বিষয়বস্তুতে চলুন

ওয়াং শু-বক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ওয়াং শু-বক
왕수복
প্রাথমিক তথ্য
জন্ম(১৯১৭-০৩-০৫)৫ মার্চ ১৯১৭
কোতো, হাইয়ান'নান প্রদেশ, জাপান অধিকৃত কোরিয়া
মৃত্যু১ জুন ২০০৩(2003-06-01) (বয়স ৮৬)
পিয়ংইয়ং, উত্তর কোরিয়া
ধরন
পেশাসঙ্গীতশিল্পী
বাদ্যযন্ত্রকণ্ঠশিল্পী
লেবেল
  • কলম্বিয়া
  • পলিডোর
গৃহসঙ্গী
কোরীয় নাম
হাঙ্গুল왕수복
হাঞ্জা王壽福
সংশোধিত রোমানীকরণWang Subok
ম্যাক্কিউন-রাইশাওয়াWang Subok

ওয়াং শু-বক (কোরীয়왕수복, কোরীয় উচ্চারণ: [waŋsʰubok̚]; ৫ মার্চ ১৯১৭ – ১ জুন ২০০৩) হলেন উত্তর কোরিয়ার একজন গায়িকা। ১৯৩৫ সালে জাপান অধিকৃত কোরিয়ায় তিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বিবেচিত হতেন।

তাকে কিংবদন্তি গায়িকা হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশেষ করে, তার সঙ্গীতসাধনার পথ ধরে আধুনিক কে-পপ ঘরানার উদ্ভব ঘটে।

জীবনী

[সম্পাদনা]

১৯১৭ সালে জন্ম নেওয়া[] ওয়াং শু-বক চোসেন ড্যান্সিং বালিকা বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন, যা কিসেং ঘরানার প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষায়িত ছিল।[][] এই স্কুলে মেয়েদের নাচ, গান, সঙ্গীতবিদ্যা এবং আচার ও রীতি-নীতির প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।[] ওয়াং শু-বক ১৯৩১ সালে পাশ করে বের হন।[] ১৯৩৩ সালে কিসেং গায়িকা হিসেবে তার অভিষেক ঘটে। এর পরবর্তীতে দশকজুড়ে তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন।[][][][] ওয়াংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানের একটি হলো উলচি মারায়ো (কেঁদো না)।[] তার গায়কির একটি ধারা হলো কিনমিনিয়ো, যা কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীতের একটি ধারা।[১০] তিনি কলাম্বিয়া ও পলিডোর রেকর্ডস উভয়ের সাথে চুক্তি করেন।[] তার সমসাময়িক অন্যান্য জনপ্রিয় শিল্পীরা হলেন লি ইউন-পাজেগোরি ভগিনীগণ[]

১৯৩৪ সালের জানুয়ারি মাসে জাপানের প্রথম কোরীয় ভাষার বেতার সম্প্রচারে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। জাপান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন এই অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে এবং কিয়োংসং ব্রডকাস্টিং অর্কেস্ট্রা ওয়াংয়ের সাথে যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করে।[১১] ১৯৩৫ সালে স্যামচিওল্লি কো. কর্তৃক আয়োজিত সঙ্গীতশিল্পীদের জনপ্রিয়তার একটি সমীক্ষায় ওয়াং বিজয়ী নির্বাচিত হন।[] সেই বছরের নভেম্বর মাস নাগাদ, তিনি কোরিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়িকা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন।[১২]

১৯৩৬ সালে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা অবস্থায় তাকে “জনপ্রিয় গানের রানি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। তিনি এরপর জাপানে পশ্চিমা সঙ্গীত শিক্ষার্থে গমন করেন। মেজো-সোপরানো ধাঁচের গান গাওয়ার প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তিনি চোসান লোকসঙ্গীতগুলোকে পশ্চিমা ধারায় গাইতে শুরু করেন। সেই সময়ে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “চোই সেয়ুং-হি যেভাবে চোসান নৃত্যকে বাঁচিয়েছিলেন, আমিও সেরকমভাবে অনেক অনেক চোসান লোকসঙ্গীত গাইতে চাই।”[] জাপান অধিকৃত কোরিয়ায় ঔপনিবেশিক জাপান সাম্রাজ্য কোরীয় ভাষায় ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীতকে বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টা চালালে ১৯৪২ সালে স্বল্পসময়ের জন্য ওয়াংয়ের কর্মজীবনে ছেদ পড়ে।[] ১৯৫৩ সালে কেন্দ্রীয় রেডিও সম্প্রচার কমিশনের মাধ্যমে তিনি কর্মজীবনে পুনরায় প্রবেশ করেন। ১৯৫৫ সালের মধ্যে তিনি উত্তর কোরিয়ার জাতীয় সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার একজন কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।[১৩]

১৯৭৭ সালে, ওয়াংয়ের ৬০তম জন্মদিনে কিম ইল-সাং তাকে একটি উপহার প্রদান করেছিলেন। এমনি, ১৯৯৭ সালে তার ৮০তম জন্মদিনে কিম জং ইল তাকে উপহার প্রেরণ করে।[১৪] ২০০৩ সালে ওয়াং মৃত্যুবরণ করেন।[]

পুরস্কার

[সম্পাদনা]

১৯৫৯ সালে ওয়াং শু-বক উত্তর কোরিয়ার মেরিটেড অ্যাক্টর পুরস্কার লাভ করেন।[১৪]

উত্তরাধিকার

[সম্পাদনা]

চোই কিয়ুং-সাং কর্তৃক প্রকাশিত এনসেস্টর্স অব গার্ল গ্রুপস নামে একটি বই ও তার একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে ওয়াং শু-বককে উল্লেখ করা হয়। এতে তাকে কোরিয়ার প্রথম নারী সঙ্গীতশিল্পীদের অন্যতম এবং কে-পপ জনরার মেয়েদের গানের দলের জনপ্রিয়তার অন্যতম পুরোধা হিসেবে অভিহিত করা হয়।[১৫]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

প্রথম জীবনে ওয়াংয়ের সাথে ঔপন্যাসিক ই হিয়োসেয়োকের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পিয়ংইয়ংয়ে ওয়াংয়ের বোনের কফিশপে তাদের পরিচয় হয়। তবে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর ওয়াং কিং কোয়াং-জিনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তার স্বামী পূর্বে কবি নো চান-মেয়োংয়ের সহযোগী ছিলেন।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. অ্যাটকিনস, ই টেইলর (৮ সেপ্টেম্বর ২০২২)। হিস্ট্রি অব পপুলার কালচার ইন জাপান: ফ্রম দ্য সেভেন্টিন্থ সেঞ্চুরি টু দ্য প্রেজেন্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ব্লুমসবুরি পাবলিশিং। আইএসবিএন 978-1-350-19594-3 
  2. "Why Korean girl groups conquering music charts are nothing new"সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ২৩ মে ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০২৩ 
  3. ওয়াইন্ট্রাউব, অ্যান্ড্রু এন; ব্যারেনড্রেট, বার্ট (৩১ জুলাই ২০১৭)। ভ্যাম্পিং দ্য স্টেজ: ফিমেল ভয়েসেজ অব এশিয়ান মডার্নিটিজ (ইংরেজি ভাষায়)। হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ১১৪। আইএসবিএন 978-0-8248-7419-3 
  4. কিম, ইউনা (১ ডিসেম্বর ২০১৬)। রুটলেজ হ্যান্ডবুক অব কোরিয়ান কালচার অ্যান্ড সোসাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। টেইলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস। পৃষ্ঠা ২৮৫। আইএসবিএন 978-1-317-33722-5 
  5. 김은주 (১৩ এপ্রিল ২০১৭)। "[김은주의 시선] 최초의 대중가요 스타, 평양기생 왕수복"ইয়োনহাপ নিউজ অ্যাজেন্সি (কোরীয় ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০২৩ 
  6. কোরিয়ানা ২০১৯ স্প্রিং (ইংরেজি) (কোরীয় ভাষায়)। দ্য কোরিয়া ফাউন্ডেশন। ১২ এপ্রিল ২০১৯। আইএসবিএন 979-11-5604-304-1 
  7. শিন, হিয়ুনজুন; লি, সেউং-আহ (১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। মেড ইন কোরিয়া: স্টাডিজ ইন পপুলার মিউজিক (ইংরেজি ভাষায়)। টেইলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস। আইএসবিএন 978-1-317-64574-0 
  8. মালিয়াঙ্কায়, রোয়াল্ড (৩১ মার্চ ২০১৮)। ব্রোকেন ভয়েসেজ: পোস্টকলোনিয়াল এন্টেঙ্গেলমেন্টস অ্যান্ড দ্য প্রিজারভেশন অব কোরিয়া’স সেন্ট্রাল ফোকসং ট্র‍্যাডিশনস (ইংরেজি ভাষায়)। হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৬৯। আইএসবিএন 978-0-8248-7833-7 
  9. সুহ, ডে-সুক (১ জানুয়ারি ১৯৯৪)। কোরিয়ান স্টাডিজ: নিউ প্যাসিফিক কারেন্টস (ইংরেজি ভাষায়)। হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৪২। আইএসবিএন 978-0-8248-1598-1 
  10. শেফার্ড, জন; হর্ন, ডেভিড; লাইং, ডেভ (১৮ এপ্রিল ২০০৫)। কন্টিনিউয়াম এনসাইক্লোপিডিয়া অব পপুলার মিউজিক অব দ্য ওয়ার্ল্ড পার্ট ২ লোকেশনস (৫ খণ্ডের সেট): খণ্ড ৩ থেকে ৭ (ইংরেজি ভাষায়)। ব্লুমসবুরি একাডেমিক। পৃষ্ঠা ৪৬। আইএসবিএন 978-0-8264-7436-0 
  11. সুহ, দে-সুক (১ জানুয়ারি ১৯৯৪)। কোরিয়ান স্টাডিজ: নিউ প্যাসিফিক কারেন্টস (ইংরেজি ভাষায়)। হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৭৬। আইএসবিএন 978-0-8248-1598-1 
  12. কিম, কিয়ুং হিয়ুন; চোয়ি, ইয়ংমিন (৭ মার্চ ২০১৪)। দ্য কোরিয়ান পপুলার কালচার রিডার (ইংরেজি ভাষায়)। ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ২৬৭। আইএসবিএন 978-0-8223-7756-6 
  13. "이효석과 왕수복의 사랑 이야기"কোয়া কালচার (কোরীয় ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০২৩ 
  14. "조선 유행가의 여왕 왕수복 아시나요"দ্য হাঙ্কিওরেহ (কোরীয় ভাষায়)। ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০২৩ 
  15. "History of Korean girl groups revisited"কোরিয়া টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ মে ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০২৩ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]