কৈকুড়ী ইউনিয়ন
কৈকুড়ী ইউনিয়ন | |
---|---|
ইউনিয়ন | |
কৈকুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ | |
বাংলাদেশে কৈকুড়ী ইউনিয়নের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°৩৪′৩৩″ উত্তর ৮৯°২৩′৪৪″ পূর্ব / ২৫.৫৭৫৮৩° উত্তর ৮৯.৩৯৫৫৬° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
জেলা | রংপুর জেলা |
উপজেলা | পীরগাছা উপজেলা ![]() |
ইউনিয়ন পরিষদ | ০৮ নং কৈকুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ |
সরকার | |
• চেয়ারম্যান | মোঃ নুর আলম মিয়া (জাতীয় পার্টি) |
আয়তন | |
• মোট | ২৯.৬৩ বর্গকিমি (১১.৪৪ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২১) | |
• মোট | ৫২,৩১৩ |
• জনঘনত্ব | ১,৮০০/বর্গকিমি (৪,৬০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৭৫% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৫৭২১ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট ![]() |
কৈকুড়ী ইউনিয়ন বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার অন্তর্গত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ। পীরগাছা উপজেলা শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দক্ষিণে এই ইউনিয়নের অবস্থান।[১][২] এটি ২৯.৬৩ বর্গকিমি জুড়ে অবস্থিত এবং ২০১১ সালের আদমশুমারীর হিসাব অনুযায়ী এখানকার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫২৩১৩ জন। ইউনিয়নটিতে মোট গ্রামের সংখ্যা ১৯টি ও মৌজার সংখ্যা ১৯টি।[৩]
ভৌগোলিক অবস্থান
[সম্পাদনা]কৈকুড়ী ইউনিয়নের উত্তরে পীরগাছা সদর ইউনিয়ন, দক্ষিণে সুন্দরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর উপজেলা, পশ্চিমে পীরগাছা সদর ইউনিয়ন ও মিঠাপুকুর উপজেলা এবং পূর্বে কান্দি ইউনিয়ন এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলা।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]ঘাঘট নদীর তীরে গড়ে ওঠা পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ীতে ব্রিটিশ শাসনামলের বিরুদ্ধে রংপুর অঞ্চলের প্রথম বিদ্রোহী দেবী চৌধুরাণীর আবাস ছিলো।
প্রশাসনিক অঞ্চল
[সম্পাদনা]৮নং কৈকুড়ী ইউনিয়ন ৯টি ওয়ার্ড এবং ১৯টি গ্রাম নিয়ে গঠিত।
- ১নং ওয়ার্ডঃ
#বলিহার,নজরমামুদ,দিলালপাড়া।
২নং ওয়ার্ডঃ
#চালুুুুুনিয়া,আলাদিপাড়া,কুটিপাড়া,৬৮পাড়া,ওমরখাঁ।
৩নং ওয়ার্ডঃ
#জামিরজান,রামচন্দ্রপাড়া।
৪নং ওয়ার্ডঃ
#শুল্লিপাড়া,মকসুদখাঁ।
৫নং ওয়ার্ডঃ
#চৌধুরাণী,সুবিদ,কুতুব্বস।
৬নং ওয়ার্ডঃ
#মকরমপুর।
৭নং ওয়ার্ডঃ
#মিরাপাড়া,কৈকুড়ী(উত্তর)।
৮নং ওয়ার্ডঃ
#কৈকুড়ী।
৯নং ওয়ার্ডঃ
#মোংলাকুটি।
জনসংখ্যা উপাত্ত
[সম্পাদনা]এই ইউনিয়নে প্রায় ৫২,৩১৩ জন মানুষ বাস করে। তার মধ্যে পুরুষ ২৭,২১৭জন এবং মহিলা ২৫০৯৬ জন।
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]- দেবী চৌধুরাণী পুকুর,
- দেবী চৌধুরাণীর বাসস্থান,
- শতাব্দী প্রাচীন ৩ গম্বুজ কুতুব্বস চৌধুরী-বাড়ি জামে মসজিদ,
- পাটোয়ারী বিনোদন স্পট।
নদ-নদী
[সম্পাদনা]ঘাঘট।
বিল-ঝিলঃ
(ক) বোকরার বিল,
(খ) কাছনার বিল,
(গ) চালুনিয়ার বিল,
(ঘ) কৈকুড়ীর ছড়া।
যোগাযোগব্যবস্থা
[সম্পাদনা]এই ইউনিয়নের যোগাযোগব্যবস্থা বেশ উন্নত। রাজধানী ঢাকা, বিভাগীয় ও জেলা শহর রংপুর এবং উপজেলা সদরের সাথে বাস, ট্রেন যোগাযোগ রয়েছে। এখানকার প্রধান প্রধান রাস্তাগুলো পাকা। চৌধুরাণী নামক একটি রেলস্টেশনও রয়েছে।
শিক্ষাব্যবস্থা
[সম্পাদনা]এই ইউনিয়নের প্রায় ৬৫%লোক শিক্ষিত। এই ইউনিয়নে বেশ কিছু ভালো মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেমনঃ
কলেজঃ
(ক) দেবী চৌধুরাণী ডিগ্রী কলেজ।
(খ) খাদিজা আবেদীন চৌধুরাণী কলেজ।
(গ) ড. এম আই পাটোয়ারী টেকনিক্যাল কলেজ।
(ঘ) চৌধুরাণী বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ঃ
(ক) চৌধুরাণী উচ্চ বিদ্যালয়।
(খ) কৈকুড়ী উচ্চ বিদ্যালয়।
(গ) কুটিপাড়া আলিমন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়।
(ঘ) মকরমপুর উচ্চ বিদ্যালয়।
(ঙ) মোংলাকুটি বালিকা বিদ্যালয়।
(চ) সুবিদ বালিকা বিদ্যালয়।
মাদ্রাসাঃ
(ক) চৌধুরাণী ফাতিহা ফাজিল(ডিগ্রী) মাদ্রাসা।
(খ) সুবিদ দাখিল মাদ্রাসা।
(গ) কৈকুড়ী দাখিল মাদ্রাসা।
(ঘ) আলাদীপাড়া দাখিল মাদ্রাসা।
(ঙ) দিলালপাড়া দাখিল মাদ্রাসা।
হাফেজিয়া মাদ্রাসা
(ক) চৌধুরাণী আজিম মাহমুদ নূরাণী হাফেজিয়া এবং কওমী মাদ্রাসা।
(খ) কৈকুড়ী হাফেজিয়া মাদ্রাসা।
(গ) মিরাপাড়া নূরাণী হাফেজিয়া মাদ্রাসা।
(ঘ) সুবিদ নূরাণী হাফেজিয়া মাদ্রাসা।
(ঙ) দক্ষিণ রামচন্দ্রপাড়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ
(ক) ১নং চৌধুুুুরাণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(খ) ২নং চৌধুরাণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(গ) কৈকুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(ঘ) মোংলাকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(ঙ) মকরমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(চ) ৬৮পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(ছ) কুতুব্বস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(জ) দিলালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(ঝ) নজরমামুদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(ঞ) মিরাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(চ) সুবিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
কির্ন্ডার গার্ডেন স্কুল
(ক) দেবী চৌধুরাণী শিশু নিকেতন।
(খ) জে এস আইডিয়াল স্কুল।
(গ) তছিরন নেছা স্কুল।
(ঘ) দেবী চৌধুরাণী বিদ্যা নিকেতন কিন্ডারগার্টেন।
চিকিৎসাব্যবস্থা
[সম্পাদনা]বিভাগীয় শহরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায়, এখানে তেমন কোনো ভালো সরকারি-বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে উঠেনি।
১টি ১০ শয্যা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র,
৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং
১টি বেসরকারী ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, ইত্যাদি রয়েছে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান
[সম্পাদনা]মসজিদঃ
০১ নং ওয়ার্ডঃ
#নজরমামুদ জামে মসজিদ।
#নজরমামুদ পুরানটারী জামে মসজিদ।
#নজরমামুদ সাখাওয়ারপাড় জামে মসজিদ (বাবলুর মসজিদ)।
#নজরমামুদ বগুড়াপাড়া জামে মসজিদ।
#নজরমামুদ মধ্যপাড়া জামে মসজিদ।
#নজরমামুদ মোজা দেওয়ানির বাড়ী জামে মসজিদ।
#দিলাল পাড়া ডাং-হাট জামে মসজিদ।
#দিলালপাড়া রেলগেইট জামে মসজিদ।
#দিলালপাড়া ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ী জামে মসজিদ।
#বলিহার করিমের বাড়ীর জামে মসজিদ।
#বলিহার আইয়ুবের বাড়ীর জামে মসজিদ।
#নজরমামুদ আসামী পাড়া জামে মসজিদ।
০২ নং ওয়ার্ডঃ
#জামিরজান ঠেটাপাড়া জামে মসজিদ।
#উত্তর জামিরজান মজিবরের বাড়ী জামে মসজিদ।
#রামচন্দ্রপাড়া সরোয়ার কাজীর বাড়ী জামে মসজিদ।
#জামিরজান মিয়াটারীর জামে মসজিদ।
#রামচন্দ্রপাড়া বকশীদিঘী-বাজার জামে মসজিদ।
#দক্ষিণ রামচন্দ্রপাড়া মুনছুর মেম্বারের বাড়ী জামে মসজিদ।
#চৌধুরাণী-বাজার জামে মসজিদ।
#দক্ষিণ রামচন্দ্রপাড়া ওমর মাষ্টারের বাড়ী জামে মসজিদ।
০৩নং ওয়ার্ডঃ
#চালুনিয়া শাহ আব্দুর রাজ্জাক মিয়া বাড়ীর জামে মসজিদ।
#চালুনিয়া ইব্রাহীম হাজীর বাড়ীর জামে মসজিদ।
#আলাদীপাড়া হাফেজ ফকির জামে মসজিদ।
#কুটিপাড়া আব্দুল জব্বার আকন্দ বাড়ীর জামে মসজিদ।
#কুটিপাড়া মফিজ মন্ডেলের বাড়ীর জামে মসজিদ।
#কুটিপাড়া ছহির উদ্দীনের বাড়ীর জামে মসজিদ।
#কুটিপাড়া কুকরা হাজীর বাড়ীর জামে মসজিদ।
#কুটিপাড়া ছমির উদ্দীনের বাড়ীর জামে মসজিদ।
#ওমর-খাঁ আমজাদ হোসেনের বাড়ী জামে মসজিদ।
০৪নং ওয়ার্ডঃ
#দক্ষিণ মকসুদ-খাঁ কেফাত উল্লাহর বাড়ীর জামে মসজিদ।
#মকসুদ-খাঁ হাজীটারী জামে মসজিদ।
#উত্তর মকসুদ-খাঁ সোবাহানের বাড়ীর জামে মসজিদ।
#পশ্চিম মকসুদ-খাঁ মান্নানের বাড়ীর জামে মসজিদ।
#মকসুদ-খাঁ পশ্চিমপাড়া ছলেমন ডা: বাড়ীর জামে মসজিদ।
#শুল্লিপাড়া ওসমান গনি বসনিয়ার বাড়ীর জামে মসজিদ।
#শুল্লিপাড়া আব্দুর রহমানের বাড়ীর জামে মসজিদ।
#শুল্লিপাড়া (পূর্বপাড়া) সুলতান মুন্সির বাড়ীর জামে মসজিদ।
#শুল্লিপাড়া ডা: জয়নাল আবদীনের বাড়ীর জামে মসজিদ।
#শুল্লিপাড়া মহির মাষ্টারের বাড়ীর জামে মসজিদ।
০৫নং ওয়ার্ডঃ
#কুতুব্বাস ফুলতলা জামে মসজিদ।
#কুতুব্বাস পীরোত্তর জামে মসজিদ।
#কুতুব্বাস চৌধুরী-বাড়ী জামে মসজিদ।
#চৌধুরাণী রেল-ষ্টেশন জামে মসজিদ।
#চৌধুরাণী বায়তুরব জামে মসজিদ।
#চৌধুরাণী নামাপাড়া ফকিরটারী জামে মসজিদ।
#সুবিদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ।
#সুবিদ কুদ্দুস মাষ্টারের বাড়ী জামে মসজিদ।
#সুবিদ ময়েজ মাষ্টারের বাড়ী সংলগ্ন জামে মসজিদ।
০৬নং ওয়ার্ডঃ
#মকরমপুর গুড়াতিপাড়া জামে মসজিদ।
#মকরমপুর মান্নান মুন্সির বাড়ী জামে মসজিদ।
#মকরমপুর তেপতী জামে মসজিদ।
#মকরমপুর আহলে-হাদিস জামে মসজিদ।
#মকরমপুর নোয়াখালিপাড়া জামে মসজিদ।
#ইছলাহাট জামে মসজিদ।
#সুলতান মুন্সির বাড়ী জামে মসজিদ।
০৭নং ওয়ার্ডঃ
#কৈকুড়ী তালতলা আশরাফ আলীর বাড়ী জামে মসজিদ।
#উত্তর মিরাপাড়া বাড়ী জামে মসজিদ।
#দক্ষিণ মিরাপাড়া জামে মসজিদ।
#মিরাপাড়া জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী নওদাপাড়া মহির মুন্সির বাড়ী জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী নওদাপাড়া বানাজ ব্যাপারীর বাড়ী জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী নওদা (ঠেটাপাড়া) জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী নওদাপাড়া আতোয়ার মিয়ার বাড়ী জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী আছান কবিরাজের বাড়ী জামে মসজিদ।
০৮নং ওয়ার্ডঃ
#কৈকুড়ী বালা পাড়া জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী খানা বাড়ী পুরাতন জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী তালুকদার-বাড়ী জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী-বাজার জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী মিঠাপাড়া খলিলের বাড়ী জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী মধ্যপাড়া আবুলের বাড়ী জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী আব্দুল হকের জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী পশ্চিমপাড়া আজগর মুন্সির বাড়ী জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী দক্ষিনপাড়া জামে মসজিদ।
#কৈকুড়ী ছড়ারপাড় বটতলী জামে মসজিদ।
০৯নং ওয়ার্ডঃ
#মোংলাকুটি উজানপাড়া জামে মসজিদ।
#মোংলাকুটি স্কুল সংলগ্ন জামে মসজিদ।
#মোংলাকুটি ছফর উদ্দীন হাজী জামে মসজিদ।
#মোংলাকুটি মাজেদ মেম্বারর বাড়ী সংলগ্ন জামে মসজিদ।
#মোংলাকুটি ভাটিপাড়া ইউনুছের বাড়ী সংলগ্ন জামে মসজিদ।
#মোংলাকুটি হকের-বাজার জামে মসজিদ।
মন্দিরঃ
#কৈকুড়ী মাঝিপাড়া কালী মন্দির।
#রামচন্দ্রপাড়া বেরা পাড়া দূর্গা মন্দির।
#নজরমামুদ পুরানটারী দূর্গা মন্দির।
#চৌধুরাণী খোকন বাবুর বাড়ী সংলগ্ন কালী মন্দির।
#সুবিদ কালি ও দূর্গা মন্দির।
#মকরমপুর জিতেনের বাড়ী সংলগ্ন দূর্গা মন্দির।
অর্থনীতি ও শিল্প
[সম্পাদনা]এখানকার মানুষ প্রধানত কৃষি পেশায় জড়িত।
এছাড়াও অনেকই ব্যবসা, মাছ ধরা, কাঠমিস্ত্রী, রাজমিস্ত্রী, কামার, শিক্ষকতা, প্রতিরক্ষা বাহিনী, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে।
শিল্পঃ
আলাদিপাড়া (খালেক মেম্বারের মোড়ে) একটি জুটমিল, মধ্য-মোংলাকুটিতে শতরঞ্জি কারখানা এবং মতিয়ার বাজারে জুতা তৈরীর কারখানা আছে। এছাড়াও বেশ কিছু ক্ষুদ্র-কুটিরশিল্প কারখানা রয়েছে।
হাট-বাজার
[সম্পাদনা]কৈকুড়ী ইউনিয়নে বেশ কিছু হাট-বাজার গড়ে উঠেছে। যেমনঃ
- চৌধুরাণী বাজার
- কৈকুড়ী বাজার,
- ইচলার-হাট,
- বকসি্ বাজার,
- মতিয়ারের বাজার,
- মোংলাকুটি বাজার,
- কলেজ বাজার।
লোকসংস্কৃতি
[সম্পাদনা]এ অঞ্চলের লোকসংস্কৃতি ও খেলাধুলা অন্য অঞ্চলের খেলার চেয়ে স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্য ধারণ করে। এ অঞ্চলের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার সাথে জড়িয়ে আছে যে খেলাগুলোর তার মধ্যে অন্যতম হল- হাডুডু, কাবাডি (কাপাটি), লাঠি খেলা, দাঁড়িয়া বান্ধা, গোল্লাছুট, এক্কা-দোক্কা, বউ-ছুট, লুকোচুরি, চেংকুডারা বা চেংগু-পেন্টি (বলা যায় বর্তমান ক্রিকেটের এ দেশীয় আদিরূপ), তরবারি খেলা, পাতা খেলা, গুড্ডি বা ঘুড়ি উড়ানো খেলা, কেরাম খেলা, নৌকাবাইচ, ঘোড়দৌড়, ফুটবল, আটকোটা, উরূণ-গাইন, লুডু, পিংপং, পিন্টু-পিন্টু, লুকোচুরি প্রভৃতি। নিজস্ব ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এই খেলাগুলো এ অঞ্চলের মানুষের একদা শরীর চর্চা ও আনন্দ বিনোদনের মাধ্যম ছিল। অবশ্য এখন আধুনিক খেলাধুলার মধ্যে প্রচলিত ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল, টেনিস, ক্রিকেট, মার্শাল আর্ট প্রভৃতির চর্চাই বেড়েছে অনেক বেশি। এগুলোর অধিকাংশই শহর কেন্দ্রিক। এ জনপদে অধিকাংশ মেলায় জুয়া খেলার অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। জুয়া নির্দিষ্ট একটি খেলার নাম নয়, যে খেলাটি বাজি ধরে খেলা হয় এবং বিনিময়ে আর্থিক সুবিধা লাভ করা যায় তাকেই বাজী যা স্থানীয়ভাবে জুয়া খেলা বলা হয়। এ খেলাটি মেলার সময় ব্যাপক রূপ পায়। সাধারণত যে বিষয়গুলি আমাদের কাছে আদিকাল থেকে জুয়া হিসেবে দৃশ্যমান সেগুলো হচ্ছে তাসখেলা, চুড়ি খেলা, ডাব্বু খেলা, পাশা খেলা, হালের হাউজি খেলা প্রভৃতি। এ খেলাগুলো বিনোদন অপেক্ষা পারিবারিক ও অর্থনৈতিক বৈকল্য সৃজনে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে। মেলায় খেলাধুলা ছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে যারমধ্যে লোক নৃত্য, ভাওয়াইয়া, আধূনিক, রবীন্দ্র নজরুল সঙ্গীত প্রভৃতি লক্ষ করা যায়। এখানে জারি গান, পুঁথি, যাত্রা, পালাগান, কুশানগান, সার্কাস, পুতুলনাচ প্রভৃতি দৃশ্যমান। কৈকুড়ী এমন একটি অঞ্চল যে জায়গার মানুষের রয়েছে স্বতন্ত্র ঐতিহ্যবাহী খেলা। যা গ্রামাঞ্চলের ছোট বড় সবাই খেলে আনন্দ উপভোগ করে। এই খেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্ঞানবিকাশের ক্ষেত্র। নিচে এই খেলাগুলোর নাম ও পরিচয় দেয়া হলো :
বৌ-ছি : কয়েকজন মেয়ে একত্রে মিলে একজনকে বৌ বানায়ে এই খেলা খেলে। বৌ-কে ধরা বা ছোঁয়ার মধ্যে জয় পরাজয় হয়।
গোল্লা ছুট : একে ছুট গোল্লা খেলাও বলা হয়। ছেলেরা দু’দলে ভাগ হয়। একদল লম্বাভাবে দাঁড়ায়ে বাঁধার দেয়াল তৈরী করে; অপর দল একটি কেন্দ্রে একজনকে বুড়ি বানায়ে অন্যরা দৌঁড়ে প্রতিপক্ষের দেয়াল পার হতে ধরে। এভাবে সুযোগমত বুড়ি দেয়াল পার হলে বিজয় হয়। আর বুড়িকে ছুঁতে পারলে পরাজয় হয়। একে বুড়ি খেলাও বলা হয়।
গাদন : খেলোয়াড়ের সংখ্যা অনুযায়ী মাটিতে ঘর তৈরী করে এই খেলা হয়। একদল একটি ঘরে থাকে এবং অন্যদল প্রতিটি ঘরে বাঁধার দেয়াল তৈরী করে। দেয়াল পার হতে পারলে বিজয় হয়। আর প্রতিপক্ষ কাউকে ছুঁতে পারলে পরাজয় হয়।
কড়ি খেলা : কড়ি বা পাটকাটি দিয়ে এই খেলা হয়। মোট ৪ জনে খেলতে হয়। ইহা প্রায় লুডু খেলার মত।
খোলাপাট্টি : কতিপয় খোলা একটির উপর একটি দিয়ে সাঁজায়ে উঁচু করতে হয়। এর চতুর্দিকে প্রতিপক্ষ দাঁড়ায়ে থাকে। একজন একটি বল দিয়ে এই খোলাকে ঢিল দিয়ে ভাঙ্গাতে চেষ্টা করে। বলটি ধরে প্রতিপক্ষ নিজেদের মধ্যে লুকিয়ে ফেলে। এই বল দিয়ে ঢিল ছুঁড়া দলের কাউকে ঢিল দিতে পারলে বিজয় হয়।
চ্যাংকুপ্যান্টি : বাঁশের কঞ্চি কেঁটে একটি বড় (যাকে প্যান্টি বলা হয় ) ও একটি ছোট (যাকে চ্যাংকু বলা হয়) করে খেলা হয়। একদল মাটিতে গর্ত খুঁড়ে তাতে চ্যাংকু রেখে প্যান্টি দিয়ে চ্যাংকুকে ডাঙ দিয়ে উড়ায়ে দেয়। ইহা প্রতিপক্ষের কঞ্চি বা ঝাড়ে লাগলে পরাজয়; আর না লাগলে চ্যাংকুটিকে গর্ত বরাবর ঢিল দেয়। প্যান্টির চেয়ে কম দূরত্বে চ্যাংকু পরলে সে খেলোয়াড় আউট হয়। আর প্যান্টি দিয়ে চ্যাংকুকে আঘাত করতে পারলে বা প্যান্টির মাপের চেয়ে বেশি দূরত্বে পরলে খেলা চলতে থাকে।
হাতা-পাতা-হা-হা : দু’জন সামনা সামনি দাঁড়ায়ে হাত দিয়ে একে অপরকে আঘাত করতে থাকে আর বলে-হাতাপাতা হা-হা/কাক ডাকে কা-কা। আর অন্যান্যরা হাতের নিচ দিয়ে চলতে থাকে।
ধাপরিবেছন : এই খেলাটি শিশুরা বিছানায় হাত রেখে খেলায়। আর বলে, ধাপরি বেছন ধাপরি বেছন/তার তলে নেওছা বেছন।
চকচ্ছাল/পাইত : এই খেলা দু’টি মাটিতে দাগ দিয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক গুটি দিয়ে খেলে হয়।
মারবেল খেলা : মাটিতে মারবেল ছুঁরে দিয়ে এই খেলা হয়।
কয়া (আঁটি) খেলা : আমের কয়া দিয়ে মাটিতে গোল দাগ দিয়ে কয়া দিয়ে কয়াকে মেরে খেলা হয়।
গোলা খেলা :
মাটিতে ১২টি ছোট গর্ত খুঁড়ে তাতে নিম গাছের ফল দিয়ে খেলা হয়।
বাক্বকরি খেলা :
মাটিতে আড়াআড়ি দাগ টেনে খেলা হয়।
ফুল খেলা : পাথরের টুকরা বা ইটের খোয়া দিয়ে মেয়েরা খেলে। খেলার সময় বলে-ফুল ফুল ফুলটি/একে দোলটি/সুরুশাম সুরুশাম সুরুশামটি/একে জোড় সুরুশামটি। একে তেলটি।
হাড়ি খেলা : ছেলে-মেয়েরা পুকুরে ডুব দিয়ে এই খেলা খেলে।
কিত্কিত্ খেলা : মেয়েরা মাটিতে আয়তাকারে কয়েকটি দাগ টেনে পা দিয়ে একটি ছোট খোলাকে আঘাত করে খেলে; আর বলে কিত্কিত্কিত্।
পানপাতা খেলা : পান পাতার মত মাটিতে দাগ টেনে একটি ছোট খোলা দিয়ে খেলা হয়। আর বলতে থাকে পানপাতা হা হা।
ধুলাপাট্টি খেলা : ধুলা দিয়ে একটি ছোট আইল তৈরী করে এর ভিতরে একটি ছোট্ট কুটা লুকিয়ে রেখে দু’হাত একত্র করে কুটাটিকে ধরার জন্য মাটিতে হাত রেখে খেলা হয়।
এমনিভাবে আরও কিছু খেলা দেখা যায় যেমন-হাড়িভাঙ্গা, আমশু-বাঘাশু, হাতেকোচে, রুমালখেলা, টিলা খেলা ইত্যাদি। এই সব আঞ্চলিক খেলা ছাড়াও ফুটবল, কাবাডি, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেট, ভলিবল, সাঁতার, দীর্ঘ জাম্প, হাই জাম্প, সুঁই-সুতা, বিস্কুট দৌঁড় ইত্যাদি খেলা প্রচলিত আছে।
চেয়ারম্যানদের তালিকা
[সম্পাদনা]মোঃ আঃ হান্নান মন্ডল
০২-০১-১৯৬০ হতে ৩০-০২-১৯৬৫ পর্যন্ত।
মোঃ আঃ হান্নান মন্ডল
১৮-১১-১৯৬৫ হতে ১২-০৫-১৯৭২ পর্যন্ত।
মোঃ মোশাররফ হোসেন
তালুকদার ১৮-০৩-১৯৭৪ হতে ২৪-০২-১৯৭৭ পর্যন্ত।
মোঃ ছাত্তার মিয়া
২৫-০২-১৯৭৭ হতে ২২-০৪-১৯৮৪ পর্যন্ত।
মোঃ আঃ হান্নান মন্ডল
২২-০৪-১৯৮৪ হতে ৩০-০৬-১৯৮৮ পর্যন্ত।
এস. এ হাসান
৩০-০৬-১৯৮৮ হতে ৩০-০৩-১৯৯২ পর্যন্ত।
মোঃ বাবুল আক্তার
৩০-০৩-১৯৯২ হতে ১২-০২-১৯৯৮ পর্যন্ত।
মোঃ বাবুল আক্তার
১২-০২-১৯৯৮ হতে ২৫-০৩-২০০৩ পর্যন্ত।
মোঃ শফিকুল ইসলাম লেবু মন্ডল
০৬-০৪-২০০৩ হতে ০৬-০৬-২০১১ পর্যন্ত।
মোঃ শফিকুল ইসলাম লেবু মন্ডল
০৬-০৬-২০১১ হতে ২৬-১২-২০২১ পর্যন্ত।
মোঃ নূর আলম মিয়া
২৬-১২-২০২১ হতে ০০-০০-২০২৬ পর্যন্ত।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
[সম্পাদনা]১. দেবী চৌধুরাণী(ব্রিটিশ বিরোধী নারী নেত্রী),
২. ডাঃ মোঃ লুৎফর রহমান (করাচি এবং রংপুর মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ),
৩. শাহ্ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক (সাবেক গণপরিষদ সদস্য এবং ভাষা সৈনিক),
৪. অধ্যাপক ড. এম আই পাটোয়ারী(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুুষদের সাবেক ডিন এবং Dhaka Intranational University প্রতিষ্ঠাতা),
৫. ডা. রওশন আলম (রংপুর মেডিকেল কলেজের একজন অধ্যাপক)
বিবিধ
[সম্পাদনা]আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "কৈকুড়ী ইউনিয়ন"। জাতীয় তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৬।
- ↑ "Union Parishad List"। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। ৫ আগস্ট ২০১২। ৫ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৬।