বিষয়বস্তুতে চলুন

কালীকৃষ্ণ মিত্র

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কালীকৃষ্ণ মিত্র
জন্ম১৮২২
সিমুলিয়া কলকাতা ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ভারত)
মৃত্যু২ আগস্ট ১৮৯১
পিতা-মাতাশিবনারায়ণ মিত্র (পিতা)
আত্মীয়নবীনকৃষ্ণ মিত্র (অগ্রজ)

কালীকৃষ্ণ মিত্র (১৮২২ - ২ আগস্ট ১৮৯১) একজন বাঙালি সমাজসংস্কারক, শিক্ষাবিদ। তিনি স্ত্রী শিক্ষার উন্নতিকল্পে, বিধবা বিবাহ প্রচলন ও মাদকসেবন নিবারণ আন্দোলনে ব্রতী ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

কালীকৃষ্ণ দরিদ্র পরিবারে কলকাতার সিমুলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শিবনারায়ণ মিত্র। নিজ অধ্যাবসায়ে বৃত্তি লাভ করে শিক্ষা সম্পন্ন করেছিলেন। হেয়ার স্কুলের শিক্ষা শেষ করে ভর্তি হন হিন্দু কলেজে। অধ্যক্ষ ডেভিড লেস্টার রিচার্ডসনের অন্যতম প্রিয় ছাত্র ছিলেন তিনি। পিতার মৃত্যুর পর তিনি কলকাতা ছেড়ে বারাসতে তার মাতুলালয়ে বসবাস করেন। তিনি নব্য শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও কখনো সরকারি চাকরি গ্রহণ করেন নি।

অবদান

[সম্পাদনা]
১৮৪৭ সালে বারাসতে প্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয়টি বর্তমানে কালীকৃষ্ণের নামে পরিচিত

কালীকৃষ্ণ শিক্ষার প্রসারে, কৃষির অগ্রগতিসহ যাবতীয় প্রগতিশীল কার্যকলাপে অগ্রণী ভূমিকা নিতেন। কৃষিবিদ্যার প্রতি তার গভীর অনুরাগ ছিল। পাশ্চাত্যের উন্নততর যন্ত্রের মাধ্যমে এদেশের কৃষকদের কৃষিকাজ শেখানোর জন্যে বারাসাতে একটি কৃষি উদ্যান ও কৃষি ভাণ্ডার স্থাপন করেছিলেন।[] তার জীবনের সেরা কীর্তি মহিলা বিদ্যালয় স্থাপন। বারাসত শহরে তিনি, তার অগ্রজ সুচিকিৎসক ও সমাজসংস্কারক নবীনকৃষ্ণ মিত্র ও খ্যাতনামা শিক্ষক প্যারীচরণ সরকারের সহায়তায় ১৮৪৭ সালে মেয়েদের একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ছিল অবিভক্ত বাংলার মতান্তরে ভারতের, মিশনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, ধর্মনিরপেক্ষ প্রথম মহিলা বিদ্যালয়।[] এই কাজের জন্যে শিক্ষাবিরোধী সমাজপতিদের বাধাবিপত্তি এমনকি সমাজচ্যুত পর্যন্ত হতে হয় কালীকৃষ্ণ মিত্র ও অন্যান্য শুভানুধ্যায়ীদের।নবীনকৃষ্ণ মিত্রের কন্যা, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের স্নেহধন্যা কুন্তীবালা এই স্কুলের প্রথম ছাত্রী হিসেবে যোগ দেন। এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বিটনকে উৎসাহিত করেছিল। তিনি এর দুই বছর পর বেথুন স্কুল স্থাপন করেন।[][] স্ত্রী শিক্ষার কাজ ছাড়াও কালীকৃষ্ণ উদ্ভিদবিদ্যা, যোগশাস্ত্র, থিওসফির চর্চা করতেন। মাদক সেবন নিবারণে ও বিধবা বিবাহ দানে অগ্রণী ছিলেন তিনি।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. প্রথম খন্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৮৭। 
  2. যোগেশ চন্দ্র বাগল, BETHUNE SCHOOL AND COLLEGE CENTENARY VOLUME। বেথুন স্কুল ও কলেজের কথা। কলকাতা। পৃষ্ঠা ২৯২। 
  3. "বিদ্যাসাগর"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ২৮ এপ্রিল ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  4. বিনয় ঘোষ (১৯৮৪)। বিদ্যাসাগর ও বাঙালি সমাজ। কলকাতা: ওরিয়েন্ট লংম্যান। পৃষ্ঠা ২১৭।