খতমে নবুয়ত
![]() | এই নিবন্ধের লেখার ধরণের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ। নিবন্ধের আলাপ পাতায় বিস্তারিত আলোচনা থাকতে পারে। |
ইসলাম |
---|
বিষয়ক ধারাবাহিক নিবন্ধের অংশ |
![]() |
খতমে নবুয়ত ইসলামী শরীয়তে একটি বিষয়। ইসলামি পরিভাষায় মুহাম্মদ সর্বশেষ নবী ও রাসূল এরূপ বিশ্বাসকে খতমে নবুয়ত বলা হয়।
ধারণা[সম্পাদনা]
"খতমে নবুয়ত" শব্দটি আরবি শব্দ। খতম (ﺧَﺗَﻢَ) অর্থ শেষ, সমাপ্তি আর নবুয়ত (ﻨَّﺒِﻭَ) পয়গম্বরী, নবিত্ব)। সুতরাং খতমে নবুয়ত অর্থ নবিগণের সমাপ্তি। ইসলামি পরিভাষায়, হজরত মুহাম্মদ (সা) কে শেষ নবি হিসাবে মেনে নেওয়াকে খতমে নবুয়ত বলে।
যার মাধ্যমে এ ক্রমধারা শেষ হয় তিনি হলেন খাতামুন নাবিইন বা শেষ নবি। আর ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী শেষ নবি হলেন হজরত মুহাম্মদ (সা),যিনি বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ধ্বংসের কিছু সময় পূর্বে আগমন করেছিলেন।
খতমে নবুয়তের প্রমাণ[সম্পাদনা]
আল-কুরআনের দলিল[সম্পাদনা]
খতমে নবুয়ত একটি প্রমাণিত বিশ্বাস। নিচে এর দলিল দেওয়া হল:
"মুহাম্মাদ তোমাদের কোন পুরুষের পিতা ছিলেন না। তবে তিনি আল্লাহর রাসূল এবং সর্বশেষ নবী।
তাফসীর কারক আল্লামা ইমাম ইবনে কাসীর বলেন,
“ | "অত্র আয়াতের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে প্রতিয়মান হয় যে, তার (মুহাম্মাদ) পরে কোন নবী নাই। নবী যখন আসবেন না রাসূল আসার তো কোন প্রশ্নই উঠেনা। এ ব্যাপারে রাসূল থেকে অসংখ্য মুতাওয়াতির হাদীস বর্ণিত হয়েছে। | ” |
— [টী১]৩য় খন্ড, ৪৯৩ পৃষ্টা, মিশরীয় ছাপা |
হাদিসের দলিল[সম্পাদনা]
মুহাম্মদ বলেন,
"আমার উম্মতের মধ্য থেকে ত্রিশজন মিথ্যাবাদী আসবে প্রত্যেকেই নিজেকে নবী বলে দাবী করবে। অথচ আমি হলাম শেষ নবী; আমার পরে কোন নবী নেই।"
সাহাবী আবু হুরাইরা হতে বর্ণিত, মুহাম্মদ বলেন:
"আমি এবং পূর্ববর্তী অন্যান্য নবীদের উদাহরণ হল, এক লোক একটি দালান অত্যন্ত সুন্দর করে তৈরী করল। কিন্তু দালানটির এক কোনে একটা ইট ফাঁকা রেখে দিল। লোকজন চর্তুদিকে ঘুরে ঘরে তার সৌন্দর্য্য দেখে বিমোহিত হচ্ছে কিন্তু বলছে, এ ফাঁকা জায়গায় একটি ইট বসালে কতই না সুন্দর হত!" তিনি আরো বলেন, "আমি হলাম সেই ইট এবং আমি হলাম সর্বশেষ নবী।"[২]
উক্ত হাদিস অনুযায়ী, দালানটির সর্বশেষ ইটটি লাগালেই দালানের কাজ পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। ঠিক তেমুনি, হজরত মুহাম্মদ (সা) এর আগমনের ফলে নবুয়তের দায়িত্ব সমাপ্ত হলো। কাজ পরিপূর্ণ হওয়ায় দালানটিতে যেমন আর নতুন করে ইট লাগানোর প্রয়োজন নেই, ঠিক তেমুনি নবুয়তের দায়িত্ব সমাপ্ত হওয়ায় নতুন কোনো নবি বা রাসূলের আগমনেরও প্রয়োজন নেই। কারণ হজরত মুহাম্মদ (সা) এর মাধ্যমেই নবুয়তের দায়িত্ব সমাপ্ত হয়েছে।
যৌক্তিক প্রমাণ[সম্পাদনা]
যুক্তি থেকে বিচার করলে দেখা যায় নবিরা আসতেন তিনটি কারণে:
- পূর্ববর্তী নবির প্রচারিত শিক্ষা বিলুপ্ত বা বিকৃত হয়ে গেলেটী৩
- পূর্ববর্তী নবির প্রচারিত শিক্ষা অসম্পূর্ণ অথবা তাতে কোনো সংযোজন বা বিয়োজন প্রয়োজন হলে
কিন্তু মুহাম্মদের জন্য এদের একটিরও প্রয়োজন নেই। তাই আর নবী আসার প্রয়োজন নেই।টী৫ কারণ-
- যুক্তি ১: হজরত মুহাম্মদ (সা) এর শিক্ষা ও আদর্শ এখনো বিদ্যমান।
- যুক্তি ২: হজরত মুহাম্মদ (সা) সর্বকালের জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন। তার প্রচারিত শিক্ষা ও আদর্শ কিয়ামত পর্যন্ত বিদ্যমান থাকবে।
- যুক্তি ৩: হজরত মুহাম্মদ (সা) এর প্রচারিত শিক্ষা ও আদর্শ পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ। এতে বিন্দুমাত্র অসম্পূর্ণতা নেই। কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,
"আজ আমি (আল্লাহ) তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের উপর আমার নিয়ামতকে সম্পূর্ণ করলাম ও ইসলামকে তোমাদের ধর্ম হিসাবে মনোনীত করলাম।" (সূরা মায়েদা: ০৩)
আহমেদিয়া আন্দোলনে[সম্পাদনা]
তাৎপর্য[সম্পাদনা]
টীকা[সম্পাদনা]
- ^টী১ ইবনে কাসীরের প্রণীত তাফসীর ৩য় খন্ডের ৪৯৩ পৃষ্ঠায় বক্তব্যটি আরবি ভাষায় রয়েছে।একে বাংলা ভাষায় রূপান্তর করা হল।
- ^টী২ ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন
- ^টী৩ মুহাম্মদের শরিয়াহ কেয়ামত পর্যন্ত অবিকৃত থাকবে
- ^টী৪ মুহাম্মদ কেয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত হয়েছেন
- ^টী৫ তার শরীয়ত সম্পূর্ণ