খলিলুর রহমান (বীর প্রতীক)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
খলিলুর রহমান
জন্মঅজানা
মৃত্যু১৯৯৮
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

খলিলুর রহমান (জন্ম: অজানা–মৃত্যু: ১৯৯৮) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [১]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

খলিলুর রহমানের বাড়ি নেত্রকোণা জেলা শহরের উত্তর সাতপাইয়ে। তার বাবার নাম আবদুস ছোবহান খান এবং মায়ের নাম সখিনা খানম। তার স্ত্রীর নাম রেহেনা খানম। এ দম্পতির কোনো সন্তান নেই।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালে চট্টগ্রামে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে প্রশিক্ষণরত ছিলেন খলিলুর রহমান। ২৫ মার্চ রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় আক্রান্ত হন তিনি। তাদের বেশির ভাগ সেদিন পাকিস্তানিদের হাতে শহীদ হন। অল্পকিছুসংখ্যক পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পালিয়ে বেঁচে যাওয়ার মধ্যে তিনিও ছিলেন। পরে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। খলিলুর রহমান সলিয়াদিঘী ছাড়াও ফেনী জেলার ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া, গুতুমা, বল্লভপুর, শুভপুর, পরশুরাম, চম্পকনগরসহ আরও কয়েক স্থানে যুদ্ধ করেছেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসের প্রথম, বাংলা কার্তিক মাসের শেষ দিক। ফেনী জেলার বিলোনিয়া এলাকায় কয়েক দিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। তার মধ্যে চলছে তুমুল যুদ্ধ। যুদ্ধ শুরু হয়েছে ২ নভেম্বর। বিলোনিয়া ২ নম্বর সেক্টরের রাজনগর সাবসেক্টর এলাকা। এই যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য ১ নম্বর সেক্টরের একটি কোম্পানিকে তলব করা হয়েছে। এই কোম্পানিতে ছিলেন খলিলুর রহমান। নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন মাহফুজুর রহমান। রাতের নিস্তব্ধতা খান খান করে হঠাৎ শুরু হয় গোলাগুলির শব্দ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর (৩১ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট) মুক্তিবাহিনীর ডিফেন্সে অতর্কিতে আক্রমণ করেছে। খলিলুর রহমানরা দ্রুত পজিশন নিলেন। শুরু হলো তুমুল যুদ্ধ। বিলোনিয়া মুক্ত হওয়ার পথে। ৬ নভেম্বর তারা সলিয়াদিঘীতে ডিফেন্স নিলেন। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকটি কোম্পানি।

৭ নভেম্বর ভোর সাড়ে চারটা বা পৌনে পাঁচটার দিকে খলিলুর রহমানসহ সবাই যে যার ডিফেন্সে। কয়েক দিনের যুদ্ধে তারা পরিশ্রান্ত। অল্প কয়জন জেগে আছেন। মুক্তিবাহিনীর অগ্রবর্তী ডিফেন্সে ছিলেন এক দল ইপিআর। তাদের নেতৃত্বে হাবিলদার শহীদ। তারা পাকিস্তানিদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তীব্র আক্রমণের মুখে তাদের সে প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। শহীদসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে পাকিস্তানিরা আটক করে। পরে পাকিস্তানিরা তাদের হত্যা করে। হাবিলদার শহীদের প্লাটুন পরাজিত হলেও সেখানে যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। খলিলুর রহমান ও তার অন্য সহযোদ্ধারা সাহসিকতা ও বীরত্বের সঙ্গে পাকিস্তানিদের মোকাবিলা করতে থাকেন। আনুমানিক দুপুর তিনটায় দুটি পাকিস্তানি জঙ্গি বিমান তাদের অবস্থানের ওপর হামলা চালায়। কিন্তু এতেও খলিলুর রহমানরা পিছপা হননি। একপর্যায়ে পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে হাতাহাতি যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর পাকিস্তানিরা তাদের ৩০ জনের মৃতদেহ ফেলে পালিয়ে যায়। [২]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

পাদটীকা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ১৩-০৫-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৩৯। আইএসবিএন 9789843338884 

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]