কুচান কন্যাদের গল্প (বই)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
টার্কোম্যান প্রধানদের মাথা খড় দিয়ে ভরে তেহরানে আনা হয়। পার্সিয়ানদের দ্বারা ভয় এবং ঘৃণা করা এই টার্কোম্যানরা জাতীয়তাবাদীদের সাথে যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। তারা সিংহাসন ফিরে পাওয়ার প্রচেষ্টায় মুহাম্মদ আলীর প্রধান যুদ্ধ শক্তি রচনা করেছিল।

কুচান কন্যাদের গল্প :এটি ইরানের লেখক আফসানেহ নাজমাবাদী রচিত ১৯৯৮ সালের রাজনৈতিক ইতিহাস গ্রন্থ, যাতে লিঙ্গ ও জাতীয় স্মৃতিমূলক লেখা রয়েছে।[১] বইটিতে ১৯০৫ সালে ইরানে মানব পাচারের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। কুচান জেলা থেকে ২৫০ জন বালিকার একটি দলকে শুল্ক বাবদ স্থানীয় সরকার অপহরণ করেছিল ও বিক্রি করে দিয়েছিলো।

সারসংক্ষেপ[সম্পাদনা]

নাজমাবাদী এই ঘটনাটিকে প্রাদেশিক সরকার এবং জাতীয় শাসন ব্যবস্থার বহু কাজের একটি উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যার ফলে সাংবিধানিক বিপ্লব উদ্ভূত হয়েছিল।[২] কুচান প্রদেশের প্রাদেশিক গভর্নর আসফ আল-দাওলা, সমস্ত নাগরিকের জন্য তাদের আয় যাই হোক না কেন, একটি সমতুল্য কর নির্ধারণ করেন। খারাপ ফসলের কারণে দরিদ্ররা এই কর পরিশোধ করতে পারত না। অর্থ সংগ্রহের একমাত্র উপায় ছিল অভিজাত তুর্কমেন যাযাবরদের কাছে তাদের মেয়েদের বিক্রি করা। তুর্কমেনরাও গ্রামে অভিযান শুরু করে এবং নারীদের বন্দী করে। যখন নাগরিকরা অর্থ প্রদান স্থগিত রাখার জন্য আবেদন করেছিল, তখন প্রাদেশিক সরকারের কর্মকর্তারা তাদের গুলি করে হত্যা করে।

প্রায় ২৫০ জন মেয়ে বিক্রি হয়েছিল। তারা কুচানের কন্যা হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠে। নাজমাবাদীর মতে, কীভাবে ইরানি নারীদের "পাচারের বস্তু" হিসেবে দেখা হয় এই ঘটনাটি তার প্রতীকী হয়ে উঠেছে, এবং সেই সরকারের অধীনে থাকা মানুষের দারিদ্র্য ও সামাজিক অবিচারের উদাহরণ বহন করছে। কুচানের লোকেরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে গিয়ে প্রতিবাদ করেছিল এবং সাহায্য চেয়েছিল। অবশেষে একজন তদন্তকারীকে কুচানে পাঠানো হয়। তিনি প্রাদেশিক গভর্নরের কাছে উৎকোচ প্রাপ্ত হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রকৃত ঘটনার প্রতিবেদন পেশ করেননি। নাগরিকরা আবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে গিয়ে প্রতিবাদ করে এবং অবশেষে সমস্যার সমাধান হয়। এই গল্পটি সারা ইরানের সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর সামাজিক ন্যায়বিচার এবং একটি সংসদীয় সরকারের জন্য জনসাধারণের দাবি উঠেছিল।

নাজমাবাদীর মতে, এই পর্বটিও দেখিয়েছিল যে, দেশজুড়ে বিশ্বসযোগ্য তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে সংবাদপত্রগুলি কতটা কার্যকর ছিল। কারণ অনেক ইরানিরা কুচানে থাকা ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন এবং সাংবিধানিক সরকারের জন্য প্রচারণায় যোগ দেন। আসফ আল-দাওলাহ এবং তার অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ১৯০৬ সালে নতুন শাসনের অধীনে বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছিল এবং তুর্কমেনদের কাছ থেকে মেয়েদের ফিরিয়ে আনার জন্য একাধিক প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। কিছু মেয়েকে উদ্ধার করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনা হলেও, বেশিরভাগ মেয়েকে পাওয়া যায়নি।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]