কলকাতা দক্ষিণ পূর্ব লোকসভা কেন্দ্র
| অস্তিত্ব | ১৯৫১ |
|---|---|
| সংরক্ষণ | না |
| রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
| মোট ভোটদাতা | ৩৮১,৪৮৬ |
কলকাতা দক্ষিণ পূর্ব (ইংরেজি: Calcutta South East) ছিল পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরের অন্তর্গত একটি লোকসভা কেন্দ্র। ১৯৫১-৫২ সালের সংসদীয় নির্বাচন ও ১৯৫৩ সালের উপনির্বাচনে এই কেন্দ্রটি সক্রিয় ছিল।[১][২] এই লোকসভা কেন্দ্র থেকে লোকসভার একক সদস্য নির্বাচিত হতেন।[৩] ১৯৫২ সালের হিসেব অনুযায়ী, এই কেন্দ্রের মোট যোগ্যতাসম্পন্ন ভোটদাতার সংখ্যা ছিল ৩৮১,৪৮৬ জন।[৩]
রাজনৈতিক গুরুত্ব[সম্পাদনা]
সেই যুগে দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতাকে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক জীবনচিত্রের জন্য পরিচিত এই শহরের স্নায়ুকেন্দ্র মনে করা হত।[৪] কলকাতা দক্ষিণ পূর্ব লোকসভা আসনের অধিকাংশ ভোটদাতা ছিলেন মধ্যবিত্ত শ্রেণির।[৪] ১৯৫২ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রের অন্তর্গত অধিকাংশ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থীরা জয়লাভ করলেও, মূল লোকসভা কেন্দ্রটি ছিল রাজনৈতিক বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ।[৪] এই লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন ভারতীয় জন সংঘ দলের এবং সেই সঙ্গে এই কেন্দ্রে কমিউনিস্টদের উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয় (এই অঞ্চল থেকে দুই জন কমিউনিস্ট বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন)।[৪] এখান থেকেই শরৎচন্দ্র বসু (নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অগ্রজ) এক কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছিলেন।[৪]
১৯৫২ সালের নির্বাচন[সম্পাদনা]
ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের পর প্রথম নির্বাচনে কলকাতা দক্ষিণ পূর্ব থেকে চার জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন: ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মৃগাঙ্কমোহন সুর, ভারতীয় জন সংঘের ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাধন গুপ্ত ও ফরওয়ার্ড ব্লক-ন্যাশনাল সিন্থেসিসের সত্যরঞ্জন বক্সি।[৫][৬] ১৯৫২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এই কলকাতা দক্ষিণ পূর্ব কেন্দ্রের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হয়।[৬] ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ৬৫,০২৬টি ভোট (৪৪.৯৭ শতাংশ) ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন; মৃগাঙ্কমোহন সুর পান ৪৪,০৪৪টি ভোট (৩০.৪৬ শতাংশ), সাধন গুপ্ত পান ৩২,১৬৮টি ভোট (২২.২৪ শতাংশ) এবং সত্যরঞ্জন বক্সি পান ৩,৩৭৬টি ভোট (২.৩৩ শতাংশ)।[৫]
১৯৫৩ সালের উপনির্বাচন[সম্পাদনা]
১৯৫৩ সালের জুন মাসে কাশ্মীর সংঘর্ষ প্রসঙ্গে দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী কট্টরপন্থী ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কাশ্মীরে প্রবেশের চেষ্টা করে আটক হন।[৭] অবরুদ্ধ অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু ঘটে।[৭] তাঁর মৃত্যুতে আসনটি খালি হওয়ায় একটি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।[৮] ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুকে ঘিরে সৃষ্টি হওয়া নাটকীয় পরিস্থিতি এবং কলকাতার রাজনীতির জটিল চরিত্রের (কেন্দ্রটি কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত হলেও সেখান থেকে একজন ভারতীয় জন সংঘ সাংসদ এবং সেই সঙ্গে এই এলাকা থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় কমিউনিস্ট বিধায়কেরাও নির্বাচিত হয়েছিলেন) জন্য এই উপনির্বাচনটি জাতীয় রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।[৪][৭]
উপনির্বাচনে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাধন গুপ্ত ৫৮,২১১টি ভোট (৫৮.২১ শতাংশ) পেয়ে জয়লাভ করেন এবং কংগ্রেসের রাধাবিনোদ পাল ৩৬,৩১৯টি (৩৬.৩১ শতাংশ) ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন; ভারতীয় জন সংঘের জে. পি. মিত্র ৫,৪৩১টি (৫.৪৩ শতাংশ) এবং ফরওয়ার্ড ব্লক (মার্ক্সবাদী গোষ্ঠী)-র ভূপাল বসু ৫,৪১৫টি ভোট (৫.৪১ শতাংশ) পান।[২][৯]
১৯৫৭ সালের সংসদীয় নির্বাচনের পূর্বে কলকাতা দক্ষিণ পূর্ব কেন্দ্রটি অবলুপ্ত হয়।[১] সদ্যগঠিত কলকাতা পূর্ব লোকসভা কেন্দ্র থেকে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাধন গুপ্ত জয়লাভ করেছিলেন।[১][১০]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ David Butler; Ashok Lahiri; Prannoy Roy (১৯৯১)। India Decides: Elections 1952–1991। Living Media India। পৃষ্ঠা 358–359।
- ↑ ক খ Election Commission of India. Bye-election results 1952–95
- ↑ ক খ Election Commission of India. CONSTITUENCY DATA – SUMMARY
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ The Economic Weekly. South-east Calcutta
- ↑ ক খ Election Commission of India. STATISTICAL REPORT ON GENERAL ELECTIONS, 1951 TO THE FIRST LOK SABHA ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৪-১০-০৮ তারিখে
- ↑ ক খ S. C. Das (১ জানুয়ারি ২০০০)। Bharat Kesri Dr. Syama Prasad Mookerjee with Modern Implications। Abhinav Publications। পৃষ্ঠা 166–167। আইএসবিএন 978-81-7017-387-8।
- ↑ ক খ গ Nariaki Nakazato (২৭ এপ্রিল ২০১৬)। Neonationalist Mythology in Postwar Japan: Pal's Dissenting Judgment at the Tokyo War Crimes Tribunal। Rowman & Littlefield। পৃষ্ঠা 107–108। আইএসবিএন 978-1-4985-2836-8।
- ↑ The Hindu. Veteran Leftist Sadhan Gupta passes away
- ↑ Ramananda Chatterjee (জুলাই ১৯৫৩)। The Modern Review। 94। Prabasi Press Private, Limited। পৃষ্ঠা 421।
- ↑ The Statesman. Veteran Communist Sadhan Gupta dies ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ অক্টোবর ২০২১ তারিখে
