ওবায়দুল্লাহ (ক্বারী)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ক্বারী ওবায়দুল্লাহ
ক্বারী ওবায়দুল্লাহ
জন্ম(১৯৪৪-০১-০১)১ জানুয়ারি ১৯৪৪
কোদালা গ্রাম, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা, চট্টগ্রাম জেলা
মৃত্যু২১ ডিসেম্বর ২০১৬(2016-12-21) (বয়স ৭২)
জাতীয়তাবাংলাদেশি
নাগরিকত্ববাংলাদেশি
মাতৃশিক্ষায়তনলালবাগ কওমি মাদ্রাসা
পেশাক্বারী, আলেম
প্রতিষ্ঠানবাংলাদেশ বেতার
আন্দোলনদেওবন্দি
পিতা-মাতা
  • শাহ মেহেরুজ্জামান ইসলামাবাদী (পিতা)

ক্বারী ওবায়দুল্লাহ বাংলাদেশি একজন উপস্থাপক, ক্বারী ও ইসলামি ব্যক্তিত্ব ছিলেন।[১] তিনি ১৯৭০-৮০ দশকে মুসলিম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চারজন ক্বারীর মধ্যে অন্যতম ছিলেন।[২] তিনি বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের একজন নিয়মিত ক্বারী ছিলেন।[৩][৪] তিনি ঐতিহাসিক চকবাজার শাহী জামে মসজিদে ১৯৬২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত খতিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রেকর্ড করা আজান প্রতিদিন বাংলাদেশের সরকারি প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ বেতার, বিটিভিবিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত করে। এছাড়াও তিনি জাতীয় সংসদ অধিবেশনে কুরআন তিলাওয়াত করতেন।[৫][৬] তিনি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শিক্ষক ছিলেন। তাকে নিয়ে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে কুরআন ফাউন্ডেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে।[৭]

বাল্যজীবন[সম্পাদনা]

ওবায়দুল্লাহ ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শাহ মেহেরুজ্জামান ইসলামাবাদী, তিনিও একজন বিশিষ্ট আলেম ছিলেন। ওবায়দুল্লাহ তার পিতার নিকট বাল্য শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর ঢাকার লালবাগ জামেয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে হাফেজ্জি হুজুরআজিজুল হকের নিকট বুখারী শরীফসহ বিভিন্ন বিষয় শিক্ষা লাভ করেন।[৮]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

লালবাগ কওমি মাদ্রাসা পড়া শেষ করে, ১৯৬২ সালে তিনি এখানেই বুখারী শরীফ পড়ানোর শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৬২ সালে তিনি নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওতে প্রথমবার কুরআন তেলাওয়াত করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ অধিবেশনেও উদ্বোধনী কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। তার রেকর্ড করা আজানের ধ্বনি বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশনে প্রতিদিন প্রচারিত হয়। তিনি ১৯৬৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল নবম জাতীয় সংসদ অধিবেশন পর্যন্ত সংসদ অধিবেশনগুলোতে তিনি উদ্বোধনী কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। শেখ মুজিবুর রহমান মাঝে মাঝে চকবাজার শাহী জামে মসজিদে গিয়ে তার পিছে নামাজ আদায় করেছেন।

তিনি কুরআন তিলাওয়াতে একজন দক্ষ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি তিনি সৌদি আরব, বাহরাইন, কাতার, সিঙ্গাপুর, দুবাই, লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং পুরস্কার লাভ করেছেন। সৌদি সরকার প্রধান ফয়সাল ও খালেদ তাকে দুইবার ক্বারী সম্মাননা প্রদান করেন।[১]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

তিনি ২০০৬ সালে বার্ধক্যজনি কারণে অসুস্থ হয়ে পরেন।[২] তিনি শেষ জীবন ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের এলাকায় কাটিয়েছেন, অবশেষে ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বর ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিলো ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে, ৬ মেয়ে রেখে মৃত্যুবরন করেন।[৯] তাকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মাঠে দাফন করা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "যে সব আলেমকে হারিয়েছে জাতি"jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৩ 
  2. "ক্বারী ওবায়দুল্লাহ (রহ:)"ইসলামিক অনলাইন মিডিয়া। ২০১৬-১২-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৩ 
  3. QOWMIPEDIA। "ক্বারী উবায়দুল্লাহ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়"QOWMIPEDIA (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৫ 
  4. "Institute – International Quran Recitation Association (IQRA)" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৫ 
  5. "আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কারী মো. ওবায়দুল্লাহ আর নেই"jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৩ 
  6. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "কারি ওবায়দুল্লাহ আর নেই"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৩ 
  7. "রিয়াদে ক্বারী ওবায়দুল্লাহ কোরআন ফাউন্ডেশনের কমিটি গঠন"আওয়ার ইসলাম। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৫ 
  8. "মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে জীবনাবসান ঘটলো ক্বারী মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ'র"এস এন এন ২৪ ডট কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৫ 
  9. "প্রখ্যাত ক্বারী ওবায়দুল্লাহ'র ইন্তেকাল"DailyInqilabOnline। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৩