কুরআনের বাজি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(কুরআনের চ্যালেঞ্জ থেকে পুনর্নির্দেশিত)
কুরআনের একটি আয়াত, যা এই বাজিকে নির্দেশ করে।

ইসলামী ধর্মতত্ত্বে, কুরআনের বাজি (আরবি: التحدي في القرآن, প্রতিবর্ণীকৃত: আল-তাহাদ্দি ফি আল-কুর'আন) দ্বারা কুরআনে প্রস্তাবিত একাধিক বাজি বা চ্যালেঞ্জকে বোঝায়। এটি মানুষ এবং জিন উভয়ের মধ্যে অমুসলিমদের অনুরোধ করে যে তাঁরা হয় কুরআনের মধ্যে থাকা সূরা বা অনুরূপ সূরা তৈরি করুক, যার উদ্দেশ্য কুরআনকে ভুল প্রমাণ করা। যদিও কুরআনে সুরা আল-ইমরানে আয়াত ২৩ থেকে ২৪ মধ্যে বর্ণিত রয়েছে যে, এটি অর্জন করা কখনই সম্ভব নয়।[১]

বাজির প্রকার[সম্পাদনা]

এই বাজি পূরণ করতে হলে অমুসলিমদেরকে কুরাআনের অনুরূপ একটি "বিবৃতি" বা আয়াত তৈরি করতে এবং অন্যদের মধ্যে একটি বা দশটি অনুরূপ সূরা তৈরি করার কথা বলা হয়েছে।[২] আরেকটি আয়াতে বলা হয়েছে যে, মানুষ বা জিন একসাথে কাজ করলেও এর মতো বই তৈরি করতে পারে না।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

কুরআনের কিছু আয়াত যেখানে এই চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করা হয়েছে:

"আমি (আল্লাহ) আমার বান্দার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি তাতে তোমাদের (অবিশ্বাসী) কোনো সন্দেহ থাকলে তোমরা তাঁর মতো কোনো সূরা এনে দাও আর তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে আল্লাহ ছাড়া তোমাদের সকল সাহায্যকারীকে আহবান করো।"[৩]

— কুরআন ২:২৩

"তাঁরা (অবিশ্বাসী) কি বলে, সে (মুহাম্মাদ) ওটা রচনা করেছে? [হে মুহাম্মাদ! তবে] বলুন, ‘তাহলে তোমরা এর (কুরআন) মতো দশটি সূরা রচনা করে আনো, আর [এই কাজে সাহায্য করার জন্য] আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাকে ডাকতে পারো ডেকে নাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়েই থাক।’" [৪]

— কুরআন ১১:১৩

"[হে মুহাম্মাদ!] বলুন, ‘এই কুরআনের মতো একখানা কুরআন আনার জন্য যদি সমগ্র মানব আর জ্বীন জাতিকেও একত্রিত হয়, তবুও তাঁরা তার মতো [কোনো গ্রন্থ] আনতে পারবে না, যদিও তাঁরা পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য ও সহযোগিতা করে।’"[৫]

— কুরআন ১৭:৮৮



বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি[সম্পাদনা]

মধ্যযুগীয় পারসীয় বিজ্ঞানী আল রাযী এই বাজির বিষয়ে কুরআনের সমালোচনা করে করে বলেন,

"আপনি এমন একটি কর্মের কথা বলছেন যা প্রাচীন পৌরাণিক কাহিনী বর্ণনা করে, এবং যা একই সাথে বৈপরীত্যপূর্ণ। কোনো দরকারি তথ্য বা ব্যাখ্যাও এতে নেই। আর তখনই আপনি বলেন: ‘এই রকম কিছু উৎপাদন করো?’"[৬]

আল-রাযীর উক্ত দাবিটিকে নিঃসন্দেহে ভুল বলা যায়; যেহেতু উক্ত আয়াতে চ্যালেঞ্জ করে এই দাবি করা হয়েছে যে, যদি পারো তবে তৈরি করে নিয়ে আসো। এটি বলা হয়নি যে, তোমরা তৈরি করতে পারবে আবার পারবে না। এখানে বৈপরীত্যের কিছুই নেই। শুধু তাই নয়, এটি কুরআনের আয়াতেরও পরিপন্থী, যা উক্ত আয়াতে দাবি করে যে এর কোনো অভ্যন্তরীণ বৈপরীত্য নেই:

"তারা (অবিশ্বাসী) কি কুরআনের মর্ম বিষয়ে চিন্তভাবনা করে না? যদি তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নিকট হতে প্রেরিত হতো, তবে তাতে তাঁরা অবশ্যই বহু অসঙ্গতি পেত।"[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

বহিঃ সংযোগ[সম্পাদনা]