কালিবাউশ
| কালিবাউশ Labeo calbasu | |
|---|---|
| বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
| জগৎ: | Animalia |
| পর্ব: | Chordata |
| উপপর্ব: | Vertebrata |
| মহাশ্রেণী: | Osteichthyes |
| শ্রেণী: | Actinopterygii |
| বর্গ: | Cypriniformes |
| পরিবার: | Cyprinidae |
| গণ: | Labeo |
| প্রজাতি: | Labeo calbasu |
| দ্বিপদী নাম | |
| Labeo calbasu (Hamilton, 1822) | |
| প্রতিশব্দ | |
|
Labeo nigrescens Day, 1870[২] | |
কালিবাউশ (Labeo calbasu) বা কালবোস অনেকটা দেখতে রুই মাছের মত। এটি কার্প গোত্র Cyprinidae এর সদস্য। নদী এবং স্বাদুপানির জলাশয়ে এই মাছ পাওয়া যায়। এর বিস্তৃতি দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে। স্থানীয়ভাবে এটি বাউস, কালাবাউস, বাউগনি, কালবাসু এবং কলিয়া নামে পরিচিত।[৪][৫] এটি বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায় মাছ।
শ্রেনীবিন্যাস
[সম্পাদনা]বৈজ্ঞানিক নাম Labeo calbasu। মাছটিকে ইংরেজিতে Orange-fin labeo বলে। এটি Cyprinidae পরিবার (family) এর অন্তর্গত। এটি বাংলাদেশ এর স্থানীয় (Native) মাছ।
গঠন
[সম্পাদনা]
কালিবাউশের পৃষ্ঠদেশ উদরীয় অঞ্চলের তুলনায় বেশি উত্তল। অক্ষিকোটরের মধ্যবর্তী স্থান উত্তল।ঠোঁট পুরু এবং ঝালরযুক্ত। পশ্চাৎ ওষ্ঠীয় খাদ নিরবিচ্ছিন্ন। উভয় ঠোঁটের মাঝে একটি তরুণাস্থি অবলম্বন বিদ্যমান।দেহ আঁশ যুক্ত।দেহের উপরিভাগ কালো বা ধূসর, তবে নিচের অংশ হালকা বর্ণযুক্ত। সাধারণত দেহের পার্শ্ববর্তী মাঝখানের আঁশ গুলোতে উজ্জ্বল লাল বর্ণের দাগ দেখা যায়। কিছু আঁশে কালো দাগ থাকতে পারে। মাথার অংকীয় তল হলুদাভ বর্ণের তবে এক বছর বয়সী মাছের চোখের তারারন্ধ্রের চারিদিকে লাল হয়। বাংলাদেশে এই প্রজাতির সর্বোচ্চ ৭১ সে.মি. দৈর্ঘ্য এবং ৫.৫ কেজি ওজনবিশিষ্ট মাছ পাওয়া গেছে।
বাসস্থান
[সম্পাদনা]সাধারণত নদী, বিল ও হাওড়ের অল্প স্রোতযুক্ত পানিতে বাস করে এবং পানির নিচের স্তরে বাস করে।
খাদ্য
[সম্পাদনা]পানির নিচের স্তরে বাস করার ফলে শামুক, ঝিনুক, মলাস্ক, ডায়াটম, উদ্ভিদ উপাদান, জৈব পদার্থ, সবুজ শৈবাল ও জুপ্লাংকটন খায়। তরুণ মাছ খাদ্য হিসেবে জুপ্লাংকটন কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্ক মাছ জৈব পদার্থ ও মলাস্ক খেতে পছন্দ করে।
জীবনচক্র
[সম্পাদনা]জলাশয়ের তলদেশে বসবাস করে এবং ঐ এলাকার জীব ও কাঁদা-বালি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এছাড়া শৈবাল, প্রোটোজোয়া, ক্রাস্টেসিয়া, শামুক জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করে। অনুকূল পরিবেশে ৩-৪ বছরেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়। বর্ষাকালে প্লাবিত নদীর অগভীর পানিতে কমবেশি দুই লক্ষ ডিম দিয়ে থাকে একেকটি মা মাছ।[৪][৫]
বিস্তৃতি
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান এবং দক্ষিণ-পশ্চিম চীন অঞ্চলে এ মাছ পাওয়া যায়। এটি মিঠা পানির মাছ। সাধারণত নদী, খাল এবং বিলে পাওয়া যায়। তবে পুকুরেও সহজেই চাষ করা যায়।[৬]
প্রজনন
[সম্পাদনা]বর্ষাকালে, বিশেষ করে জুন-জুলাই মাসে এদের প্রজনন ঘটে। ৩৯-৪০ সে.মি. দৈর্ঘ্যের একটি মাছ ১,৯৩,০০০ থেকে ২,৮৮,০০০ ডিম পাড়ে।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব
[সম্পাদনা]কালিবাউশ প্রজাতিটি অর্থনৈতিক ভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে এটি অন্যতম কার্প মাছ হিসেবে বিবেচিত যা রুই, কাতল মাছের সাথে একত্রে চাষ করা যায়। পিটুইটারি হরমোন সমন্বয়ে প্রণোদিত প্রজননের ফলে কৃত্রিম ভাবে খামারে এ মাছের চাষ করা হয়। শীতকালে বাজারে এ মাছ টাটকা অবস্থাতে পাওয়া যায়।
বাস্ততান্ত্রিক ভূমিকা
[সম্পাদনা]এ মাছ জলজ উদ্ভিদ, সাকার শৈবাল, ডায়াটম ইত্যাদি খেয়ে আবাসস্থল পরিষ্কার রাখে এবং একই সাথে পুকুরের আবর্জনা পরিশোধনের ব্যবস্থা ত্বরান্বিত হয়।
বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ
[সম্পাদনা]আইইউসিএন বাংলাদেশ (২০০০) এর লাল তালিকা অনুযায়ী এই প্রজাতিটি বাংলাদেশে বিপন্ন হিসেবে বিবেচিত। এই মাছ ১৯৬০ সালের দিকে সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে হাওড়-বিলে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত।বর্তমানে এদেরকে সহজে পাওয়া যায় তবে খুবই অল্প।[৬][৭]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>ট্যাগ বৈধ নয়;iucnনামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>ট্যাগ বৈধ নয়;col481520নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - 1 2 উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>ট্যাগ বৈধ নয়;col481042নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - 1 2 http://bn.bdfish.org/2009/10/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%89%E0%A6%B8/
- 1 2 http://www.fishbase.org/summary/5151
- 1 2 এ কে আতাউর রহমান, ফারহানা রুমা (অক্টোবর ২০০৯)। "স্বাদুপানির মাছ"। আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; আবু তৈয়ব, আবু আহমদ; হুমায়ুন কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমাদ, মোনাওয়ার (সম্পাদকগণ)। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। খণ্ড ২৩ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃ. ৮১–৮২। আইএসবিএন ৯৮৪-৩০০০০-০২৮৬-০।
{{বই উদ্ধৃতি}}:|আইএসবিন=মান: অবৈধ উপসর্গ পরীক্ষা করুন (সাহায্য) - ↑ roddure.com
- ↑ "Hypophthalmichthys molitrix"। বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2012.2। প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। 2011। সংগ্রহের তারিখ 24/10/2012।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}:|accessdate=এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য); অবৈধ|ref=harv(সাহায্য) - ↑ Talwar, P.K. and A.G. Jhingran (1991) Inland fishes of India and adjacent countries. vol 1., A.A. Balkema, Rotterdam. 541 p.
- ↑ Menon, A.G.K. (1999) Check list - fresh water fishes of India., Rec. Zool. Surv. India, Misc. Publ., Occas. Pap. No. 175, 366 p.