কালাম সূত্র

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কালাম সূত্র ত্রিপিটকের অঙ্গুত্তরনিকায়ের তিক নিপাতে (মহাবগ্‌গো) ৬৬ ন. সূত্র।[১] এটি মহাবর্গের অন্তর্গত কেশপুত্রীয় সূত্র, যা ‘কালাম সূত্র’ নামেই সমধিক পরিচিত।[২] কালাম সূত্রটি যৌক্তিক বিশ্লেষণ নিয়ে আলোচনা করে। কোন বিষয়, সেটা ধর্মের সাথে সম্পর্ক থাকুক বা না থাকুক, সত্য ও জ্ঞান দিয়ে তা বোঝার জন্য রূপরেখা হিসেবে এর ব্যবহার হয়।

প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

গৌতম বুদ্ধ যখন কেশপুত্র গ্রামে অবস্থান করছিলেন, তখন কালাম গোত্রের লোকজন তার শরণাপন্ন হয়। তারা গৌতম বুদ্ধের কাছে কাছে এসে বলেন, বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগুরুগণ বিভিন্ন কথা বলে থাকেন, যা অনেক সময় একটি অপরটির বিপরীত। আবার অনেকে অন্য ধর্মের ধর্মগুরুদের বিরুদ্ধেও কথা বলেন। কার ধর্মদেশনা বা ধর্মোপদেশ গ্রহণ বা বর্জন করা উচিত এবং তা কীভাবে নির্ণয় করা যায়, তার জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে, গৌতম বুদ্ধ এই সূত্রটি দেশনা করেন।

সারাংশ[সম্পাদনা]

কালাম সূত্রে, গৌতম বুদ্ধ কিছু বিষয়ে শোনা মাত্র বিশ্বাস করতে অথবা অন্ধের মত বিশ্বাস করতে বারণ করেছেন, সেগুলো হল

• মৌখিক বিবৃতি বা জনশ্রুতি
• বংশ পরম্পরার প্রচলিত প্রথা
• প্রবাদ
• বই-পুস্তক
• অনুমান
• নিজের কোন মতের সাথে অন্য কারো মতের মিল পেলে
• গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধাবশতঃ কোন কিছু বিশ্বাস

তিনি বলেছেন, এর পরিবর্তে, আপনারা যখন নিজেরাই বুঝতে পারবেন যে এই ধর্মগুলো অকুশল (মন্দ), এইগুলো দোষজনক, এগুলো বিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা নিন্দিত, এগুলো সম্পাদিত ও গৃহীত হলে অহিত ও দুঃখ উৎপন্ন হবে তখন আপনারা এগুলো পরিত্যাগ করবেন।

আর যখন নিজেরাই বুঝতে পারবেন যে, এই ধর্মগুলো কুশল (ভাল), এইগুলো দোষজনক নয়, এগুলো বিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা প্রসংশিত, এগুলো সম্পাদিত ও গৃহীত হলে হিত ও সুখ উৎপন্ন হবে তখন আপনারা এগুলো গ্রহণ করবেন। তাছাড়া তিনি প্রাণীহত্যা করা, চুরি করা, বিবাহ বহির্ভূত যৌনকর্ম, মাদকাচ্ছন্ন, মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকার দেশনা দেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. AN 3.65; PTS: A.i.188; Thai III.66
  2. "Kalama Sutta, The Buddha's Charter of Free Inquiry" by Soma Thera

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]