কামাল আতাতুর্ক স্মৃতিসৌধ, ক্যানবেরা
![]() ক্যানবেরায় অবস্থিত কামাল আতাতুর্ক স্মৃতিসৌধ | |
স্থানাঙ্ক | ৩৫°১৬′৫৯″ দক্ষিণ ১৪৯°০৮′৫৩″ পূর্ব / ৩৫.২৮৩° দক্ষিণ ১৪৯.১৪৮° পূর্ব |
---|---|
অবস্থান | ক্যানবেরা, অস্ট্রেলিয়া |
নকশাকারক | পিডিসিএম প্রাইভেট লিমিটেড |
উপাদান | গ্রানাইট |
সম্পূর্ণতা তারিখ | ১৯৮৫ |
কামাল আতাতুর্ক স্মৃতিসৌধ হলো অস্ট্রেলীয় যুদ্ধ স্মারক আনজাক প্যারেডের বিপরীতে অবস্থিত একটি স্মারক, যা অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরার প্রধান স্মৃতিসৌধ ও আনুষ্ঠানিক প্যারেডের স্থান।
এর নামকরণ করা হয়েছে মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের (১৮৮১-১৯৩৮) নামানুসারে যিনি একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসাবে ১৯১৫ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় গ্যালিপলি উপদ্বীপের আরি বুরনুতে অস্ট্রেলীয় ও নিউজিল্যান্ড সৈন্যদল (আনজাক) কে প্রতিরোধ করার সময় উসমানীয় ১৯ তম পদাতিক বিভাগের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা ও এর প্রথম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন এবং তুর্কি সংসদ কর্তৃক সম্মানিত আতাতুর্ক ("তুর্কিদের পিতা") উপাধি লাভ করেন।
১৯৮৫ সালে গ্যালিপোলি অভিযানের সত্তর বছর পরে, তুর্কি সরকার উপদ্বীপের সেই জায়গাটির জন্য "আনজাক কোভ" নামটিকে স্বীকৃতি দেয় যেখানে অস্ট্রেলীয় ও নিউজিল্যান্ডের সৈন্যরা ২৫ এপ্রিল ১৯১৫ তারিখে অবতরণ করেছিলো।
এই কাজের বিনিময়ে অস্ট্রেলীয় সরকার কামাল আতাতুর্ক স্মৃতিসৌধের চারপাশে একটি স্মৃতি উদ্যান প্রতিষ্ঠা করে, যা তুর্কি ও আনজাক সৈন্যদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগকে সম্মান করে যারা সেই তিক্ত লড়াইয়ের অভিযানে অংশ নিয়েছিলো। এটি আনজাক প্যারেডে শত্রু কমান্ডারের একমাত্র স্মারক।
নকশা[সম্পাদনা]
স্মৃতিসৌধটি একটি বৃত্তাকার পাকা জায়গায় একটি অর্ধচন্দ্রাকার দেয়াল নিয়ে গঠিত। প্রাচীরের রূপটি তুর্কি পতাকার অর্ধচন্দ্র ও পাঁচ লেজের তারকাকে প্রতিফলিত করে।[১] স্মৃতিসৌধের কেন্দ্রে গ্যালিপলির যুদ্ধক্ষেত্রের মাটি ধারণকারী একটি টাইম ক্যাপসুল রয়েছে। এটি মূলত স্থাপত্য প্রকৌশল ফার্ম পিডিসিএম দ্বারা নকশা করা হয়েছিলো।
প্রাচীরের কেন্দ্রস্থলে আতাতুর্কের একটি ব্রোঞ্জ প্রতিমূর্তি আছে। এটি তুর্কি ভাস্কর হুইসেন গেজেরের তৈরি তুর্কি সরকারের একটি উপহার।[১] আতাতুর্ককে উৎসর্গ করা শিলালিপিটি তার প্রাক্তন শত্রুদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় ও যুদ্ধের খরচ সম্পর্কে তার উপলব্ধির প্রতিফলন করে:
"যে বীররা নিজেদের রক্ত ঝরিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন... আপনারা এখন বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মাটিতে শুয়ে আছেন। অতএব, শান্তিতে বিশ্রাম করুন। আমাদের দেশে জনি ও মেহমেতের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই যেখানে তারা পাশাপাশি বসে আছে।... তোমরা মায়েরা যারা তাদের ছেলেদের দূর দেশ থেকে পাঠিয়েছো নিজেদের চোখের পানি মুছে নাও। তোমাদের ছেলেরা এখন আমাদের বুকে শুয়ে শান্তিতে আছে। এই মাটিতে প্রাণ হারানোর পর তারাও আমাদের সন্তান হয়েছে।”[২]
উক্তিটি তুরস্কে মারা যাওয়া সমস্ত প্রাক্তন শত্রু সৈন্যদের সম্মান জানায়।
শব্দগুলো আতাতুর্কের কিনা তা নিয়ে অবশ্য কিছুটা সন্দেহ আছে।[৩]
স্মৃতিসৌধের চারপাশে পাইন গাছ রয়েছে যা গ্যালিপলি এলাকার "লোন পাইন" থেকে সংগ্রহ করা বীজ থেকে জন্মায়।
সংস্কার[সম্পাদনা]
স্মৃতিসৌধটি ২০০৭ সালে সংস্কার করা হয়েছিলো ও আনজাক দিবসের (২৫ এপ্রিল) জন্য সময়মতো পুনরায় উৎসর্গ করা হয়েছিলো। তুরস্কের পতাকায় ব্যবহৃত বৃহত্তর পাঁচ লেজের তারার মোটিফ অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ফুটপাথটি পরিবর্তন করা হয়েছিলো, যাতে অর্ধচন্দ্রের আকারে বিদ্যমান প্রাচীরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। তারার বিন্দুতে কেন্দ্রীয় ভাস্কর্যের জন্য ব্যবহৃত গ্রানাইটের সাথে মেলে পাঁচটি গোলাপী রঙের গ্রানাইট দিয়ে তৈরি কলাম। রাতে কলামগুলো আলোকিত হয়। পতাকাগুলো পাশ থেকে স্মৃতিসৌধের সামনের দিকে সরানো হয়েছে। স্মৃতিসৌধটির নকশা করেছে পিডিসিএম প্রাইভেট লিমিটেড।
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ "Anzac Parade Walking Tour Podcast - Kemal Ataturk Memorial"। Australian Government - National Capital Authority। ২০১৪-১২-২২। ১৮ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১০-১৫।
- ↑ "Atatürk (Mustafa Kemal)"। Australian War Memorial। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১০-১৫।
- ↑ Daley, Paul (২০ এপ্রিল ২০১৫)। "Ataturk's 'Johnnies and Mehmets' words about the Anzacs are shrouded in doubt" – www.theguardian.com-এর মাধ্যমে।