কেলি সেম্যুর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কেলি সেম্যুর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমাইকেল আর্থার সেম্যুর
জন্ম(১৯৩৬-০৬-০৫)৫ জুন ১৯৩৬
ককস্টাড, কেপ প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা
মৃত্যু১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯(2019-02-17) (বয়স ৮২)
কেপ টাউন, দক্ষিণ আফ্রিকা
ডাকনামকেলি
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ-স্পিন
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২১৯)
৬ ডিসেম্বর ১৯৬৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২২ জানুয়ারি ১৯৭০ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬০/৬১ - ১৯৬৯/৭০ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৮
রানের সংখ্যা ৮৪ ৫৬৯
ব্যাটিং গড় ১২.০০ ১৪.২২
১০০/৫০ ০/০ ০/১
সর্বোচ্চ রান ৩৬ ৬২
বল করেছে ১৪৫৮ ৮২৫২
উইকেট ১১১
বোলিং গড় ৬৫.৩৩ ২৯.৫২
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৮০ ৭/৮০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/- ১৬/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৫ মে, ২০১৯

মাইকেল আর্থার কেলি সেম্যুর (ইংরেজি: Kelly Seymour; জন্ম: ৫ জুন, ১৯৩৬ - মৃত্যু: ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯) কেপ প্রদেশের ককস্টাড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬৩ থেকে ১৯৭০ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১][২]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি অফ ব্রেক বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছিলেন ‘কেলি’ ডাকনামে পরিচিত কেলি সেম্যুর

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৬০-৬১ মৌসুম থেকে ১৯৬৯-৭০ মৌসুম পর্যন্ত কেলি সেম্যুরের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৬০-৬১ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের দলের বিপক্ষে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যয়নকালীন ১৯৬১-৬২ মৌসুমে প্রিটোরিয়ায় নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরূপে সফররত নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে খেলেন। খেলায় তিনি ৭/৮০ ও ৫/৭২ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন।[৩] এরপর এটিই তার ইনিংস ও খেলায় সেরা বোলিং পরিসংখ্যানরূপে বিবেচিত হয়।

ডিসেম্বর, ১৯৬৪ থেকে নভেম্বর, ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত কোন প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেননি কেলি সেম্যুর। কারি কাপের দ্বিতীয়সারির খেলায় ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের পক্ষে খেলে পুনরায় খেলার জগতে ফিরে আসেন। ঐ মৌসুমে ১৫.৯৫ গড়ে ২১ উইকেট পান। গ্রাহাম শ্যাভলিয়েরের সাথে স্পিন জুটি গড়েন। দ্বিতীয়সারিতে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সকে শিরোপা এনে দেন। ১৯৬৯-৭৯ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স প্রথমসারিতে খেলার সুযোগ পায়। এবারো শ্যাভলিয়েরের সাথে খেলার ধারা অব্যাহত রাখেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সাতটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন কেলি সেম্যুর। ৬ ডিসেম্বর, ১৯৬৩ তারিখে ব্রিসবেনে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। একই দলের বিপক্ষে ২২ জানুয়ারি, ১৯৭০ তারিখে কেপ টাউনে সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সাত টেস্টে অংশগ্রহণ করলেও খেলায় তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি তিনি। এ টেস্টগুলো খেলার জন্যে তাকে ছয় বছর আসা-যাওয়ার পালায় সর্বদাই ব্যতিব্যস্ত থাকতে হয়েছিল।

হিউ টেফিল্ডের অবসর গ্রহণের কারণে অফ স্পিনারের ঘাটতি মোকাবেলায় দল নির্বাচকমণ্ডলী এ সফরে দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে খেলার জন্যে কেলি সেম্যুরকে মনোনীত করে। ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে মাঝারীমানের সফলতা পান। ৩৩.৬৬ গড়ে ১৫ উইকেট লাভ করেন তিনি। এরফলে, ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড গমনের জন্যে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

অস্ট্রেলিয়া গমন, ১৯৬৩-৬৪[সম্পাদনা]

অস্ট্রেলিয়ায় সকল প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৩৩.০৬ গড়ে ১৫ উইকেট লাভ করেন। ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে তিনি কোন উইকেটের সন্ধান পাননি। পরের খেলায় তাসমানিয়ার বিপক্ষে ৫/৬৫ ও ২/৬০ লাভ করেন। ফলশ্রুতিতে দ্বিতীয় টেস্টে খেলার জন্যে মনোনীত হন। এ টেস্টে তিনি একটিমাত্র উইকেট পান। ফলে তৃতীয় টেস্টে দলের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হন ও চতুর্থ টেস্টে তাকে পুনরায় দলে ফিরিয়ে আনা হয়। এ পর্যায়ে তিন টেস্টে কোন উইকেট না পাওয়া ডেভিড পিদি’র স্থলাভিষিক্ত হন। ঐ টেস্টে তিনি মাত্র এক উইকেট পান। তাসত্ত্বেও, দক্ষিণ আফ্রিকা দল জয় পায়। তাকে দলে রেখে পঞ্চম টেস্টে খেলতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা দল। পঞ্চম টেস্টে আট বলে গড়া ৩৮ ওভার বোলিং করে ৩/৮০ পান। এটিই তার টেস্টে সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ছিল। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজস্ব খেলোয়াড়ী জীবনের একমাত্র অর্ধ-শতকের ইনিংস খেলেন। দলীয় সংগ্রহ ১৯৪/৮ থাকা অবস্থায় ডেনিস লিন্ডসের সাথে ৭৫ মিনিটে ১০৮ রান তুলেন। এ পর্যায়ে তিনি ৬২ রান সংগ্রহ করেছিলেন।[৪] ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমের নিউজিল্যান্ড সফরে তিনি যাননি। দেশে ফিরে চিকিৎসাশাস্ত্রে মনোনিবেশ ঘটান।[৫]

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে ইংরেজ দল দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করে। নিজ দেশে প্রথম দুই টেস্টে কার্যত ব্যর্থ ছিলেন তিনি। দুই উইকেট পেলেও তাকে বেশ রান খরচ করতে হয়েছিল। ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া দল দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলতে আসে। প্রথম টেস্টে ১/২৮ ও ১/৪০ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে খুব সহজেই জয় এনে দেন। তবে, জন ট্রাইকোসকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। এ মৌসুমে আর একটিমাত্র প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে অবসর গ্রহণ করেন কেলি সেম্যুর।

পেশাদারী পর্যায়ে তিনি চিকিৎসক ছিলেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ তারিখে ৮২ বছর বয়সে কেপ টাউনে কেলি সেম্যুরের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Kelly Seymour"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১২ 
  2. "CSA pays tribute to Kelly Seymour"Cricket South Africa। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  3. "South African Universities v New Zealanders 1961-62"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০১৬ 
  4. Wisden 1965, p. 825.
  5. Graham Short, The Trevor Goddard Story, Purfleet, Durban, 1965, p. 158.

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]