খরসওয়াঁ রাজ্য

খরসোয়াঁ রাজ্য ଖରସୁଆଁ
ব্রিটিশ ভারত দেশীয় রাজ্য
১৬৫০–১৯৪৮
পতাকা
ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া থেকে প্রাপ্ত ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের খরসোয়াঁ রাজ্যের মানচিত্র
আয়তন
• ১৮৯২	৩৯৬ বর্গকিলোমিটার (১৫৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
• ১৮৯২	৩১,০৫১
ইতিহাস
• প্রতিষ্ঠিত	১৬৫০
• ভারতীয় অধিরাজ্যে যোগদান	১৯৪৮
উত্তরসূরী ভারত

খরসোয়াঁ রাজ্য বা খরসুয়া, ছিলো ব্রিটিশ শাসিত ভারতে অবস্থিত একটি দেশীয় রাজ্য, যা বর্তমানে ভারতের অন্তর্গত৷ রাজ্যটির রাজব্যয় নির্বাহী ভাতা ছিল বার্ষিক ৩৩,০০০ ভারতীয় মুদ্রা। এটি বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত নয়টি ছোটনাগপুর রাজ্যসমষ্টির একটি ছিল। ব্রিটিশ শাসনকালে এই রাজ্যটি উড়িয়া রাজাদের দ্বারা শাসিত হতো যদিও অধিকাংশ অধিবাসীই অ-উড়িয়া ছিলেন।

রাজ্যটির রাজধানী ছিলো খরসোয়াঁ শহরে৷ পূর্বতন রাজ্যটি বর্তমানে ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত৷ সরাইকেল্লা রাজ্যের সাথে একত্রিত হয়ে এটি সরাইকেল্লা খরসোয়া জেলা গঠন করেছে৷ কুমার আদিত্য নারায়াণ সিংহদেও এবং মহারাজ রুদ্র প্রতাপ সিংহদেও রাজনীতি সংযুক্তি এবং নামকরণ সমর্থন করেছেন।

ইতিহাস

১৬৫০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ খরসোয়াঁ রাজ্যটি প্রতিষ্ঠালাভ করেছিলো৷ খরসোয়াঁর শাসকগণ ছিলেন পার্শ্ববর্তী সরাইকেল্লা রাজ্যের প্রথম রাজা কুনোয়ার বিক্রম সিংহের বংশধর। রাজার দ্বিতীয় পুত্র কুনোয়ার পদ্ম সিংহ ছিলেন খরসোয়াঁ রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে খরসোয়াঁ ব্রিটিশদের নিকট দেশীয় রাজ্যের মর্যাদা পায়।

১৯১২ খ্রিস্টাব্দে খরসোয়াঁ রাজ্যটি প্রশাসনিকভাবে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির পশ্চিম দিকে অবস্থিত জেলা গুলি নিয়ে গঠিত বিহার ও উড়িষ্যা প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে রাজ্যটি নবগঠিত উড়িষ্যা প্রদেশের আওতায় আনা হয়। পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এজেন্সিতে অবস্থিত সারাইকেল্লা সহ আরো চব্বিশটি দেশীয় রাজ্য ১লা জানুয়ারি ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় অধিরাজ্যে যোগদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। প্রতিটি দেশীয় রাজ্য স্বাধীন ভারতের উড়িষ্যা প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

ফলস্বরূপ সরাইকেল্লা এবং খরসোয়াঁ উভয় দেশীয় রাজ্যকে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতের অন্তর্গত উড়িষ্যা প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারি তারিখেই উভয় দেশীয় রাজ্যের সংখ্যাগুরু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনজাতি সম্প্রদায় উড়িষ্যা রাজ্যের সঙ্গে একত্রিত হওয়ার বিরুদ্ধাচারণ শুরু করেন। রাজা আদিত্যপ্রতাপ সিংহদেওয়ের তৃতীয় পুত্র পতায়েৎ সাহেব মহারাজকুমার ভূপেন্দ্রনারায়ণ সিংহদেও রাজ্যবাসীর এই আন্দোলনকে সমর্থন দিলে ফলস্বরূপ তাকে কারারুদ্ধ করে এই জনপ্রিয় আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। কেন্দ্র সরকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য বৌদকর মহাশয়ের অধীনস্থ একজন কমিশনারকে নিযুক্ত করেন। বৌদকর কমিশনের তথ্যের উপর ভিত্তি করে সরাইকেল্লা এবং খরসোয়াঁ পূর্বতন দেশীয় রাজ্য দুটিকে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই মে তারিখে বিহার প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৫ই নভেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দে বিহার রাজ্য ভেঙে ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠন হলে এই দুটি নবগঠিত রাজ্যের সরাইকেল্লা খরসোয়া জেলায় পরিণত হয়৷ এই পর্যায়ের মধ্যবর্তী সময়ে বহু উপজাতি-বহির্ভুক্ত ওড়িয়া সম্প্রদায়ের লোক সরাইকেল্লা খরসোয়া, পূর্ব সিংভূম ও পশ্চিম সিংভূম জেলা ছেড়ে পাকাপাকিভাবে ওড়িশায় অভিপ্রয়াণ করেন৷

শাসকবর্গ

পূর্বতন শাসকগণ ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের পূর্ব পর্যন্ত ঠাকুর উপাধিতে ভূষিত হতেন৷ তারা বিদেহ রাজবংশের ছিলেন৷ ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামচন্দ্র সিংহদেও প্রথম রাজা উপাধি গ্রহণ করেছিলেন৷ বর্তমানে রাজ পরিবারের প্রধান সদস্য হলেন রাজা প্রদীপচন্দ্র সিংহদেও৷

স্বাধীন দেশীয় রাজ্যের শেষ শাসক রাজা শ্রীরামচন্দ্র সিংহদেও ১৮ই মে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতে যোগদান করার সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করেন৷

ঠাকুর

• ১৮৫৭ – ১৮৬৩ গঙ্গারাম সিংহদেও (১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে নিজ কার্যে রাজা উপাধি ব্যবহাহ)
• ১৮৬৩ – ১৮.. রামনারায়ণ সিংহদেও
• ১৮.. – ২ মার্চ ১৮৮৪ রঘুনাথ সিংহদেও
• ২ মার্চ ১৮৮৪ – ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯০২ মহেন্দ্রনারায়ণ সিংহদেও
• ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯০২ – ১৯১৭ শ্রীরামচন্দ্র সিংহদেও

রাজা

• ১৯১৭ – ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ শ্রীরামচন্দ্র সিংহদেও