কাটোয়ার যুদ্ধ (১৭৬৩)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কাটোয়ার তৃতীয় যুদ্ধ
মূল যুদ্ধ: সপ্তবর্ষের যুদ্ধ
তারিখ৪ শ্রাবন ১১৭০ (১৯ জুলাই ১৭৬৩ খ্রিঃ)
অবস্থান
ফলাফল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিজয়;[১] মুহাম্মাদ টাকি খানের মৃত্যু
বিবাদমান পক্ষ

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি

বাংলা

সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী

  • মেজর টমাস এডামস
  • গোর্গিন খান
  • মুহাম্মাদ টাকি খান
  • শক্তি

    ৫,০০০ আনুমানিক

    • ১,০০০ ইউরোপীয়
    • ৪,০০০ ভারতীয় সিপাহী
    অজ্ঞাত
    হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
    অজ্ঞাত অজ্ঞাত

    কাটোয়ার তৃতীয় যুদ্ধ ১৭৬৩ সালে বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কাটোয়ায় বাংলার নবাব মীর কাশিম এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে সংঘটিত হয়। যুদ্ধে মীর কাশিমের সৈন্যবাহিনী পরাজয় বরণ করে[১]

    পটভূমি[সম্পাদনা]

    নবাব মীর কাসিমের প্রশাসনে অসন্তুষ্টির কারণে ইংরেজরা তাকে প্রত্যায়ন করে, তার স্বশুর মীর জাফরকে মুর্শিদাবাদের সিংহাসনে নবাব হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে। ২৩ আষাঢ় ১১৭০ (৭ জুলাই ১৭৬৩ খ্রিঃ) মীর কাসিমের বিরুদ্ধে ইংরেজরা যুদ্ধ ঘোষণা করে। মেজর টমাস এডামসের নেতৃত্বে, ইংরেজ সেনাবাহিনীর মোট সৈনবল ছিল ৩,০০০ থেকে ৫,০০০ সৈন, যার মধ্যে ১,০০০ সৈনিক ছিল ইউরোপীয়।[২][৩] মীর কাসেমের মোট সৈনবল ছিল প্রায় ২৫,০০০, আর্মেনীয় সেনাপতি গোর্গিন খানের নেতৃত্বে।[৩][৪] যদিও নবাবের সৈনবাহিনী সংখ্যায় বেশি ছিল, তারা অপ্রস্তুত এবং অভ্যন্তরীণ শত্রুতায় অত্যন্ত বিখন্ডিত ছিল।[৩] বীরভূমের সুদক্ষ ফৌজদার মুহাম্মদ টাকি খানের নেতৃত্বধীন, মীর কাসিমের একটি সৈন্য বিভাগ কাটোয়ায় ইংরেজদের বিরোধী দেয়।[৫]

    যুদ্ধের ঘটনাবলি[সম্পাদনা]

    ২ শ্রাবন ১১৭০ (১৭ জুলাই, ১৭৬৩ খ্রিঃ) মেদিনীপুর ও বর্ধমান জেলার বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্ট থেকে অভিযান করে ইংরেজ বাহিনী কাটোয়া থেকে ১৪ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত অগ্রদ্বীপ গ্রামে ঘাঁটি করে। সেখানে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত নবাব মীর জাফরের সঙ্গে তাদের সংযোগিতা হয়। ইতিমধ্যে, মীর কাসিমের সৈন্যবাহিনী কাটোয়ার ২০ কি.মি. উত্তরে, পলাশীতে ঘাঁটি তৈরী করে। সেই সকালেই একটি নবাবী অশ্বারোহী দল, ইংরেজি লিউটেনান্ট গ্লেনের নেতৃত্বধীন একটি অগ্রদ্বীপ গমনরত সরবরাহ রক্ষক বাহিনীর ওপর হামলা করে। ৪ ঘণ্টা ধরে তুমুল যুদ্ধ চলে এবং সম্পদ তিন বার হাত পরিবর্তন করে। পরিশেষে, উভয় পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর, নবাবী বাহিনী প্রতিসরণ করে এবং লিউটেনান্ট গ্লেন সুবিধা বুঝে কাটোয়ার কেল্লায় আক্রমণ করে। কাটোয়ায় নবাবী সৈন্যরা সামান্য প্রতিরোধের পর কেল্লা সমর্পণ করে।[৫]

    ইতিমধ্যে, মুহাম্মদ টাকি খান তার পুরো সৈন্যবাহিনী সহ কাটোয়া অগ্রসর হন; এবং ৪ই শ্রাবন ১১৭০ (১৯ জুলাই, ১৭৬৩) সকালে, মেজর এডামস তাকে আক্রমণ করে। পরবর্তী লাড়াইটির বর্ণনা লেখা হয়েছে "সমগ্র যুদ্ধের সবচেয়ে রক্তাক্ত এবং সর্বোত্তম প্রতিদ্বন্দ্বিতার" লড়াই হিসেবে।[৫] পরিণামে, ইংরেজরা মুহাম্মদ টাকি খানকে অতর্কিতে আক্রমণ করে হত্যা করে এবং নবাবী সৈন্যরা পরাজয় বরণ করে।

    ফলাফল[সম্পাদনা]

    মুহাম্মাদ টাকি খানের মৃত্যুতে মীর কাসিম তার সবচেয়ে দক্ষ অধিনায়কদের মধ্যে একজনকে হারান।

    আরো দেখুন[সম্পাদনা]

    তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

    1. ড. মুহম্মদ আব্দুর রহিম, (বাংলাদেশের ইতিহাস), মীর কাসিম, পৃ. ৩১৪-৩১৫
    2. Paul, Gautam. "Murshidabad History - Mir Qasim" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ আগস্ট ২০১৬ তারিখে. murshidabad.net. Retrieved 2018-02-19.
    3. Arbuthnot, Alexander John. Adams, Thomas (1730?-1764), Dictionary of National Biography, 1885-1900, Volume 01.
    4. "History Of Armenia — Painting: An officer, probably Gurgin Khan, the..."। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০৪ 
    5. Malleson, George Bruce (১৮৮৫)। The Decisive Battles of India, from 1746 to 1849 Inclusive (ইংরেজি ভাষায়)। Allen।