করিম উদ্দিন আহমেদ
করিম উদ্দিন আহমেদ ছিলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি লালমনিরহাট-২ আসন থেকে ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে পকিস্তান প্রাদেশিক সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর একই আসন থেকে ১৯৭৩-এর নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১]
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]
করিম উদ্দিন আহমেদ লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাশীরাম গ্রামে ১৯২৩ সালের ১৯শে মার্চ জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পিতা ছিলেন মৌলভী আজিম উদ্দিন আহমদ এবং মা নেছাবি বেওয়া। তার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় মদনপুর বৈরাতীর নিলাম্বর পন্ডিতের পাঠশালায় পরবর্তীতে গঙ্গাচড়ার চিলাখাল পাইকান মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেন। এরপর ভর্তি হন তুষভান্ডার উচ্চ বিদ্যালয়ে যেখানে তিনি দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন।[২]
মাড়োয়ারীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দিয়ে ১৯৪৫ সালে কর্মজীবন শুরু করলেও পরবর্তীতে নিজেই পাট ও তামাক ব্যবসায় যুক্ত হন।[২]
সমাজসেবা[সম্পাদনা]
করিম উদ্দিন আহমেদ তার জীবদ্দশায় কালীগঞ্জ উপজেলায় বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক ডিগ্রী কলেজ, করিম উদ্দিন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও করিমপুর নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসা। এছাড়াও তিনি সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশেও ভূমিকা পালন করেন।[২]
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান[সম্পাদনা]
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে করিম উদ্দিন আহমেদ কালীগঞ্জ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং কালীগঞ্জে মুক্তিবাহিনী গঠনে ভূমিকা পালন করেন।[২] তার বাড়িতে মুক্তিবাহিনীর কার্যালয় স্থাপন করে স্থানীয় যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। কালীগঞ্জ মাঠে আয়োজিত জনসভায় তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। পাকিস্তানি বাহিনী কালীগঞ্জ দখল করার পর তিনি ভারতের কোচবিহারে চলে যান এবং সেখানে মুক্তিবাহিনীর দুটি ক্যাম্প স্থাপন করেন। এসময় তিনি উত্তরাঞ্চলীয় মুক্তিবাহিনীর সংগঠক হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতে দায়িত্ব পালন করেন।
রাজনীতি[সম্পাদনা]
ব্রিটিশ বিরোধী ভারত ছাড় আন্দোলনে মুকুন্দ দাসের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করার সময় করিম উদ্দিন আহমেদ গ্রেফতার হন।[২] ১৯৫৪ সালে ইউনিয়ন বোর্ডে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। টানা ১৬ বছর ইউনিয়ন বোর্ডের দায়িত্ব পালন করেন। লালমনিরহাট-২ আসন থেকে ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে পকিস্তান প্রাদেশিক সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর একই আসন থেকে ১৯৭৩-এর নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
মৃত্যু[সম্পাদনা]
করিম উদ্দিন আহমেদ ১৯৯১ সালের ২৮ আগস্ট ৬৮ বছর বয়সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[২]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ jugantor.com। "প্রার্থী নিয়ে স্বস্তিতে জাতীয় পার্টি, আ'লীগ চায় ধরে রাখতে - রাজনীতি - Jugantor"।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ http://kaliganj.lalmonirhat.gov.bd/site/page/8c651a27-18fd-11e7-9461-286ed488c766/%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AC%20%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AE%20%E0%A6%89%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%A8%20%E0%A6%86%E0%A6%B9%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A6