ওয়াল্টার রিড (চিকিৎসাবিজ্ঞানী)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ওয়াল্টার রিড
ওয়াল্টার রিড
জন্ম১৩ সেপ্টেম্বর ১৮৫১
গ্লুচেস্টার কাউন্টি, ভার্জিনিয়া, যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যু২২ নভেম্বর ১৯০২ (৫১ বছর বয়স)
ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র
সমাধি
(Section 3, Lot 1864 Grid T/U-16.5 - আর্লিংটন জাতীয় কবরস্থান)
আনুগত্য যুক্তরাষ্ট্র
সেবা/শাখা মার্কিন সেনাবাহিনী
কার্যকাল1876–1902
পদমর্যাদাMajor
মাতৃশিক্ষায়তনভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়
দাম্পত্য সঙ্গীএমিলি লরেন্স (বি.১৮৭৬)
সন্তানওয়াল্টার লরেন্স রিড
এমিলি রিড
সুসি রিড

মেজর ওয়াল্টার রিড, এমডি (১৩ সেপ্টেম্বর ১৮৫১-২২ নভেম্বর ১৯০২) যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একজন চিকিৎসক ছিলেন। কিউবান চিকিৎসক কার্লোস ফিনলে বলেন, পীতজ্বর প্রকৃতপক্ষে প্রত্যক্ষ সংস্পর্শ নয়, বরং মশার একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির দ্বারা সংক্রমিত হয়। ওয়াল্টার রিডের নেতৃত্বে একটি গবেষণা দল এই তত্ত্ব প্রমাণ করে। রোগ বিস্তার বিদ্যাজীবচিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। পীতজ্বর সংক্রমণের কারণ না জানার ফলে পানামা খালের কাজ (১৯০৪-১৯১৪) স্থবির হয়ে গিয়েছিল। তবে ওয়াল্টার রিডের গবেষণাকার্যের ফলে এই কার্য নব উদ্যমে শুরু হয়। কার্লোস ফিনলেজর্জ মিলার স্টেইনবার্গ এর কাজ অবলম্বনে রিড গবেষণাকার্য শুরু করেন।

প্রারম্ভিক ও পারিবারিক জীবন[সম্পাদনা]

ওয়াল্টার রিড ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের বেলরোই শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম লিমুয়েল সাটন রিড ও মাতার নাম ফারাবা হোয়াইট।[১] যৌবনে রিডের পরিবার নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের মারফ্রিসবোরো শহরে তার মামার বাড়ির সদস্যদের সাথে বসবাস করত। তার বড় দুই ভাইয়ের মধ্যে জে সি রিড বাবার মত ভার্জিনিয়ায় পুরোহিত হিসেবে কাজ করেন। ক্রিস্টোফার কানসাস অঙ্গরাজ্যের উইচিটা শহরে এবং সেন্ট লুইস শহরে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মারফ্রিসবোরো ঐতিহাসিক এলাকায় এখনো তাদের বাসভবন অবস্থিত।

ওয়াল্টার রিডের জন্মস্থান

আমেরিকান গৃহযুদ্ধের পর রেভারেন্ড রিড ভার্জিনিয়ারই হ্যারিসনবার্গ শহরের অধিবাসী কাইলি সি বার্ডের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ছোট ওয়াল্টার তখন ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। দুই বছর পর ১৮৬৯ সালে রিড এম.ডি. ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি তরুণতম এম.ডি. ডিগ্রিধারী হিসেবে পরিচিত।[২]

রিড ম্যানহাটনে অবস্থিত এবং নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ বেলভিউ হাসপাতাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ১৮৭০ সালে তিনি সেখানে দ্বিতীয়বার এম.ডি. ডিগ্রি লাভ করেন। ক্রিস্টোফার নিউ ইয়র্ক শহরে আইনি ব্যবসা শুরু করেন। ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত রিড নিউ ইয়র্ক স্বাস্থ্য বোর্ডে চাকরি করেন।

১৮৭৬ সালের ২৬ এপ্রিল তিনি এমিলি ব্ল্যাকওয়েল লরেন্সকে (১৮৫৬-১৯৫০) বিয়ে করেন। এমিলি ও ওয়াল্টার রিডের ওয়াল্টার লরেন্স রিড নামে এক ছেলে এবং এমিলি লরেন্স রিড নামে এক কন্যা ছিল। সুসি নামের এক আদিবাসী আমেরিকান মেয়েকেও তারা দত্তক নিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে কর্মজীবন[সম্পাদনা]

শহুরে জীবনযাপনের প্রতি অসন্তুষ্ট ওয়াল্টার রিড[৩] মার্কিন সেনাবাহিনীর চিকিৎসা কর্পসে যোগদান করেন। ১৮৭৫ সালে ত্রিশ ঘণ্টা পরীক্ষা দিয়ে তিনি চিকিৎসা কর্পসে সহকারী সার্জন হিসেবে নিযুক্ত হন। এ সময় তার দুই ভাই কানসাস অঙ্গরাজ্যে চাকরি করছিলেন। মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য ছাড়াও তিনি জেরোনিমো ও অ্যাপাচি গোত্রের লোকদের চিকিৎসা করেছিলেন।

নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের রবিনসন দুর্গে কর্মরত অবস্থায় সুইস অভিবাসী জুলস সান্ডোজ এর গোড়ালির চোটের চিকিৎসা করেছিলেন। রিড সান্ডোজ এর পা কেটে ফেলতে চাইলেও সান্ডোজ এতে অস্বীকৃতি জানান। একসময় পা না কেটেই রিড সান্ডোজ এর রোগ নিরাময় করতে সক্ষম হন। জুলসের মেয়ে মেরি ১৯৩৫ সালে প্রকাশিত আত্মজীবনী ওল্ড জুলস গ্রন্থে তার অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করেছেন।

উত্তরকালে মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

১৮৮১ সালে কার্লোস জে ফিনলে এডিস মশা ও পীতজ্বর রোগের মধ্যে সম্পর্ক নিরূপণ করলেও ওয়াল্টার রিড এটি প্রমাণ করেন। এ কাজের জন্য বিশ্বব্যাপী রিড আজও সমাদৃত। তার সম্মানে ওয়াল্টার জে রিড চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্র, ওয়াল্টার জে রিড সামরিক হাসপাতালসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Conference, Methodist Episcopal Church, South Virginia (14 নভেম্বর, 1898)। "The Virginia Conference Annual ..."। The Conference – Google Books-এর মাধ্যমে।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  2. Pierce J.R., J, Writer. 2005. Yellow Jack: How Yellow Fever Ravaged America and Walter Reed Discovered its Deadly Secrets. John Wiley and Sons
  3. "The Great Fever | American Experience | PBS"www.pbs.org 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]