খলিল উল্লাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শিক্ষক, অধ্যক্ষ
মাওলানা খলিল উল্লাহ
অধ্যক্ষ, রাজশাহী মাদ্রাসা
কাজের মেয়াদ
আনু. ১৯১২ – ১৯১৭
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৮৫৮
সিলেট জেলা
মৃত্যু১৯৪৩
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পেশাশিক্ষাবিদ, অধ্যক্ষ
যে জন্য পরিচিতরাজশাহী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ

মাওলানা খলিল উল্লাহ একজন বাংলাদেশি ইসলামি শিক্ষাবিদ, ধর্ম প্রচারক ও লেখক ছিলেন। তিনি আনুমানিক ১৯১২ সাল থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত রাজশাহী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি রাজশাহী কলেজ ও কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যাপক ছিলেন। তার গবেষণা কর্ম বইসমূহ সেইসময়ে জনপ্রিয় ছিলো। ফারসি সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি তৎকালীন বাংলার গভর্ণর কর্তৃক রৌপ্যপদক পেয়েছিলেন।[১]

জন্ম ও পরিচয়[সম্পাদনা]

খলিল উল্লাহ ১৮৫৮ সালে সেই সময়ের সিলেট জেলার হিংগাজিয়া থানার (বর্তমানে কুলাউড়া থানা) ভাটেরা পরগণা নামক ঐতিহাসিক স্থানের বড়গাঁও নামক গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সেই সময়ে তাদের বাড়ি মৌলভি বাড়ি নামে এলাকাতে পরিচিত ছিলো। তার পিতার নাম মৌলভী মোহাম্মদ কলিম উল্লাহ। তার বাবাও একজন আলেম ও ধর্মপ্রান মুসলিম ছিলেন।

শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

খলিল উল্লাহ স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। এখানেই তিনি দাখিল, আলিম ও ফাজিল ডিগ্রি অর্জন করেন। অবশেষে একই মাদ্রাসা থেকে ১৮৮৫ সালে বর্তমানে কামিল সমমান ডিগ্রি অর্জন করেন। সেই সময়ে অবিভক্ত বাংলাতে ৫টি আলিয়া মাদ্রাসা নিয়ে একটি শিক্ষাবোর্ড ছিলো, তিনি এই ৫টি মাদ্রাসার সম্মিলিত মেধা তালিকায় ১ম স্থান দখল করে স্বর্ণপদক লাভ করে।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

তিনি কামিল পাশ করার পরে অবিভক্ত বাংলা সরকারের শিক্ষা কার্যক্রমে যোগদান করেন এবং রাজশাহী আলিয়া মাদ্রাসায় ১৮৮৫ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত অধ্যাপনা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন। তিনি কিছুদিন রাজশাহী কলেজের ফার্সি বিভাগের অধ্যাপনাও করেছেন। সবশেষে তিনি রাজশাহী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। অধ্যক্ষ থাকা অবস্থায় তিনি ১৯১৭ সালে চাকরি থেকে অবসর গ্রহন করেন।

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

খলিল উল্লাহর সাহিত্যকর্মকান্ড তৎকালীন শিক্ষাবিদগণের নিকট বেশ সমাদৃত ছিল। তিনি মুলত ফারসি ভাষার সাহিত্যিক হলেও, আরবি ও উর্দু ভাষায়ও তার পান্ডিত্য ছিল। তার বেচে থাকাকালীন ৮টি গ্রন্থ বই আকারে বের হয়েছিলো।[২] সেগুলো:

  • আফলাতুল মাওয়াছিরিন
  • কসিদায়ে লামিয়া মসমাতুল কায়েদ
  • তওহীদুল কায়েনিন
  • ছুলিছ ফারসি
  • মি বায়েদিদ
  • গুলজারে খলিল
  • কাশকুলে খলিল

তার এই বইসমূহ তৎকালীন সময়ে বেশ সমাদৃত ছিলো, এসব বইয়ের কিছু অংশবিশেষ এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে। তিনি একজন আলেম ও হলেও, সেই সময়ের সকল কুসংস্কার থেকে দূরে থেকে সাহিত্য চর্চা করেছেন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

খলিল উল্লাহ ১৯৪৩ সালে ৮৫ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত তার নিজ গ্রামে মৃত্যুবরন করেন। বাড়ির নিকটেই পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. আহমদ, নোমান। "অবিভক্ত বাংলার এক বরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মাওলানা খলিল উল্লাহ"eibela.net। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-২০ 
  2. "বরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মাওলানা খলিল উল্লাহ"সিলেটের ডাক (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৩-০৫। ২০২২-০৮-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-২০