বিষয়বস্তুতে চলুন

কবুতরের খোপ নীতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
খোপে কবুতর। এখানে m = ৯ টি খোপে n = ১০ টি কবুতর রয়েছে। ১০ যেহেতু ৯ এর চেয়ে বড়, তাই কবুতরের খোপ নীতি বলে যে, কমপক্ষে একটি খোপে একাধিক কবুতর রয়েছে। (উপরের বাম খোপে ২টি কবুতর রয়েছে।)

কবুতরের খোপ নীতি বা পিজনহোল নীতি হলো বিচ্ছিন্ন গণিতের একটি নীতি। এই নীতি অনুযায়ী যদি m সংখ্যক বাক্সে n সংখ্যক জিনিস রাখা হয়, যেখানে n>m, তাহলে কমপক্ষে একটি বাক্সে অবশ্যই একের অধিক জিনিস থাকবে।[] উদাহরণস্বরূপ, তিনটি অবিপরীতযোগ্য হাতমোজার মধ্যে অবশ্যই দুইটি ডান হাতের অথবা অবশ্যই দুইটি বাম হাতের হবে; কারণ এখানে যদিও তিনটি জিনিস রয়েছে কিন্তু হাতমোজার কেবল দুইটি ধরণই বিদ্যমান এবং এদেরকে এই দুইটি ধরণের মধ্যেই বিন্যস্ত করতে হবে। এটি আপাতদৃষ্টিতে খুবই সাধারণ গণনা যুক্তি মনে হতে পারে কিন্তু এটি অনেক ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিত ফলাফল দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ- ধরা যাক বলা আছে যে, একজন মানুষের মাথায় চুলের সংখ্যার চেয়ে এক একক বা তার বেশি সংখ্যক মানুষ হলো ঢাকার জনসংখ্যা। কবুতরের খোপ নীতি অনুযায়ী, অবশ্যই ঢাকাতে কমপক্ষে এমন দুইজন মানুষ থাকবে যাদের মাথায় চুলের সংখ্যা সমান।

১৬২৪ সালে জিন লিউরেচন রচিত একটি বইয়ে সর্বপ্রথম কবুতরের খোপ নীতির উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু ১৮৩৪ সালে পিটার গুস্তাভ লেজেউন ডিরিচলেট কর্তৃক এই নীতির সংশোধনের পর এটি ডিরিচলেট বাক্স নীতি বা ডিরিচলেট ড্রয়ার নীতি নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। কেননা ডিরিচলেট Schubfachprinzip শব্দটি ব্যবহার করেছিল যার অর্থ হচ্ছে "ড্রয়ার নীতি" বা "শেলফ নীতি"।[][]

নীতিটির বেশ কয়েকটি সাধারণীকৃত রুপ রয়েছে এবং বিভিন্ন উপায়ে এটি বর্ণনা করা যেতে পারে। গাণিতিকভাবে: সকল স্বাভাবিক সংখ্যা k এবং m এর জন্য, যদি n = km + 1 বস্তুগুলি m সেটের মধ্যে বিতরণ করা হয়, তবে কবুতরের খোপ নীতি অনুযায়ী সেটগুলির মধ্যে অন্তত একটিতে কমপক্ষে k + 1 বস্তু থাকবে। [] যেকোনো n এবং m জন্য, এটি সাধারণীকৃত রূপ হচ্ছে-

যেখানে এবং যথাক্রমে মেঝে এবং ছাদ ফাংশন নির্দেশ করে।

যদিও নীতিটির সবচেয়ে সরল প্রয়োগ হলো সসীম সেটে (যেমন কবুতর এবং বাক্স), তবুও এটি অসীম সেটেও ব্যবহৃত হয় যেখানে এক-এক মিল নেই। সিগেলের লেমার মতো উচ্চতর গাণিতিক প্রমাণগুলি এই নীতির সাধারণ ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Herstein 1964
  2. Rittaud, Benoît; Heeffer, Albrecht (২০১৪)। "The pigeonhole principle, two centuries before Dirichlet": 27–29। এমআর 3207654ডিওআই:10.1007/s00283-013-9389-1  |hdl-সংগ্রহ= এর |hdl= প্রয়োজন (সাহায্য)
  3. Jeff Miller, Peter Flor, Gunnar Berg, and Julio González Cabillón. "Pigeonhole principle". In Jeff Miller (ed.) Earliest Known Uses of Some of the Words of Mathematics. Electronic document, retrieved November 11, 2006
  4. Fletcher ও Patty 1987