূটনীতিক। তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে তরুণ অফিসার হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন এবং পরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সিনিয়র জেনারেল হন। তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন।[১]
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]
খাজা ওয়াসিউদ্দিন ১৯২০ সালের ২০ মার্চ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত ঢাকার আহসান মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন। [২] তাঁর পিতা খাজা শাহাবুদ্দিন ছিলেন পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের গভর্নর এবং ঢাকা নবাব পরিবারের সদস্য; তাঁর পিতার বড় ভাই ছিলেন স্যার খাজা নাজিমুদ্দিন, যিনি পাকিস্তানের দ্বিতীয় গভর্নর-জেনারেল এবং পরবর্তীকালে এর দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর মা ফারহাত বানু স্যার তিনি ঢাকা মুসলিম হাই স্কুলে এবং পরে সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। [২] ১৯৩৮ সালে তিনি প্রিন্স অফ ওয়েলস রয়েল ইন্ডিয়ান মিলিটারি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। [২] [৩]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]খাজা ওয়াসি স্নাতক শেষে ভারতীয় সামরিক একাডেমিতে যোগদান করেন এবং ১৯৪০ সালের এপ্রিল মাসে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৮ ম পাঞ্জাব রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে কমিশন লাভ করেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বার্মা প্রচারে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। [২] ১৯৪৪ সালের মধ্যে তিনি মেজর হিসেবে পদোন্নতি পান এবং একটি আর্টিলারি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মনোনিত হন। ১৯৪৫ সালে তাকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি দেওয়া হয় এবং ব্রিটিশ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর আন্তঃবাহিনী নির্বাচন বোর্ডের অতিরিক্ত উপ-রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োগ দেয়া হয়। [২]
পাকিস্তান
[সম্পাদনা]ভারত বিভাগের পর তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষে নির্বাচন করেছিলেন। পাকিস্তানে তিনি পাকিস্তানি ইন্টার সার্ভিসেস সিলেকশন বোর্ডে কাজ চালিয়ে যান, অবশেষে এর সভাপতি হন। ১৯৫১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের ক্যামবারলে স্টাফ কলেজে আরও পড়াশোনা করতে যান এবং পরবর্তীকালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি পান। ১৯৬০ সালে তাকে পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায় অবস্থিত ১৪ তম ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) করা হয় এবং ১৯৬৩ সালে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থিত দশম ডিভিশনের কমান্ডার ছিলেন। [২] ১৯৬২ সালে তিনি প্রাদেশিক সামরিক আইন প্রশাসক ছিলেন। [৪] ১৯৬৪ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল ডিফেন্স কলেজ থেকে তার উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। [২] ১৯৬৭ সালে তাকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি দেওয়া হয় এবং ২য় কোরের কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়, সদর দফতর প্রথমে লাহোরে এবং পরে পাঞ্জাবের মুলতানে স্থানান্তরিত হন। [২]
বাংলাদেশ
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির জেনারেল সদর দফতরে মাস্টার জেনারেল অব অর্ডনেন্স (এমজিও) ছিলেন। [৫] ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে তিনি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করেন। [৬] বাংলাদেশে ফিরে আসার পর তিনি কুয়েত ও ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করবেন। [২][৭] তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ সেনা থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হয়েছিলেন,[৮] ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। [২] প্রতিনিধি হিসাবে তিনি ইন্দোনেশিয়ার যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ব তিমুরের অন্তর্ভুক্তিকে সমর্থন করেছিলেন। [৯]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]খাজা ওয়াসিউদ্দিন ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশের ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। [২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "লেফটেন্যান্ট জেনারেল খাজা ওয়াসিউদ্দিন"। Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 আলমগীর, মুহাম্মদ। "ওয়াসিউদ্দিন, লে. জেনারেল খাজা"। বাংলাপিডিয়া। এশিয়াটিক সোসাইটি। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৬।
- ↑ Mishra, Sidharth; Singh, Bikram (১৯৯৭)। Where gallantry is tradition : saga of Rashtriya Indian Military College : plantinum jubilee volume, 1997। Allied Publishers। পৃ. ৪৬। আইএসবিএন ৯৭৮৮১৭০২৩৬৪৯৮।
- ↑ Von Vorys, Karl (২০১৫)। Political Development in Pakistan। Princeton University Press। পৃ. ৫৫। আইএসবিএন ৯৭৮১৪০০৮৭৬৩৮৯। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৬।
- ↑ Niazi, A.A.K. (২০০০)। The Betrayal of East Pakistan। Oxford University Press। পৃ. ১৬৮। আইএসবিএন ৯৭৮০১৯৫৭৯২৭৫১।
- ↑ Roy, Asish Kumar (২০০২)। Praetorian politics in Bangladesh : 1975–1981। Progressive Publishers। পৃ. ৫০। ওসিএলসি 491399557।
- ↑ Badrul Ahsan, Syed (২৭ মার্চ ২০১২)। "Old images from a long-ago war"। দ্য ডেইলি স্টার। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৬।
- ↑ Hossain, Golam (১৯৯১)। Civil-military relations in Bangladesh: a comparative study। Academic Publishers, the University of Michigan। পৃ. ২২৭। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৬।
- ↑ East Timor and the International Community: Basic Documents (1st paperback সংস্করণ)। Cambridge University Press। ১৯৯৭। পৃ. ১৫৫। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫২১-৫৮১৩৪-৯।