কার্ল বের্নহার্ড জ্যোপ্রিৎস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(কার্ল বের্নহার্ড জ্যোপ্রিৎজ থেকে পুনর্নির্দেশিত)
কার্ল বের্নহার্ড জ্যোপ্রিৎস
জন্ম(১৮৮১-১০-২২)২২ অক্টোবর ১৮৮১
হাইডেনহাইম আন ডের ব্রেনৎস, বাডেন-ভুর্টেমবের্গ, জার্মানি
মৃত্যু২০ জুলাই ১৯০৮(1908-07-20) (বয়স ২৬)
সমাধিফ্রাইবুর্গ, বাডেন-ভুর্টেমবের্গ, জার্মানি
জাতীয়তাজার্মান
মাতৃশিক্ষায়তনমিউনিখ লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, ফ্রাইবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণজ্যোপ্রিৎস সমীকরণ
পিতা-মাতাঅটো ষ্টেফান ফ্রিডরিখ জ্যোপ্রিৎস মারিয়ে মারিয়া ভিলহেলমিন জ্যোপ্রিৎস
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রভূ-পদার্থবিদ্যা
প্রতিষ্ঠানসমূহগটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়

কার্ল বের্নহার্ড জ্যোপ্রিৎস (২২ অক্টোবর ১৮৮১ - ২০ জুলাই ১৯০৮)[১] একজন জার্মান ভূপদার্থবিদ ছিলেন যিনি ভূকম্পবিজ্ঞানে অবদান রেখেছেন। তিনি বিশেষত জ্যোপ্রিৎস সমীকরণ গঠনের ক্ষেত্রে অবদান রেখেছিলেন।

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

জ্যোপ্রিৎস ১৮৮১ সালের ২২ অক্টোবর জার্মানির বাডেন-ভুর্টেমবের্গে[১] হেইডেনহিম আন দের ব্রেঞ্জের কয়েক মাইল দক্ষিণে একটি ছোট্ট গ্রাম, মেরৎসেলষ্টেটেনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাব্র নাম অটো ষ্টেফান ফ্রিডরিখ জ্যোপ্রিৎস এবং মায়ের নাম মারিয়ে মারিয়া ভিলহেলমিন জ্যোপ্রিৎস।[১] তিনি মিউনিখ লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফ্রাইবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এবং ভূতত্ত্ব অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৯০৫ সালে ফ্রাইবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সুইস আল্পসের অংশবিজ্ঞানের উপর ডক্টরাল গবেষণার মাধ্যমে তার পড়াশোনা শেষ করেন।[২] তার ডক্টরেট শেষ হওয়ার পরে, ১৯০৬ সালের গ্রীষ্মে কার্লসরুহে, তিনি ওবারলেরারএগজামেন নামক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর অনুমতি পান।

ভূ-পদার্থবিদ্যায় অবদান[সম্পাদনা]

জ্যোপ্রিৎস ভূতত্ত্বের ক্ষেত্রে পদার্থবিজ্ঞানের প্রয়োগে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তবে ভূ-পদার্থবিদ্যার ক্ষেত্রটি তখন নতুন ছিল। জার্মানিতে একমাত্র জায়গা যেখানে বিশেষভাবে ভূ-পদার্থবিদ্যা অধ্যয়ন করার সুযোগ ছিল তা হলো গটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাবশালী বিজ্ঞানী এমিল ওয়াইখার্টের গবেষণা গোষ্ঠীর সহকারী হিসাবে।

১৯০৫ সালের কংরা ভূমিকম্প, ১৯০৫ সালের ক্যালাব্রিয়া ভূমিকম্প এবং ১৯০৬ সালের সান ফ্রান্সিসকো ভূমিকম্প সহ ওয়াইখার্টের তাত্ত্বিক গবেষণা এবং ভূমিকম্পের তথ্য ব্যবহার করে, জ্যোপ্রিৎসের সবচেয়ে প্রাথমিক অবদান ছিল ভ্রমণ-সময়ের বক্ররেখা নির্মাণ। তিনি প্রথমবারের জন্য শনাক্ত করে যে শারীরী তরঙ্গ প্রতিফলিত হয় এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।[৩] এই বক্ররেখাগুলো পরে গবেষণা দলের অন্যান্য সদস্য যেমন, লুডভিগ কার্ল গেইগার এবং বেনো গুটেনবার্গসহ[৪] ব্রিটিশ জ্যোতির্বিদ এবং ভূকম্পবিদ হারবার্ট হল টার্নার আন্তর্জাতিক ভূকম্পবিজ্ঞান সারাংশে (International Seismological Summary) ব্যবহার করেছিলেন।[৫] ভূত্বক এবং ম্যান্টলের স্তরগুলো উপস্থাপন করে একটি পৃথক বেগ বিতরণকে অনুমান করা সম্পর্কিত সমস্যাটি তার সহকর্মী গণিতবিদ গুস্তভ হার্গ্লোটজ সমাধান করেছিলেন।

জ্যোপ্রিৎস ওয়াইখার্টের গবেষণা ব্যবহার করেছিলেন এবং বিচ্ছিন্নতার কাছে পৌঁছানো বিমানের তরঙ্গের প্রেরণ এবং প্রতিফলন সহগের একটি সম্পূর্ণ সেট বের করেছিলেন। জ্যোপ্রিৎস এই ঘটনাকে গাণিতিকভাবে বর্ণনা করার জন্য প্রথম বিজ্ঞানী নন যেহেতু ব্রিটিশ ভূকম্পবিদ কার্গিল গিলস্টন নট ১৮৯৯ সালে নটের সমীকরণ সমাধানের জন্য ভিন্ন পদ্ধতির ব্যবহার করেছিলেন।[৬] তবে ১৯২০ সালে জার্মানিতে এটি অজানা ছিল। জ্যোপ্রিৎস যে সমীকরণ বের করেছেন সেই সমীকরণের নাম এখন তার (জ্যোপ্রিৎস সমীকরণ) নামে নামকরণ করা হয়েছে। এই সমীকরণ হাইড্রোকার্বন এক্সপ্লোরেশন, প্রতিফলন ভূকম্পবিজ্ঞানসহ বিভিন্ন কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৯০৮ সালের গ্রীষ্মে ২৬ বছর বয়সে, জ্যোপ্রিৎস বেশ কয়েক মাস ধরে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে জার্মানির নিডারজাখসেনের গটিঙেনে[১] মারা যান।[৭] তাকে জার্মানির বাডেন-ভুর্টেমবের্গের ফ্রাইবুর্গে কবর দেওয়া হয়।[১] তিনি তার সকল কাজ গটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র দু'বছরেই সম্পাদন করেছিলেন। তবে মৃত্যুর সময় তার বেশিরভাগ কাজ অপ্রকাশিত ছিল। ওয়াইখার্ট, গেইগার ও গুটেনবার্গ তার বেশিরভাগ অপ্রকাশিত লেখা সংশোধন ও প্রকাশিত করেছিল। তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান জ্যোপ্রিৎস সমীকরণ ১৯১৯ সালের আগ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি।[৮]

২০০২ সালে, জার্মান জিওফিজিক্যাল সোসাইটি (ডিজিজি) মেধাবী তরুণ ভূপদার্থবিদদের জ্যোপ্রিৎস পুরস্কার প্রদান শুরু করে।[৯]

২০১১ সালে ব্রিসবেন কোল জিওফিজিসিস্টস ড্রিঙ্কিং সোসাইটি ২০ শে জুলাইয়ে জ্যোপ্রিৎসের অবদান উদ্‌যাপন করার জন্য একটি বার্ষিক অনুষ্ঠান করেছে বলে জানা গেছে। ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ান সোসাইটি অফ এক্সপ্লোরেশন জিওফিজিক্স কুইন্সল্যান্ড শাখা তার মাসিক নিউজ লেটারে জ্যোপ্রিৎসের তত্ত্বকে উদ্‌যাপন করার ঘোষণা করেছিল।[১০]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Dr. Karl Zoeppritz"geni_family_tree। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৪ 
  2. Zoeppritz, Karl (1906). Geologische Untersuchungen im Oberengadin zwischen Albulapass und Livigno (Geological investigations in the Oberengadin between Albulapass and Livigno). Inaugural-Dissertation (PhD thesis), Albert-Ludwigs-Universität, Freiburg, 68 pp.
  3. Zoeppritz, Karl (1907). Über Erdbebenwellen II. Laufzeitkurven. Nachrichten von der Königlichen Gesellschaft der Wissenschaften zu Göttingen, Mathematisch-physikalische Klasse, 529-549.
  4. Zoeppritz, Karl, Ludwig Geiger & Beno Gutenberg (1912). Über Erdbebenwellen V. Konstitution des Erdinnern, erschlossen aus dem Bodenverrückungsverhältnis der einmal reflektierten zu den direkten longitudinalen Erdbebenwellen, und einige andere Beobachtungen über Erdbebenwellen. Nachrichten Königlichen Gesellschaft der Wissenschaften zu Göttingen, Mathematisch-physikalische Klasse, 121-206.
  5. Ritter, J.; Schweitzer, J.। "10 Karl Zoeppritz (1881 – 1908), German National Report" (পিডিএফ)। ১৯ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১২ 
  6. Sheriff, R. E., Geldart, L. P., (1995), 2nd Edition. Exploration Seismology. Cambridge University Press.
  7. Kertz, W (2002). Biographisches Lexikon zur Geschichte der Geophysik. Edited by K-H Glaflmeier & R Kertz. Braunschweigische Wissenschaftliche Gesellschaft, Braunschweig 2002, 384 pp.
  8. Zoeppritz, Karl (1919). Erdbebenwellen VII. VIIb. Über Reflexion und Durchgang seismischer Wellen durch Unstetigkeitsflächen. Nachrichten von der Königlichen Gesellschaft der Wissenschaften zu Göttingen, Mathematisch-physikalische Klasse, 66-84.
  9. The Karl Zoeppritz Prize, including a short biography in German ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১১-০৮-০৭ তারিখে
  10. PeoplePill। "About Karl Bernhard Zoeppritz: German geophysicist (1881 - 1908) | Biography, Facts, Career, Wiki, Life"PeoplePill (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৪ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]