কিরিবাতিতে ইসলাম
ইসলাম কিরিবাতি দ্বীপপুঞ্জের সংখ্যালঘু ধর্মগুলির মধ্যে একটি। [১] ২০১০ সালের সরকারী আদমশুমারি অনুসারে, কিরিবাতির ১০৩,০৫৮ জন বাসিন্দার মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যা ১৩৯ জনে পৌঁছেছে, যারা মোট জনসংখ্যার ০.১২%। মুসলিম সম্প্রদায়ের বেশিরভাগই রাজধানী তারাওয়ার আশেপাশে বসবাস করে। [২] এখানকার মুসলমানদের অধিকাংশই আহমদিয়া বিশ্বাসের অনুসারী। রাজধানী তারাওয়ায় একটি ছোট জুমা
ইতিহাস
[সম্পাদনা]কিছু তথ্য অনুযাযী প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর তুলনায় কিরিবাতি দ্বীপপুঞ্জে ইসলাম তুলনামূলকভাবে দেরিতে প্রবেশ করেছে। এর প্রধান কারণ ছিল, যখন এই দ্বীপগুলো ব্রিটিশ উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অংশ ছিল, তখন অঞ্চলটিতে আফ্রিকা ও ভারত থেকে ব্যাপক অভিবাসন ঘটেনি। যার ফলে এখানে পূর্বে মুসলমানদের আগমন ঘটেনি। ২০শ শতাব্দীর শেষের দিকে প্রথম কিরিবাতিতে ইসলামের প্রচার শুরু হয়। ১৯৮৯ সালে প্রথম ঘানার মুসলিম দাঈ মাওলানা হাফিজ জিবরিল আহমাদ সাঈদকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে পাঠানো হয়। ১৯৯১ সালে তিনি কিরিবাতিতে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে আসেন এবং সেখানে প্রথম মুসলিম সম্প্রদায় গঠিত হয়। তিনি কিরিবাতি ছাড়াও, টোঙ্গা, সামোয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, ভানুয়াতু ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে ইসলামের প্রচারে কাজ করেছেন। তিনি আহমদিয়া জামাতের একজন দাঈ ছিলেন।
২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট রাইলি কিরিবাতি সফর করেন এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা নিয়ে তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেন। [৩]
বর্তমান পরিস্থিতি
[সম্পাদনা]কিরিবাতির সংবিধানের ১১ নম্বর অনুচ্ছেদ ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বিশ্বাসের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। বর্তমানে আহমদিয়া সম্প্রদায় কিরিবাতির সবচেয়ে বড় মুসলিম গোষ্ঠী। তাদের প্রধান নেতা হলেন ইমাম ফাহাদ। তাঁর মতে, অতীতে মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যে কিছু ছোটখাটো সংঘাত ঘটেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে তার সমাধান করা হয়েছে এবং বর্তমানে কিরিবাতিতে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।
কিরিবাতির রাজধানী তারাওয়াতে একটি ছোট জুমা মসজিদ রয়েছে, যেখানে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কেন্দ্রও অবস্থিত। সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার এখানে জুমার নামাজ ও ধর্মীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিরিবাতির আইন অনুযায়ী মুসলিমরা নিজেদের বাড়িতেও ধর্মীয় প্রার্থনা ও নামাজ আদায় করতে পারে। তবে কিরিবাতির মুসলমানরা অনেক ক্ষেত্রেই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধতার সম্মুখীন হয়। কারণ এর প্রধান সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য মূলত খ্রিস্টীয় ধর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই সেখানে হালাল খাদ্য পাওয়া কঠিন, ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা সীমিত এবং নামাজ আদায়ের জন্য একাধিক মসজিদ নেই। [৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Republic of Kiribati: Religion ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৭-০৭-২৩ তারিখে
- ↑ "Report on the Kiribati 2010 Census of Population and Housing - Volume 1: Basic Information and Tables" (পিডিএফ)। National Statistics Office। August 2012। 05 مارس 2016 তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|আর্কাইভের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "Kiribati"। United States Department of State (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-১৫।
- ↑ "Constitution of Kiribati (1979, rev. 1995)"। Montpelier ConText (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৮-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৫-০৭।