কৃষ্ণদেবরায়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে


কৃষ্ণদেবরায়
বিজ্যনগর রাজ্যের সম্রাট
হায়দ্রাবাদ-এর হুসেন সাগর-এর তীরে সম্রাট কৃষ্ণদেবরায়ের ব্রোঞ্জ মূর্তি
রাজত্ব২৬শে জুলাই ১৫০৯–১৫২৯[১]
পূর্বসূরিবীরনরসিংরায়
উত্তরসূরিঅচ্যুত দেবরায়
দাম্পত্য সঙ্গীতিরুমালা দেবী , চিন্না দেবী
বংশধর
  • তিরুমালাম্বা
  • ভেঙ্গালাম্বা
  • তিরুমালারায়[২] (Crowned in 1524 at the age of 6 years, but died on 1525[৩])
ওড়িশার গজপতি রাজ্যের বিরুদ্ধে কৃষ্ণদেবরায়ের নেতৃত্বে বিজয়নগর রাজ্যের জয়গাথা কন্নড় লিপিতে লিখিত- হাম্পির কৃষ্ণ মন্দিরে প্রোথিত ১৫১৩ খ্রিস্টাব্দের শিলালিপি
বিজয়নগর সাম্রাজ্য
সঙ্গম রাজবংশ
প্রথম হরিহর ১৩৩৬–১৩৫৬
প্রথম বুক্ক ১৩৫৬–১৩৭৭
দ্বিতীয় হরিহর ১৩৭৭–১৪০৪
বীরুপাক্ষ রায় ১৪০৪–১৪০৫
দ্বিতীয় বুক্ক রায় ১৪০৫–১৪০৬
প্রথম দেবরায় ১৪০৬–১৪২২
রামচন্দ্র রায় ১৪২২
বীর বিজয় বুক্ক রায় ১৪২২–১৪২৪
দ্বিতীয় দেবরায় ১৪২২–১৪৪৬
মল্লিকার্জুন রায় ১৪৪৬—১৪৬৫
দ্বিতীয় বীরুপাক্ষ রায় ১৪৬৫–১৪৮৫
প্রুধা রায় ১৪৮৫
সালুভ বংশ
সালুভ নরসিংহ দেব রায় ১৪৮৫–১৪৯১
থিমা ভূপাল ১৪৯১
দ্বিতীয় নরসিংহ রায় ১৪৯১–১৫০৫
তুলভ বংশ
তুলভ নরসা নায়ক ১৪৯১–১৫০৩
বীর নরসিংহ রায় ১৫০৩–১৫০৯
কৃষ্ণ দেব রায় ১৫০৯–১৫২৯
অচ্যুত দেব রায় ১৫২৯–১৫৪২
প্রথম ভেঙ্কটা ১৫৪২
সদাশিব রায় ১৫৪২–১৫৭০
আরবিডু বংশ
আলিয়া রাম রায় ১৬৪২–১৫৬৫
তিরুমালা দেব রায় ১৫৬৫–১৫৭২
প্রথম শ্রীরঙ্গ ১৫৭২–১৫৮৬
দ্বিতীয় ভেঙ্কটা ১৫৮৬–১৬১৪
দ্বিতীয় শ্রীরঙ্গ ১৬১৪
রাম দেব রায় ১৬১৭–১৬৩২
তৃতীয় ভেঙ্কটা ১৬৩২–১৬৪২
তৃতীয় শ্রীরঙ্গ ১৬৪২–১৬৪৬

কৃষ্ণদেবরায় ছিলেন বিজয়নগর সাম্রাজ্যের একজন সম্রাট যিনি ১৫০৯-১৫২৯ খ্রিস্টাব্দ অবধি রাজত্ব করেছিলেন। তিনি তুলু রাজবংশের তৃতীয় শাসক ছিলেন এবং তাকে সাম্রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সম্রাট কৃষ্ণদেবরায় কন্নড় রাজ্য রাম রামন ( কন্নড় সাম্রাজ্য অধিপতি), অন্ধ্র ভোজা (তেলুগু সাহিত্যের ভোজরাজ) এবং মুরু রায়রা গান্ডা (ত্রিলোকাধিপতি) ইত্যাদি উপাধি অর্জন করেছিলেন। তিনি বিজাপুর সুলতান, গোলকোন্ডা, বাহমানি সুলতানিয়াত এবং ওড়িশাগজপতিদের পরাজিত করে দাক্ষিণাত্যের একুজন প্রভাবশালী শাসক হয়েছিলেন এবং ভারতের অন্যতম শক্তিশালী হিন্দু সম্রাট ছিলেন[৪]। মোগল সম্রাট বাবর যখন উত্তর ভারতের বেশিরভাগ অংশ শাসন করছিলেন, তখন কৃষ্ণদেবরায় ছিলেন দাক্ষিণাত্যের সবচেয়ে শক্তিশালী সম্রাট এবং ভারতীয় উপমহাদেশের নিরিখে একটি বিস্তৃত সাম্রাজ্যের অধিপতি[৫]

পর্তুগিজ পর্যটক ডোমিংগো পেস এবং ফেরনাও নুনিজও তাঁর রাজত্বকালে বিজয়নগর সাম্রাজ্য পরিদর্শন করেছিলেন। তাঁদের বিরচিত ভ্রমণকাহিনীগুলি ইঙ্গিত দেয় যে রাজা কেবল একজন দক্ষ প্রশাসকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন সম্মুখভাগ থেকে নেতৃত্বদানকারী একজন যোদ্ধা সেনাপতি যিনি যুদ্ধক্ষেত্রে আহতদের পরিচর্যা করতেও পিছপা হন না। দক্ষিণ ভারতীয় কবি মুকু টিমমনা তুর্কিদের ধ্বংসকারী হিসাবে তাঁর প্রশংসা করেছিলেন। কৃষনদেবরায়ের প্রধান পরামর্শদাতা ছিলেন পিতৃপ্রতিম প্রধানমন্ত্রী তিম্মারুসু, যিনি কৃষ্ণদেবরায়ের রাজ্যাভিষেকের জন্যেও সহায়তা করেছিলেন।

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

কৃষ্ণদেবরায় ছিলেন তুলুভা নরসা নায়কের পুত্র। তুলুভা নরসা নায়ক, সালুভা নরসিংহ দেব রায়ের অধীনে এক জন সেনাপতি ছিলেন, যিনি পরবর্তীকালে সাম্রাজ্যের বিভাজন রোধে সেনা অভ্যুথানের মাধ্যমে সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন এবং বিজয়নগরে শাসন করার জন্য তৃতীয় হিন্দু রাজবংশের তুলুভা রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

যুদ্ধ বিগ্রহ[সম্পাদনা]

কৃষ্ণদেবরায়ের রাজত্বকাল বিজয়নগরের ইতিহাসে সামরিক সাফল্যের সময় সূচীত করে। সম্রাট কৃষনদেবরায় যুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারতেন এবং প্রায় হেরে যাওয়া যুদ্ধকেও বিজয়ে পরিবর্তন করতে পারতেন।[৬] তার শাসনের প্রথম দশক ছিল দীর্ঘ অবরোধ, বিজয়, বিদ্রোহের সমাহার[৭]। তাঁর প্রধান শত্রু ছিলেন বাহামানী সুলতানদের সাম্রাজ্য (বাহমনী সাম্রাজ্য পাঁচটি ছোট রাজ্যে বিভক্ত হলেও বিজয়নগরের জন্যে একটি হুমকি স্বরূপ); ওড়িশার গাজপতিরা, যারা সালুভা নাসিংহ দেবরায়ের আমল থেকেই বিজয়ঙ্গরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল এবং পর্তুগাল থেকে আসা পোর্তুগীজরা, যারা সমুদ্র বাণিজ্যের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করত[৮]

দাক্ষিণাত্যে সাফল্য[সম্পাদনা]

কৃষনদেবরায়ের শাসনকালে দাক্ষিণাত্য সুলতানদের দ্বারা বিজয়নগর সাম্রাজ্যের বিভিন্ন শহর ও গ্রামে অভিযান ও লুণ্ঠনের বার্ষিক ঘটনা শেষ হয়ে এসেছিল। ১৫০৯ সালে কৃষ্ণদেবরায়ের সৈন্যবাহিনী দিওয়ানীর বিজাপুরের সুলতান সামুদ্দিন জাফর খানের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং সুলতান মাহমুদ গুরুতর আহত ও পরাজিত হন[৯]। ইউসুফ আদিল খানকে হত্যা করা হয়েছিল এবং রায়চুর দোয়াবকে সংযুক্ত করা হয়েছিল। এই বিজয়ের সুযোগ নিয়ে কৃষনদেবরায় বিদার, গুলবার্গা এবং বিজাপুরকে বিজয়নগরের সাথে পুনরায় একত্রিত করেন যদিও তিনি সুলতান মাহমুদকে মুক্তি দিয়ে তাঁকে শাসক হিসেবে রেখে দেন[১০]। গোলকুন্ডার সুলতান সুলতান কুলী কুতুব শাহ শ্রী কৃষ্ণদেবরের প্রধানমন্ত্রী তিমমারসু দ্বারা পরজিত হন[১১]

কৃষ্ণদেবরায় পর্তুগিজদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন; উল্লেখ্য যে ১৫১০ সালে গোয়ায় পর্তুগীজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল[১২]। সম্রাট পর্তুগিজ বণিকদের কাছ থেকে বন্দুক এবং আরবীয় ঘোড়া ক্রয় করেছিলেন[১৩][১৪]। তিনি বিজয়নগর শহরে জল সরবরাহ উন্নত করতে পর্তুগিজ দক্ষতাও কাজে লাগিয়েছিলেন[১৫]

চূড়ান্ত সংঘাত ও মৃত্যু[সম্পাদনা]

বিজয়নগর সাম্রাজ্যের জটিল মিত্রতানীতি এবং পাঁচটি দাক্ষিণাত্য সুলতানিয়াতের ফলে কৃষ্ণদেবরায়কে ক্রমাগত যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হত। এর মধ্যে একটি যুদ্ধে তিনি গোলকুন্ডাকে পরাজিত করেন এবং এর সেনাপতি মাদুরুল-মুলককে বন্দী করেন, বিজাপুর এবং এর সুলতান ইসমাইল আদিল শাহকে চুরমার করেন[১৬] এবং বাহমনি সুলতানিয়াতকে পুনরুদ্ধার করে দ্বিতীয় মোহাম্মদ শাহের পুত্রের কাছে অর্পণ করেন[১৭]

১৫১৫ সালের ১৯শে মে তিনি ইসমাইল আদিল শাহের কাছ থেকে রায়চুর দুর্গটি একটি কঠিন অবরোধের পরে সুরক্ষিত করেন; এই যুদ্ধে বিজয়নগরের ১৬,০০০ সৈন্য নিহত হয়েছিল। রায়চূড় যুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা ছিল সেনাপতি পেম্মাসানি রামলিঙ্গ নায়ডুর; স্বয়ং কৃ্ষ্ণদেবরায় এই সেনাপতির প্রশংসা করেছিলেন। কথিত আছে যে রায়চুরের যুদ্ধে ৭ লক্ষ পদাতিক সৈন্য, ৩২,০০০ অশ্বারোহী এবং ৫৫০ টি হাতি ব্যবহৃত হয়েছিল[১৮]। তাঁর সাম্রাজ্য সমগ্র দক্ষিণ ভারত জুড়ে প্রসারিত হয়েছিল।

১৫২৪ সালে, কৃষ্ণদেবরায় তাঁর পুত্র তিরুমালা রায়কে যুবরাজ (মুকুট রাজকুমার) পদে নিয়োজিত করেছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত রাজকুমার বেশি দিন বেঁচে ছিলেন না: তাঁকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়[১৯]। যুবরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে কৃষ্ণদেবরায় তাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতি এবং উপদেষ্টা তিমমারুসুকে অন্ধ করে দিয়েছিলেন[২০]। এরপরেই কৃষ্ণদেবরায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং ১৫২৯ সালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি তার ভাই অচ্যুত দেবরায়কে তাঁর উত্তরসূরি মনোনীত করেছিলেন। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

অভ্যন্তরীণ শাসনব্যবস্থা[সম্পাদনা]

তাঁর রাজত্বকালে তিনি তাঁর মন্ত্রীদের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিলেন এবং যে কোনও মন্ত্রী কোন অপকর্ম করলে, তাঁর বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হত[২১]।তিনি কিছু জঘন্য কর বাতিল করে দিয়েছিলেন, যেমন বিবাহ-কর। রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য তিনি কয়েকটি বনাঞ্চলকে আবাদী জমিতে আনয়ন করেন। বিজয়নগরের আশেপাশে সেচের জন্য জলসেচের জন্যো একটি বিশেষ প্রকল্পও তিনি হাতে নিয়েছিলেন[২২][২৩]। পেজ, নুনেজ এবং বার্বোসার মতো বিদেশী ভ্রমণকারীরা, যারা বিজয়নগর সফর করেছিলেন, তাঁর রাজত্বকালে প্রশাসনের দক্ষতা এবং জনগণের সমৃদ্ধি নিয়ে জোরালো বক্তব্য রেখেছেন। তাঁর অধীনস্থ অঞ্চলগুলির প্রতিরক্ষা ও পুনর্গঠনে ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি নাগালাপুরা নামে একটি নতুন শহর প্রতিষ্ঠা করেন। পর্তুগীজ পর্যটক পেস আইন ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে রাজার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং মন্তব্য করেছেন যে "রাজা মৃত্যদন্ডের মাধ্যমে আইনশৃংখলা বজায় রাখেন।" তদুপরি, তিনি প্রায় ৫ লক্ষ জনসংখ্যার বিজয়নগর শহরটিকেকে "বিশ্বের সেরা বসবাসযোগ্য শহর" হিসাবে অভিহিত করেছিলেন। বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক ভাষা ছিল কন্নড় এবং তেলুগু।কন্নড় একটি জনপ্রিয় সাহিত্য মাধ্যম ছিলেন, কৃষ্ণদেবরের পৃষ্ঠপোষকতায় শীর্ষে পৌঁছেছিলেন।

শিল্প ও সাহিত্য[সম্পাদনা]

হাম্পির বিঠঠল মন্দিরে হোয়সালা পদ্ধতিতে সাঙ্গীতিক স্তম্ভসমূহ

কৃষ্ণদেবরায়ের শাসনকাল কন্নড় সাহিত্যের স্বর্ণযুগ হিসাবে পরিচিত তবে এ সময়ে অন্য অনেক ভাষায় সাহিত্যরচনাও সমৃদ্ধ হয়েছিল। অনেক তেলুগু, কন্নড়, সংস্কৃত এবং তামিল কবি সম্রাটের পৃষ্ঠপোষকতা উপভোগ করেছিলেন। সম্রাট কৃষ্ণদেব রায় নিজেও অনেক ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।তাই ঐতিহাসিকরা তাঁর বংশপরিচয় নিয়ে সন্দিহান যে তিনি একজন কন্নাডিগা নাকি তেলুগু নাকি তুলু বংশের লোক ছিলেন[২৪][২৫]

কবি মানকু টিমমা একজন মহান সেনানায়ক রুপে কৃষ্ণদেবরায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন এবং বলেছিলেন: "হে কৃষ্ণদেবরায়, মন-সিংহ। আপনি কেবলমাত্র আপনার মহান নামের শক্তি দিয়ে তুর্কিদের ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। হে প্রভু বারণেশ, আপনাকে দেখামত্রই মত্ত হস্তীর দল পথ ছেড়ে দেয়"[২৬]

কন্নড় সাহিত্য[সম্পাদনা]

তিনি বহু কন্নড় কবি সাহিত্যিকের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন যাদের মধ্যে ছিলেন মল্লন্নার্য, যিনি বীর-শৈবামৃত, ভাব-চিন্তা-রত্ন ও সত্যেন্দ্র চোল-কথা রচনা করেছিলেন; ছাটু বিট্টল-অনন্ত, যিনি ভাগ-কথা লিখেছিলেন; তিম্মনা কাভি যিনি কৃষ্ণদেবরায়ের জীবনকথা লিপিবদ্ধ করেছিলেন প্রমুখ।[২৭][২৮] মাধোয়া কূলের অন্তর্ভুক্ত মহীশুরের দ্বৈত সাধক ব্যাসতীর্থ ছিলেন তাঁর রাজগুরু[২৯]। কন্নড়ভাষায় বিরচিত কৃষ্ণদেবরায় দিনাচারি সম্প্রতি আবিষ্কার করা একটি সাহিত্য[৩০]। এই সাহিত্যটি ব্যক্তিগত দিনলিপিতে কৃষ্ণদেবরায়ের সময়ে সমকালীন সমাজকে তুলে ধরেছিল। তবে এই দিনলিপিটি রাজা নিজে লিখেছিলেন কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়।

তেলুগু সাহিত্য[সম্পাদনা]

কৃষ্ণদেব রায়ের শাসনকাল তেলুগু সাহিত্যের স্বর্ণযুগ হিসাবেও পরিচিত। আটজন তেলুগু কবি তাঁর সাহিত্য সমাবেশের আটটি স্তম্ভ হিসাবে বিবেচিত এবং অষ্টদিগগাজ রূপে পরিচিত। কৃষ্ণদেবরায় নিজেই একটি তেলুগু মহাকাব্য রচনা করেছিলেন আমুক্তমাল্যদা শিরোনামে।

তামিল সাহিত্য[সম্পাদনা]

কৃষ্ণদেবরায় তামিল কবি হরিদাসের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন এবং তাঁর আমলে তামিল সাহিত্য দ্রুতই সমৃদ্ধ হতে শুরু করে[৩১]

সংস্কৃত সাহিত্য[সম্পাদনা]

সংস্কৃত ভাষায় কৃষ্ণদেবরায়ের রাজগুরু ব্যাসতীর্থ রচনা করেছিলেন বেদ-জীবন, তাত্পর্য-চন্দ্রিকা, ন্যায়-অমৃতা (অদ্বৈত দর্শনের বিরুদ্ধে পরিচালিত একটি সাহিত্য) এবং তর্ক-তান্ডব রচনা করেছিলেন। কৃষ্ণদেব রায় নিজেও সংস্কৃত ভাষায় একজন দক্ষ পণ্ডিত ছিলেন এবং মদালসা-চরিত, সত্যবাদুপরিণয়, রসমঞ্জরী এবং জাম্ববতী কল্যাণ রচনা করেছিলেন[৩২][৩৩][৩৪]

ধর্ম ও সংস্কৃতি[সম্পাদনা]

নারায়ণগিরি পাহাড়ের শ্রীভরী পাড়ালু থেকে দেখা তিরুমালা মন্দির এবং বৈকুন্ঠম মন্দির চত্ত্বর (অগ্রভাগে অর্ধবৃত্তাকার ভবন)

রাজা কৃষ্ণদেবরায় হিন্দুধর্মের সমস্ত সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং বিবিধ মন্দির নির্মাণ ও সংস্কার সাধন করেছিলেন। তিরুমালা ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরে হীরার মুকুট থেকে খাঁটি সোনার তরোয়াল ইত্যাদি বিভিন্ন অমূল্য দ্রব্যাদি উতসর্গ করেছিলেন। তাঁর উতসর্গের স্বীকৃতি স্বরুপ, মন্দির চত্ত্বরে দুই স্ত্রীসহ তাঁর মূর্তি স্থাপিত রয়েছে। তিনি শ্রীশৈলম মন্দির নির্মাণেও ভূমিকা রেখেছিলেন।

কৃষ্ণদেবরায়ের আনুষ্ঠানিকভাবে তথাচার্য দ্বারা বৈষ্ণব মতে দীক্ষিত হয়েছিলেন।কৃষ্ণদেবরায় যখন সিংহাসনে আরোহণ করেন, তথাচার্য তাঁর সভাগুরু নির্বাচিত হন।

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Srinivasan, C. R. (১৯৭৯)। Kanchipuram Through the Ages। Agam Kala Prakashan। পৃষ্ঠা 200। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৪ 
  2. Bh Sivasankaranarayana, M. V. Rajagopal, N. Ramesan (১৯৭০)। Andhra Pradesh District Gazetteers: Anantapur। Director of Print. and Stationery at the Government Secretariat Press, copies can be had from:Government Publication Bureau। পৃষ্ঠা 63। 
  3. T. K. T. Viraraghavacharya (১৯৯৭)। History of Tirupati: The Thiruvengadam Temple, Volume 2। Tirumala Tirupati Devasthanams। পৃষ্ঠা 469। 
  4. Advanced Study in the History of Medieval India by Jl Mehta p.118
  5. Keay, John, India: A History, New York: Harper Collins, 2000, p.302
  6. Maharashtra State Gazetteers: Botany. pt. 1. Medicinal plans. pt. 2. Timbers. pt. 3. Miscellaneous plants. pt. 4। Directorate of Government Print, Stationery and Publications। ১৯৭২। পৃষ্ঠা 37। 
  7. Forms of knowledge in early modern Asia : explorations in the intellectual history of India and Tibet, 1500-1800। Pollock, Sheldon I.। Duke University Press। ২০১১। পৃষ্ঠা 81আইএসবিএন 9780822348825ওসিএলসি 658812846 
  8. H. V. Sreenivasa Murthy, R. Ramakrishnan (১৯৭৭)। A History of Karnataka, from the Earliest Times to the Present Day। S. Chand। পৃষ্ঠা 188। 
  9. P. Sree Rama Sarma (১৯৯২)। A History of the Vijayanagar Empire। Prabhakar Publications। পৃষ্ঠা 135। 
  10. Karnataka State Gazetteer: Dharwad District (including Gadag and Haveri Districts)। Office of the Chief Editor, Karnataka Gazetteer। ১৯৯৩। পৃষ্ঠা 53। 
  11. P. Raghunadha Rao (১৯৯৩)। Ancient and Medieval history of Andhra Pradesh। Sterling Publishers। পৃষ্ঠা 87 
  12. Bowman, John (২০০০)। Columbia Chronologies of Asian History and Culture। Columbia University Press। পৃষ্ঠা 272আইএসবিএন 9780231500043 
  13. Powell, Salem (২০০১)। Magill's Guide to Military History। Salem Press। পৃষ্ঠা 1609আইএসবিএন 9780893560140 
  14. Directorate of Archaeology and Museums (২০১০)। Life and Achievements of Sri Krishnadevaraya। Government of Karnataka। পৃষ্ঠা 267। 
  15. I. M. Muthanna (১৯৬২)। Karnataka, History, Administration & Culture। পৃষ্ঠা 38। 
  16. PSR (Standard Issue) (২০০৯)। Portuguese Studies Review, Vol. 16, No. 2। Baywolf Press। পৃষ্ঠা 27। 
  17. Sharma, L.P (১৯৮৭)। History of Medieval India (1000-1740 A.D.)। Konark Publishers। 
  18. Reddy, Kittu (২০০৩)। History of India: A New Approach। Standard Publishers। পৃষ্ঠা 184। 
  19. Pandurang Bhimarao Desai (১৯৭০)। A History of Karnataka: From Pre-history to Unification। Kannada Research Institute, Karnataka University। পৃষ্ঠা 371। 
  20. P. Raghunadha Rao (১৯৯৩)। Ancient and Medieval history of Andhra Pradesh। Sterling Publishers। পৃষ্ঠা 88 
  21. A Comprehensive History of India: Comprehensive history of medieval India by B.N. Puri, M.N. Das p.94
  22. Economic History of Medieval India, 1200-1500 p.194
  23. History of Medieval India: From 1000 A.D. to 1707 A.D. by Radhey Shyam Chaurasia p.111
  24. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২১ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২০ 
  25. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২০ 
  26. Vijayanagara Voices: Exploring South Indian History and Hindu Literature  William Joseph Jackson: p.124
  27. Dr. S.U. Kamat, Concise history of Karnataka, pp 157-189
  28. Prof K.A.N. Sastri, History of South India pp 355-366
  29. . Krishna Deva Raya considered the saint his Kula-devata and highly honored him. A Concise History of Karnataka pp 178, Dr. S.U. Kamath, Haridasas of Karnataka, Madhusudana Rao CR, History of South India, pp 324, Prof. K.A.N. Sastri
  30. A Concise History of Karnataka, Dr. S.U. Kamath, pp 157
  31. Dr. S.U. Kamat, Concise history of Karnataka, pp 157-189, History of South India, pp 331-354, Prof. K.A.N. Sastri
  32. Dr. S.U. Kamat, Concise history of Karnataka, pg.157-189
  33. Prof K.A.N. Sastri, History of South India pg.239-280
  34. Prof K.A.N. Sastri, History of South India pg.309-330